একাকী শহরে বয়ান

স্নিগ্ধা বাউল
কবিতা
একাকী শহরে বয়ান

শহর নামা

দিনভর একা থাকার ইচ্ছে জাগে শহরটার
অলি গলি পায়ের জুতা বেছে বেছ
মাছওয়ালার কাছেও সে ছুটি চায়,
ছুটি চায় সে শব্দগুলোর কাছে,চায় আচমকা সব
স্তব্ধ হোক, এক ঝাঁক জোনাক ঢুকে পড়ুক
শহরের রোমশ বুকে, আর্তনাদ সরে গিয়ে
কিচিরমিচির করুক অনুগত দোয়েল, সুন্দরি
স্বর্ণলতা টগবগিয়ে বয়ে যাক রোমকূপে
মাঘের মতো টানাটানি করুক উত্তাপ- লোভী
একদল প্রেমিক প্রেমিকা, শহরটা আজকাল কিছূ ভাবে –
পিচের কালো রঙ, আটকে নেয় তার দম, অথচ
একটা ঝুল বারান্দায় দাঁড়িয়ে কত স্বপ্ন মেপে রাখে
আকাশের দূরত্ব;
শহরটা একা থাকতে চেয়েছিল,কেবল
সবুজ রঙের একটি আঁচল ধানের জমির মতো
ছুঁয়ে যায় প্রতিবেশির বারান্দায়
রোজ রোজ বিকেলে।

 

ছুটির শহর

আমাদের গর্ভবতী উঠানগুলো ভরে উঠবে
জানি ওখানে কদম কদম পা গুলো
ধান মাড়াইয়ের মতো রচনা করবে আনন্দ;
রাতগুলো হয়ে উঠবে পুরাতন কল্কিদেবতার ঘর
হাসিগুলো জমাবে আমাদের উচ্চতর কষ্ট
আমাদের ঘরগুলো রচনা করবে
ভুমির দামের সমান রাজত্ব,
গাছেদের মতো আমরা শাখা বিন্যস্ত হয়ে ছুঁয়ে যাবো
পরস্পরের হাত, কাঁসার বাসনগুলো কিছুসময় যৌথ হয়ে
জমাবে আমাদের সঙ্গীত, তান আর লহরি ;
পায়ের দাগগুলো আমরা হাইকুর মতো খুঁজে
হয়রান হতেই পারি, দিন রাতের এমন সময়ে,
জানালাগুলো কিছুদিন মলিন থাক,
ধুলা জমুক শহরগুলোর গলিতে, আদলে আর
লেকের পাতাগুলো জেনে রাখুক, পথচারিরা আরও একটু
দূরেই গেছে, ওখানে এইসব দিন রাত জমে উঠেছে;
অবসরের ঘরগুলো দরদাম করে আমার পাঁজরে
নিকৃষ্টতম একাকীত্বের স্বাদে।

 

অপেক্ষা

মৃতদের মতো চোখ বন্ধ করে আজব শহরটা
জানালায় স্থির হয় গভীর পর্দা
দরজায় ঝুলে মন খারাপের তালা;
অপেক্ষায় রয় এক প্রসূতি মন
যদি কেউ আসে –
এই ছুটির অবসরে!
একলা অথচ কতদিন প্রত্যাশিত কলিং
যদি বেজে যায়; এ ক’দিনে
ঝুলিয়ে রাখা প্রতিদিনের চোখগুলো
খুঁজে রাখে যার পদচিহ্ন; যদি আসে!
কতদিন না আসলে হারিয়ে যায় কেউ! দিন গুণে রাখে
শহরের শ্যামলিমা রায়, ছুটির মতো দিনেও।

স্নিগ্ধা বাউল। কবি। কবিতা পড়েন ভালোবাসেন।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..