চেয়ারম্যান সাহেব খুব অনেস্ট
মাকেন্দো গ্রামে ভীষণ বিপর্যয় নেমে আসে। এ গ্রামের কৃষক ও কারিগরেরা শ্রমে-রক্ত-ঘামে যে টাকা-পয়সা…..
বাংলাদেশ নামক এক দেশে এক কবি ছিলো। তাঁর নাম ছিলো সামীম আলামিন। নামের আছর নাকি স্বভাবে পড়ে। তিনি ছিলেন তাঁর নামের অর্থের মতই বিশ্বাসী ও চরিত্রবান। তিনি তাঁর স্ত্রী ব্যতীত অন্য কোনও নারীর দিকে কখনো কোনদিন চোখ তুলে তাকাতেন না। তিনি চোখের পর্দা করতেন, মনেরও পর্দা করতেন। তাঁর স্ত্রী ছাড়া আর সব নারীকে নিজের মা বোনের চোখে দেখতেন। স্নেহ ও সম্মান করতেন। তিনি ছিলেন বাংলা কবিদের তথা পৃথিবীর সকল কালের সকল কবিদের জন্য এক উৎকৃষ্ট কবির সুমহান দৃষ্টান্ত। তিনি বাউল কবি লালনের মতো বা রবীন্দ্রনাথের মতো, নজরুলের মতো বা লেখক হুমায়ূন আহমেদের মতো লুইচ্চা ছিলেন না। হুমায়ূন আজাদ, শামসুল হক, রুদ্র, শক্তি, সুনীলরা এই কবির দৃষ্টিতে নারী বিদ্বেষী, কামুক ও চরিত্রহীন ছিলেন। সত্যি বলতে কী- সব কবিই ছিলেন তাঁর শুভ্র স্বভাবের কাছে আলকাতরার মতো কুচকুচে কালো। রবার্ট ফ্রস্ট বা বব ডিলান থেকে শুরু করে কবীর সুমন অথবা লেখক দস্তয় ভস্কি যদি তাঁর কথা জানতেন তাহলে লজ্জায়, গ্লানিতে কুঁকড়ে যেতেন।
তিনি রাস্তার কিনার দিয়ে হাঁটতেন, মৃদু কণ্ঠে মেদুর কথা বলতেন। তিনি মাথার বাম পাশে সিঁথি করে কপালের কাছে লেপটে সুন্দর করে তেল দিয়ে চুল আঁচড়াতেন। সকালে অফিস যেতেন, বিকেলে সোজা বাসায় চলে আসতেন। স্ত্রী ও সন্তানদের বাকী সময়টা দিতেন। ঘরে তার স্ত্রীকে সংসারের সব কাজে সমান সহযোগিতা করতেন। রাতের বেলা দশটার মধ্যে ঘুমাতে যেতেন, সকাল বেলা সূর্য উঠলেই বিছানা থেকে উঠে যেতেন। সকালে তিনি মর্নিং ওয়াক ও যোগ ব্যায়াম করতেন। প্রতি শুক্রবারে তিনি
সাপ্তাহিক বাজার করতেন। তাঁর ও তার স্ত্রীর পরিবারের সকলের সাথে তিনি আন্তরিক ভাবে সমান যোগাযোগ রক্ষা করতেন। প্রতিটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে এবং বন্ধু আত্মীয় যে কারো বিপদে তিনি থাকতেন সবার আগে। তিনি কখনো কারো জন্মদিনের ডেটে উইশ করতে এবং গিফট দিতে ভুলতেন না। তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে সকল আত্মীয় বন্ধুদের প্রতিটি বিয়ে বা নিমন্ত্রণে অংশ নিতেন। কোনও অপূর্ব যৌবনবতী নারীকে ভুলেও যদি দেখে ফেলতেন তার মধ্যে কোনও প্রাকৃতিক কাম বা কামনা অনুভূত হতো না। তিনি এতটাই অতি প্রাকৃতিক ছিলেন যে রাতের বেলা স্ত্রীর সাথে সহবাসের সময়ও তিনি থাকতেন লাজুক, ভদ্র, বিনয়ী, আজ্ঞাবহ ও যত্নবান। তিনি এতই পবিত্রভাবে সহবাস করতেন যে তা কখনো অশ্লীল মনে হতো না। মনে হত সে তার স্ত্রী কে পিতার আদর স্নেহ মায়ায় ভরিয়ে দিচ্ছেন। তিনি সঙ্গমকে সংযম এবং সম্মান দিয়ে শৈল্পিক করে তুলতে জানতেন। তার সঙ্গম এতটাই নির্মল ছিলো যা নিচু ক্লাসের পাঠ্যপুস্তকেও পড়ানো যেতো।
তিনি তাঁর স্ত্রীর কাছে ছিলেন জান্নাতের হুরের মতোই স্বচ্ছ। এতই স্বচ্ছ যে তাঁর মনের ভিতরে কোনও নারীর মুখ ভেসে আসলেও তাঁর স্ত্রী সেটা পরিষ্কার দেখতে পেতেন। কিন্তু তিনি ছিলেন সিদ্ধ পুরুষ। তিনি সাধনার ফানাফিল্লা লেভেলও শেষ করেছেন। তাই তাঁর মনে বা চিন্তায় অন্য কোনও পর নারীর মুখ ভেসে আসতে পারতো না। মোনালিসার ছবির মতো তার হৃদিমন্দিরে কেবলই তার স্ত্রীর মুখটি সদা সর্বদা মিটিমিটি হাসতো। তিনি তার স্ত্রীর প্রেমে এতই মশগুল এবং তৃপ্ত ছিলেন যে তার সমস্ত প্রেমের কবিতা তিনি কেবল তার স্ত্রীকে নিয়েই রচনা করেছেন। লুইচ্চা কবি জীবনানন্দের মতো স্ত্রী থাকা সত্যেও আজ সুজাতা, সবিতা, অমিতা সেন, কাল বনলতা সেনের প্রেমে পড়তেন না। তিনি ছোটবেলা থেকেই একমাত্র তার স্ত্রীকে ভালোবেসে এসেছেন। কারণ তার স্ত্রী ছিলো তার শৈশবের প্রথম প্রেম যা আজো একটুও ম্লান হয়নি, তিনি সেটা হতে দেননি। তাঁর কবিতায় ব্যবহৃত প্রতিটি রূপক উপমা এবং ‘তুমি’ তিনি তাঁর স্ত্রীর নিকট বিশদ ব্যাখ্যা করতেন।
তিনি কবিতা লেখার জন্য প্রতি বছর নোবেল প্রাইজ পেতেন। তিনি ছিলেন পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশী সংখ্যক নোবেল বিজয়ী কবি। একই সাথে তিনি ছিলেন পৃথিবীর সবচেয়ে বেস্ট সেলার পোয়েট। তাঁর প্রতিটি কাব্য গ্রন্থের প্রতিটি এডিশন মিলিয়ন মিলিয়ন কপি বিক্রি হতো। পৃথিবীর একমাত্র সচ্চরিত্রবান পুরুষ কবি হবার কারণে বাংলাদেশের প্রতিটি সতী সাধ্বী নারীরা তাঁর সব বই কিনতো এবং পড়তো। শিরিন-ফরহাদ, লাইলি-মজনু, রোমিও-জুলিয়েটের চেয়েও তাঁর একমুখী প্রেমের দৃষ্টান্ত ছিলো মৌলিক ও বিরল। তিনি একেশ্বরবাদের মতোই এক প্রেমের একটি যুগান্তকারী মৌলিক দৃষ্টান্ত তাঁর যাপিত স্বভাবে এবং কবিতায় নিয়ে আসেন। একটি সম্পর্কে থেকেও অন্য কারো প্রতি সামান্য দুর্বলতা অনুভব না করতে পারার এক অতি প্রাকৃতিক, অতীন্দ্রিয়, ব্যতিক্রমী, আশ্চর্য দুর্লভ ক্ষমতা তাঁর ব্যক্তিত্বে ছিলো। সকল লুইচ্চা ও চরিত্রহীন কবিরা একটি সম্পর্কে থেকেও অন্য কারো প্রতি মনের দুর্বলতা অনুভব করলে হয়তো প্রকাশ করতেন বা সকল সময় প্রকাশ করতেন না। কিন্তু, তিনি একটি সম্পর্কে থেকে অন্য কারো প্রতি সামান্যতম দুর্বলতাও কখনো অনুভব করতেন না, কখনো করেনওনি। তার ডিএনএ ওইসব লুইচ্চা ও চরিত্রহীন কবিদের মতো স্পাইরাল বা প্যাঁচানো ছিলো না। তাঁর ডিএনএর গঠন তিনি আলোক রেখার মতো সহজ, সরল, সত্য ও ধ্রুব রূপে সঠিক করে নিয়েছিলেন।
তাঁকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়- এতো বিমিশ্র ব্যতিক্রমী বিষয় নিয়ে, বা হিউম্যান সাইকোলজির এতো ডাইমেনশন নিয়ে, এতো ধ্রুপদী কবিতা এত মৌলিক রচনা এত বর্ণনা আপনি কিভাবে দিয়েছেন? তিনি উত্তরে বলেন- কেবল মাত্র আমার স্ত্রীকে দেখেই তাঁকে ভালোবেসেই আমি এটা করতে পেরেছি। একটি ভাত টিপলে যেভাবে বোঝা যায় হাড়ির বাকী ভাত কেমন, অথবা একটি মানব দেহ ব্যবস্থেদ করে যেভাবে বোঝা যায় আর মানুষের শরীরের অভ্যন্তরে কী আছে। ঠিক তেমনি আমি একটি মানুষের প্রেমে পড়ে তাঁকে বুঝে আর জেনেই আমার সমস্ত উত্তরাধুনিক এবং মৌলিক কবিতা সৃষ্টি করেছি। তিনিই প্রথম হাতে কলমে বিশ্বের সামনে প্রমাণ করে দেখান- সচ্চরিত্রবান এবং বিশ্বাসী পুরুষই মূলত সত্যিকারের কবিতা-শিল্প সৃষ্টি করতে পারে। তাঁকে যখন জিজ্ঞেস করা হয় আপনি কিভাবে এত নিখুঁত মানুষ হয়ে উঠলেন? তিনি উত্তরে বলেন- আমি বাংলাদেশের একজন সচ্চরিত্রবান সতী সাধ্বী একগামি নারীর একটি লেখা পড়েছিলাম। তিনি সেখানে অতি সুন্দর করে লিখেছিলেন- কিভাবে একজন লুইচ্চা, চরিত্রহীন, অবিশ্বাসী কবি তাঁর মতো একগামি, সচ্চরিত্রবাণ বিশ্বাসী ও নিখুঁত হয়ে উঠতে পারে। সেই লেখাটি একবার পড়েই তিনি নাকি নিজেকে বদলে ফেলতে সক্ষম হন।
তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয় কে সেই নারী? তাঁকে আপনি পৃথিবীর সামনে পরিচয় করিয়ে দিন। তিনি বলেন- সেই নারীটিই আজ আমার স্ত্রী। বাংলাদেশের যত নারী সকল কবিদের লুইচ্চা, ভণ্ড, অবিশ্বাসী, প্রতারক বলেন, আমার স্ত্রী তাদের’ই প্রতিনিধি। আমি তাঁর হাতেই গড়ে উঠেছি।
তাঁকে শেষ প্রশ্নে জিজ্ঞেস করা হয় আপনার স্বপ্ন কী? তিনি বলেন- সমস্ত বিশ্বের মধ্যে কেবল মাত্র যে কয়জন বাংলাদেশের নারীরা লুইচ্চা, ভণ্ড, চরিত্রহীন, কবিদের চিহ্নিত করেছেন, বুঝতে এবং জানতে পেরেছেন, আমি সেইসব নারীদেরকে সঙ্গে নিয়ে ঈদের পরে পৃথিবীর সমস্ত কবিদের কবিতার বই পুড়ে ফেলবো। এটাই আমার একমাত্র স্বপ্ন। শুধু আমার চরিত্রবান, বিশ্বাসী কবিতার বইগুলো থাকবে। তখন সবাই কেবল আমার কবিতাই পড়বে। সব চরিত্রহীন কবিদের বই পড়ে পড়ে- ইজিপ্ট, ব্যবিলন, পার্সিয়া, রোম, মহাভারত, চীন, জাপান, রাশিয়ার সব মানুষ উচ্ছন্নে গেছে বা যাচ্ছে। আজ বাংলাদেশের সবার চরিত্র নষ্ট হচ্ছে। এটা মেনে নেয়া যায় না। মঙ্গলকাব্যে বিদ্যা-সুন্দরে বিদ্যার বর্ণনা পড়লে গা ঘিন ঘিন করে। বৈষ্ণব গীতি কবিতায় রাধার সাথে কৃষ্ণের লুইচ্চামি আজো আমাকে পাথর করে দেয়।
তাঁর ভক্তদের উদ্দেশ্যে তাঁকে দুলাইন কিছু লিখতে বলার জন্য অনুরোধ করা হলে তিনি মুখে মুখেই দুই লাইন কবিতা বলে দেন।
যারা তাদের বধূ, তারা যাদের স্বামী;
কসম খাও কাবিনের নামে- করবে না লুইচ্চামি।
মাকেন্দো গ্রামে ভীষণ বিপর্যয় নেমে আসে। এ গ্রামের কৃষক ও কারিগরেরা শ্রমে-রক্ত-ঘামে যে টাকা-পয়সা…..
এক রাজার রাজ্যে কিছু চাল ব্যবসায়ী একজোট হয়ে ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতার কাছে গিয়ে বললো,…..
স্ত্রী তার নির্বাচন বিশেষজ্ঞ। ঐ একবার মঈন মামাকে দুটি ঘোড়ামন্ত্রে বশ করে ওপাড়ার প্রণব সাধু…..
জোছনা করেছে আড়ি আসে না আমার বাড়ি গলি দিয়ে চলে যায়, গলি দিয়ে চলে যায়…..