যাযাবর
যাযাবর যাযাবরদের ছোঁড়া কাঠে আগুনও অসংযত,ঝড় উঠে ইত্যবসরে কিছু লবণ দানাও জমা পড়েছে… উদ্বাস্তু রোমে…..
আমি যখন নিমগ্ন হই
তখন একটি নদ কোথাও বাঁধ ভাঙার হুংকার ছাড়ে
আমি যখন নিমগ্ন হই
তখন তোমার অথৈ আদর
সমস্ত দরোজা ভেদ ক’রে ঢুকে পড়ে আমার চার দেয়ালের
ছোট্ট ঘরে
আমি হাত বাড়াই
হাতের মুঠোয় উঠে আসে হরপ্পার চাঁদ
আমি চোখ ফেরাই
আর সেই চাঁদনী রাতে কী এক ঘোর সামলাতে সামলাতে
শুনতে পাই
ভাঙার শব্দ- শুনতে পাই গ্রহনের কাল এবং উত্তীর্ণ আওয়াজ
আমি তখন আবারও নিমগ্ন হই আবারও নিমগ্ন হই
একটি প্রাচীন ঘূর্ণির অসভ্য মানচিত্রে একের পর এক
রোপণ করি ইউক্যালিপটাস
এইভাবে-
আমার ছোট্ট ঘর তোমার উত্তাল ঢেউ আর ওই নিমগ্ন চাঁদ
একসময় পৌঁছোয়
সভ্য পৃথিবীর প্রাণের প্রথম প্রাতে
কোথাও কাবু হইনি আমি
ইহকাল শর্ষেপাতার মতো সবুজ ও হলুদের ভেতর
ভ্রমর কালো দাগ নিয়ে
দুলছে
আমার ঘর সংসার সব-
শেষ পাটাতনে সেই কবে লিখেছিলাম বিচিত্রার প্রতি
অনুরোধ ও প্রেম
আজ
এক শতাব্দীর পর সেখানে পাপ এসে মিশছে
মাটি ও মানুষের থেকে দূরে
কংক্রিটে
কোথাও পড়ে থাকিনি আমি
মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে ভেসে উঠছি বারবার আমৃত্যুর
দিকে
দেয়ালে দেয়ালে বিঁধে আছে আমার রাঁধারা
জীবনের বিধি নিয়ে
এইসব কাল- ইহকাল- শর্ষেপাতার মতো সবুজ ও হলুদের ভেতর.. তবুও
কোথাও উবে যাইনা আমি
উঁচু করেছি আমি শস্যর ডালা
সেখান থেকে এক এক করে ঝরে পড়ছে আমার মৃত্যুরা
আর-
তাদেরকে ভাবতে ভাবতে যখন মগ্ন হচ্ছি নিবিড়তায়
খুলে যাচ্ছে ভয়
খুলে যাচ্ছে সৌজন্যতা
খসে পড়ছে মূক মুখের মানচিত্র
আর যখন উপর থেকে নিচে আর নিচ থেকে তল-এ
পাঠাচ্ছি আমার অভিপ্রায়
প্রান্তের দিকে
দেয়ালে-
আমাকে দেখে তোমার বুকের ভিতর ও মনে- বদলে যাচ্ছে
সম্ভাব্য রক্তের ক্ষরণ
এইভাবে- উঁচু থেকে- আসমান থেকে- আমার মৃত্যুদের এমন পতন-
আমার অভিজ্ঞান
পৃথিবীর সমান বয়সী বিশ্বাসেরা সমূহ শোরগোল নিয়ে
আমার দুয়ারে
ঘুমকে ভাঙাতে এসছে
অথচ দ্যাখো আমার দেয়ালের ভেতর আমার যে স্রোত
আমার যে গহীন যাপন
তাতে কি ভাঙন সম্ভব
আমি কি বিশ্বাসী
আমি কি বিশ্বাসের যোগ্য
আমি কি বিশ্বাস আকাশকে ছুঁতে দেবো এই ঘন রাত্তিরে
নাকি এই ঘর ও ঘোরে
ভুলে যাবো মানুষকে হত্যার নিপুণ শ্বাসমূলগুলো উঁচু হয়ে আছে
ঘর্মাক্ত জমিনে (শতাব্দীর পর শতাব্দী)
ভুলে যাবো নারী ও নয়ন
আলো
এবং
আশার জৈবিক সন্তরনে আমার জিঘাংসা ও জিজ্ঞাসা প্রত্যর্পিত হয়
কাল থেকে কালান্তরে
এই অমোঘ আয়োজন আমার নয়
আমি তীব্র অতিথিপরায়ণ ঠিকই কিন্তু আমার কোনো ইচ্ছে নেই
বিশ্বাসের যোগ্য হবার
আমার দোষ কেবল দরজার ওপাশে
আমি তোমাদের শোরগোলে নিজেকে খুঁজে পাইনা কোথাও
এই পৃথিবীর মৌন মানচিত্রে আমার মনেদের ইউনিয়ন
আমার ঘর
আমার চার দেয়াল
প্রতিবার চেষ্টা করেও ব্যার্থ আমি
মন থেকে নামতে গিয়ে জড়িয়ে যাচ্ছি আরও
অনেকের মতো
আমিও বুঝতে চাইছি- কেন
মানুষের নিজস্ব অবয়ব কী এমন-ই
এই-রকম
এরপর আয়নাগুলো ভেঙে দিচ্ছে আমার অন্তরাত্মা
ওপাশ থেকে
ওই পাড় থেকে
একে একে
যার অন্তড়ালে রয়েছে আমার প্রিয়তম দেয়ালেরা
যাযাবর যাযাবরদের ছোঁড়া কাঠে আগুনও অসংযত,ঝড় উঠে ইত্যবসরে কিছু লবণ দানাও জমা পড়েছে… উদ্বাস্তু রোমে…..
কবি গো ওওও,আর যত গুণীজন কি দিয়ে পূজি তোমাদের চরণ আমি যে অভাগা জানি না…..
আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে, আমি জানতাম না, অগাস্টকেও রাহুর মত গ্রাস…..
অভিশাপ মেঘের ভেলায় নিঃশ্বাসে ক্লান্তির ছাপ সবুজের নীড়ে আপন ঠিকানার খোঁজ এক ফালি সুখের নেশায়…..