আইয়ুব বাচ্চু ও তরুণ প্রজন্মের চাওয়া পাওয়া
আইয়ুব বাচ্চু আমাদের আশির বাংলাদেশের পটেনশিয়াল, নব্বইয়ের বিকাশ এবং একবিংশ শতকের পতনের মূর্তমান প্রতিচ্ছবি। একজন…..
১৪ মে, ১৯১৪ আজ বৈশাখের শেষ দিন। প্রচণ্ড লু হাওয়া বইছে বাইরে। আকাশের রঙ স্ফটিকের মতো ঝকঝকে নীল। চারপাশে আদিগন্ত পাহাড়ের সাড়ি। দিগন্তে দেবালয়ের স্বর্গীয় রূপ নিয়ে মৌন হয়ে আছে শুভ্র হিমালয়ের তুষারাবৃত শিখর। পাহাড়ের সবুজ বুকের ফাঁকে ফাঁকে মন্থর মেঘের পাল ভেসে যাচ্ছে। সেই মেঘের নীচ দিয়ে রুপালী রিবনের মতো একেবেকে গেছে কুশী নদী। চোখ ফেরানো মুশকিল। প্রকৃতির এই অসহ্য সুন্দর রূপ চিরকাল মানুষকে স্তব্ধ করে দেয়। তেমনি একজন মানুষ এই মুহূর্তে এই দৃশ্য দেখে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর সমস্ত বোধ ও অনুভূতি দিয়ে তিনি এই সৌন্দর্যকে শুষে নিচ্ছেন। তিনি দাঁড়িয়ে আছেন স্থাণুর মতো। দূর থেকে তাকে দেখে মূর্তি বলে ভ্রম হতে পারতো, যদি না হাওয়ায় তার রূপালি কালো চুল আর দাড়ি না উড়তো।
রামগড় শহরটি ভারতের উত্তরাখণ্ড অঙ্গরাজ্যের কুমায়ুন বিভাগে। নৈনিতাল জেলার কুশী নদীর তীরে একটি ছোট্ট পাহাড়ি শহর। অতি স্বাস্থ্যকর এবং নয়নাভিরাম স্থান। এই জায়গায় বর্তমানে একজন প্রবাদ তুল্য ও কিংবদন্তী মানুষ এসেছেন হাওয়া বদল করতে। তিনি মানুষের কোলাহল আর ভিড় থেকে একটু পরিত্রাণ চান। বিগত একটি বছর তাঁকে অনেক দেশ ভ্রমণ করতে হয়েছে, অনেকের সাথে দেখা করতে হয়েছে। মিটিং, লেকচার, লেখালেখি, আর ইন্টার্ভিউ দিয়ে দিয়ে তিনি এখন ক্লান্ত। সেই ক্লান্তি তাঁর দুই চোখে ছায়া ফেলেছে।এই রামগড় শহরটি তাঁর বড় প্রিয়। প্রকৃতি এখানে উদার এবং অকৃপণ। এখানের বাতাস নির্মল। যখনই তিনি মনের গভীরে হাঁপিয়ে ওঠেন তখন তিনি এখানে বিশ্রাম নিতে চলে আসেন। এবারো তাই এসেছেন, কিন্তু তাঁকে ঘিরে মানুষের প্রচণ্ড কৌতূহল। সারা দেশে এবং পৃথিবীতে তিনি এখন আলোচনার বিষয়। প্রথম ভারতীয়দের মধ্যে গত বছর তিনি সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন। তাই তিনি এখানে এসেছেন শুনে অনেকেই তাঁর সাক্ষাত প্রার্থী।
দিনের বেলা প্রচণ্ড গরম থাকলেও সূর্য ডুবতে শুরু করলেই ঠাণ্ডা নামে। রাতে রীতিমত ভীষণ ঠাণ্ডা লাগে। তিনি পীলসুজের উপর প্রদীপ জ্বালিয়ে একটি সাদা রঙের চাদর গায়ে জড়িয়ে লেখার টেবিলে বসে আছেন। রাতের বেলা খাওয়ার পরে তাঁকে আনারের রস দেয়া হয়েছে। তিনি চুমুক দেননি। জানালা দিয়ে তাকিয়ে আছেন বাইরের রাতের আকাশের হিমালয়ের দিকে। কী অপার্থিব সুন্দর এই দৃশ্য! তাঁর মনের ভিতর উত্তর ভারতীয় রাগ, দেশ রাগের সুর গুনগুন করছে। রাত্রি দ্বিতীয় প্রহর বা মধ্য রাতের রাগ এই দেশ রাগ। এই রাগটিও তাঁর খুব প্রিয়। তিনি অনেক গান এই রাগে পূর্বে তৈরি করেছেন। এই রাগটি খাম্বাজ ঠাটে। আর খাম্বাজ ঠাটের যে মূল বৈশিষ্ট্য কোমল ণি’র ব্যবহার। এটা তাঁকে আনন্দ দেয়। তিনি একটি সুরের কাঠামো তৈরি করেছেন। সেখানে কথা বসানোর চেষ্টা করছেন।
‘এই লভিনু সঙ্গ তব’ এইটুকু এসেছে। তিনি গুনগুন করছেন। একটু পরে তিনি লিখলেন- ‘সুন্দর হে সুন্দর’… তাঁর সারাদিনের মুগ্ধতা তিনি উজাড় করে দিলেন তাঁর গানের সুরে আর বাণীতে। তাঁর সেরা গানগুলোর মধ্যে আরো একটি গান এখন তৈরি হলো। যতবার তিনি প্রকৃতির নৈকট্যে এসেছেন ততবার যেনো তাঁর উপর ভর করেছে তাঁর একান্ত জীবনদেবতা।
এই লভিনু সঙ্গ তব, সুন্দর হে সুন্দর!
পুণ্য হল অঙ্গ মম, ধন্য হল অন্তর সুন্দর হে সুন্দর ॥
আলোকে মোর চক্ষুদুটি মুগ্ধ হয়ে উঠল ফুটি,
হৃদ্গগনে পবন হল সৌরভেতে মন্থর সুন্দর হে সুন্দর ॥এই তোমারি পরশরাগে চিত্ত হল রঞ্জিত,
এই তোমারি মিলনসুধা রইল প্রাণে সঞ্চিত।
তোমার মাঝে এমনি ক’রে নবীন করি লও যে মোরে
এই জনমে ঘটালে মোর জন্ম-জনমান্তর সুন্দর হে সুন্দর ॥
গানটি লিখে তিনি নিচে নাম সই করলেন, স্থান ও তারিখ লিখলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রামগড়, ৩১ বৈশাখ, ১৩২১।
নোটঃ এই গানটির স্বরলিপিকার ছিলেন তাঁর অতি প্রিয় ভাতিজী ইন্দিরা দেবী ও জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
এই ঘটনার একশ বছর পরে ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪২৪ বঙ্গাব্দ ধানমন্ডি, ঢাকা। মধ্য রাত।
বাতাসের শীতের আমেজ। আকাশে বিপুল একটি চাঁদ উঠেছে। শতরূপা নামের জৈনক এক প্রৌড়া তাঁর ধানমন্ডির বাসার বারান্দায় বসে সেই চাঁদের দিকে তাকিয়ে আছেন। এখনো ধানন্ডিতে দুই একটি বাড়ি দেখা যায় যার প্রাঙ্গণে অনেক বড় বড় গাছ আছে। পুরানো যে কয়টা বড় বাড়িগুলো রিয়েল এস্টেট এখনো কায়দা করে মাল্টিস্টোরেড বিল্ডিং করতে পারেনি। এই বাড়িটি তেমন একটি বাড়ি। বাড়িটির রঙ সাদা, তিনতলা, প্রায় বিশ কাঠা জায়গা নিয়ে বাড়ি। রাস্তা থেকে গাছের কারণে পুরো বাড়িটি দেখা যায় না। এই ধরণের বাড়িগুলোতে অনেক বড় বারান্দা থাকে। সেই বারান্দায় বেতের ঝুলন্ত দোলনা থাকে। এই বাড়িটিও তার ব্যতিক্রম নয়। এই বাড়ির দোতলার বারান্দাটিও অনেক বড়। ছোট খাটো উঠানের মতো। শতরূপার মেয়েরা এই বারান্দায় ফুলের গাছ রাখতে চেয়ে ছিলো। শতরূপা দেননি। তিনি ধুয়ে মুছে এই বারান্দাটাকে পরিস্কার রাখেন। এই বারান্দাটি তার একান্ত নিজস্ব একটি জগত। তার নিজের উঠান। আজ যেমন ঘুম আসছেনা তাই এই বারান্দায় বসে আছেন। ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা লাগছে কিন্তু একই সাথে চাদর আনতে উঠে যেতেও ইচ্ছে করছে না। গাছের পাতায় চাঁদের আলোগুলো কেমন পিছলে পিছলে যায়। দেখতে অসম্ভব সুন্দর লাগে। এমন জোছনা রাতে বুকের ভিতরে কেমন যেনো হাহাকার করে। এই নীলাভ জোছনায় শতরূপার বুকের ভিতরেও কেমন একটা হাহাকার লাগছে।
এই মুহূর্তে এ বাড়ির একটি জানালায় বাতি জ্বলছে। ঘরটি শতরূপার নাতনীর। মেয়েটার কিসের যেনো পরীক্ষা সামনে। রাত জেগে পড়ে। মাঝে মধ্য রাতে গান গাজায়। যেমন এই মুহূর্তে বাজছে- এই লভিনু সঙ্গ তব, সুন্দর হে সুন্দর!… শতরূপা গানটি শুনে স্তব্ধ হয়ে রইলেন। শতরূপা যখন তরুণী ছিলেন তখন ১৯৭১ সাল। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স পড়ছেন। ঢাকার পরিস্থিতি খুব খারাপ হতে পারে তাই অনেকেই হল থেকে তখন বাড়ি চলে যাচ্ছিলো। শতরূপাকেও বগুড়া থেকে ওর বাবা চিঠিতে শিগ্রি বাড়ি চলে আসতে লিখেছেন। শ্যামল দা’ও তাই বললেন একদিন মধুর ক্যান্টিনে। তিনি বললেন- রূপা তোমার বাড়ি চলে যাওয়া উচিত। পরিস্থিতি ভালো না। শ্যামল দা ছিলেন শতরূপার ক্যাম্পাসের বড় ভাই। এবং শতরূপার প্রথম ভালোবাসার মানুষ। জার্নালিজমে পড়া বড় বড় চুলের একজন বেহিমিয়ান ছেলে। হালকা সিলেটী টানে কথা বলতেন। আর খালি গলায় অসম্ভব সুন্দর গান গাইতে পারতেন। শতরূপা সেদিন মধুর ক্যান্টিনে সমস্ত লাজ লজ্জার মাথা খেয়ে বলেছিলো- আপনি আমাকে ট্রেনে করে বগুড়া দিয়ে আসবেন শ্যামল দা? শতরূপার বুক ধুক ধুক করছিলো, এখনি তিনি হয়তো সবাইকে হতচকিত করে তার স্বভাব সুলভ ভাবে হো হো করে হেসে উঠবেন। তিনি যদি হেসে উঠতেন তাহলে হয়তো শতরূপা লজ্জায় সেদিন মরে যেতো। কিন্ত, ওই দিন শ্যামল দা হেসে ওঠেননি। চিন্তিত গলায় বলেছিলেন বৃহস্পতিবার রাতে ব্যাগ গুছিয়ে রেখো।
শতরূপা উত্তেজনায় বাকী কয়দিন ঘুমাতে পারেনি রাতে। কী আনন্দ! কী আনন্দ! এই মানুষটাকে সে তার জীবনের চেয়েও অনেক ভালোবাসে। কিন্তু কোনদিন সে এটা শ্যামল দা’কে বলতে পারেনি। মনেহয় পারবেও না। শতরূপার কাছে শ্যামলের সবকিছুই ভালো লাগে। শ্যামল’দার বড় বড় চোখ, একটু কুঁজো হয়ে হাঁটা। তার হাসি। সব। সব শতরূপার ভালো লাগে। আচ্ছা শ্যামল’দাও কী শতরূপা কে পছন্দ করে? নইলে বগুড়ায় দিয়ে আসতে রাজি কেন হবে ?
ট্রেনে উঠে শ্যামল’দার পাশে বসার পর থেকে শতরূপার নিজেকে এই পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ বলে মনে হচ্ছিল সেদিন। এই পৃথিবীর আর সব কিছু এখন গোল্লায় যাক। সে পেয়েছে তার সবচেয়ে প্রিয় মানুষটির সান্নিধ্য। এই দেশ, নির্বাচন, মিটিং মিছিল, গুলি, কার্ফু কিছুই শতরূপাকে স্পর্শ করছিলো না।
= শ্যামল’দা যখন বললেন- তুমি গায়ের চাদর আনোনি কেন সাথে? ট্রেনে রাতে ঠাণ্ডা লাগবে তো।
= শতরূপা বললো- এই ফেব্রুয়ারিতে ঠাণ্ডা কই শ্যামল’দা?
ট্রেন ছাড়তেই শ্যামল তার কালো চাদরটা শতরূপাকে দিয়ে দিলেন। শ্যামল’দার গায়ের গন্ধ লেগেছিলো ওই চাদরে। কেমন পুরুষ পুরুষ গন্ধ। জানালা দিয়ে ঠাণ্ডা বাতাস আসছিলো খুব। শ্যামল’দা পাতলা একটা হাফ সার্ট গায়ে ছিলেন। ওদের সীটের পাশের জানালাটা ছিলো ভাঙ্গা। ঠাণ্ডা বাতাস আসছিলো খুব। তাই দেখে শতরূপা বললেন আপনিও নেন চাদর।
শ্যামলদা বললেন- আরে নাহ্। দুইজনে এক চাদর গায়ে দিবো নাকি? তুমি কি পাগল হয়ে গেলে?
মধ্যরাতে শ্যামল আর শতরূপা একই চাদর গায়ে ট্রেনের সিটে পাশাপাশি বসে ছিলো। একটা কালো চাদরে মোড়ানো দুইজন তরুণ তরুণী। শতরূপা শ্যামলের কাঁধে মাথা রেখে ছিলো। এরচেয়ে শান্তির, তীব্র গোপন আনন্দের মুহূর্ত শতরূপার জীবনে আর আসেনি। ট্রেনের ঝিকঝিক শব্দ আর দুলনিতে শতরূপা কখন যেনো একটু তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছিলো। একসময় শতরূপা টের পেলো শ্যামল’দা শতরূপার বুকে হাত দিয়েছে। শতরূপা লজ্জায় আবেগে থরথর করে কেঁপে উঠেছিলো, কিন্তু কিছুই বলতে পারেনি শ্যামল’কে। শুধু চোখ দিয়ে টপটপ করে পড়তে থাকা গরম জলের মধ্যে কোথায় যেনো একটা তীব্র সুখ ছিলো শতরূপার মনে। এমন অদ্ভুত মানসিক অবস্থায় শতরূপা আর যেনো কখনো পড়েনি। শ্যামল’দা শতরূপাকে একবার চুমুও খেয়েছিলো ওই ট্রেনে।
শ্যামল’দার এক বন্ধু রফিক দাদা ১৯৭২ সালে শতরূপা ঢাকায় আসার পরে শ্যামলের একটি চিঠি শতরূপাকে দেয়। রফিক দাদা চিঠিটা দেবার সময় শতরূপাকে বলেছিলো, শ্যামল আমাকে বলেছে- আমি মুক্তিযুদ্ধে যাবো রফিক। তুই তো যুদ্ধে যাচ্ছিস না তাই তোকে একটা চিঠি দেই, রাখ তোর কাছে। যদি কখনো শতরূপার সাথে তোর দেখা হয় ওকে চিঠিটা দিয়ে বলিস আমার জন্য ও যেনো অপেক্ষা করে। যুদ্ধ কতদিন চলবে জানিনা। আমি যুদ্ধ থেকে ফিরে এসে ওর সাথে দেখা করবো। আমি ডাকেই চিঠিটা দিতাম, কিন্তু ডাক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, এই চিঠি ডাকে দিলে শতরূপার কাছে পৌঁছাবে না।
শতরূপা ঝাপসা ঝাপসা চোখে রফিকের হাত থেকে চিঠিটা নেয়। শতরূপা চোখের পানির জন্য কিছুই পড়তে পারছিলো না। যতই চোখ মোছে ততবার চোখ ভর্তি হয়ে যাচ্ছিলো জলে। শ্যামল লিখেছিলো-
কল্যাণীয়াসু,
আমি খুবই ভিতু প্রকৃতির মানুষ। কিন্তু সেদিন ট্রেনে আমি আমার জীবনের সকল সাহসের সীমাই বোধ করি অতিক্রম করেছিলাম। কেউ সেটা বুঝবে না, তবুও তোমাকে বলি- তোমার প্রতি ভালোবাসাই আমাকে সেদিন হয়তো এতটা সাহসী করেছিলো। রুপা, এই দেশ নয় তুমি আমার কাছে- এই পৃথিবীর সবচাইতে প্রিয় মানুষ। তবুও আমি মুক্তিযুদ্ধে যাচ্ছি। এই যুদ্ধে যাওয়া শুধু দেশ প্রেম নয়। এটা আমার দায়ও বটে। আমি তোমাকে ওই রাতের বিনিময় একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিতে চাই। এই যুদ্ধে যাওয়ার সাহসও আমি পেয়েছি তোমাকে ভালোবেসেই। তোমার সাথে আমার আবার দেখা হবে স্বাধীন বাংলাদেশে। সেদিন আমি এসে তোমার কাছে ক্ষমা চাইবো। তুমি অপেক্ষা করো।
আমার গলায় গাওয়া এই গানটি তুমি বহুবার শুনতে চাইতে। আজ তোমাকে এই গানের কয়টি লাইন উৎসর্গ করে বিদায় নিচ্ছি।
“…..এই তোমারি মিলনসুধা রইল প্রাণে সঞ্চিত।
তোমার মাঝে এমনি ক’রে নবীন করি লও যে মোরে
এই জনমে ঘটালে মোর জন্ম-জনমান্তর …”
সুন্দর থাকো।
বাকীটুকু আমি এসে গেয়ে শোনাবো। তুমি অপেক্ষা করো।
ইতি
শ্যামল।
বাইরে জোছনা আরো গাঢ় হয়ে উঠেছে এখন। শতরূপা চোখের কোনে জোছনার আলো চিকচিক করছে, একটি জলের ফোটা পূর্ণ হয়ে ঝরে পড়ার অপেক্ষায়। সেই রামগড়ের যেই ভবনটিতে রবীন্দ্রনাথ এই গানটি লিখেছিলেন, সেটার মাথার উপর আজ টালি নেই। বহু বছর আগে অযত্ন অবহেলায় ভেঙে গেছে। জানালা নেই, দরজা নেই, ঘরের ভিতরে বড় বড় ঘাসের উপরে এখন জোছনা লুটিয়ে পড়ছে। প্রকৃতি তার প্রিয় সন্তানদের ফিরে আসার জন্য তার সমস্ত কিছু নিয়ে ঠিকই অপেক্ষা করে। কিন্তু মানুষেরা একবার চলে গেলে আর কখনো ফিরে আসে না।
নোট: ফিচার ইমেজের চিত্রটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অংকিত
আইয়ুব বাচ্চু আমাদের আশির বাংলাদেশের পটেনশিয়াল, নব্বইয়ের বিকাশ এবং একবিংশ শতকের পতনের মূর্তমান প্রতিচ্ছবি। একজন…..
রবীন্দ্রনাথের গানের সংখ্যা নিয়ে সবচেয়ে কষ্টকর কাজটি করেন বিশিষ্ট লেখক ও রবীন্দ্রজীবনীকার প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায়।…..
বাউলেরা বাংলার দার্শনিক, পাশ্চাত্যে দার্শনিকেরা যুক্তি দিয়ে যেসব বলে গেছেন বাউল গানে আমরা সেরকম একই…..
বাউল গান বাংলার এক অপূর্ব সম্পদ। বাংলাদেশ জ্ঞানীর আঁতুড়, এখানে অনেক মনীষী, সাধু, সন্ন্যাসী জন্মেছেন…..