ঋতুম‌তি

রিনা রাণী দাস
কবিতা
Bengali
ঋতুম‌তি

ঋতুম‌তি

বাহুর আল খু‌লেই-
নদীর মু‌খের কথা কয় ঘা‌টের সর্দার,
চা-‌বি‌স্কিট, হ‌রেকরকম চিৎকারে কাঁ‌পে তনু মন।
অ‌চেনা নদী‌তে চেনা-মুখ…
পি‌দিমের জ্বালামু‌খে উরু উরু দুরু প্রাণ,
ডুব দেয় সারাক্ষণ।
বাদাম উ‌ড়ি‌য়ে মা‌ঝি একা একা খোঁ‌জে…
ভা‌টিয়‌ালি বসন্ত বাতাস,
ভিত‌রে কাঁপন তু‌লে খু‌লে যায় গ‌মের বাগান।
আর জিম‌নে‌সিয়াম থে‌কে তাগড়া জোয়ান হা‌সে…
রজঃস্বলা ছয়‌দিন পর।
নদীর হা-মুখ জা‌নে- পৃ‌থিবীর সব দেনা-পাওনা।

 

আয়রন বু‌কে রজঃস্বলা

আয়র‌নি সম‌য়ের চাঁদ বিঁ‌ড়ে তো‌লে একাদশী,
তবু পি‌ষে যাঁতার ভিতর…
তুষ ভে‌ঙে প‌ড়ে কি প‌ড়ে না! ‌ঢেঁ‌কির নাছোড় শ‌ব্দে।
‌জলজ কলস শুধু জা‌নে।
‌বেহুশ সম‌য়ে উ‌ত্তেজনা রাখ্ ঢাক্ নেই কিছু…
‌পিত‌ল-তেঁতুল ঘষাঘ‌ষি…
অনন্ত সুন্দর পোড়াভাত ম‌নে নয় মে‌নে নি‌য়ে
উনু‌নের উপর জ্বল‌ছে।
Physiological সম‌য়েও… প্রকৃ‌তি প্রস্তু‌তি থা‌কে,
ভ্রম‌র কি সে খবর রা‌খে?
যোগ্য কা‌রিগর মা‌টি ছে‌নে- ভরা পূ‌র্ণিমা আঁচড়ে
দেবীর আঁকরে দেয় পোঁচ।
রজঃস্বলা ছাড়া বসু, শিল্পীর তু‌লি‌তে মূল্যহীন।

 

বাঁকাচোখ

ক‌বিতার দে‌হে এত কামুকতা?
নাকি, কবির শরীর দে‌খে-
কা‌র্তিকীর লালা ঝ‌রে? ‌‌হে, দু’ পা‌য়ের অলক…
ক‌বির গ‌র্ভ-ফু‌লের তুই-ই কি, কলঙ্ক ফলক!
ক‌বিতারা প্র‌তি‌দিন পঞ্চঈ‌ন্দ্রীয়ের লো‌ভে-
শারী‌রিক-মান‌সিক বলাৎকার হয়।
‌সে কা‌রো মা, বোন, মে‌য়ে; অথবা স্ত্রী, পুত্রবধূ..,
জঠ‌রের জ্বালা সহ্য ক‌রে, একখণ্ড মাংস‌পিণ্ড
দুম‌ড়ে মুচ‌ড়ে পৃ‌থিবীর প‌থে আ‌নে…
শুধুই অলক-মনুষ্যদণ্ড?
নারীর ম‌তোই ব‌লি… জন্ম আমার আজন্ম পাপ?
য‌দি তাই হয়- পা‌পের সমু‌দ্রে ভে‌সে…
‌অঙ্কশা‌য়িত হ‌বোই…‌ষোলহাজার গো‌পিবালক!
গর্ভ-ফুল ছিঁ‌ড়ে ফুঁ‌ড়ে ক‌রে দেব সব ছারখার।

ঘাম

সংরক্ষণ সু‌বিধার ফল-
মি‌হি-মি‌ষ্টি-তেঁতো কে না জা‌নে।
হিজা‌বের সতীত্ব সিঁদু‌র- পূণ্যতায় নারী জাগরণ!
না‌কি, তু‌মিও মানুষ!
‌সৃ‌ষ্টির আন‌ন্দ সমানুপা‌তিক হ‌লেও…
জঠ‌রের মূল্য কত?
যার নেই- সেই বো‌ঝে তার দাম।
একমাত্র উপল যুগল ‌পৃ‌থিবী‌র মধুর সিঞ্চনে
দু‌ধের নহ‌রে ভি‌জে। পৌরুষ! – পুরুষ চোখ
ওখা‌নে খুঁ‌জে জৌলুস।
‌তোমার ক্লি‌ভেজ চে‌খে- পাউরু‌টির ম‌তন
তুলতু‌লে কাঁচু‌লির নি‌চে
শুরু হয় হয়রা‌নি, শেষের ক‌বিতায় ধর্ষণ।
পণ্য না হ‌য়ে ন্যাং‌টো হ‌লে…
কামুকতা ধেই ধেই ক‌রে মাকু‌রের ন্যায় ছুট‌বে না।
তার চে‌য়ে aboriginal হওয়াই ভা‌লো নয় কি?
কার দো‌ষে দোষী, কার পা‌পে পাপী
কার দৃ‌ষ্টে সৃষ্ট অরাজক প‌রি‌স্থি‌তি
‌ভে‌বেছ কি নারী?
ক‌বে বুঝ‌বে ঘা‌মের মূল্য?
গহনার বেড়ি, র‌ঙের পা‌লিশ,
আর সভ্যতার ক্লি‌ভেজেই চোখ রে‌খে ব‌লি…
বৃন্দাব‌নে আগুন লা‌গি‌য়ে-
ক‌পোল, ও‌ষ্ঠের থে‌কে- সু‌ডৌল উপ‌ল ব‌ে‌য়ে
উরুস‌ন্ধি দৃঢ়তার ঘাম, ঝরুক সোনালি ‌রো‌দে…
সমা‌নে সমান।
ব‌লো, “আ‌মিও মানুষ, আ‌মিও পা‌রি…পারব।”
সৃ‌ষ্টিই আমার রথ। ঘা‌মের আঁতুড় ঘ‌রে…
তত্ত্বম‌সি সব দেবতার একমাত্র আ‌মি-ই আধার।
‌নয় যৌনগ‌ন্ধি ঘাম, এখন নোনতা ঘাম।

রিনা রাণী দাস। কবি। দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে বসবাস করেন।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..