পাগল
চৌদ্দ পনেরো বছর আগের কথা; আমি বসে আছি একটি দোকানে, দোকানটি মূলত আমাদেরেই। দোকানের সামনে…..
সকালবেলায় বিছানা ছেড়ে উঠতে ইচ্ছে করবে না, স্বরচিত উত্তাপের ভিতর তোমার গায়ের গন্ধ, ঠিক যে মাফিন কেকের ভ্যানিলার মিষ্টি মিষ্টি, খাই খাই এসেন্স, রোদ এসে লুটিয়ে পড়বে নরম কম্বলের ওপর, পোর্সেলিনের ধোঁয়াওঠা কফিকাপ সেখানেও তোমার ছবি এমবশ করা, ব্যালকনির পামগাছটার আগায় হলদেটে ছোপ, রাস্তায় ফেরিওয়ালা ‘জয়নগরের মোয়া’ বলে হাঁক দেয়, সাড়ে আটটার আকাশবার্তা মিউট করে উঁকি দেয় পাশের বাড়ির উৎসাহী চোখ।
তবু অবাধ্য ইচ্ছে নিয়ে গীজার অন করে, বাথরুমের নিভৃত অভয়ারণ্যে নিজের মুখোমুখি, আয়নার চোখে নিজস্বী ন্যুডি। মন উড়ু উড়ু, পৌষমেলায় ইন্টারেস্টেড ক্লিক করে ভাবতে থাকি… দুপুরে লাইব্রেরি যাবার সময় বেলপিপারের মসৃণতায় চোখ আটকে যায়, আহ্লাদী সিমলামিরচ্ তার লাবণ্যপিছল সবুজে মুগ্ধ করে রেখেছে পথচলতি মানুষকে, মিও আমোরের বরফসাদা ক্রীমের হাতছানি চকোলেট কেকের বিস্তীর্ণ বুকে। শীতকাল এলেই সান্তক্লসের লাল টুপির জাদুতে মুগ্ধ বাঙালি, ভুঁইফোঁড় জাস্টবেকডের রকমারিতে হ্লাদিত রসনা! শহর জুড়ে ফেস্টুন, পোস্টার, শিল্পমেলা, চলচ্চিত্র উৎসব, হইহই করে বইমেলা আর এসে গেল বলে!
গ্লিসারিন সাবানের অস্বচ্ছ ছোঁয়া ত্বকে, নাভির নরম শিউরে ওঠা, বডি ময়শ্চারাইজারের সিল্ক সিল্ক পেলবতা গলা, বিভাজিকায়। সদ্য স্নান করে ওঠা তোমার যুবক শরীরের গন্ধ তখনো তোয়ালে জুড়ে, ডিওর সুবাস। রেডওয়াইনের নিভৃত হাতছানি উপচে পরা কাটগ্লাসে বরফের কুচি, ফিশফিংগারের কড়কড়ে নোনতায় আটকে থাকে সন্ধের পারদ, বেবিকর্নের গরম স্যুপে চুমুক, নাগা চাদরের উত্তাপে শরীর ঢেকে কি-বোর্ডে টুং নোটিফিকেশন… “আজ খুব ঠাণ্ডা”, সকালবেলাতেই দেখেছি আজ তুমি পাটভাঙা ব্লেজার পরেছ। চারদিক খুব রঙি, ঝলমল এ সময়ে, সেই যেদিন চীনে রেস্তোরাঁয় ধোঁয়াওঠা সিজলারের আবেশ, ঠান্ডা তো লাগে না তোমার তেমন! সব কাজই স্লো -মোশনে, বরাবরের লেট রাইজার আমি তায় আবার বাতাস আর্দ্রতা হারিয়ে উত্তুরে হাওয়ার সাথে পাল্লা দিয়েছে, শহরকে মুড়ে দেবে কাঁথায় কম্বলে।
পাড়ার মোড়ে, ফার্স্টফুডের দোকানে, রেস্তোরাঁ, অস্থায়ী স্টলে কেমন যেন সাহেব সাহেব, ক্রিসমাসের আবহ, দেশী সাহেব-মেমের মচ্ছব। ইচ্ছে করে দীর্ঘসময় শুধু শুয়ে থাকি, কাপ কাপ ব্ল্যাক কফি খাই, জংগলে বেড়াতে যাই, শুকনো পাতার ওপর মচমচ শব্দ করে হাঁটি, নদীর রুখু বুকে ছাতাপরা চ্যাটালো পাথরে বসে তোমায় চিঠি লিখি, তারপর বেলা পরে এলে, গাছের ছায়ারা দীর্ঘতর হলে, বনে-পাহাড়ে ফিসফিসিয়ে যারা কথা বলে, সেইসব নামহীন অজানা অচেনা মানুষ অথবা না-মানুষদের প্রাগৈতিহাসিক আবিল অনুষঙ্গে নিজেকে ডুবিয়ে দিই ককটেলের মত, যেন সান্টাক্লস এসে সত্যিই একদিন চুপিচুপি আমার মাঝরাতের নির্জন বিছানায় রেখে যাবে বড়দিনের উপহার, কৈশোরের ঘ্রাণমাখা এক কুয়াশার বিকালে প্রথম যে যুবককে আমি চুমু খেয়েছিলাম আশ্লেষে তার নীল শার্টের একটি বোতাম যেন এতকাল ধরা ছিল আমার হাতের মুঠো, তার পোড়া ঠোঁটের গন্ধ আমার ঠোঁট ছাড়িয়ে ঘুরে বেড়ায় আমার শহরের নির্জন গলিপথে, বাইপাসে, শপিংমলের ভীড়ে।
কোনদিন হঠাৎ বোদলেয়ারের কবিতায় মাঝরাতে রাতজাগা মন কান পেতে শোনে চার্চ থেকে ভেসে আসা জিংগলবেলের ক’য়্যার, আলোকমালায় সাজানো শহর ফিসফিস করে বলে জানলার প্যানেলে শিশিরের জলছাপ, দ্যাখো… ডিসেম্বর… সেই অনির্বাণ আলোর বিন্দু যীশু হয়ে যায়। আমার ডিসেম্বর।
চৌদ্দ পনেরো বছর আগের কথা; আমি বসে আছি একটি দোকানে, দোকানটি মূলত আমাদেরেই। দোকানের সামনে…..
১৮ মার্চ ২০১৯ মধ্যরাত! চারদিক অন্ধকারে ঢেকে আছে শুধু বাড়ির চারিপাশে বিদ্যুতের বাল্বগুলো জ্বলছে তাদের…..
জোছনা করেছে আড়ি আসে না আমার বাড়ি গলি দিয়ে চলে যায়, গলি দিয়ে চলে যায়…..
পাঠকদের প্রায় জনেই হয়ত জানেন, সমকাম কি ? সমকামী কারা ? সমকামীর প্রকারভেদ, কেন…..