প্রেমিক
প্রেমিক হয়তোবা তাকে আমি গড়তে পারতাম তার বুকের ভিতর এপাশ থেকে ওপাশে উল্টে নতুন একটা…..
রাতকে জিজ্ঞেস করলে
সে তপ্ত দিনের কথা বলে
দিন আবার বলে ঘর্মাক্ত রাতের কথা।
আসলে এভাবেই নিদারুণ বৃষ্টিহীন দিনযাপন আমাদের।
খঞ্জনি বাজিয়ে যে বোষ্টুমী প্রভাতী গায় অলস ভোরে,
রাত জাগা ঘুমের ভিতর
আমি তার গান শুনি,
শয্যা ছেড়ে বারান্দায় দাঁড়াই,
রুদ্র রোদ ক্রমশ স্পর্শ করে আমার এ পোড়া দেহ,
এ পাপ মন।
এখনও প্রাণের ভিতর বেজে চলেছে খঞ্জনির গান-
“এই দহনে যত পাপ মোর পুড়ে হোক ছাই।”
যেদিকে ঢালু পাড় ভেঙেছে
সেদিকে একসময় ছায়া নেমে আসত।
মাঠের এপারে কতো পাখির সঙ্গে দেখা হতো,
সূর্য আড়াল ছিল,
ছায়া ছায়া দুপুরে আমাদের কত গাছ ছিল।
শিকড়ের নিঃশ্বাসে আমরা চুপচাপ বসে থাকতাম।
আদুল গায়ে ঝরে পড়তো পাতায় জমা বৃষ্টি জল।
আমাদের বিশ্বাস জমানো ছিল এইসব বিশাল গাছেদের পাতায় পাতায়,
কিশোর হৃদয় গেঁথে রেখেছিলাম বাকলের দাগে দাগে।
জন্ম জন্ম কথা হতো কত নীরবতার।
স্থির শাখায় আমাদের অক্ষরমালা
ঝুলিয়ে দিতাম,দুলিয়ে দিতাম
ফুলের ভিতর যেটুকু বৃষ্টি সুবাস ছিল
তাই দিয়ে রচিত হত প্রেমের কাব্যগ্রন্থ।
আসলে এসব সবই রূপকথা।
এখন কংক্রিটের জঙ্গলগুলি সূর্য ডোবার পর
হাত বুলিয়ে বুলিয়ে দ্যাখে এ দহনে কত খানি পুড়েছে গা!
আকাশভেলায় নতুন মেঘকে ডাকছে পুরাতন মেঘ।
ফুসমন্তরে তার বুকখোলা হাওয়াই শার্ট।
যেমন খুশী মাড়িয়ে যাচ্ছে সে
বড়বাঁধ,গাছমেজিয়া আর পচাকাঁন্দির
মুগ-মুসুরের ক্ষেত।
দোল দিলাম এই হাওয়ায়।
মেঘের সাথে মেঘের প্রেমে
পূর্বাচলে তাকিয়ে দেখি পথ নেই আর ঘর খোঁজার
পশ্চিমেও নেই অস্তে ফেরার তিলধারনের জায়গা।
ঘর নেই আর আমার এখন
প্রেম নেই কোনো, এমনকি আকাশও নেই
এখন শুধু মেঘ আর মেঘ
বায়ু বেগে ছুটছে তারা
আর আমি কোনমতে সামলে নিচ্ছি বুকখোলা হাওয়াই শার্ট।
আপাতত এখন বৃষ্টিতে ভিজে একশা হব
তারপর না হয় তোমার জন্য
দু’একটি কবিতা রচনা করবো আবার।
২১শে জুন, বিকেল
তারপর, অবশেষে বৃষ্টি এলো। ভিজে হাওয়ায় ভেসে আসছে বন কেয়ার গন্ধ।
ছায়া এবং গাছ সম্পর্কিত আমার সব লেখা ভিজিয়ে নিচ্ছি বৃষ্টিতে,
সব ক্লেদ আমার ধুয়ে নিচ্ছি।
হাতের পাতায় মুছে নিচ্ছি চোখের পাতা।
সোঁদা সোঁদা গন্ধে জল ছপাৎ ছপাৎ আদরগুলি
বুকের মধ্যে জমিয়ে রেখে
আহা শীতল,শীতল হচ্ছি ক্রমশ।
এই আষাঢ়ে আজ বেলা শেষে
বৃষ্টিজল,তোমার আদর আমার সারা শরীরে মেখে নিচ্ছি।
২১শে জুন, সন্ধ্যা
ঠাসবন্ধ কালো অন্ধকার।
আমাকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে হাওয়া।
সারা শরীর জুড়ে হুড়মুড় করে নামছে
ওই মেঘ
যার ভিতর আমার বাদল ভরা কামনা সঞ্চিত আছে।
২২শে জুন,ভোর
বৃষ্টি ফোটার দেশ রাগে
হাওয়ায় ভেসে আসছে একপশলার সুর
এই শব্দ,এই সুর,এই অনিবার্য সংগীত
আমার মর্মটুকু দুলিয়েছে সহস্রবার।
আহা বৃষ্টি আমার
রৌদ্রদগ্ধ সুশীতল স্বপ্ন আমার ভাসিয়ে দেব তোর জলে
পাতাভর্তি কবিতাসব কাগজের নৌকা করে।
২২শে জুন,দুপুর
আকাশ জিরিয়ে নিচ্ছে একটু। পিছুটানহীন জল সকল ছুটছে মরা নদীর দিকে।
কোকিলের ঝগড়া থেমেছে জামরুল গাছে,
শিউলি পাতায় এখনো ফোঁটা ফোঁটা জল
ঝরে পড়ার শব্দ
আমাকে আকুল পাগল পারা করে তুলছে
পরবর্তী বৃষ্টির জন্য।
প্রেমিক হয়তোবা তাকে আমি গড়তে পারতাম তার বুকের ভিতর এপাশ থেকে ওপাশে উল্টে নতুন একটা…..
চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..
স্মৃতি চাঁদের আজ দুঃখ পাবার কিছু নেই ! সবুজ পৃথিবীতে আজকের এই বিকেলে আকাশে উড়ে…..
দেবী না পরিণীতা রাতটা একা থাকে এবং নিঃসঙ্গ অন্ধকার মানে রাত; তাহলে অন্ধকার নিজেও একা…..