অনন্ত তৃষ্ণা

রঞ্জনা রায়
কবিতা
Bengali
অনন্ত তৃষ্ণা

অতিথি

নদী কে বললাম “চলো ”
বললো – “না এখন থাক”।
বৃষ্টিকে বললাম “চলো”
বললো – “সময় হয়নি” ।
ফুলকে বললাম – “চলো”
বললো – “যাবো একদিন”

সে নীরব নিস্তব্ধ হয়ে চলে গেল ঘুমের দেশে
নদী বৃষ্টি ফুল তখনই অতিথি হয়ে এলো ।

 

নবীন বসন্ত

তিনি আছেন তিনি থাকবেন হৃদয়ের নীড়ে
স্নিগ্ধ পদ্মের মত ফুটে ওঠেন তিনি
আনন্দের আলোকে মঙ্গল আলয়ে
খাঁচার পাখি বনের পাখির অবিরাম কানাকানি
জীবন খোঁজে আগুনের পরশমণি ।
আমার চেতনার রঙে চিরসবুজ তিনি
জীবনের অচলায়তনে একাকী প্রতীক্ষায়
রাজার চিঠি – তিমির বিনাশী উদার অভ্যুদয়
জীবন মালঞ্চের গোলাপগুলি যখন ঝরে যায়
নবীন বসন্ত হয়ে তিনিই থাকেন জীবন শোভায়।

 

অনন্ত তৃষ্ণা

গাঁদা ফুলের পাপড়ি , গোলাপ পাপড়ি
মিলেমিশে আবির হয়ে ওঠে
পিনাকেশ তোমার রুদ্র আকর্ষণে ।
শত গ্রন্থিতে তোমায় জড়াতে চায়
গঙ্গার গহীন হৃদয় উচ্ছ্বাস ।
পলাশের সুরে তোমার রুদ্রবীনায়
বেজেছে প্রেমের অন্তহীন সংরাগ
বসন্তের ঋতুচেতনায় মহাপ্রলয় ।
চান্দ্র উত্তাপে সংগম মোহনায়
রাতের পবিত্র স্তব্ধতা সমাহিত ।
শুকনো পাতার মত আবরণ জীর্ণতা
শুদ্ধতম আদিমতার নতুন কথা
এসো পিনাকেশ বসন্তের উৎসবে
হৃদয় – নন্দনে মহুয়া মত্ততা ।
অপর্ণা উমা অনন্ত প্রেমের তৃষ্ণায়
একীভূত আজ নীলকণ্ঠের নিলীমায় ।

 

মহাপ্রস্থানের পথে

চাঁদের দিকে পিছন ফিরে বসেছিলাম
জ্যোৎস্নার মায়া সুখ কপোতের মতো
প্রাত্যহিকতার চুড়ায় কতটা গ্রহণীয়?

ভ্রান্তি পথের অন্তিম শিশির বিন্দুতে
ইকেবানার স্বপ্নালু ছায়া হয়ে
এক রমণীয় প্রত্যয় দৃশ্যমান!

তীব্র দহনে জীবনের ফুটিফাটা মাঠ
আকণ্ঠ তৃষ্ণায় সমাহিত মরীচিকা
আশাহীন ঘরে চূড়ান্ত প্রান্তিক আঁধার
নামে কলঙ্কিত চাঁদের দীপ্ত আবরণে ।

চন্দ্রহারে সাজানো জীবনের আংশিক রূপ
এক প্রক্ষিপ্ত অধ্যায় মহাপ্রস্থানের পথে –
চিরন্তন নিঃসঙ্গতায় অনন্তের শঙ্খধ্বনি
দুঃখহীন ঊষায় তিনিই দীপ্ত হিরণ্যগর্ভ ।

রঞ্জনা রায়। কবি। জন্ম ১৯৭০ সালের ৩০ শে মে, ভারতের অখণ্ড মেদিনীপুর জেলার দাঁতন থানার অন্তর্গত কোতাইগড় – তুর্কা এস্টেটের জমিদার বংশে। পড়াশুনো ও বসবাস উত্তর কলকাতায়। বেথুন কলেজ থেকে বাংলা সাহিত্যে সাম্মানিক স্নাতক এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর। তাঁর...

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ