দীর্ঘশ্বাস
ভালো নেই ভালো নেই ধূসর সন্ধ্যা বিষণ্ন বিকেল, চারিপাশ ভালো নেই কফির কাপ পথের ধুলো…..
উনি আমাদের গেরামকেএলেন, আমাদের দাওয়ায় বসলেন, আমার ঘরে দাওয়াত খেলেন।
যাবার আগে, আমার ল্যাংটা, নাকে সিকনি ঝরা ছেলেটার গাল টিপে দিলেন,
ছেলেটা ঈশ্বর স্পর্শের আনন্দে যেন ফেনার মতন নেতিয়ে গেল, কারণ আমাদের চৌদ্দপুরুষের জোড়হস্ত আমার ছেলেকে অমেরুদণ্ডী প্রাণী হয়েই জন্মাতে শিখিয়েছিল।।
অথচ আশ্চর্যের ব্যাপার, আমার সারাদিন গোখাটান খাটা, রোজ রাতে আমার হাতে কিলচড় খেয়ে আধমরা হয়েও মুখ বুজে সব সয়ে ঘরের এককোণে ছেঁড়া ট্যানার মতো পড়ে থাকা বউটা সেদিন হাজার বলাসত্ত্বেও একবারের জন্যও তাঁর সামনে তাঁর প্রসাদ ভিক্ষা করতে এসে দাঁড়ায় নি।
আমাদের গাঁয়ের মোড়ল বটতলার মিটিন ডেকে বল্লেন, উনি আমাদের মহান নেতা, আমাদের কাছের মানুষ, দেখলি না কেমন সব্বার ঘরে ঘরে ঢুকে সবার সাথে মিলেমিশে দুক্ষু ভাগ করে নিতে চাইলেন।
তোরা সবাই উনাকে ভোট দে। উনি আমাদের দুক্ষের সুরাহা করবেন।
আমরা সবাই ব্যালটে উনার নামের পাশে ছাপ্পা দিলাম।
আমার খেঁকুড়ে ঢ্যামনা মাগী বৌটা কিচ্ছুতেই ভোট দিতে গেল না।সাঁঝবেলায় একপেট মদ মেরে এসে রাগের চোটে মেরে আমি উয়ার চোবনা ফাটিয়ে দিলাম, একগুছি জটপড়া চুল টেনে ছিঁড়ে দিলাম, উয়ার আধখাওয়া শাকভাতে রেগে মুতে দিলাম।
মাগী তখন না খাওয়া, যন্ত্রনায় কুঁকড়ে যাওয়া শরীরটা নিয়ে এঁটো থালাগুলো কুড়িয়ে পুকুর ধারে বাসন ধুতে গেল।
আমি ওর চলে যাওয়া পিছনটায় হ্যারিকেন-এর আলোয় স্পষ্ট দেখতে পেলাম, শালী মাগীর একটা শক্ত শিরদাঁড়া আছে যেটা আমার নেই।
আমি হিলহিলে সাপের মতো গুটিয়ে শুয়ে পড়লাম।
আমি যে মরদ, ভাতার বলে বড়জোর বউ কিলাতে পারি, কিন্তু দেশের শত্রু নেতাদের ডাঁসবো এত বিষ আমার দাঁতগোড়াতে কই?
ভালো নেই ভালো নেই ধূসর সন্ধ্যা বিষণ্ন বিকেল, চারিপাশ ভালো নেই কফির কাপ পথের ধুলো…..
প্রেমের কবিতা যা কিছু পাষাণ, মনে হয় আঁশ বটিতে কুচি-কুচি করে কাটি পালানো ঘাতক সময়…..
তর্জমা স্নানে শুচি হবার পর বেকসুর সন্ধ্যাগুলো শুধুমাত্র নিজস্ব অন্ধকারের নিচে দোলনাচেয়ারে ছড়িয়ে বসা কিছুটা…..
হয়তো একদিন অস্তিত্বে খুঁজে আত্মপরিচয় নিভৃতে অপেক্ষার প্রহরে এ মন ভালোবাসার রূপালী আলোয় রাঙা মুখ…..