প্রেম এবং অপ্রেমের কাব্য
এ-এক প্রেমের শহর, এ-এক প্রেমের শহর, এখানকার বাতাস প্রেমের সৌরভ বয়ে আনে। হাজারো প্রেমের কলি…..
শূন্যতা সূর্যের মতই বর্বর
অবশেষে আহত চোখ দুটো জেগে ওঠলো।
ছেলে আমার ক্ষতিগ্রস্ত হাতটি় ছিনিয়ে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বললো,
মা! মা!
এটা আমি, তোমার বাচ্চা। চিনতে পারছো?
নিকটতম মৃত্যুর ধৈর্য-আশ্রয় কোথায় হতে পারে?
জানা নেই।
স্মৃতির বাড়ির প্রবেশপথ আজ তালাবদ্ধ,
সামনে সব নিস্তেজ
সবকিছু কুয়াশাচ্ছন্ন।
শূন্যতা সূর্যের মতই বর্বর
বিছানায় শুয়ে থাকা শরীরটা আজ অবশ
শরীর মানসিকতা ভেঙে দেয়, মস্তিষ্ক ভাঙে আত্মবিশ্বাস।
ছেলেটা বিড়বিড় করে তখনো বলতে থাকে;
মা! মা!
এটা আমি, তোমার বাচ্চা। চিনতে পারছো?
মা’কে এখনো দেখা হয়নি
আমার মাকে আমি কখনো কাঁদতে দেখিনি
কখনো তাকে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে শুনিনি।
তার সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বলতে,
স্বামী-সন্তান, পরিবারের দেখাশোনা করা
এবং প্রফুল্ল মনে রান্না ঘরের কাজগুলো সময় মত করে নেয়া।
আমার মা মুক্ত আকাশের নিচে ঘুরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না।
তিনি সুর্যের আলোর তাপ মুখে লাগাতে ঘরের জানালার পর্দা টেনে নেন।
জ্যোৎস্না রাতে আমার মা ভাবেন, ‘আজ গিঁটে খুব ব্যথা হবে।’
আমার মা কারো চোখে চোখ রেখে কথা বলতে জানেন না
তিনি ঘোমটা টেনে মাটির দিকে তাকিয়ে হাঁটতে
স্বস্থিবোধ করেন।
আমার মা’কে রাগে কখনো ফুঁসে উঠতে দেখিনি।
আমার মা’কে কখনো ক্ষুধার কথা বলতে শুনিনি।
তাঁর ইচ্ছা-পছন্দ, শখের জিনিসটা নিয়ে বায়না করতে দেখিনি
আমার মাকে কখনো গোঙানির শব্দ তুলতে শুনিনি।
আমার মা’কে আমার, সম্পুর্নটা এখনো দেখা হয়নি।
পুঁজিবাদী সমাজে স্নেহ নেই আজ
ভেজা কাপড়, ছেঁড়া জুতো পায়ে বাড়ি ফিরার পথে ছেলেটি ভাবছিলো,
ঘরে খাবার নেই
মায়ের ডাক্তার দেখাতে হবে;
বাবার চশমাটাও আর কাজ করছে না।
মন খারাপ করে ঘরে ফিরতেই মা জানতে চাইলেন,
কী হলো? ফিরে এলে যে?
ছেলে বললো,
তুমুল বৃষ্টির কারণে আজ রাতের শেষ ট্রেনটি মিস করেছি মা।
বিস্ময় চোখে ছেলের দিকে তাকালেন মা, বললেন,
চাকরিটা কি তবে হবে না?
ছেলেটির ভেজা কাপড়, জুতো জোড়া থেকে তখনো
অবিরত বৃষ্টির পানি ঝরছিল।
মায়ের বয়স বাড়ছে
আমার মা!
বয়সজনিত কোন মানসিক সংকটে ভুগছেন
লক্ষনগুলো তাই বলে।
কিন্তু আমি কখনো তাকে এ ব্যাপারে কিছু বলিনি।
আমি কখনো আমার মা’কে তার কোন সংকট সম্পর্কে বলতে পছন্দ করি না।
বরং আমি তাকে বুঝানোর চেষ্টা করি যে, তিনি ভালো আছেন, স্বাভাবিক আছেন।
আমার মায়ের বয়স পঁচাত্তর।
তিনি খুব প্রাণোচ্ছল মানুষ, শাসন করতে পছন্দ করেন।
তিনি এখনো নিজেকে সব কিছুর মালিক ভাবতে পছন্দ করেন।
এবং আমি তাকে সেটাই মনে করিয়ে দেই রোজ।
বৃদ্ধ মা যদি সামান্য যত্ন ও সহনশীলতায় সুস্থতাবোধ করেন,
তবে সেটাই করা উত্তম বলে মনে করি।
আমার মা আমাকে জন্ম দিয়েছেন, যত্ন করেছেন।
তিনি আমার জন্য অনেক যন্ত্রণা সহ্য করেছেন।
এখন এটাই আমার দায়িত্ব পালন করার উত্তম সময়।
ঈশ্বর সব ভালোবাসেন
অদৃশ্য নিরাকার ঈশ্বরকে দেখিনি কখনো
তবে ঠিক জানি ঈশ্বর আমাকে ভালোবাসেন।
ঈশ্বর আমাদের সবাইকে ভালোবাসেন।
ঈশ্বর মানুষ, পশু, সূর্য, পাহাড়, পর্বত, নদী এবং
প্রকৃতির প্রতিটা সৃষ্টিকে ভালোবাসেন।
তিনি ধূলিকণা, বরফ, তরল এবং স্বচ্ছতা ভালোবাসেন।
ঈশ্বর রোদের তাপ, শীতের হাওয়া ভালোবাসেন।
ঈশ্বর বৃক্ষ ভালোবাসেন
তিনি বৃক্ষদের কচি পাতা, ঝরে পড়া পাতা
এমন কী বিবর্ণ ধূসর হলদে পাতাদেরও ভালোবাসেন।
ঈশ্বর সব রঙ ভালোবাসেন, সব জাত ভালোবাসেন
তিনি সকল প্রাণীকুল ও শ্রেণি ভালোবাসেন।
ঈশ্বর আমাদের প্রাপ্তি ব্যর্থ্যতা, অপারগতা, দুর্দশা
এবং আমাদের লবনাক্ত অশ্রকণাও ভালোবাসেন।
ঈশ্বর ঝরণা ভালোবাসেন
নদীর স্রোত ভালোবাসেন।
ঈশ্বর আমাদের সব ভালোবাসেন।
গাছেরা সব জানে
গাছেদের প্রাণ আছে!
শুধু তারা বলতে পারে না।
গাছেরা সব দেখে
প্রতিটা ঘটনায় ইতিহাসের সাক্ষি হয়ে থাকে
তারা জানে কারা যিশুকে হত্যা করেছিল
তারা জানে বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের শেষ পর্যন্ত কি হয়েছিল।
বৃক্ষরা জানে,
বিশ্বজুড়ে রোজ কারা মেয়েগুলোকে ধর্ষণ করে রাস্তায় ফেলে রাখে
পথে হেঁটে যাবার সময় নির্দয়ভাবে কারা গাছেদের ফুল-পাতাগুলোকে
ছিড়ে নিয়ে যায়; তাও তারা জানে।
গাছেরা সব দেখে, অনুভব করে, শুধু বলতে পারে না।
মানুষ-পশু প্রেম
আমার বাবার পাঁচটি পোষা কুকুর ছিল।
বাবা যেদিন মারা যান,
সেদিন পোষা প্রাণীগুলো একেবারে চুপচাপ হয়ে গিয়েছিল।
তারা আর ঘেউ ঘেউ করতো না।
তার কিছুদিন পর, দুটো পোষা প্রাণী মারা যায়।
বাকি তিনটা পোষা প্রাণী শুধু দিন-রাত বাবার কববরের পাশে
বসে থাকতো।
আমি দেখতাম, তাদের চোখ দিয়ে পানি ঝরতো।
তারপর, ধীরে ধীরে তারাও বৃদ্ধ হতে লাগলো
সময়ের দাবীতে একদিন তারাও বিদায় নিলো।
মনে পড়ে, আমার বাবা ছিলেন একজন পশুপ্রেমী মানুষ।
তিনি তার সকল পোষা পশুদের খুব যত্নের সাথে পালতেন
একদিন একটা কুকুরছানা মারা যাওয়াতে
বাবাও সেই পোষা প্রাণীটির কবরের পাশে দাঁড়িয়ে
খুব কেঁদেছিলেন।
ভোর
তোমার উদিত বেলায় মৃদু সূর্যালোক দেখার লোভে
রাতটাকে ধার করে রাখি
জাপটে ধরে রাখি বুকের খুব কাছে
অনেকটা রক্তের বন্ধন যাকে বলে।
এ রাত আমায় স্বপ্ন দেখায়
সে স্বপ্নে আসে ডিম্বকুসুম সূর্য, আকাশ, মেঘ
ঘাসফড়িং, পাতা
বৃষ্টির টুপুরটাপুর শব্দ, পাখিদের দল।
তোমাকে দেখার লোভ ছাড়তে পারি না
ছেড়ে যেতে পারি না।
বুকে কংক্রিটপোড়া গন্ধ চেপে
ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিই প্রতি রাতে!
রাতের কাছে নতজানু হই; গড়িয়ে পড়ি
বুকে ঘুমন্ত বিপ্লব নিয়ে
আবারো তোমাকে দেখবো বলে।
এ-এক প্রেমের শহর, এ-এক প্রেমের শহর, এখানকার বাতাস প্রেমের সৌরভ বয়ে আনে। হাজারো প্রেমের কলি…..
পতাকায় মিশে যায় ফেলানির নাম উড়তে থাকে কাঁটাতারে; মানুষের মনে জমে পুঞ্জিভূত ক্ষোভ বিকল্প মেঘের…..
প্রেমিক হয়তোবা তাকে আমি গড়তে পারতাম তার বুকের ভিতর এপাশ থেকে ওপাশে উল্টে নতুন একটা…..
চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..