মনিনিকার একদিন প্রতিদিন
সকাল সকাল ওঠা মনিনিকার বরাবরের অভ্যেস। সকালে এক বড় কাপে অর্গ্যানিক গ্রিন টি নিয়ে সোফায়…..
একটি রেপের গল্প
শমীক বসে বসে টাইপ করছিল।এক তরুণ লেখক একটি গল্প পাঠিয়েছে তাদের পত্রিকায়। একটি রেপের গল্প। গল্পটির শিরোনাম জংলী মানুষ।
গল্পটি টাইপ করার সঙ্গে সঙ্গে সেটা তাকে পড়তেও হচ্ছিল।সম্পাদক রাজীবদা ওকে বলেছে গল্পটা নর্মাল একটা রেপের। তেমন কিছুই নেই। একটি সতেরো বছরের মেয়ে তার বয়ফ্রেণ্ডের সঙ্গে বেড়াতে যায় নর্থবেঙ্গলের একটি সুন্দর চা বাগানের রেস্টুরেন্টে। সেখান থেকে ফেরার পথে একটি সাদা মারুতি ভ্যানে তিনজন গুণ্ডা ছুরি দেখিয়ে ওই মেয়েটিকে তুলে নিয়ে যায়। পরে রেপ করে এবং রাস্তার পাশে ফেলে দিয়ে যায়।
এপর্যন্ত সবটুকু টাইপ করা হয়ে ওঠে শমীকের। এরপরই শমীক থমকে যায়।বাড়িতে ছোট ভাই বিনোদকে ফোন করে।জিজ্ঞেস করে তাদের ট্যুরের ব্যাপারে জেনে নেয় তারা কোথায় হোম স্টে তে ছিল।গাইড কে ছিল এসব।আর কোনো সন্দেহ থাকে না শমীকের শমীক সবই বুঝতে পারে।
গল্পটা নর্থবেঙ্গল থেকে পাঠানো। ডুয়ার্সের এক প্রত্যন্ত চা বাগানের লেখক লেখাটি পাঠিয়েছে। সঙ্গে লিখেছে।”গল্পের ঘটনার সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিল নেই। যদি মিল হয়ে যায় তা হলে অবশ্যই সেটা কাকতালীয় এবং ঘটনার সঙ্গে লেখক কোনোভাবেই জড়িত নয়।
ফরজ গোসল
ভোর ভোর রহমতকে উঠতে হয়। উঠে ফরজ গোসল করে বেরিয়ে যেতে হয় ফুলতুলি বাজারে। ফুলতুলি বাজারে বিশাল সব্জির বাজার বসে।এই বাজার থেকে উত্তরবঙ্গের সমগ্র এলাকায় সব্জি চালান হয়।পিকাপে করে মাল নিয়ে ঘন্টাখানেক ড্রাইভারের সঙ্গে গিয়ে বাজার ধরতে হয়।বড় পাইকার রহমত। রহমতুল্লাহ আলি। সদ্য বিয়ে হয়েছে।বাবার সব্জির ব্যাবসা এখন ওকেই করতে হয়।এক্সিডেন্টে বাবার একটা পা কাটা পড়েছে। আর ছোটভাই কলেজে পড়াশোনা করে।
আজকেও রহমত তাড়াতাড়ি উঠতে চেয়েছিল কিন্তু বউ আকলিমা উঠতে দিচ্ছিল না। বুকের কাছে জড়োসড়ো হয়ে ঘুমিয়েছিল।শেষে উপায়ন্তর না পেয়ে একরকম জোর করেই রহমত উঠে পড়ে।যদিও বউকে ছেড়ে কোথাও যেতে ইচ্ছে করে না রহমতের।তবু উঠতে হয়। এই শীতের ভোরে রহমতকে গোসল করতে হয়। ফরজ গোসল।
জন্মদিন উদযাপন
বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল স্বপন।স্বপনের তেরো বছরের মেয়ে ওর গলা জড়িয়ে বলে বাপী আজকে আমার জন্মদিন। আজকে আমাকে অবশ্যই একটা টেডি দিও। স্বপন হাসে, মেয়ে রঞ্জনার গাল টিপে দিয়ে স্ত্রীকে বিদায় জানায়।
স্বপনের একটা অত্যন্ত জরুরি কাজ ছিল জেলা সদরে, সে অফিসের কাজগুলি বুঝে নেয়।গুছিয়ে নেয়।এরপর কুরিয়ার নিয়ে বেরিয়ে পরে।
রঞ্জনা সন্ধ্যায় বসেছিল মায়ের সঙ্গে। বেলুন লাগানো হচ্ছিল ঘরজুড়ে।মিমি রুমি সুজন আয়েশা সবাই এসেছে অথচ বাবা এখনো আসছে না কেন আধঘন্টা হয়ে গেল। এমন সময় স্বপনের স্ত্রী মৌমিতার মোবাইলে ভেসে ওঠে একটা আননোন নাম্বার। রঞ্জনাই নাম্বার টা রিসিভ করে এবং লাউড স্পিকারে দেয়।ওপাশ থেকে কেউ বলে ওঠে আপনার লোক এক্সিডেণ্টে আহত হয়েছে।রাস্তায় পরেছিল গুরুতর আহত হয়তো বাঁচবে না,আপনারা এসে নিয়ে যান। তারপরই ফোন টা কেটে যায়। পরে থাকে দীর্ঘশ্বাস আর শূন্যতা।
রঘুনাথ বাবু
রিটায়ার করে বাড়িতে ফিরেছেন রঘুনাথ বাবু। রঘুনাথ ঘোষ। তিনি ছিলেন প্রাইমারি স্কুলের টিচার।আজকে তিনি বাজার থেকে ফিরছিলেন।মাছের দোকানদার আজকে যেন তাকে পাত্তাই দিচ্ছিল না। তার হাসিমুখ কোথাও যেন উধাও হয়ে গেছে। বাজারের শ্যামল সাহার ওষুধের দোকানে বসে রোজ খবরের কাগজ পড়েন তিনি। অথচ আজ শ্যামল ডাক্তার মানে কম্পাউন্ডার আরকি যেন খুব ব্যাস্ত এমন ভাব করছিল। সবাই যেন কেমন ব্যাস্ত। সবাই যেন তাকে এড়িয়ে যাচ্ছে। এমনই ফিল করছিলেন রঘুনাথ বাবু। আজকে তার মুড অফ ছিল এমনিতেই। সকাল থেকেই হাঁটুটা ব্যাথা করছিল।
বড়ছেলে বিপিন আজকে তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে গেল ব্যাবসায়।ছোটোটা ইউনিভার্সিটিতে পড়ে। ছাদে কষ্ট করে উঠে গেলেন রঘুনাথ বাবু বসে বসে বিকেল উপভোগ করবেন।
ছাদে উঠে রঘুনাথ বাবু দেখতে পেলেন কিছুমেঘ যেন নেমে আসছে। রোদ্দুরের ভেতর থেকে উঁকি দিচ্ছে মোহনার মুখ। পাগলী মোহনা।গতবছর ডিসেম্বরে মোহনা ছেড়ে চলে গেছে ধরাধাম। মনে পড়লো আজকের দিনেই। মোহনা যেন নিজেই আসছে তাকে নিতে।
ছাদ থেকে নামতে নামতে রঘুনাথ বাবু বিপিনের বউকে ডেকে বললেন বৌমা এই যে নতুন ফুলের মালাটা তোমার শ্বাশুড়ির ছবিতে পরিয়ে দাওতো।
পরিকল্পনা
বাহারুল্লা মিঁয়া খেত থেকে বাড়ি ফিরছিল। এবার দারুণ ফসল হয়েছে। সব রবিশস্য। বেগুনের দাম উঠবে মনে হয়। অক্টোবর মাস এটা।এবার আশা করা যায় সিজনাল বেগুনে বেশকিছু আয় হবে। পুরো পনেরো বিঘায় রবিশস্য চাষ করতে গিয়ে প্রায় সাত লাখ টাকা ধার নিয়েছে। নিজের ছোট ট্রাক্টর দিয়েই চাষ দিয়েছে জমি।প্রচুর লোকজন কাজে লাগানো হয়েছিল। নিজেরই জমানো ছিলো চারলাখ টাকা। সবটাই লাগিয়েছিল জমিতে।এবার পুরো কামাই হবে।জমি থেকে পয়সাটা আসবেই।সুদসমেত ধার শোধ করবে ভেবে রেখেছে।
তিনদিনের প্রবল বৃষ্টির জেরে বান ডেকেছে তিস্তায়। খাল বেয়ে জল খেতে ঢুকেছে।উঁচু আল দিয়েও আটকানো যায়নি জলের স্রোত। বেশিরভাগ বেগুনের গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে বাকি রবিশস্য।
জমির পাশেই দাড়িয়ে বাহারুল্লা মিঁয়া আর জমিলা বিবি দেখছিল এই ধ্বংস যজ্ঞ। এবার শুধু ফসল গেল এমন নয় জমিও বিক্রি করতে
হবে।মানুষ ভাবে এক হয় আরেক। এই হচ্ছে ইশ্বরের মহান পরিকল্পনা।।
সকাল সকাল ওঠা মনিনিকার বরাবরের অভ্যেস। সকালে এক বড় কাপে অর্গ্যানিক গ্রিন টি নিয়ে সোফায়…..
পরম প্রাপ্তি বাসস্টপেজেই অতনুর বাড়ি। রাত বাড়লে বাসস্টপেজ একটা আমোদের জায়গা হয়ে যায়। অন্ধকারে শুয়ে…..
জনৈক রবি মোবাইল অপারেটর গ্রাহক রবি কাস্টমার কেয়ারে ফোন দিচ্ছে। পনেরো মিনিট পর অপরপ্রান্ত থেকে…..
ওই এক পাগলা আছিল। ঘুরে বেড়ায় খায় দায় তারপর কোথায় উড়ে যায়।পাগলার গল্প শুনে রঞ্জনের…..