অকালবোধনের জলে

শ্রাবণী সিংহ
কবিতা
Bengali
অকালবোধনের জলে

রিপুবিষয়ক

মুখচোরা ঘরকুনো এক কান্না-ভেজানো দরজা দিয়ে ঢুকছে
অসহায়ভাব

হীনমন্যতা যাচ্ছে দেয়াল ঠুকে

অসমান হাতবাক্সে জমা রেখেছি ছেনি- হাতুড়ি

আমরা সাবেক দেয়াল ভেঙ্গেছি
ভার্চুয়াল দুনিয়ায় পা ফেলে
স্বপ্ন দেখতে শিখেছি
ব্যক্তিগত স্টারডমের

আমরা শুধু শুধু আস্তিনে পুষছি
ছয়টি হলদে কালান্তক সাপ
রিপুর …

দুরত্ব ও চুম্বক

দু’টো পৃষ্ঠা জোড়া লেগে যাওয়া উপন্যাসও
পড়ে ফেলা যায়
জোড়াতালি দিয়ে
কিন্তু জীবন……..?

কিছু ডটের থেকে খানিকটা দুরে প্রশ্নচিহ্ন রেখেছি
কারণ দুরত্ব ও চুম্বক আকর্ষণ বাড়ায়
তুরীয় পর্যায়ে আগুন জ্বালে
মানুষ-মানুষীতে।
বৈধতা ছাড়াও ছাড়পত্র মেলে তখন।

এ আঁচ আগুন

প্রতিকার শুধু একটা শব্দ না
বহু শব্দের সমাহার …

আজ পুড়ছে আমাজন
কাল কি তবে চিলাপোতার অরণ্য?
পরশু ভীমবৈঠকার জঙ্গল?

উচ্চকোটি গর্হিতরাই দেশ এখন
তবে এ আঁচ আমজনতা আমাদের গায়ে লাগবেই

কারণ মধ্যবিত্তের দেয়াল তেমন পুরু হয় না তবে
গরিমা ও অস্তিত্বের অহং কারে যথেষ্ট মজবুত।

 

অকালবোধনের জলে

লাল-মেরুণের তীক্ষ্ণ আঘাতে যে ভোর আসে,
শিউলি তার দর্শক।
আমাদের দুঃখদিন হ্রস্ব ই’র মত আড়াল করে আছে
সমস্ত আসবাব

গাভীর সামগান নৈঋত কোণে…
আনন্দউৎসবের আগমন উপলক্ষ্যে নতুন কিছু জানা ও চেনা
পরিযায়ী
আসুক পুরনো সর্বনাশে
শরৎকাল

মায়ের ছায়া অকালবোধনের জলে।

যমুনা উজানে

খরার দরুণ
প্রচন্ড উৎসাহে
ভেঙে পড়ছে
বর্ষাকাল আর যা কিছু
কাগজের নৌকা কাত হতে হতে হয়ে যাওয়ার আগে
দাঁড়িয়ে যায় শেষবার নুড়িজলে…

অস্বীকার মানবে না জানি।
তোমার যা খেলা আমারও তাই
ভেসে যাওয়ার অধিক
যমুনা উজানে।

বর্ষার মন্ত্রগুপ্তি

সাপে কাটা মরণ দৈব নিশ্চিত,
অনিশ্চিত মরণ ওঝার ফুঁ’য়ে…

আজও গুণিনবিদ্যার গুপ্তরহস্য জানা মানা তবু
হঠাৎ বর্ষায় পিঠ পুড়ে,

কি আছে ভিতর বাণে এমন
হাওয়ায় তো শুধু পাতা কেঁপে যায়
তোমার দৃষ্টি তো বৃষ্টিকেও বাঁকা করে
অনেকটা হেলে যায় ময়ূরপালকে দুপুর শ্রাবণ,
আর
চিবুক থেকে গোড়ালির নির্মাণ …

 

শ্রাবণী সিংহ। কবি। জন্ম ও নিবাস উত্তর-পূর্ব ভারতের অসম রাজ্যের গুয়াহাটি শহরে।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..