আমি এক সাধারণ নারী
আমি এক সাধারণ নারী, তাইতো অসুস্থ কাউকে বলিনি,
আমি এক সাধারণ নারী, তাইতো প্রয়োজনে কাঁদতে পারিনি।
আমি এক সাধারণ নারী, তাইতো মনে স্বপন কখনো আঁকিনি,
আমি যে নারী, তাইতো হায় গো সাহসী হতেও চাইনি।
মনের গহীনে জমেছে বেদনা, ইচ্ছেকে কখনো প্রকাশ করিনি,
আমার মনের অতৃপ্ত বাসনা সকল কখনো মেটাতে চাইনি।
আমি যে গৃহবধূর তকমা পেয়েছি, সে কথা ভুলে যাইনি,
অপছন্দের মানুষগুলোকে, ভালোবাসি না বলতে পারিনি।
আমি যে গৃহবধূ,মন খারাপ হলেও বিছানায় শুয়ে থাকিনি,
ভীষণ ক্লান্ত অবসন্ন শরীরেও কাজ করে চলি, শরীর খারাপ বলিনি।
আমি কোনদিন দেরি করে ঘুম থেকে উঠিনি ,
শত কষ্ট-দুঃখ বুকে নিয়েও মিষ্টি হাসিতে কার্পণ্য করিনি।
আজ একবিংশ শতাব্দীতে, যোগ্যতায় নারীই ঊর্ধ্বে,
তবু কেন আমি সেই আদর্শ নারীর তকমা সংসারে পাইনি?
আজ মাঠে কিংবা রণক্ষেত্রে, জলে,জঙ্গলে বা আকাশ পথে নারীরা হয়েছে জয়ী,
দ্রৌপদী, সীতা, সাবিত্রী, দয়মন্তী আমাদের দেশের মহান কন্যা, এদের আমি প্রণাম করি।
সংসারের শুভ কামনায় চাকরি ছেড়েছি, তবু কেন আদর্শ বৌমা হতে পারিনি?
স্বামীর সোহাগ-সিঁদুর পরে, স্বামীর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বোঝা ভাগ করে নেই,
আমি কন্যা, ভগিনী, ভার্যা, মাতা সেবা-শুশ্রূষা, রন্ধন করে, সকলের কাছে অন্নের থালা এনে দেই।
প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয় শুধু প্রশ্ন, আমি কেন নারীর উপযুক্ত সম্মান পাইনি?
এখনো অভিমানের অশ্রু গোপনে, পুকুরের জলে ধুয়ে নেই,
তবুও আমায় কেন কেউ হৃদয় উজাড় করে ভালবাসেনি!