একটি ভোরের অপমৃত্যু

তপনকান্তি মুখার্জি
কবিতা
Bengali
একটি ভোরের অপমৃত্যু

একটি ভোরের অপমৃত্যু

উড়ন্ত মেঘের ভাঁজে ভাঁজে বাতাসের খুনসুটি,
আকাশে তির্যক আলোর ঝলকানি,
কৃষ্ণপক্ষের মরা চাঁদ শেষবেলায় পরম আবেশে
চোখ বুজে আছে। কুয়াশা ঘন হয়,
আঁকাবাঁকা গলিপথে সর্পিল হিসহিস শব্দ।
সদ্য শবদাহের গনগনে আগুনে, হরিবোলের
দানবীয় হুংকারে ত্রস্ত আকাশবাতাস।
খোলা বারান্দায় কেদারার মাঝে হিমঘর – বুকে
স্মৃতিমেদুর একটি জমাট দীর্ঘশ্বাস।
নরম ঘাসে পা ডুবিয়ে সন্তর্পনে ভোর আসে।
অপাপবিদ্ধ মনে আলোছায়ার খেলা।
হাজার হাজার মানুষ পথে। চিন্তার প্রচ্ছদ
ছিঁড়ে ছিঁড়ে যায় গরম কাগজের রামধনু ডাকে।
.চোখের সামনে একটি ভোরের অপমৃত্যু ঘটে।

 

জীবনের ছক

এক চিলতে দিনের আলোয় জীবনের সিন্দুক
খুলে বেরিয়ে আসে কামনাগুলো। নাম, যশ,
অর্থ, খ্যাতি, প্রতিপত্তি সামনে এসে দাঁড়ায়
ডানা মেলে। ছোট ছোট সুখ, আনন্দ এখন
আকাশের তারা। দাঁড়িপাল্লার একদিকে
ভালোবাসা অন্যদিকে উপহার। সামাজিকতা
আবদ্ধ ফোনে অথবা মোবাইলে। অবসর কাটে
ই – মেলে, স্কাইপ বা হোয়াটসঅ্যাপে। অনাবিল
শান্তি, নিরিবিলি আড্ডা, গল্পগুজব সব হারিয়ে
গেছে জীবন থেকে। জীবন এখন ছকে বাঁধা –
টাকা আর পার্থিব সম্পদে।

 

অনুভূত হৃদয়ের ইচ্ছা 

তোমার মধ্যেই প্রথম পেয়েছিলাম বাসন্তিক
অনুভূতি। তোমার সারস্বত পোশাকের মধ্যে
লুকিয়ে ছিল কখনও শীত, কখনও গ্রীষ্ম।
তোমার আগুনবরন চাহনিতে দেখেছিলাম
পলাশের উজ্জ্বল উপস্থিতি, ঠোঁটে হরেক
ফলের মিশ্রণ। তোমার লজ্জানত গালে ছিল
আবিরের ছোঁয়া। অনেক ইচ্ছে তোমাকে নিয়ে।
অনেক ভালোবাসার দাগ আঁকতে চায় আমার
উপোসি হৃদয় তোমার নরম শরীরের পরতে
পরতে। লুকোচুরি খেলা ছেড়ে শক্ত হংসগ্রীবায়
একটু মাখন লাগাও ফুলের ঐশ্বর্য আনতে।

 

ভোরের খোঁজে

মহীরুহরা কাটা পড়লে আমাদের মতো
পাখিদের বাস্তুচ্যুত হতে হয়।
মহাজনেরা চলে গেলে আমাদের মতো
অভাজনদের দৃষ্টিবিভ্রম ঘটে।
চোখ বুজে আমরা আঁধার মাখি,
কালোকাপড়ে মুখ ঢেকে হাঁটি মৌনমিছিলে,
মোমবাতি জ্বালাতে জ্বালাতে দেশলাইকাঠির
ঘর্ষণে হাতে ফোসকা পড়ে,
চোখের জলে প্রতিবাদের ঘ্রাণ উপচে ওঠে।
রাত দীর্ঘ হয়, ভোর সরে সরে যায়।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..