অনির্বাণ সূর্যকান্তের ছয়টি কবিতা

অনির্বাণ সূর্যকান্ত
কবিতা
Bengali
অনির্বাণ সূর্যকান্তের ছয়টি কবিতা

স্তনখসে পড়ে গেছে সন্তানের লাশ
মা ডাকার আগে করতে হয় কবরের চাষ

চন্দনা, ক্রমশঃ বড় হচ্ছে ফিরোজা রঙের হৃদয়
খেয়ে নিচ্ছে ক্ষুধা
অপয়া চুমু, পতাকা ও রেমিট্যান্স।

ঘাম দিয়ে বের হচ্ছে জ্বর ও বাচ্চাদের স্কুল।

 

দুই. 

চোখে কাজল দিলে বিষ্ণুপ্রিয়া ফুল ফুঁটে বলে ফুলেদের রঙ শাদা নীল লাল দিয়েই সংসার হলো

ফুল মুক্তি দেয়
আগুনও
হৃদয়ের যে পাশে থাকে অগ্নি তাকে ধর্ম বলেই জানি

হৃদয় মূলতো নারী প্রজাপতি
প্রজাপতির ডানায় ভর করেই অগ্নির আগমন পৃথিবীতে।

বেঁচে ওঠার ঘুড়িতে উড়ছে প্রজাপতি নেকলেস।

 

তিন. 

দূর থেকে পতপত করে উড়ে যাচ্ছে আত্মহত্যা। সম্মান নিয়ে ফিরে যাচ্ছে তোমার খোলা অন্তর্বাস।

লোভ, অহং উড়িয়ে তুমি খেলছো নাভির বাসা।

তোমার রঙ খসে পড়ছে
বিশ্রামে গ্যাছে জিহবা

শাড়ী তোমার কি দিয়ে বাঁধা?
তোমার বুকে স্থাপত্য
তোমার বুকে রুটি নাম্নি রাধা।

 

চার.

তোমাকে কয়েক পদ্ধতিতে আদর করতে পারিনা
বুকে টানতে পারি কেবল

বুকে শিষ দেয় পাখি
সমুদ্র
আলতা রাঙা অনুবাদযোগ্য সমুদ্রের কান্না।

ভিজে ভিজে এই যে অফিসফেরত ঘোরের মিউজিক শো ও ব্রীজের মতো দুলে শ্বাস
তা বুকে কি ইতিহাস আছে এমন যে রাত ১১.১০ মিনিটে ভ্যানে করে নিয়ে যায় কিছু শারিরীক ভাষা?

ভাষা বোঝা অব্দিই প্রেম থাকে সে ভাষা শারিরীক বা মানসিক হোক না কেন!

গতশতক পাড় হয়ে যাচ্ছে
সিনেমা দেখে ফিরছে জোরা পাখি
আর তুমি বুকে মাথা দিয়ে উচ্চারণ করলে “দীঘি”

 

পাঁচ.

প্রেম বিলুপ্ত হচ্ছে
ডায়নোসরও বিলুপ্ত হয়েছিলো

সবাইকেইতো ইতিহাস বদলাতে হয়
সবাইকেইতো ইতিহাস হতে হয়।

একবিংশ শতাব্দী সবচে বেশি উচ্চারিত বাক্য ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’।

 

ছয়.

তোমার পাশে শুয়ে আছে ত্রিপুরা-আসাম

আমরা দেখছি যুদ্ধ খনিজতেলের
গোলাপ হাতে দিয়ে কেউ বলেনি আজ দেশে কোনো অপমৃত্যুর সংবাদ নেই

শহরে বৃষ্টি হলে ছোটলোকের ঘরেই পানি ঢোকে

আর তাই
চলো শেষবার ছাড়াছাড়ির আগে
বুকের ভেতরে মাগরিবের আযান শুনে নিই।
পৃথিবীর সকল পশুপাখিকে খাঁচা থেকে মুক্ত করে দিই
পৃথিবীর সকল অরণ্য পোড়ানো বন্ধ করি
কয়েদিশূণ্য কারাগার গড়ি
কবিবান্ধব কারাগার বানাই।

শুধু শেষবার ছাড়াছাড়ির আগে…

অনির্বাণ সূর্যকান্ত। কবি। জন্ম বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলায়। লেখাপড়া করেছেন চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজে। মূলত: কবি, কবিতাই তাঁর প্রাণ। কবিতা দিয়েই তিনি পৃথিবীকে জানতে চান। বোহেমিয়ান জীবনে হেন কোন কর্ম নেই করেন নি! কৃষক হয়েছেন, মুদি দোকানের কর্মচারী হয়েছেন, হোটেলের কর্মচারী হয়েছেন,...

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..