প্রক্সি
তারপর ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে যাবো। আমার দেরি হবে আসতে। স্বামী অমর বলে, ঠিক আছে।…..
দুপুরের গনগনে রোদে দাড়িয়ে থাকতে থাকতে চোখ জ্বলতে শুরু করল। আশেপাশে কোন চায়ের দোকানও নেই। প্রতিদিন এই সময়েই চিত্রা বের হয় কলেজ থেকে। আজ এক ঘণ্টার বেশি দেরি হচ্ছে চিত্রা বের হছে না। শফিকের কিছুটা মেজাজ খারাপ হলো। ওর জন্য আজকে যোহরের নামাজ খুব তাড়াহুড়ো করে পড়েছে সে। প্রায় তার এমন হয়। চিত্রাকে দেখার জন্য কলেজের সামনে এসে দাড়িয়ে থাকে। আগে ঠিক সময়েই বের হতো চিত্রা। কয়েকদিন ধরে দেরি করেছে। দু’দিন আগে একটি ছেলেকে দেখেছে চিত্রার সাথে। ওই ছেলের জন্যই কি দেরি করে? কে সেই ছেলে? বন্ধু? প্রেমিক? চিত্রা কী জানে না বিয়ে ছাড়া অন্য কোন পুরুষের সাথে মেলামেশা করা যায় না। ওর বাবা মা কিছু শিখায় নি? এতো বড় হয়েছে, এখনো বোরখা পড়ে না কেন? মাঝে মাঝে দেখি জিনসও পরে। তখন ওর কমরের দিকে নিস্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকতে হয়। আমার যেমন নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় তেমন তো অন্য ছেলেদেরও হয়। কিন্তু ওর সব সৌন্দর্য আমি ছাড়া আর কারো দেখা উচিত নয়। এতে জেনা ঘটবে। ওকে এসব বলতে হবে। কিছু চিত্রা কথা বলতে চায় না। কিন্তু জিদ ধরে বসে থাকলে তো হবে না। ওকে শরিয়ত মোতাবেক চলতে হবে। আমার জীবনসঙ্গিনী আমার অবাধ্য হতে পারবে না।
শফিক ঘামাতে থাকে। রোদের জন্য নাকি চিন্তার জন্য বুঝতে পারলো না। হঠাৎ গেইটে চিত্রাকে দেখে সে। এবং প্রতিবারের মতই সে চিত্রাকে দেখে থমকে যায়। যেন শুধু চিত্রাকে দেখার জন্যই তার জন্ম হয়েছে। পৃথিবীতে শুধুমাত্র ওই একটি দৃশ্যই দৃশ্যমান। আসে পাশে কিছু সচল না, কোন শব্দও নেই, কোন বাতাস নেই, কোন মানুষ নেই, কোন বাধা নেই। শুধু চিত্রা আর সে। এ ছাড়া পৃথিবীতে আর কিছু নেই।
শফিক সম্বিৎ ফিরে পায়। চিত্রার পিছনে একটি ছেলে আসে। চিত্রার সাথে বেশ হেসেই কথা বলে। শফিকের পৃথিবী আবার থেমে যায়। তবে এবারের থেমে যাওয়া সুখকর নয়, যন্ত্রণাদায়ক। সে কাঁপতে থাকে, অস্থির হতে থাকে, বিবশ হতে থাকে।
“চিত্রা অন্য পুরুষের সাথে তোমার মিশা উচিত না” মনে মনে এই বলতে বলতে শফিক চিত্রার পিছন পিছন যায়। কিছুদূর এসে সে ডাকে। চিত্রা ফিরে তাকায়। চোখে মুখে তাচ্ছিল্যের ছাপ, অবজ্ঞার হাসি।
–কেমন আছো চিত্রা
–ভালো, আপনি এখানে কি করেন।
–তোমার সাথে দেখা করতে এসেছি
–আমার সাথে কেন দেখা করবেন
–চিত্রা তোমাকে পছন্দ করি আমি
–তাই? কিন্তু আমি তো করি না।
শফিকের পৃথিবী দুলতে থাকে, তার মনে হয় না কোন মানুষ কথা বলছে তার সাথে। মনে হয় কোন অতিমানবি কথা বলছে। সে পরে যাবে, কিন্তু অনেক কষ্টে নিজেকে ধরে রাখে।
–কেন করো না।
–আপনি জানেন আমি নাস্তিক? আর আপনি মাদ্রাসায় পড়েন।
শফিকের ইচ্ছে হল সে তার কান কেটে ফেলুক। কানে এসিড ঢেলে দিক। সে বুঝতে পারে না কি বলবে চিত্রাকে। কীভাবে বুঝাবে চিত্রা কি ভয়ংকর গুনহার কাজ করছে।
শফিকের গলা দিয়ে আওয়াজ বের হতে কষ্ট হয়। তারপরও বলে
–তুমি কি জানো তুমি গুনহা করছো। এর জন্য তোমার ভয়ংকর শাস্তি হবে।
চিত্রা তাচ্ছিল্যের হাসি হাসল।
–তাই নাকি? ঠিক আছে যখন গুনহার শাস্তি পাবো তখন দেখা যাবে। এখন যাই আমি।
চিত্রার চলে যাওয়ার দৃশ্য দেখা ছাড়া শফিকের আর যেন কিছুই করার থাকে না। সে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। “চিত্রা তুমি ভুল করছো। চরম ভুল”
মোবাইল বেজে উঠে শফিকের।
–আজ মিটিং এ আসছেন তো?
–কীসের মিটিং? ও হ্যাঁ, আসছি।
–দেরি করবেন না। দেরি করলে হুজুর রাগ করবেন।
শফিক নিরুদ্দেশভাবে হাঁটতে থাকে। তাঁর মাথায় চিত্রা ছাড়া কিছু নেই। চিত্রাকে সে কীভাবে বুঝাবে? কীভাবে এই গুনহার রাস্তা থেকে ফিরিয়ে আনবে।
মাগরিবের নামাজের পর মিটিং শুরু হয়। হুজুর অনেক কিছু নিয়ে আলোচনা করে। কিন্তু শফিকের মাথায় কিছুই ঢুকে না। সে নির্বাক নিশ্চুপ হয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকে।
তার কানে শুধু চিত্রার কথা বাজতে থাকে। “আপনি জানেন আমি নাস্তিক”
কান বধির হয়ে যায় শফিকের। আবার হুজুরের কথা কানে লাগে “পৃথিবীতে নাস্তিকের সংখ্যা বেড়ে গেছে”
“আপনি জানেন আমি নাস্তিক”। আবার হুজুরের কথা কানে লাগে “এই নাস্তিকদের জন্যই আজ ইসলাম ধ্বংস হতে যাচ্ছে। আমরা যারা মুমিন বান্দা আছি, তাদের এখন দায়িত্ব এই নাস্তিকদের হাত থাকে দেশকে রক্ষা করা, দুনিয়া রক্ষা করা”
আবার চিত্রার কথা কানে বাজে । “আপনি জানেন আমি নাস্তিক?”
“অনেক বেশরিয়তি কাজ কর্ম চালু হয়ে গেছে এই পাক বাংলাদেশে। ছেলে মেয়ে বেপর্দা হয়ে যেখানে সেখানে নাচ গান করে। কীসের উৎসব পালন? এমন কোন কিছু পালন করতে ইসলামে লেখা আছে? দেখতেই তো ঘৃণাই মরে যেতে ইচ্ছে করে। নাউজুবিল্লাহ! ছেলে মেয়ে একসাথে ঢলাঢলি, নাচানাচি। বোরখা ছাড়া ঘুরে ফিরা। যেখানে সেখানে এক সাথে বসে আড্ডা দেওয়া। আড্ডা দেওয়া মানেই তো নষ্টামি। তারউপর ইন্টারনেটের সব জায়গায় ইসলাম বিরোধী লেখা লিখছে। এটা আমাদের ইসলাম ধর্মের উপর কত বড় আঘাত তা কি আপনারা বুঝতে পারছেন?
“কি একটা কথা চালু হয়েছে এখন – যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। আরে কেমনে পালন করবে। এমন বেশরিয়তি কাজ চলতে থাকলে যুবক ছেলেদের ঈমান ঠিক থাকবে? বাংলাদেশ ইসলামী দেশ। এই দেশে মুসলিমদের ঈমান ঠিক রাখাই আসল কর্তব্য। আল্লাহ গজব ঢালবো। আল্লার গজব থেকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। মনে রাখবনে আল্লার গজব থেকে আমরাও রেহাই পাবো না। কারণ আমরা এগুলা দেখেও কিছু করছি না”
“ওই ঢাকা ভার্সিটিই হচ্ছে আসল নাস্তিক উৎপাদনের কারখানা। ওইটা ধ্বংস করতে পারলে দেশে শান্তি আসবে। ইসলাম বলবৎ হবে। আল্লার গজব থেকে নিজেদের রক্ষা করতে চান আপনারা?”
সবাই একসাথে বলে উঠে “হ্যাঁ হ্যাঁ আমরা চাই?
একজন দাড়িয়ে বলে উঠে “ আমাদের কি করতে হবে বলেন শুধু। আমরা আমাদের জান দিয়ে হলেও ইসলাম রক্ষা করবো”
সফিক একবার সেই ছেলেটির দিকে তাকায়। ক্রোধে রাগে উত্তেজনায় ছেলেটির চেহারা লাল হয়ে গেছে। শফিক ভাবে, এই তো সাচ্চা মুসলিম। অন্যায়ের কথা শুনে বিস্ফোরিত হচ্ছে। আর আমি নিস্তেজ হয়ে বসে আছি। আমার ধর্মের উপর আঘাত হানছে আর আমি ভাবছি চিত্রাকে নিয়ে। লজ্জায় শফিকের মাথা আরও নিচু হয়ে যায়।
হুজুর আবার বলে উঠলো “আপনারা শান্ত হন। এভাবে মাথা গরম করলে কিছু হবে না। আমাদের শান্ত মাথায় কাজ করতে হবে। সামনেই আমারা আমাদের শক্তির পরিচয় দিবো। সারাদেশে একসাথে আমরা আমাদের প্রতিবাদের ভাষা জানাবো। মনে রাখবেন কোন আন্দোলন রক্ত ছাড়া সফল হয় না। সারাদেশে একসাথে লাশের বন্যা ঢালতে হবে। মনে রাখেবন যারা কম শুনে তাদের জন্য গর্জনের প্রয়োজন। একটা দুটা লাশ দিয়ে এদের বুঝানো যাবে না যে আমরা কত শক্তিশালি। আমরা ইসলাম রক্ষার জন্য যে কোন আপোষ করবো না এটা জানানোর জন্য শত শত লাশের প্রয়োজন”
সামনে উৎসবের দিন । একসাথে সারাদেশে লাশের বন্যা হবে। ইনশাল্লাহ।
হুজুরের বক্তব্যের পর অন্যজন আসে। সে বুঝিয়ে দেয় কখন কীভাবে কি করতে হবে। ঠিক করা হয় কারা কারা কোন জায়গায় মূল কাজ করবে। শফিকের নাম থাকে না তাতে। সে নিজেকে অপদার্থ মনে করে। কারো মন পাওয়ার যোগ্য না সে। না চিত্রার না হুজুরের। নিজেকে বড় অপ্রয়োজনীয় মনে হয় তার। বেঁচে থাকা তুচ্ছ মনে হয়।
সবাই খুব চাপা স্বরে কথা বলতে থাকে। যেন খুব অনৈতিক কাজ করতে যাচ্ছে। সফিক এই নিস্তব্ধ স্মরের কোন কারণ খুঁজে পায় না। একটি পবিত্র কাজ হতে যাচ্ছে। ইসলামের গায়ে কুলশতা লেগেছে , এ পরিস্কারের দায়িত্ব কিছু ভাগ্যবানের উপর পড়েছে। এ তো উল্লাসের বিষয়, এ তো আনন্দের বিষয়। এ কোন পাপ নয় কোন গুনহা নয়। উৎসবের সাথে এ কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
শফিক দৃঢ় পায়ে উঠে হুজুরের কাছে যায়। নিজের ভেতরে সে তেজদীপ্ত তাড়না অনুভব করে। একটি উদ্দেশ্য খুঁজে পায় সে জীবনের। চিত্রাকে বুঝানোর এর চেয়ে ভালো উপায় নেই। একটি দুঃখ রাগ ক্ষোভ যন্ত্রণা প্রতিশোধের স্পৃহা নিয়ে সে হুজুরকে বলে “আমাকে ঢাকার দায়িত্ব দিন। আমাকে এই পবিত্র কাজ করার সুযোগ দিন”
চাপা গুঞ্জন হঠাৎ পিন পতন নিরবতায় ভরে যায়। হুজুর অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকে শফিকের দিকে। সবার দৃষ্টি শফিকের দৃঢ়তার উপর। শফিকের চোখে আগুন দীপ্ত তেজস্ক্রিয়তা দেখে হুজুর কিছুটা থমকে যায়। পর মুহূর্তে একটি হ্যাঁ বোধক হাসি দেয়।
আজ সেই কাঙ্ক্ষিত দিন। বিগত এক মাসে শফিক শুধু ট্রেনিং নিয়েছে আর দিন রাত এক করে প্রার্থনা করেছে কাজের সফলতার জন্য। একবারও কলেজের সামনে যায় নি। তার জীবনের একমাত্র অবশিষ্ট উদ্দেশ্য কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দিবে না। তার অন্যান্য সহযোদ্ধারা মাঝে মাঝে বিভন্ন জায়গায় যায়। বিভিন্ন নমনিয়তা কোমলতা উষ্ণতার স্পর্শের সান্নিধ্য লাভ করে আসে। শফিক পারে না। তার চোখে শুধু দুটি দৃশ্যই দৃশ্যমান হয়। একটি চিত্রা অন্যটি বিস্ফোরণ।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই নামাজ পড়ে সে হুজুরের কাছ থেকে দোয়া নেয়। হুজুর অনেকক্ষণ অনেক সুরা পড়ে শফিকের মাথায় বুকে ফু দেয়।
“সবচেয়ে বড়টার দায়িত্ব তোমার কাঁধে। তোমার জায়গার গর্জন যেন সারা দেশ শুনে। মূল মঞ্চের খুব কাছে গিয়ে তোমাকে ছুড়তে হবে। কোন ভুল হলে চলবে না। তোমার উপর আল্লার বিশেষ রহমত আছে। তুমি পারবে। ইনশাল্লাহ”
শফিক বের হয়। আজ সে পরেছে একটি লাল পাঞ্জাবী। পকেটেই আছে একটি বিধ্বংসী মরন বোমা। এতো সকালেই সূর্যের তেজ অনেক প্রখর অনুভব হয়। শফিক হাঁটতে থাকে। কিছুদূর যেতেই একটি ট্রাক দেখে যেখানে বোঝাই করা সব ফুল। শফিক ফুল দেখে পুলকিত বোধ করে। মনে হয় এতো লাল হুলুদ সাদা সে আগে কখনো দেখে নি। ফুল সে আগেও দেখেছে কিন্তু দেখে কখনো এতো চমৎকার অনুভূতি হয় নি। শফিকের পাশ দিয়ে একদল তরুণ তরুণী হাসতে হাসতে হেঁটে যায়। তাদের গায়েও লাল সাদার পোশাক। শফিকের মনে হয় যেন দ্যুতি বের হচ্ছে। সে তার নিজের পাঞ্জাবির দিকে তাকায়। সেখান থেকে কোন দ্যুতি বের হয় না।
“আমার পোশাক থেকে দ্যুতি বের হচ্ছে না কেন? এক পবিত্র কাজ করতে যাচ্ছি আমি, তবে আমার পোশাক শরীর সব থেকেই তো দ্যুতি বের হওয়ার কথা”
শফিক অশান্ত হতে থাকে। অস্থির মন নিয়ে সে উৎসবের মাঝে এসে হাজির হয়। চারপাশে সে শুধু উল্লাস আর আনন্দ ছাড়া কিছু দেখে না। একটি শিশুকে দেখে বাবার কোলে। শিশুটির মুখে হাসি। মুখে রঙ। বাবাটির মুখেও হাসি। শফিকের মনে হয় এর চেয়ে চমৎকার সৌন্দর্য পৃথিবীতে আর কি হবে। একটি সুখী বাবার কোলে একটি আনন্দরত শিশু।
শফিক চোখ বন্ধ করে। বন্ধ চোখে সে বিভিন্ন মানুষের সুখি কোলাহল শুনতে থাকে। চোখ খুলে একটি দম্পতিকে দেখে। পাশাপাশি হাত ধরে বসে তাকিয়ে আছে একে অপরের দিকে। মাঝে মাঝে দুজন হেসে উঠছে। তাদের খুব সুখি মনে হয় শফিকের। পাশেই আরেক জোড়াকে দেখতে পায়। দেখেই স্তব্ধ হয়ে যায়। চিত্রা। লাল শাড়িতে। পাশে একটি তরুণ। সফিক অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। তরুণটি সে। সে চিত্রার হাত ধরে বসে আছে। চিত্রা হাসছে। শফিক আবারো চোখ বন্ধ করে। এই সৌন্দর্য তার সহ্য হবে না।
চোখ খুলে দেখে তার মাথা ঘুরাচ্ছে। সে পাগলের মতো এদিক ওদিক তাকাতে থাকে। আশেপাশে যেখানেই সে তাকায় সেখানেই আনন্দ ছাড়া কিছু দেখে না। প্রতিটি আনন্দমুখর মানুষের মুখে সে আলোর দীপ্তি দেখে, শুভ্রতা দেখে, পবিত্রতা দেখে, কোমল নরম স্নিগ্ধ মায়াময়ী রূপ দেখে। সে হন্য হয়ে খুঁজে কোথায় নোংরামি, কোথায় অশ্লীলতা, কোথায় উগ্রতা, কোথায় আবর্জনা যা পরিষ্কার করতে হবে।
তন্নতন্ন করে শফিক নোংরামি খুঁজে, সে পায় শুদ্ধ ভালোবাসা।
তন্নতন্ন করে শফিক অশ্লীলতা খুঁজে, সে পায় পিতা পুত্রের পবিত্র স্নেহ।
তন্নতন্ন করে শফিক উগ্রতা খুঁজে, সে পায় কোমল নির্মল বিনয় শ্রদ্ধা।
তন্নতন্ন করে শফিক আবর্জনা খুঁজে, সে পায় সুগন্ধময় মায়াভরা সুরে সঙ্গীতে আচ্ছন্ন একটি বটগাছ, যা তার জন্মভুমির একটি ঐতিহ্যবাহী অংশ।
হঠাৎ শফিক দৌড়াতে শুরু করে। পাঞ্জাবির পকেটে রাখা জিনিশটিকে খুব শক্ত করে ধরে রাখে। সে আবর্জনার উদ্দেশে দৌড়ায়, উগ্রতার উদ্দেশে দৌড়ায়, অশ্লীলতার উদ্দেশে দৌড়ায়, নোংরামির উদ্দেশে দৌড়ায়।
অবশেষে সে পৌছায় তার কাঙ্ক্ষিত স্থানে। সেখানে অবস্থিত সবাই তাকে দেখে উতেজিত হয়ে পড়ে। কিন্তু তার চেহারা দেখে কেউ তাকে কিছু জিজ্ঞেস করার সাহস পায় না। শফিক সোজা চলে যায় হুজুরের রুমে। তাকে দেখে হুজুর ভরকে যায়।
“তুমি এখন এখানে কি করো? কাজ শেষ করছো? শেষ হলে তো খবর পেতাম। কি ব্যাপার তুমি কাছে আসছ কেন, তোমার চেহারা এমন দেখাচ্ছে কেন?
শফিক যতই কাছে যেতে থাকে, হুজুর ততই ঘামাতে থাকে। হাতের তসবি পড়ে যায়, মুখে সুরা পড়া থেমে যায়।
অভাবিত ভাবে সে হুজুরকে জড়িয়ে ধরে।
“আমি আবর্জনা পরিষ্কার করতে এসেছি”
হুজুর চিৎকার করতে থাকে। বাঁচানোর জন্য তারস্বরে আওয়াজ করতে থাকে। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসে না। সবাই দৌড়ে ছুটে বের হয়ে যায়।
হুজুরের চিৎকার থামে একটি বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে।
তারপর ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে যাবো। আমার দেরি হবে আসতে। স্বামী অমর বলে, ঠিক আছে।…..
নভেম্বর চলছে। অনির সাথে আজ দেখা হবে তা জানাই ছিল। এই তো ক’দিন আগেই দেখা…..
বুড়িমাসি বলেন,জীবনটা বালির ঘর গো।ঢেউ এলে ধুয়ে যায় জীবনের মায়া।তবু বড় ভালবাসা ওদের দাম্পত্যে।রোদের চাদরের…..
এক ড্রইং রুমে বসে রয়েছে সদ্য কিশোর উত্তীর্ণ তরুণ গোয়েন্দা সজীব। সামনের টেবিলে ছড়িয়ে…..