ঝরা পাতা
চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..
আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে,
আমি জানতাম না, অগাস্টকেও রাহুর মত গ্রাস করবে এই রাক্ষুসী জুলাই।
আমরা গুণে চলেছি, ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬ জুলাই।
আরতো পারি না…!
আর কত? আরও কত দীর্ঘ হবে তুমি জুলাই?
এবার থামো, থামতে তোমাকে হবেই।
এখন আমি আর ঘুমাতে পারি না,
আমার দম বন্ধ হয়ে আসে,
আমার সামনে দুমড়েমুচড়ে পড়া ইয়ামিনের শরীরটা কুঁকড়ে থাকে,
আমি ঘুমাতে গেলে দেখতে পাই—
সকালে চোখ খুললেও দেখতে পাই
ইয়ামিনের ফুসফুসটা তখনও একটু অক্সিজেনের জন্য তড়পাচ্ছে।
আমি চোখ বুজলেই আবু সাঈদ আমার সামনে এসে দাঁড়ায়,
দীপ্ত, রুদ্র, ফারহান, হৃদয় আর শান্তরা এসে ভীর করে,
তাদের বুক থেকে গড়িয়ে পড়া রক্তে আমার ঘর ভেসে যায়,
আমি কী করে ঘুমাই বল?
ভয়ে, প্রবল তৃষ্ণায় আমার গলা শুকিয়ে যখন খটেখটে হয়ে যায়,
মুগ্ধ এসে বলে, পানি লাগবে? পানি?
আমি পানির জন্য হাত বাড়াই,
তাকিয়ে দেখি, মুগ্ধ’র হাত থেকে পানির বোতলগুলো গড়িয়ে পড়ছে,
মুগ্ধর কপালের ফুটো থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত ঝরছে।
বল, আমি কী করে পানি পান করবো?
আমি শুনতে পাই—
ভীত, তাড়িত তৃষা, অনবরত কড়া নেড়ে বলছে,
দরজাটা একটু খুলুন প্লিজ! দরজাটা একটু খুলুন।
আটলান্টিক সাগরের এই পাড়ে,
আমি এক দুখিনি মা,
সারা রাত দরজা খুলে দাঁড়িয়ে থাকি।
আহা, আমার মেয়েটি একটু আশ্রয় যেন পায়।
সানসেডে টারজানের মত ঝুলতে থাকা ছেলেটির কথা মনে পড়ে,
কী ভয়ার্ত, কী অসহায় চোখে তাকিয়ে আছে ছেলেটি।
পুলিশের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেল ওর পলকা নিম্নাঙ্গ,
তখনও সে প্রশ্নবোধক চিণ্হের মত ঝুলে আছে।
শুধু জুতা হারাতো বলে কত বকা খেতো ঐটুকুন ছেলে,
তার মা আজ ছেলের জুতোজোড়া বুকে চেপে কাঁদছে,
জুতাজোড়া এখনও আছে, কেবল তার ছেলেটা নাই।
আমার বুকের ভেতর ক্রমাগত ধ্বশ নামে,
আমি রক্তাক্ত হই,
ক্ষোভের আগুনে আমি পুড়ে যাই।
প্রবল ঘৃণায় আমার মুখে থুথু জমে।
স্বৈরাচার তুমি নিপাত যাও!!
ছিঃ! তুমি এতটা অমানুষ?
তুমি এতটা নিষ্ঠুর!
তুমি এমননি সাইকোপ্যাথ!
তোমার যিঘাংশা এত ক্রুর! আমরা বুঝতে পারিনি।
আরও কতগুলো মানুষ হত্যা করলে, তোমার বাবা’র মৃত্যুর প্রতিশোধ হবে?
ক্ষমতার দাপটে তুমি অকালবোধন করলে,
রক্তপিপাসু তুমি, নরবলী দেবে বলেই হয়ত
পুজোর আয়োজন করলে ভরা বর্ষায়,
ছল করে, পথে নামিয়ে আনলে রক্তজবা, পলাশ, শিমূল আর কৃষ্ণচূড়ার দল,
তাদের লালে রন্জিত হল বাংলার পলিমাটি আর রাজপথ।
আমি চাই, তোমার উপর অভিশাপ নামুক
এই বাংলার আকাশ, বাতাস আর গণমানুষের অভিশাপ
বাংলার পলিমাটির অভিশাপ,
পলাশ, শিমুল, কৃষ্ণচূরা আর রক্তজবার অভিশাপ,
এই বাংলায় তোমার যেন আর হয় না ঠাঁই!!
৩৬ জুলাইয়ের নতুন সূর্য, এক নতুন খবর দিলো,
দীর্ঘতর জুলাই শেষ হয়েছে। তোমরা আনন্দ কর,
ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে দেয়ার সময় এসেছে আজ।
আজ ৫ অগাস্ট। দেশ রাহুমুক্ত হয়েছে,
স্বাধীনতার আনন্দে আমার দুই চোখের পাতা বুজে এলো,
এবার আমি একটু ঘুমাতে চাই!
চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..
স্মৃতি চাঁদের আজ দুঃখ পাবার কিছু নেই ! সবুজ পৃথিবীতে আজকের এই বিকেলে আকাশে উড়ে…..
দেবী না পরিণীতা রাতটা একা থাকে এবং নিঃসঙ্গ অন্ধকার মানে রাত; তাহলে অন্ধকার নিজেও একা…..
বিজয়ের সব মুহূর্তেই… তার অধিকার! কেন্দ্র হোক আর কেন্দ্রাতিগ বলের আসন; কেউকেউ বোরকায় রমনীয় সঙ্গানুসঙ্গের;…..