প্রেম এবং অপ্রেমের কাব্য
এ-এক প্রেমের শহর, এ-এক প্রেমের শহর, এখানকার বাতাস প্রেমের সৌরভ বয়ে আনে। হাজারো প্রেমের কলি…..
ঊনত্রিশটি বুলেট ধারণ করেছিল শরীর
ধারালো চাপাতি, তারও অধিকার ছিল
মনে আছে সব
সব মনে আছে
রক্তের মুল্যে খুব হেসেছিল কেউ।
শিশিরে ভিজে যাওয়া ভোরের প্রথম কৃষ্ণচূড়া
অনেকটা সূর্যজমিনে গুচ্ছক স্কারলেটের মত
কিংবা লাল গ্রহের মত একেবারে একা
কাঁচ গ্লাসে রেড ওয়াইন স্বচ্ছ লালে,
মাসুদের শার্ট রক্তে ভিজে যায়।
অথচ কি পরম মমতায় একদিন পিতা কিনেছিল সে শার্ট
জননী রেখেছিল বুকে হাত ছেঁড়া বোতামে
প্রেয়সী ধরেছিল শার্ট খামছে কখনো আড়ালে
স্পর্শের বাহিরে মমতা আজ বাতাসে লুটুপুটি খায়;
দ্বায়বদ্ধতা ছেড়ে,
মাসুদের শার্ট রক্তে ভিজে যায়।
কটিবন্ধে যে বেল্টটি কিনেছিল সে মহা উল্লাসে
দ্বিখন্ডিত সেটি আজ দেহবন্ধনে হিমশিম খায়
সময়কে তাড়িয়ে বেড়ানো হাত ঘড়িটি
জীবন থামিয়ে দেয় সহসা জোর টানে
শেষ নিঃশ্বাসের তীব্র যাতনায়
শীতল চোখে;
মাসুদের শার্ট রক্তে ভিজে যায়।
বিলাসী মধ্যাহ্নে প্রিয় বাইক পড়ে থাকে গ্রীল ঘেঁষে
কবুতর জোড়া উড়ে যায় মেঘময় নীলিমায়
জননীর হাতে ট্যাংরার ঝোল-ডাল চচ্চরি
গামছা কাঁধে যখন তখন প্রিয় সহোদর খুনসুটি
মেঘ কাটিয়ে উড়ে যায় বাতাসের আগে
নাগরিক উচ্ছ্বাসে জননী তখনো সবুজের খুঁজে
লবণাক্ত শরীর ছেড়ে পরাশ্রীকাতর মায়া উড়ে যায়
উনত্রিশটি বুলেটে;
মাসুদের শার্ট রক্তে ভিজে যায়।
ছাব্বিশ বছরেও বন্ধ হয়নি,
হৃদয়ের রক্তক্ষরণ
মনে আছে সব
সব মনে আছে
যা হয়েছিল, হবার কথা ছিল না যা
ধূসর কুয়াশায় কবর হয়েছিল কার
কার হবার কথা ছিল
মনে আছে সব
সব মনে আছে
বিশাল উঠোনটায় রক্তের জলপ্রপাতে
দুঃখ গড়াগড়ি খেয়েছিল কবে
কে কেঁদেছিল, কে সঙ্গমে বিভোর ছিল
ভুলিনি ঈশ্বরের ছাব্বিশ বছরের নীরবতা
মনে আছে সব
সব মনে আছে।
একটি প্রাণ ঝরে গিয়েছিল সেদিন
এপ্রিলের ভ্যাপসা গরমে
চারিদিকে হট্টগোল,
প্রতিবাদ মিছিলে সড়ক মহাসড়ক বিক্ষিপ্ত
দলে দলে স্বজনের আক্ষেপ,
হতৈষীর চোখে আখেরাতের ব্যাপক প্রাপ্তি
“লাইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ”-
সব ভাল মন্দের হিসাব নিবেন দয়াময় আল্লাহ,
এমন শহীদি মৃত্যু বলো কার ভাগে জোটে?
মাটি চাপা দিয়ে এবার শুকরিয়া আদায়ের পালা
ওদিকে লক্ষ মানুষের ভিরে জীবন্ত কিছু লাশ পরেছিল অনাদরে
কেউ দেখেনি, কেউ বোঝেনি;
বাড়ন্ত শিশুটি নির্বাক দাঁড়িয়ে ছিল দূরে।
শিশুটি চিৎকার করে এদিক ওদিক ছুটে
অতপর শূন্য দৃষ্টিতে ভয়ানক মৃত্যুকে দেখে
তার দেহ ভিন্নভিন্ন অজস্র গুলিতে
এলোপাথারি চাপাতির কোপে মাংস খুলে খুলে পড়ে
হাতের ঘড়িটি পরে ছিল দূরে
রক্তের মোহর চকচকা বেল্টটি জুড়ে
শিশুটি ভাবে আহা!
কি স্বচ্ছ জলের রং; লালে লালে অপুর্ব সন্মোহন।
কোদাল, বেলচায় মানবতার বুক খুঁড়ে
মুশতাককে পুঁতে দিলে তুমি; ভীষণ আঁধারে
বাঁশ চাটাইয়ে ধাপাচাপা ইতিহাস
আর কত খেয়ে যাবে বাংলাদেশ তুমি
তথ্য নির্ভর স্বচ্ছ মগজ?
লাথি মেরে ভাঙেনি চোয়াল তোমার
খামচে ধরেনি বুক, অনাধিকারে
শুধু বলেছিল, দু’টো কথা
শব্দ-কলমে ধরেছিল আপাময় বুকের ব্যথা
পুঁতে দিলে তারে, বুক ফুলিয়ে
আহা! স্বাধীন বাংলাদেশ।
কাল কিশোরটাকেও পুঁতে দাও
কিংবা বল, পুঁতিনি
হারামজাদা হাঁপাতে হাঁপাতে পুঁতে গেছে
বলে দাও, রাষ্ট্রদ্রোহী ছিল সেও
লিখে নাও সংবিধানে,
‘কলম হাতে সকল হারামির ফাঁসি নিশ্চিত’
তারপর,
শুধু তুমি বেঁচে থাকো ফোল্ডিং সিলিন্ডার টুপিতে
একা।
অভিশাপ অভিশাপ অভিশাপ;
অভিশাপ তোমাকে।
*কে মরে, শূন্য হয় কার বুক
যোনী ফাটিয়ে বুক দর্পে
কে খেয়ে যায় মধ্য দুপুর?
*অনাকাঙ্খিত বিদায় বুক ফুটো করে
রক্তনদী ভাসিয়ে নেয় সব
যা ছিল, বাক্সবন্ধি তাদের ঘরে।
*
বুক পকেটে শংসাপত্র ক্ষুধায় কাতর
ঊষার প্রান্তরে চাবুক রোদে
কে আঁকে খাতায় ইট-পাথর।
*
মানুষের গন্ধ উবে গেছে অনেকদিন
রাজপথে কুকুরের দল উল্লাসে
শোধ করে অধিকার-স্বাধীনতার ঋণ।
*
শকুনগুলো অনাধিকারে রাস্তা মাপে
বেশ্যার চোখে শ্রেণিকরণে ভুলে যায়,
নিঃশ্বাস নিতে আজ অক্সিজেন লাগে।
ফ্ল্যাশ মব ছত্রভঙ্গ, ঘোর অপরাধ
এখন মজুরি পরিশোধে গুলিবিদ্ধ করছো বুক,
মাতার থুলি
প্রতিরোধে সজোরে মারছো লাথি
আমার গায়ে, আমাদের গায়ে
হাড় ভেঙ্গে দিচ্ছো
চুল টেনে ধরছো
লাঠি-হাতুরী, বুলেট-বারুদ
সুযোগমত স্তনযুগল; নির্বিঘ্নে ছুঁয়ে দেখছো।
হিটলারতন্ত্র তুমিও বুঝো, আমরাও বুঝি
এত নির্বোধ ভেবোনা
তুমি ভুলে যাও,
আমাদের হাড়ে আগুন লেগে গেলে
চোখে আমরা সাদা কাপর বেঁধে দেই
গ্রেফতার, জেল-জরিমানা তোয়াক্কা নেই কোন
যুদ্ধের দৃঢ় সম্মতি চোখে আমরা ছুটি লক্ষ্য নির্ধারণে
বিদ্রোহ হবে বুকে বুক ঘেঁষে, সাম্যের দলবন্ধনে
ন্যায্য দাবীতে শ্রমিক আন্দোলন,
সংস্কারের প্রজ্ঞাপন, নয় আলাপন
ফ্যাসিবাদ ছাড়ো! নয় যত পারো মারো
আমাদের ক্ষেপালে পরে; ভূগর্ভ হতে শিকড় উপরে যাবে
জেনে রাখো!
আমরা সেই শ্রমিক সমাজ; ইতিহাস সাক্ষী।
কেউ আপনাকে আঘাত করছে
আপনাকে সম্পুর্ণ ভেঙ্গে দিতে চাচ্ছে
আপনার আত্মবিশ্বাস, প্রচেষ্টা
উদারতাকে দেখছে দুর্বলতা হিসাবে
কেউ আপনার চেতনাকে,
একদম খন্ড খন্ড করে পুড়িয়ে দিতে চাচ্ছে
চাচ্ছে, আপনি সোজা হয়ে না দাঁড়ান
আপনি নতজানু হয়ে কারো কৃপায় থাকুন
কেউ চাচ্ছে না আপনি,
নিজ সততা ও জ্ঞানে মহিমান্বিত হন
আপনার আদর্শ-নীতিতে জ্বলে উঠুন
কেউ চাচ্ছে, আপনি বদলে যান
আপনি উদার হন; অসৎ মিথ্যাচারীদের পক্ষে
চাচ্ছে, আপনি মানবিক হন তাদের পক্ষে,
যারা সমাজকে ধোঁয়াশায় আবৃত্ত করে রাখে!
কিন্তু না। একদম না।
এখন আপনাকে যা করতে হবে, তা হল
নিজেকে নিজের মত রাখুন
কেননা, অসৎ, মিথ্যাচার, ভণ্ডামির সাথে
মানবতা-নৈতিকতা খাপ খায় না।
আপনি আপনার মত থাকুন
কেননা, মিথ্যা এবং প্রতারণার সাথে
কোনও বোঝাপড়া হয়না।
এক বিভৎস প্রতিরোধ চলছে বহুদিন
যেদিকেই যাই লাথি এসে পড়ে বুকে
আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে বেনিতো মুসোলিনিরা
মাদুর পেতেছে সর্বত্র
ভয়ানক ক্ষুধায় শকুনের দল
অস্থিরতায় চেটে খাচ্ছে কলম-রং তুলির আঁচড়ে;
বাক স্বাধীনতা, অধিকার, চেতনা!
নারীর সম্ভ্রম খুবলে খেতে গিয়ে,
ভুল করে জননীর রসটুকু খেয়ে নেয়
বাক্য হরনে ওরা শক্ত চোয়াল চেপে
জিব টুকো ছিঁড়ে নিতে চায়
অনধিকার, জন্মান্তরের অধিকার যাদের
তারা বিশ্বের মাটিতে,
পুঁতে দিতে চায় নিজ সংবিধান, আদর্শ-মতাদর্শ।
বিকৃত শকুনের দল কলম স্বাধীনতা সংজ্ঞায়ীত করে
বিভ্রান্তি, অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলায়
মেধাবী মগজ খেয়ে যায় ক্যাম্প, বন্দীশালায়
ভয় দেখিয়েই জয়- এখন সাংবিধানিক আইন।
বাক স্বাধীনতা একটি মুক্ত সংবাদ-এলিয়ানর রোজভেল্ট
জানতেন কি তিনি,
বেনিতো মুসোলিনিদের সংবিধানে
বাক স্বাধীনতা বলে কোন শব্দ নেই?
স্বার্থরক্ষার দলীয় টয়লেট পেপার যারা,
ক্ষমতার আঘাতে তারা ই কবির কলমকে রক্তাক্ত করে
বীভৎস রক্ত চক্ষুর হিংস্র শকুনেরা ভুলে যায়,
কবি, কবিত্ব লুকিয়ে লাথি মারতে জানে শকুনের পাছায়
কেননা, কবিতা মানবিক স্বাধীনতায়
বিদ্রোহ ঘোষণা করে।
আপনি বলেছেন স্বীয় প্রভূর প্রতি নিশ্চিত আনুগত্য প্রদর্শন করো
শিরক করোনা
কেননা তিনিই তোমাদের জীবন রক্ষাকারী
আপনি বলেছেন ধরনীতে আপনার সৃষ্টি প্রকৃতিকে মহিমান্বিত করবে
কেননা আপনি সেরা সৃষ্টিশীল এবং
আপনার লক্ষ কোটি সৃষ্টিকে ঘিরে আছে আপনার প্রেরিত ফেরেস্তা ও আশীর্বাদ
কিন্তু আমরা যারা আপনার সুরভিত বাগান হতে সমূলে বিনাশ
আমরা যারা দূর্গন্ধময় জলাশয়ে পতিত, তাদের কি হবে?
লক্ষ কোটি প্রাণ আমরা ক্ষুদার্ত, আমাদের কি হবে?
আমরা শ্বাশত চিরসুন্দর আপনার ভাস্কর্য্য শিশু,
আমাদের মাথায় হাত বুলানো দরকার
আমাদের কি হবে?
আমরা নিপীড়িত জনগোষ্ঠী বাক স্বাধীনতায় বধীর
আমাদের কি হবে?
আমরা পুঁজিবাদী সমাজে ইঁদুর-বিড়াল লড়াইয়ে বুর্জোয়া-প্রলেতারিয়েত শ্রেণি
শোষণ শাসনে কে কাকে হারাবে?
আমরা সাম্যের লড়াইয়ে শ্রেণি বিভাযনে নিস্পেষিত
আমাদের কি হবে?
আমাদের দৃষ্টি প্রসারিত করার সুযোগ নেই
সংকুচিত দ্বিধাগ্রস্থ বিবেকে আমরা অন্ধকারে নিমজ্জিত
আমাদের কি হবে?
আমরা হাজার-লক্ষ অত্যাচারিত অবলা যাদের সম্ভ্রম নিরাপত্তা চাই
আমাদের কি হবে?
আপনি বলেছেন সবর এক এমন যন্ত্র, এমন তীর, এমন সৈনিক
যে কখনো লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়না
আপনি বলেছেন,
‘হে ঈমানদানগণ! সবর ধারণ কর এবং মোকাবেলায় দৃঢ়তা অবলম্বন কর’
আপনি আরো বলেছেন,
‘আর তোমরা সবর ধারণ কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা রয়েছেন তোমাদের সাথে’
হে বিশ্ববিধাতা! হে অভীক নৃপতি!
আমরা যারা প্রতিনিয়ত শোষিত- প্রশ্ন জর্জরিত
আমরা যারা আপনার অনুকম্পায় ধৈর্য্যহীন
আমাদের কি হবে?
এ-এক প্রেমের শহর, এ-এক প্রেমের শহর, এখানকার বাতাস প্রেমের সৌরভ বয়ে আনে। হাজারো প্রেমের কলি…..
পতাকায় মিশে যায় ফেলানির নাম উড়তে থাকে কাঁটাতারে; মানুষের মনে জমে পুঞ্জিভূত ক্ষোভ বিকল্প মেঘের…..
প্রেমিক হয়তোবা তাকে আমি গড়তে পারতাম তার বুকের ভিতর এপাশ থেকে ওপাশে উল্টে নতুন একটা…..
চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..