উদাসীন মল্ট (তৃতীয় কলি)

স্বপন রায়
ধারামুক্ত কবিতা
Bengali
উদাসীন মল্ট (তৃতীয় কলি)

এক. 

আমি অবাকবিদ্ধ জেনে তুমি অপাপ
তুমি ঠিক না আমি, আমাদের গ্যাং

শোনো বাওয়াল খয়েরি হচ্ছে, শোনোনা
আমরা কোয়েলে পা রাখি, সঙ্গমটা দূরে হোক

যাদের পেট আছে তাদেরও ঠাসা আছে ইলেকট্রন
নাভির কথা থাক, উদাসীন মল্ট তাই শুয়ে আছে
খেত ছেড়ে উঠছে না

আমি বিদ্যুৎ, তুমিও। চমকাই। মেশিনগুলো গরম না হলে
দাঙ্গা হতে কতক্ষণ

আমাদের গ্যাং এই সবকিছুর মানে বলে দিল, রুটি
গোল গরম, বলে দিল খাও। বেঁচে থাকার মানে, খাও।

উদাসীন আমরা সেইথেকে..

দুই.

সখের জিনিসগুলো পড়ে গেছে, আমি কী পায়রাদেরই
ফেলে দিলাম, পড়ে গেছে ভেবে? চায়ের কাপ, এই আমার দুঃখ
চিনেমাটির, এই আমার আনন্দ
রেললাইনের দিকে তাকিয়ে, মানে কিন্তু রেললাইনকে দেখা নয়, বা
ট্রেনের সময় নিয়ে কথা বলার আগে, কাল বেঁচে থাকবো কিনা, আর
কী কী হতে পারে থাকলে, উড়লে পায়রারা যেদিকে রেললাইনকে সীমানা ভেবে গুলি খেয়েছিল, ডানার আওয়াজ আর পালিয়ে গিয়েছিল গরুরা, ধুলো ওড়াতে ওড়াতে, যেদিন গোধুলি আঁকা হল

সখ তো এই গেয়ে ওঠা। পেয়ে ওঠা। চেয়ে ওঠা।

পায়রাদের হলে বুলবুলিরও হবে
চায়ের হলে, মদেরও, দোকানগুলো তো পাল্লা দিচ্ছে..

 

তিন.

প্রস্তাব নেই। কুহক আছে, পাঠ করার আগে মনে হল
দরজাটা বন্ধ, খোলেনি। প্রস্তাব আর কুহকের ভেতরে খয়েরি রঙের দরজাটা
এমন নয় যে আপেলের রঙ সেপ্টেম্বর, যা কিছু হতে পারে, কুহক পেরিয়ে যাওয়াই যখন দরজা খুলে দাঁড়াবে
আপেল প্রস্তাব পড়বে
কুয়াশাকুহকান্ত
সে এক দুরন্ত আপেল, সে এক আর্দ্র উদাসী, কানের পাতা দুটো রেখে যে চলে গিয়েছিল এটা সেটায়…

চার.

এই যে
যে এই
লিখে মনে হল, একটা রাস্তাই লিখলাম, একটা লোক, পাশে আরেকটা
পা আছে, রাস্তাও তাই নিপীড়িত
সয়ে যাচ্ছে, মা হয়ে
বাবাদের
রাস্তা বৃষ্টি হলেই যে এইসব ভেজা শরীরের সোঁদা ক্রাশ পাঠায়
গাছের নিচে ফোঁটা ফোঁটা এই যে
হুকখোলা
শ্রাবণজলঘোলা
একটা বারান্দায় ঠেকে যায়, কাঠের রেলিং, খাঁচায় ময়না, বাইরে হঠাতই রাস্তা শেষ, আঙুলই এমন, ময়না খাচ্ছে
যার হাত থেকে
উৎস উৎস ভাব এই যে এখানেই তো, বিস্ফোরণের আগে
হারমোনিকার দিনগুলো

স্বপন রায়। কবি। জন্ম ১৯৫৬। ভারতের দুটো ইস্পাতনগরী জামশেদপুর এবং রাউরকেলা স্বপন রায়ের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। প্রথমটি জন্মসূত্রে। দ্বিতীয়টি বড় হয়ে ওঠার সূত্রে। নব্বই দশকের শুরুতে 'নতুন কবিতা'র ভাবনায় সক্রিয় হয়ে ওঠেন। পুরনো, প্রতিষ্ঠিত ধারাকবিতা ত্যাগ করে কবিতাকে নানাভাবে...

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ