গৌর (মালদা) – বাংলার চিত্তাকর্ষক ইতিহাস
বাংলার চিত্তাকর্ষক ইতিহাস সম্পর্কে জানার সময়, গৌরের মতো আর কিছু গন্তব্য হতে পারে না।…..
নির্ধারিত সময়ের পাঁচ মিনিট আগেই জেট লাইট লক্ষ্ণৌর এয়ারপোর্ট র মাটি স্পর্শ করল। ছিমছাম ছোট্ট এয়ার্পোর্ট।প্রিপেড টাক্সি নেওয়া গেল। হোটেল “সান্টা ইন”। এয়ার্পোর্ট থেকে ১২ কিমি।৩৫০ টাকার বিনিময়ে আমাদের হোটেলে পৌঁছে দিলেন্ তরুন টাক্সি চালক। কথায় কথায় জানালেন এবারে উত্তরপ্রদেশে বদল হচ্ছেই।বিজেপি আসছেই। হোটেলে পৌঁছে মাটন কষা আর তাওয়া রুটি অর্ডার করার হল। খিদে টা বেশ জব্বর পেয়েছিল।
রিসেপশন এ একটা গাড়ি বলা ছিল। খানিকটা গড়িয়ে নিয়ে চারটে নাগাদ বেরিয়ে পড়লাম।বড়া ইমামবড়া আর ছোট ইমামবড়া । বয়সের ভারে দীর্ন।ইমামবাড়াকে পরিবেষ্টন করে আছে ভুলভুলাইয়া।প্রত্যেক দরজার ৪ টে মুখ। তিনটে ভুল একটা ঠিক। এখানে নাকি রাণীদের সাথে লোকোচুরি খেলতেন রাজা।এর দেওয়ালগুলো এমন ভাবে বানানো যাতে কাগজ ছোঁড়া, দেশলাই জ্বালানো এসবের আওয়াজ নিঁখুত ভাবে পৌঁছে যায় অন্যদিকে। কথিত আছে ইংরেজ আমলে এক্দল সৈন্য এখানের সুড়্ঙ্গএ ঢুকে আর বেরোতে পারে নি। এ সময় বেশীর ভাগ সুড়্ঙ্গবন্ধ করে দেওয়া হয়। এর মূল স্থপতি ইরানের খিফায়ত উল্লার। নবাব আসাদ উদ দৌলা ১৭৮৩ র মন্বন্তরের সময় প্রজাদের কাজ দেবার জন্যে এই ইমামবড়া টি করেন। এটি শেষ হতে লাগে ১৫ বছর।
পুরান বলে সুর্যবংশীয় রাজাদের হাতে নগরের পত্তন। বনবাসের পর রামচন্দ্রের ভাই লক্ষ্মন কে যৌতুক দেওয়া লক্ষ্মণবতী ই আসলে লক্ষ্ণৌ । মতান্তরে স্থপতি লখনা থেকে এই নামকরন। ১৬ শতকে মোগল সম্রাট আকবরের পৃষ্ঠপোষকতায় মোগল সাম্রাজ্য ১৬ টি প্রভিন্সে ভাগ করা হয়। লক্ষ্ণৌ হয় আয়ুধের সুবেদারের সদর। ১৭২২ এ অযোধ্যার প্রথম সুবেদার অর্থাৎ নবাব হন সাদাত আলি খান। আজকের লক্ষৌ রুপ পায় নবাব সুজা উদ দৌলা (১৭৫৬-৭৫) ,আসাদ উদ দৌলা (১৭৭৫-৯৭) ইত্যাদি নবাব দের হাতে।এইসময় নবাবী জলসা কাব্য নৃত্য গীত সুবর্ণ যুগে পৌঁছয়।সিপাহী বিদ্রোহের এক বছর আগে দশম তথা শেষ নবাব ওয়াজেদ আলি শাহ কে আলস্য এবং অমিতব্যয়িতার অজুহাতে ইংরেজ সিংহাসনচ্যুত করেন এবং বছরে ১২০০০ পাউন্ড অনুদান দিয়ে কলকাতার মেটিয়াবুরুজে নির্বাসিত করেন।
এর পরে আমরা দেখলাম বাওলি কুয়ো।কুয়োটি যখন প্রথম তৈরী হয় তখন সেটা চার তলা উচ্চতা খনন করে তৈরী করার পরিকল্পনা ছিল।কিন্তু মূল স্থপতি শ্রমিকদের সুবিধার কথা ভেবে পাশের নদীর সাথে এটিকে সংযুক্ত করেন। কিন্তু এতে হিতে বিপরীত হয় প্রচন্ড জলের স্রোতে নীচের তিনটি তলা জলের তলায় ডুবে যায়। আবার নতুন করে নির্মান করতে হয়। এই কুয়োটি এমন ভাবে তৈরী করা হয়েছে যে প্রবেশদ্বারের যেকোন ব্যক্তিকে জলে পড়া তার প্রতিবিম্ব দেখে মানুষ টির উপস্থিতি জানা যায় এবং গুপ্ত জায়গা থেকে তাকে অক্রমন করা যায় ।
খুব ক্ষিদে পেয়ে গিয়েছিল। একটা মাঝারিমানের রেস্তোয়া গিয়ে লক্ষৌ র বিখ্যাত গলৌটি কাবাব আর তুন্ডা কাবাব সাঁটানো গেল। খুব টায়ার্ড ছিলাম। তাই খাওয়া দাওয়া সেরেই ঘুম।
পরের দিনের গন্তব্য রেসিডেন্সী। গোমতী নদীর তীরে ১৭৮০-১৮০০ র মধ্যে এটি গড়ে ওঠে। নবাব ওয়াজেদ আলি শাহ কে সুকৌশলে সরিয়ে দিয়ে লক্ষ্ণৌ তে প্রতিষ্ঠিত হয় ব্রিটিশ রাজ। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের সময় ২৯৯৪ জন ইংরেজ এসে এখানে আশ্রয় গ্রহন করেন স্যার হেনরী লরেন্স র নেতৃত্বে। নবাবের গুণমুগ্ধ প্রজারা রেসিডেন্সী ঘিরে ফেলেন ১৮৫৭ সালের ৩০ শে জুন। ৮৭ দিন ধরে ঘেরাও চলে। ২রা জুলাই বোমার আঘাতে স্যার হেনরী লরেন্স মারা যান। ২০০০ বেশী ব্রিটিশ এখানে সমাধিস্ত আছে।অবরোধ ওঠে নভেম্বর ১৭, ১৮৫৭। স্মারকরুপে বাড়ি টি এখন ভারতীয় দের তীর্থমন্দির। লক্ষ্ণৌ র পরিণতি ভয়াবহ্তা নেয় সিপাহী বিদ্রোহের সময়।যার প্রতিচ্ছবি এঁকেছেন বরেণ্য সাহিত্যিক প্রেমচাঁদ মুন্সী তার “শতরঞ্জ কি খিলাড়ী” নামক গ্রন্হে। আর উত্তরকালে সত্যজিত রায় ক্ষয়িষ্ণু নবাব দরবারের বর্ণনা দিয়েছেন “শতরঞ্জ কি খিলাড়ী” চলচিত্তে।
এবার একটু কেনাকাটার পালা। আমি চিকনের কাজ করা দুটো পঞ্জাবি কিনলাম। কেয়া কিনলো সালোয়ারের পিস।এবার হোটেলে ।
এবার ফেরার পালা। মনে রয়ে গেল লক্ষ্ণৌ র অমলিন স্মৃতি। মন বলছে আবার আসতে হবে ….
বাংলার চিত্তাকর্ষক ইতিহাস সম্পর্কে জানার সময়, গৌরের মতো আর কিছু গন্তব্য হতে পারে না।…..
এপিসোড-১ (প্রথমাংশে রেল-জংশন) সে তিন যুগ আগের কথা।ঢাকা থেকে এসে বিল্টু মামা নেমেছেন কুলাউড়া জংশন…..
কবি কাশীরামদাসের জন্মস্থান পূর্ববর্ধমান জেলার সিঙ্গিগ্রামে বেড়াতে গেলাম।তাঁর জন্মভিটের ভগ্নাবশেষ দেখলাম।আমি,মিহির,রিমি,সোমা,রজত সকলে গ্রাম ঘুুুুরলাম। চারদিকে…..
ভ্রমণবিলাসী চারজন বেরিয়ে পরলাম ভ্রমণে। আমিও গেলাম।প্রথমে ওরা গেল মুকুটমণিপুর। সপ্তাহান্তে পিকনিক বা একদিনে ছুটিতে…..