করাচিতে নজরুল
করাচি বন্দরে এককালে গ্রিক-পারসিক-আরবীয় সওদাগরেরা নোঙ্গর করেছে; অনেক স্থাপত্য চিহ্ন আজো রয়ে গেছে; যা…..
ঠিক প্রথম কবে নিজেকে চিনেছি মনে করতে পারি না, মনে করতে পারিনা কখন নিজেকে আবিষ্কার করি নারীর মতো করে। হয়তো স্কুলের ড্রেস, রঙিন জুতা কিংবা চুলের রিবনে পেঁচিয়ে উঠেছে আমার নারীত্মা। বইয়ের ভিতরে ময়ুরপালক, কয়েকটা গোলাপের পাঁপড়ি আর সাতকাহনের পাতায় পাতায় ফুঁপিয়ে আসা দমকানো কান্নারা আমারে জানান দিয়েছে আমার নারীসত্তায়। আরও জেনেছি শরীরে বাসা বাধে নারীরি রূপ। সপ্তম শ্রেণির মাঠে দাঁড়িয়ে জেনেছি আমি সম্ভাবনার নারী। কোমল নখ, বাড়ন্ত চুলের ডগা, আলগোছের বড় হবার স্বপ্ন এলিয়ে আসা দুর্মার সবকিছুই আমি হয়ে উঠার গল্প। প্রথম প্রেমপত্রের চুরমার হবার গল্পেও জানিনি নারীর জীবন।
এক নারী মনে হয় আমাকে নারী হয়ে উঠতে দেননি, তিনি আমার মা। তার মতো জীবনের তোলপাড় জমা রেখে তিনি আমায় বলেছেন হেঁটে যেতে দূরের প্রান্তরে। প্রত্যাশায় রেখেছেন খোলস ছেড়ে আমি হবো মানুষ। স্বপ্নই ছিলো আমার বড় হয়ে আয় করবো পরিবারের জন্য বাবার মতো।
কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ প্রথম প্রাইভেট টিউশন নিয়ে। হেঁটে যাওয়া পথে আবিষ্কার করি ভিন্নতর নিজেকে, টানতে হয় লম্বা জামাকে আরও লম্বা করতে। প্রতিদিনের জীবনে হয়ে উঠা নারীর ভাবনা ক্রমশ টেনে নিতে থাকে আমারে। প্রেমও হয় নারীর মতোই। বেরিয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠার কালে আমার মননে জমা হয় বহুপলি। ক্রমশ নিজেরে আবিষ্কার করি শরীরি নারী রূপে, কোমলতার নামে পিষে মারার মতো কতগুলো চিন্তা অথবা ভাবনারা এসে হানা দেয় নিজস্ব পলিমাটিতে। সক্ষমতা আর ক্ষমতার মতো দোলাচলে পড়ে যায় নারীর যোগ্যতা। যেন বা দর্শনধারীর মতো এত বড় আহম্মকী নারীর আর নেই। অথবা নারীমাত্রই থেকে যায় সুযোগের সন্ধানে। ব্যক্তিত্ব হিসেবে নারীর সারল্য অত্যন্ত দুর্বলতার নামান্তর হয় বিবেচনায়। বিপরীতে রাশভারী একটা রূপই যেন ব্যক্তিত্ব। এহেন নারীর দশায় কর্মক্ষেত্রে নারীর শত্রু ও মিত্র বিবেচনায় নেয় হালকা অথবা ভারী চরিত্রের নারী। হালকা মেজাজী নারীকে সুযোগে বলা যায় কয়েকটি টিজিং এর মতো বাক্য অথবা ইত্যকার অনেকগুলো বিষয়। সহজ সহনশীলতায় আপাত বিরুদ্ধতার শেষ হয় ঠিকই কিন্তু বয়ে নিতে হয় ।
আসি সিঙ্গেল নারীর গল্পে, যেহেতু আমি অবিবাহিত অবস্থায় প্রায় ছয় বছর চাকরি করেছি এবং প্রতিদিনই আমার সহকর্মীরা আমার জন্য একজন করে পাত্র নিয়ে এাসে হাজির করতেন যেন তারাও কন্যাদায়গ্রস্ত এবং স্বর্গলাভ তাদেরও হবেনা আমাকে বিয়ে দেয়া ছাড়া। আগত পাত্রদের সাথে আমার আপাত বিরোধ ও বিরোধিতা বেশিরভাগ মনন ও রুচিগত সুতরাং ফিরিয়ে দেয়া পাত্রের চাইতে অধিক আঘাত পেতেন যিনি দায়িত্ব নিয়ে পাত্রকে এনে হাজির করেছিলেন। এর সমাপ্তিতে এ নারীর নিশ্চয়ই কোনো সমস্যা আছে বলে তিনি ঘটকালী ক্ষ্যান্ত দিতেন এবং বিনিময়ে সবাইকে তা বলে বেড়াতেন। অথচ আমি কর্মদক্ষতায় কোনো অংশে কম ছিলাম না অথবা পরিশ্রমও কম করার মানসিকতা নিয়ে সুযোগের অপেক্ষায় থাকিনি। অপরপক্ষে সুযোগে ঊর্ধ্বপক্ষ ইনিয়ে বিনিয়ে সেরে নিতেন নানাবিধ ফারটিলিটির গল্প, পাশাপাশি বিয়ে করার উপযুক্ত সময় সংক্রান্ত । কখনো কখনো বুঝতে কষ্ট হতো তিনি কেন পরিবার পরিকল্পনায় চাকুরি করছেন না। এমতাবস্থায় ক্ষেত্রের পরিসীমায় যুক্ত হতে থাকে কিছু অধিক হীনমন্যতা। কাটিয়ে উঠতে অবশ্য বিপুল শক্তি সঞ্চারিত হয় যেটি এগিয়ে নিয়েছে আরও কয়েক ধাপ।
কর্মজীবি নারী অথবা গৃহস্থ নারী এ সংশয়ে ভেগে যে জাতি এখনো সেখানে নারীর অর্থ আয় অথবা দায়িত্ব এখনো প্রাথমিকের আরও নিম্নক্ষেত্রে। একটা অভিজ্ঞতা বলি, একবার গেলাম নিজের স্কুলের রিইউনিয়নে। প্রাক্তন সাবেক বর্তমান সমস্ত শিক্ষক থেকে গুণীজন সবাই ধরেই নিচ্ছেন সকল আমলা, ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়াররা অথবা আমার মতো কবিও সব স্কুলের কৃতিশিক্ষার্থী এবং তাদের জন্য সকলে গর্বিত। আমি পুরাই বেকুব বনে যাই এবং উপস্থিত সেখানে হয়তো আশি শতাংশই ছিলো গৃহিনী নারী এবং অত্যন্ত আনন্দের সাথে তারা নিজেদের ব্যর্থতা মেনে নিয়ে ছবি তুলছিলো। এদের বুঝাবে কে! অথবা গুণী নারীদেরও এহেন দশা কেন!
আসি লেখক দশায়, শব্দেরও নারীরূপ নাকী আছে। পড়লেই বুঝতে পারা যায় এগুলো নারীদের লেখা। যদিও আমাকে সামনাসামনি বলা হলো আপনার লেখায় নারী বিষয়টি নেই- আমি ভাবলাম তবে লিখতেও হবে পুরুষের মতো; মানুষের মতো নয়। আবারও ফিরে আসি আমি নারী!
আরও কত কী আছে এমন নারী জীবনের কাছে। প্রতিদিনই আবিষ্কার করি নিজেকে নারী হিসেবে।
করাচি বন্দরে এককালে গ্রিক-পারসিক-আরবীয় সওদাগরেরা নোঙ্গর করেছে; অনেক স্থাপত্য চিহ্ন আজো রয়ে গেছে; যা…..
তিনি বললেন, ভাষা হল ওষ্ঠের উপর সুধার মতো। আর বললেন, কবিতা যথেষ্ট স্বাদু, কিন্তু…..
রূপকথা পড়েছেন ছোট বেলায় অনেকে একথা আর বলা সন্দেহমুলক, প্রযুক্তির ব্যবহার জন্মের পর থেকে এখন …..
একটি পরাধীন দেশ আর তার বাসিন্দাদের মনে স্বাধীনতার আকুতি আমরা দেখেছিলাম ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতে। এর…..