অঙ্কমেয়ে

সুদীপ্ত সেন
কবিতা
Bengali
অঙ্কমেয়ে

জিজ্ঞাসা

বাজারের শব্দ থেকে উঠে আসা কিছু নারী।
যারা ফেলে দেওয়া শরীর আর শরীরের গায়ে উঠে এসে বেঁচে থাকে।
তাদের কোনোদিন মা হওয়া হলো না, ইচ্ছে ছিলো কি?

ওদের ঋতু ভেঙে গেছে, অজস্র যন্ত্রণার ভিড়ে ভিড় ঠেলতে ঠেলতে ক্লান্ত নিভে আসা প্রদীপের চোখ। তাদের শত যন্ত্রণা পেরিয়ে শিশুকে দেখা হয়নি ওই চোখে। ইচ্ছে ছিলো কি?

আদরের নামে এক পশলা হাসির ওপর থেকে দামের কাগজ গুলো ঝরে পরে পেটে, গায়ে, স্তনে, নাভিতে অথচ মায়ের ঋণ শোধ হয় না, এইরকম ঋণ শোধ হয় না হয়ে ওঠার ইচ্ছে ছিলো কি?

 

অঙ্কমেয়ে

তোমার গ্রামের ওপর দিয়ে গেলে
বুঝতে পারো আমার যাওয়া তুমি?

তোমার পাড়ার গন্ধ ছুটে আসে
অহেতুকে বুঝতে পারি আমি।

ছিন্ন তারে স্নানের জামা ধুয়ে
মিলিয়ে দেওয়া তখন তুমি ভেজা।

আলতো আমি তোমার পাড়া দিয়ে
আমার তখন পেরিয়ে যাওয়ার মেজাজ।

তোমার যদি মাইগ্রেশানের ব্যাথা
আমার তখন চিন্তা ভীষণ জুটে

এই তো আলাপ তোমার সাথে আমার
তবুও ব্যাথায় চিন্তা কেনো ছুটে?

তবুও কেনো এই দুদিনের আলাপ
মাইগ্রেশানের চিন্তা এসে জুটে?

 

মা = সত্য একটি ম্যাজিশিয়ান

বাবু ওঠ….বাবু…..বাবু….ওঠ
টিউশনের সময় হয়ে এলো।

এলার্মের আওয়াজটা ঠিকঠাক শুনতে পাই না আমি অথচ এই আওয়াজটা শুনতে পাই।
আবার রবিবার আমি কোনো আওয়াজই শুনতে পাই না, তাও তুমি ডাকো
তুমি জানো আজ আমি উঠব না তাও কেন ডাকো আমি জানি না
কোথাও কি কোনো বিশ্বাস কাজ করে, আজ টিউশন না থাকলেও আমি তোমার ডাকে শুধু উঠব বলেই উঠব?
না, আমি উঠি না তাও তুমি ডাকো।

আমার রুইপোস্তটা বেশ পছন্দের আর কড়াই চেঁচে পায়েস খাওয়াটাও
খুব অদ্ভূত তোমারও একইসব পছন্দের তা সত্বেও তুমি আমাকেই বারবার বলো বাবু এই নে কড়াই টা চেঁচে খা
যখন একটু বড়ো হয়েছি তখন দু-একবার বলেছি খাবো না তুমি খাও, তাও তুমি আমাকে না দিয়ে খাওনি
অথচ খুব গরমে কতবার আমি আইসক্রিম কিনে খেয়েছি তোমাকে না দিয়েই।

স্কুল থেকে ফিরে তুমি এক-একদিন জিজ্ঞেস করতে আজ কারোর সাথে ঝামেলা করোনি তো?
কি আশ্চর্য সেই দিনই আমি ঝামেলা করেছি।
মিথ্যে বললাম, না করিনি
তুমিও হেসে বললে বেশ কোরো না, ভালো ছেলেরা মারপিট করে না।
তুমি কি করে বুঝতে পারতে সব?

হোষ্টেলে রোজ দু’বার করে ফোন করো তুমি
কতবার বলেছি খামোকা টেনশন করো না কিন্তু তাও সেই দুবার করেই ফোন করো।

মেয়েটার উঠতি বয়সে প্রথম পিরয়ডের পর তুমিই বুঝিয়েছিলে ওসব সাধারণ ব্যাপার, টেনশন করো না, শুধু এবার থেকে ছেলেদের থেকে দূরে থাকবে।

দেখি ঠোঁট টা, উমম কালো হচ্ছে তাই
যা খাচ্ছিস তা আর খাস না।

এই খাসনাটা আমি শুনব কিনা জানিনা তবুও বারবার সিগারেট টা ধরাতে গিয়ে এই খাসনাটা শুনতে পাই জানো, ছেড়ে দিইনি তবে দেব।

দুর্গা পুজোতে একটাও শাড়ি তোমার হয়েছে কিনা খোঁজ নেইনি অথচ আমার জামাটা হয়ে গেছে।

মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকের সময় খুব রাতে পড়তে পড়তে কখন ঘুমিয়ে গেছি মনে নেই।
কে লাইট অফ করে দিল, কে দিয়ে গেল গায়ের ঢাকাটা সবই জানি তাই প্রতিদিনই ভাবতাম আজ দেখব তুমি কখন আসো এঘরে কিন্তু জাগতেই পারতাম না, শুনেছি ভগবানকে দেখা যায় না।

Infinity কম্প্রোমাইজ (ইনটু) একরাশ আশা-ভরসা ( ইনটু) infinity ভালোবাসা
এই সমস্ত বহনকারী একজন ম্যাজিশিয়ান
আমরা যাকে #মা বলে ডাকি।

তাই মায়ের ঋণ আমরা শোধ করতে পারব না
কিন্তু মায়ের মুখে সবসময় হাসি বজায় রাখতে পারব, পারবই…..
এটুকুই আমাদের হাতে আছে
শুধু মানসিকতা রাখতে হবে, ব্যস!

 

জাহাজের পিরিত জলে

ধুলোতে বোঝাপড়া স্মৃতি
আলোতে পুড়ে খেল গা
শহরে নিভে যায় যত
ক্লান্তি হেঁটে বোঝে পা!

তবু কি মন হয় গতি
তুমি তো জানো সবই তা
ওরা তো ফিরেছে অতীতে
হাতরে ফিরে প্রেমিকা।

কত কি রঙ প্রজাপতি
গাইছে গীটারে,বিয়ারে
শহরে একটা জাহাজে
পিরিতি জলতে বাহারে।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

যাযাবর

যাযাবর

যাযাবর যাযাবরদের ছোঁড়া কাঠে আগুনও অসংযত,ঝড় উঠে ইত্যবসরে কিছু লবণ দানাও জমা পড়েছে… উদ্বাস্তু রোমে…..