একটি নাম না জানা গাছ

জ‍্যোতির্ময় মুখার্জি
কবিতা
Bengali
একটি নাম না জানা গাছ

অশথ

নতুন পাতা গজিয়েছে দেখে ওকে ছুকরি বলে ভুল করবেন না। ও একটা পাক্কা বুড়ি। ওর বয়সের অনেক ডাল ও পালা আছে

কতো, আমি জানি না

ছোটবেলা থেকেই আমি ওকে এমনই দেখছি। আমার বাবা পেরিয়ে গেছিল যখন সাইকেল নিয়ে। তখন ও এমনই ছিল। যখন দাদু গেছিল হেঁটে, তখন’ও। এই যেমন আজ আমি বাইক নিয়ে পেরিয়ে যাচ্ছি ওকে

পার্থক্যটা যদিও অর্থনীতির নয়। পার্থক্যটা পায়ের গুলির। এই যেমন ও অশথ হলেও অসৎ নয়। অসতী তো নয়ই

ও খুব ভালো

অবশ্য গাছেরা ভালোই হয়। যতই আমরা ওদের কাটি খাই বেচি কিনি। টুঁটি নেই বলে শব্দটিও করে না

নাহলে শুনতাম, আমার খুব লাগে।

 

একটি নাম না জানা গাছ

ওর নাম জানি না। সবাই ওকে গাছ বলে। যেতে আসতে দেখি। এখন যেমন দাঁড়িয়ে আছে ও চোখের পারেই

নাম না জানলেও, গাছ চিনতে আমাদের অসুবিধা হয় না। আমরা সবাই গাছ চিনি ?

গাছ সাধারণত সবুজ হয়। ওদের পাতা থাকে, ফল থাকে, ফুল থাকে, ডাল থাকে আর থাকে নীরবতা।

 

মাকড়সা

ওই যে ভদ্রলোকটি ঝুলে আছে আমগাছের ডালে, ওকে মাকড়সা বলে। ওই আটটি পা, আটটি চোখ, আটটি ভ্রু এবং একটিই মুখ। পেট’ও একটা

তবু উদরপূর্তীর জন্য ও জাল বোনে। ওই যেমন বুনছে আম-মুকুলের পাশে। মধু খেতে আসা রমণীদের চুষে খাবে বলে

খুব প্রাচীন জীব, বুদ্ধিমান’ও। স্টাইলটাও মারাত্মক। হাঁটার সময় দেখবেন ঠিক জালের শির ধরে হাঁটছে। ওখানে আঠা থাকে না। তবু সমীরণদার সঙ্গে ভাব নেই বলে, মাঝে মধ্যে পা পিছলে জড়িয়ে যায় ও নিজের জালেই।

 

কভার

বিকালের মধ্যে হাত ঢোকালেই যে একটা সন্ধ্যা উঠে আসবে, এমন নয়। কিছু গোধূলি জড়িয়ে ফেলে আঙুল। মিহি, দোমড়ানো ধুলোর মতো

যখন কেরাম খেলতাম। আঙুলে মাখতাম বরিক্। মাঝে মাঝেই আঙুলে আঙুল ঘষে পরখ করতাম ওদের নাব‍্যতা। ওরা ছিটকে সরে সরে যেত। আর আমি নিশ্চিন্ত হয়ে হাতে তুলে নিতাম স্ট্রাইকার

আসলে প্রতিটা প্রাপ্তিরই একটা আড়াল থাকা জরুরি। যেভাবে রানিকে জিততে গেলে কভার

 

বিড়াল

আর কিছুক্ষণ পরই ঘরটা বিড়াল হবে। বিড়াল ছানা পাড়বে। ছানা হাগবে, মুতবে। মুখ সরিয়ে চুমু খাবে। সযত্নে দেওয়াল আঁচড় লিখবে থাবায়

এসব ভাবতে ভাবতেই দরজা পেরিয়ে ঘর খুললাম। দেখলাম, এ ওকে দেখছে। ও ওকে শুঁকছে। প্রত‍্যেকে প্রত‍্যেকের পেটে পেট বুলিয়ে পচিয়ে ফেলছে খাবার

ফিরে আসতে আসতে, থাবা ঝেড়ে আঁচড় মুছল দেওয়াল। চুমু সরিয়ে মুখ মুছল ছানা। মুত, হাগা সাফ করতে করতে ছানাটাও বিড়াল হয়ে গেল

বিড়ালের কাছ থেকে ঘরটা ফেরত চাইতে আর সময় নষ্ট করিনি

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..