নাগরিকত্ব
আমার ধ্বসে যাওয়া কাদামাটি দিয়ে তুমি গড়ে নিলে তোমার নতুন ঘরের স্তম্ভ আমার স্বপ্নের…..
ভাবনার অলিগলিতে থাকিনা আরও ক্ষাণিকক্ষণ
কিই বা এমন ক্ষতি হয়ে যাবে তাতে।
জীবন থেকে পালিয়ে পালিয়ে যদি
আরও কিছুদিন বেঁচে থাকা যায় তবে
কি দোষ হবে এমন বলবে আমায় ?
বাঁচার ইচ্ছে এ যে শাশ্বত তবে
মরণের ইচ্ছেকেও শাশ্বত মনে হয় কখনো কখনো।
জীবন মরণের নিপুণ চপল কলহের চক্র
প্রায়শই চেতনায় ঘূর্ণায়মান এক যাত্রা।
আজ জীবনের এই আলসে ক্ষণে
মাতাল হয়ে ডুবে আছি যেন
সেই স্থিতিকে আরও দীর্ঘস্থায়ী করতে
জীবন মরণের সন্ধিক্ষণকে উপেক্ষা করতে।
তবে খুব শীঘ্রই শেষ হয় এই হাল
দেখি অতিমাত্রায় তিক্ত বাস্তবতার চিত্র
আসে কর্কশ আওয়াজ চিৎকার
আসে বেদনা ভরা কান্না হাহাকার
আসে অনর্থক কঠিন বিরক্ত বাঁধা।
এভাবে অনর্থ আর কতকাল ধরে থাকবো পরে
যখন মুক্তি মিলেনা নিঃশ্বাসে
ছুটি মিলেনা শব্দগুলোর
তখন পালিয়ে বেড়ায় এভাবেই অনুধাবন
প্রচন্ড বিপজ্জনক স্বাধীনতার দিকে খুব।
মেঘেরা এসেছিল গৌরবে
ভারি বর্ষণেও তাই বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে ঘন ঘন।
হুংকার দিয়ে জানতে চায় তার অস্তিত্ব যেন
বলতে না পারা দুমড়ে মুচড়ে দিচ্ছিল
অপ্রকাশিত শব্দগুলো তাকে শ্বাসরুদ্ধ করছিল।
স্বত্ব আটকে রাখা অস্তিত্বহীনতারই অপর নাম
জানান দিচ্ছিল বারবার মেঘদূতেরা।
ফোঁটায় ফোঁটায় ক্রন্দন মাটিতে পড়ে
সেই সুর বাজাচ্ছিল একযোগে।
দস্তুর সংহারের আহূতিতে আকুল হয়ে।
বজ্রপাতের শব্দ আর পবন মিলে
সেই পতাকাকেই তুলে ধরতে চাইছে।
বিজলির আলোক যেন নিস্তারের মার্গ দেখাচ্ছে।
মেঘদের ভাবনারা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে।
ক্রন্দন সিক্ত তরু পল্লব গিরিও মুক্তির মিছিলে আজ।
ডাকছে শ্রাবণের উত্তাল ঝিরঝিরে বৃষ্টি
ডাকছে কদমের মন মাতানো সৌরভ
ডাকছে সবুজ পল্লবে ভ্রমণকারী জলের বিন্দু।
ডাকছে মাতাল বুনো হাওয়া
তার সাথে নেচে নেচে বৃক্ষ লতারাও।
ডাকছে রং মেশানো উচ্ছৃঙ্খল প্রজাতিরা
ডাকছে ডানা মেলে উড়ে যাওয়া বিহঙ্গম
ডাকছে শিউলির শুদ্ধ শুভ্রতা।
ডাকছে বয়ে চলা তটিনীর কল্লোল
সেই সাথে টেউ ভাঙার উল্লাসও।
ডাকছে নৃত্যরত শৈল্পিক শিখণ্ডী
ডাকছে কৌতূহলী ঘাসফরিং
ডাকছে কচুরিপানা ফুলের অনিন্দ্য সৌন্দর্য।
ডাকছে ইন্দ্রজালীক হিজল বন
সম্ভাষণের প্রবৃত্তি নিয়ে ডাকছে শ্রাবণ বারিদ।
তুমি একটুও লক্ষ করোনি
দারিদ্র্য তাদের কী নির্মমভাবে
ভক্ষণ করেছিল ক্ষণে ক্ষণে
দুটি হাত আজ পাথর কঙ্কাল
দুটি চোখ আজ নির্জীব
সেই চাহনিতে নিস্তব্ধ শূন্যতা।
তুমি একটুও লক্ষ করোনি
পশু পাখিদের-মানুষের খাবারের লড়াই
পথশিশুদের কষ্টকর একটি দিন
রোগা জীর্ণ বৃদ্ধ লোকটির অশ্রু বিন্দু
শীতার্ত মানুষের যন্ত্রণাময় নির্ঘুম রাত
অনাহারে থাকা আসমানিদের আর্তনাদ।
আমার ধ্বসে যাওয়া কাদামাটি দিয়ে তুমি গড়ে নিলে তোমার নতুন ঘরের স্তম্ভ আমার স্বপ্নের…..
নিজেদের ভেঙে পড়া ঝনঝনানি শব্দে প্রতিটি ভোর হয়। ভাঙা টুকরোগুলো নতুন অবয়বে জুড়ে দেয়ার…..
অচেনা আমি হতাশার নোনাজল ঢেউ খেলে হৃদয়ের আঙিনায়। ভাঙনের সুর মাতাল অগ্নি ঝরা সায়াহ্নে আঁধার…..
তোমায় নিয়ে বাঁচি একদিন আমাদের পৃথিবীটাকে সূর্যসমেত গিলে খাবে একটা কালো বিন্দু সেদিন কি পুরো…..