প্রেম এবং অপ্রেমের কাব্য
এ-এক প্রেমের শহর, এ-এক প্রেমের শহর, এখানকার বাতাস প্রেমের সৌরভ বয়ে আনে। হাজারো প্রেমের কলি…..
রাত প্রায় দুটো
ট্যাংক ও বন্দুকগুলো গর্জে উঠছে হিংস্র নেকড়ের মতো
আমার ঘরে একজন বৃদ্ধা মহিলা
পাশের বাড়িতে কয়েকজন তরুণ
ঘরের পশ্চিম দিকটায় একটা গহীন অরণ্য
সেখানে কিছু মানুষখেকো হায়না
সুচতুর নকশা আঁকা ছিলো ওদের
এবং ওরা উপহার দিয়ে গিয়েছিলো এক বিভৎস উপস্থাপনা
আসুন বাঙালী খেলার সাথে ইতিহাস আর রাজনীতি না মিশিয়ে
পাকিস্তানের পক্ষে উল্লাস করি
আজ রাতের খেলায় তারা জিতে গেলে
আগামী নয় মাস আমরা রক্তহোলি খেলবো
আসুন বাঙালী প্রেমিকা
আটচল্লিশ বছর বাদে চুমু খান পাকিস্তানি প্রেমিকের ঠোঁটে
সৌন্দর্য গ্যালারিতে প্রদর্শন করুণ রক্ত মাংশের ফটোগ্রাফ
কারণ আপনিও শিখে গ্যাছেন প্রেমের শ্লোক, ‘প্রেমিকার জাত নেই’
আমার ঘরের বৃদ্ধা মহিলাকে ওরা কয়েকজন টেনেহিঁচড়ে বের করলো
আমি কূট অন্ধকারে লুকিয়ে ছিলাম অশ্লীল বাস্তব দেখার অপেক্ষায়
আমি চীৎকার করতে চেয়েছিলাম পশ্চিম পাকিস্তান ধ্বংসী এক পারমাণবিক বোমার মতো
কিন্তু ওরা আমার মুখ চেপে ধরেছিলো
আমি আকাশের দিকে মুগ্ধ চোখে তাকালাম
সেখানে বিষাদের মেঘ জমেছে
হায়নারা ছিড়েখুঁড়ে খাচ্ছে আমার বৃদ্ধা মা’কে
হয়তো মরে গিয়েছিলো বেশ কিছুক্ষণ আগে
বেশ কিছুক্ষণ ধরে আমি মায়ের চীৎকার শুনছিনা
শুধু কানে আসছে কিছু হিংস্র দানবের পৈশাচিক উল্লাস
আমি মেঘলা আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি
এ কেমন নরকের মুখোমুখি আমি
আমার অঙ্কুরিত হৃদয়ে ছোবল দিচ্ছে অসংখ্য সর্পমুখী জল্লাদ
আমি মেঘলা আকাশের দিকে তাকিয়ে ; বৃষ্টির ফোঁটা নেমে এলেই কাঁদবো আমি
সে রাতে বৃষ্টি হয়নি বাঙলার আকাশে
সে রাতে এই সবুজ শ্যামলার বুকে ঝরেছিলো কয়েকজন তরুন, কয়েকশো তরুণ, কয়েক হাজার তরুণের তাজা রক্ত
আজো পতাকা হাতে নিয়ে দেখি মায়ের সবুজ জমিনে রক্তাক্ত ভাইয়ের মুখ
হে আমার বাঙালী রাজনীতিবিদ, ইতিহাসবিদ ও প্রগতিশীল প্রেমিক প্রেমিকা ;
‘পাকিস্তান ‘ শব্দটি মুখে নেবার পর অযু করে পতাকায় হাত দিও
আটচল্লিশ বছরের হাহাকার বুকে
পিতাহারা এই আমি
রাত প্রায় দুটোয় খুব কষ্ট নিয়ে মরে যেতে দেখেছি মা’কে…
যেহেতু আমি নাবিক কিংবা উত্তাল সমুদ্রের বুকে নিঃস্ব সারেং
তাই নোঙর করার অভ্যস্ততা আমার বহুকালের
ধর্ম যাজকেরাও নোঙর করে
নোঙর করে নামাজী
নোঙর ফেলে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার
প্রসব বেদনায় যখন তোমার রক্তাক্ত জরায়ু, নোঙর করবে তোমার নব্য প্রেমিক
আমার সাথে সঙ্গমকালের পূর্বে একটা জন্মনিরোধক পিল খেয়ে এসেছিলে
তাই আমার নোঙর করা জাহাজ হতে তোমার গর্ভে পতিত হয়নি নতুন নাবিক
কিম্বা তোমার গর্ভে আসেনি কোনো প্রতারক প্রেমিকা
১৬ই নভেম্বর, ২০১৬
আমাদের শেষ দেখাকালে তোমার হাতে আমার হাত স্পর্শ মাত্র রক্ত জমাট হলো তোমার হাতে
নাবিকের লোহাভাঙা হাত নাকি নেশাগ্রস্থ তালমাতাল
বুক ফাটা কান্না চাপিয়ে হেঁটে এসেছিলাম অন্ধকার শহুরে পথের গুহায়
এ হাত একদিন তোমার খোপায় গুজে দিয়েছিলো রক্তজবা
এ হাত একদিন তোমার পায়ে পড়িয়ে দিয়েছিলো দুপুর রজনীগন্ধা
সে হাত সেদিন তোমার শরীরে নাকি মৃতরেণু
নারী গুহার দাম বেড়েছে গত কয়েকবছরে
সেখানে নাকি জন্ম হয়েছে কয়েকজন দেবশিশুর
পবিত্র সেসব মুখের দিকে তাকালে আমি ভুলে যাই
আমার আরশী টানা জানালার ওপাশে কুয়াশা লেগে আছে প্রকাশ্যে
তোমার দুখী মুখ আমাকে শিখেয়েছে কবিতার বর্ণ
তোমার গোলাপের পাপড়ির মতো খুলে যাওয়া যোনি
আমাকে শিখিয়েছে বজ্রধ্বনি
মন্দিরে আমাকে ঢুকতে দেওয়া হয় না
আমি মুসলমানের ছেলে
মসজিদে আমি যাইনা বহুকাল
তবুও আজানের ধ্বনি আমার হৃদয়ে লাগে
একজন ফাদারের সাথে গতকাল কথা হয়েছিলো
বললো, ‘ বালক, নিজেকে জননী গুহায় আবদ্ধ করোনা ‘
সকল ঘৃণা কিংবা আমার হতাশা জলফড়িং এর ডানায় লিখে দিলাম
একই সাথে ভালোবাসতে পারবো না, না পারছি করতে ঘৃণা
তোমাকে চাইনা আমি আর কোনো জীবনে প্রেমিকার প্রতিনিধি হিশেবে
আমার শেষ ইচ্ছে পূরণ হবে না জানি, একটা দেবশিশুর কান্না আমাকেও দিও উপহার
আমাকে উপহার দিও এমন একটি ভোর
আমার দু’হাতে তুলে দিও প্রথম সন্তান
যার পবিত্র চীৎকার কানে আসা মাত্র
মুয়াজ্জিনের কণ্ঠে ভেসে আসে –
আল্লাহু আঁকবার – আল্লাহু আঁকবার …
বৃষ্টির ঝুমঝুম শব্দ কানে আসতে দেখলাম
এই শহরে প্রেম এসেছে
পাহাড় ভাঙা ঝড় উঠেছে
চৌকাঠে এলোমেলো বয়স আমার
যাচ্ছে বেড়ে দিনেরাতে
‘পড়ো তোমার প্রভুর নামে”
মেঘে মেঘে যখন যুদ্ধ চলে
এক নিমিষেই দেখবে তুমি
তোমার দিকে যাচ্ছি ছুটে
বৃষ্টি ভেজা পাগল আমি
এই শহরে প্রেম এসেছে,
হরেক রকম রাতের পরে
বাসনমাজা হাত দুটো তুমি
দাওনা তুলে আমার হাতে
“পড়ো তোমার প্রভুর নামে”
রাত্রে যখন জোনাক জ্বলে
হে মানবী শুনছো তুমি
হাড়কাঁপা এই শীতের রাতে
তাল মাতাল এক কবির চোখে
তোমায় নিয়ে জ্যোৎস্না উঠে
ঘুমিয়ে পড়া নীল সাগরে
রাতজাগা এক নাবিক থাকে
বিষাদিনী ওই আকাশ থেকে
ধূমকেতু সব যাচ্ছে সরে
হে প্রেয়সী
“পড়ো তোমার প্রভুর নামে”
তন্দ্রাময়ী রাতের শেষে
নাবিক প্রেমিক কবি আমি
মরে যাবো তোমার শূন্য চোখে
হে রমণী
“পড়ো তোমার প্রভুর নামে”
ঈমান রাখো এই চোখেতে
ভাসিয়ে দাও তোমার তরী
হে হরিণী শুনছো তুমি, এই শহরে প্রেম এসেছে…
তুমি কি কালো অশুভ পাখির মতো কিচিরমিচির করো
কখনো সিগারেটের ধোঁয়ার মতো ফিনিক্সের ডানায় উড়ে যাও
তুমি কি কম্পাসের মতো কেন্দ্র করে বৃত্ত হতে পারো
আমি ঘুরবো সেই বৃত্তে – দ্যাখো কি দুর্বল অসহায় আমি
তুমি কি মাতালের সঙ্গে অসংবদ্ধ পদক্ষেপে হাঁটতে পারবে
তোমার কানের দুলে ঝুমঝুম শব্দ করে সুন্দর বিভ্রান্ত ভাষায় বলবে আমায়
রোদ্র তাম্র ডান হাতে আমার বাহু জড়িয়ে হিম নিঃশব্দে
আমার সাথে রাত্রিবেলায় লেবুর গন্ধমাখা অরণ্যে হারিয়ে যাবে
বলো প্রিয়তমা
তুমি কি যাবে আমার সাথে
তোমার আকাশী রঙের সেই শাড়ি পড়ে
অবুঝ বালকের মতো আমার ইচ্ছে ফুরিয়ে
খুব সকাল বেলা ফিরে যাবো তোমার সেই শাদা বাগানে
আমাদের কোন তাড়াহুড়ো নেই
তোমার ঘুম ভাঙিয়ে
আমি চাই না সোনার চেয়ে দামি কোন নূপুর পড়িয়ে দিতে
বুলেট যেমন ভ্রমণ করে বাতাসের অদৃশ্যে
তুমি ঠিক তেমনি করে নদী হয়ে যাও আমার হৃদয়ে
আমি মাঝি হয়ে অপেক্ষা করি তোমার স্রোতের তরে
তুমি বয়ে যাবে প্রিয়তমা
তুমি খলখল শব্দে হেসে যাবে
তোমার ঘুম ভাঙলেই দেখবে তুমি নিষিদ্ধ এই শহরে
আমার বিরহ বৃষ্টি তোমার বরফ মেশা চোখে
কি নিবিড় আর্তনাদে বয়ে যায়…
এ-এক প্রেমের শহর, এ-এক প্রেমের শহর, এখানকার বাতাস প্রেমের সৌরভ বয়ে আনে। হাজারো প্রেমের কলি…..
পতাকায় মিশে যায় ফেলানির নাম উড়তে থাকে কাঁটাতারে; মানুষের মনে জমে পুঞ্জিভূত ক্ষোভ বিকল্প মেঘের…..
প্রেমিক হয়তোবা তাকে আমি গড়তে পারতাম তার বুকের ভিতর এপাশ থেকে ওপাশে উল্টে নতুন একটা…..
চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..