অবিকল্প
সমুদ্রের হাওয়ায় রেখে গেলে নোনা ছায়া
পার্কের বেঞ্চিতে খোলা হাওয়া
ফুটপাতে সহজিয়া কথাগুলো
মৃত্তিকার বুকে ঘাসের হৃদয়
আর নদী তীরে খেয়া পারাপার
কিংবা বিকল্প-তরঙ্গ সাঁকো
তোমার বিকল্প তুমি,
অবিকল্প তুমি !
কে কার উচ্চতা
বিগত বসন্ত যদি কাঁদে, মনস্তাপে,
ভুলে যাও তাকে,
অশ্রুত অশ্রুর দাগ—
ক্ষতগুলো ঢেকে দেবে আসছে বসন্ত—
নবীন রঙিন রঙ্গনে সাজাও তোমার বরণ,
আভরণ, আবরণ;
সু্রভিত হবে প্রবল আগামী,—সমুখে আনন্দ
পেছনে দুঃখের ভাঙাগড়া ।
বিদায় রপ্তানি হোক,
আমোদকে আমদানি কর ।
তাজমহলের নিষ্প্রাণ কায়ার
ভেতরে সপ্রাণ ছায়া আছে;
ভুল করে কেউ তাজমহল গড়েনি ।
ছায়া যোগ মায়া
সমান্তরাল না কেউ কারো;
না সমান নয়, কায়া ।
হতে পারে, কৌতুহল
আমরা জানি না,
কে জানে, কে কাকে
কে কার উচ্চতা অতিক্রম করে গেছে !
গহন গহীনে
আকাশ প্রকৃতপক্ষে মুক্তভাবে বেঁচে আছে
হোক দিন হোক রাত
তার কোন ঘর দরকার নেই
উল্টো তার বুকে চাঁদ তারা খেলা করে
কতো ছায়াপথ, সপ্তর্ষী, ভরণী, কৃত্তিকা, অশ্বিনী
যেন ফুটপাতে উদোম শিশুরা মাতৃক্রোড়ে
ক্রীড়াপরায়ণ হয়ে ওঠে উন্মুক্ত, স্বাধীন
জ্বলে ওঠে জম্পেশ জমাটি আলো
হয়ে ওঠে পথপ্রদর্শক সদগুরু বাতিঘর
খোলামেলা অবকাশে পর্যটক হাওয়া
ভ্রামণিক-আবহাওয়া-ঋতুচক্র
এ ত্রিভুবনের মাঝে সবাই বাউল
এই তিন ভুবনের মাঝে
নিত্য আসা-যাওয়া আমাদের
এই দুনিয়াটা যেন এক কুঠিবাড়ি
উদাসী আখড়া—অবারিত তার দ্বার
কমলা লেবুর নিচ-ওপরে ঈষৎ
চাপা-চাপ-চক্কর হাতের মুঠোয় কম্পিত
এদিক সেদিক শুধু এই
অযাচিত অভাবিত চাওয়া-পাওয়া
অঢেল বিপুল এই বিশ্বমাঝে সৃষ্টির দৃষ্টির
মহার্ঘ মুক্তি সে ঢেকে দেয়—অন্ধকার—স্বৈরাচার—
গুম খুন—তার ছাপ, পাপ, অভিশাপ
পাপ-পূণ্য নয় আমরা অনেক
গহন গহীনে উঠতে নামতে নয়,
আপাদমস্তক যেতে চাই ।
ড্রোন
তুমি ক্যামন আছ
তোমার কাছে জানতে চাইতে পারি না
কারো কাছে জানতে চাইতে পারি না
সত্যি, আমার ভেতরটা ফেটে যাচ্ছে
একবার যদি জানতে পারতাম
প্রতি মুহূর্তে কী কর জানতে চাই
একবার যদি দেখতে পারতাম
একবার যদি দেখা হত
তোমার সাথে কথা হত
সেই দৃশ্যের দিকে তাকিয়ে থাকত
আমার অনন্ত বেদনারা
আমার ব্যথাগুলো মনোযোগ দিয়ে
তার কথা শুনতে পেত
আমার দুঃখগুলোকে যাতনার বদলে
তোমার হতের পরশ বুলিয়ে দাও
একটু নিটোল শুশ্রূষা দাও
এই দেখ কাটা ঘুড্ডির মতো
আমার কল্পনা শূন্যে মাথা কুটে মরছে
দিকবিদিক ডিগবাজি খেয়ে
নিজে নিজে গোত্তা খাচ্ছে
কল্পনার লাগামহীন ফানুস
রাতের আকাশে
নক্ষত্রের একচ্ছত্র রাজ্যের দিকে উড়ে যাচ্ছে
তুমি কোথায়
তোমাকে আমি ছুঁতে পারছি না
আমি তো ভেবেছি তোমাকে পাব
শূন্যের মাঝে হারিয়ে যাব না
আমি কী প্রশিক্ষণ বিমানের মতো
শিক্ষানবীশ পাইলটের মতো
যান্ত্রিক গোলযোগে, নিজেরই ভুলে
মাটিতেই বিধ্বস্ত হব
অঙ্গার হব
একটি অব্যক্ত অঙ্গিকারের নাম এই আমি
মানুষ কী এক অলিখিত অঙ্গিকারের নাম
আমাকে ড্রোন বানিয়ে দাও
পৃথিবীর কক্ষপথে মহাশূন্যে স্থাপন কর !