লাইমুন নাহার সীমার কবিতা
নাগরিকত্ব আমার ধসে যাওয়া কাদামাটি দিয়ে তুমি গড়ে নিলে তোমার নতুন ঘরের স্তম্ভ আমার স্বপ্নের…..
এতক্ষণে বারোটা ল্যম্পপোস্ট, এক ঝাঁক পাখি
কয়েকটা সিগন্যাল, সফেদ বাহারি গাড়ি পার হয়ে গেছি,
আমার এক প্রহর পার হল।
জেগে আছি।
সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম শব্দ বয়ে বেড়াচ্ছে বাতাসে বাতাসে
কখনও বৃষ্টি, কখনও ধোঁয়ার নিকোটিন,
একাগ্র নিস্তব্ধতা, আর ধমনীর শব্দ শুনতে পাই।
এই মাত্র উড়ে গেল এক ঝাঁক পাখি,
আমার দুই প্রহর পার হল।
ঘড়ি দেখতে শিখিনি, তবে
একটা স্নিগ্ধ হাত জড়িয়ে এলে গলার চারিপাশে
বুঝি রাত হয়ে গেছে।
সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম শব্দ বয়ে যাচ্ছে, সেকেন্ডের কাঁটার মতো,
চামড়া বাকলের মতো টান দেয়,
আমার তিন প্রহর পার হল।
জেগে আছি।
আকাশ কখন জ্বলে ওঠে জানিনা,
সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম শব্দ তাড়া করে,
ঝিম ধরে, তাপ বাড়ে কপালে, ঘাম জমে যায়।
একটা স্নিগ্ধ হাত এসে কপাল মুঝে দেবে,
জেগে আছি।
চাষাবাদের পর ফিরে আসি
বুক পকেটে শস্যের দানা নেই
পরের বছরের জন্য।
আর ভাল লাগেনা কৃষকের জীবন।
এমন জীবন হোক , খাওয়া পড়া লাগে না।
তার চেয়ে নদীতে ভেসে বেড়াই,
সাঁতার দিই, ভাষা ভাষা অজানা স্রোতে।
জনশূন্য পাড় থেকে তুমি হাত ছানি দাও,
সাঁতরিয়ে হাত ছুঁয়ে আসি তোমার,
নদী তল থেকে তুলে আনি দুর্লভ উপহার,
তোমার হাতে দিই।
আবার সাঁতার দিই, আবার ডুবে যাই
আবার তুলে আনি উপহার, তোমার জন্য।
আমার যে কৃষি কাজ নয়, তুমি জানো।
আমার ডুবুরী মন, পাড়ি দিই অচেনা নদীতে,
তুমি এই ভালোবাসা বোঝো।
তুমিও গা ভাসাও স্রোতে
যতদূর নক্ষত্র যায়।
সাঁতরিয়ে পার করো ভালো না লাগা কৃষকের জীবন,
কখনও সাঁতার দাও, কখনও ডুব দাও
কখনও উঠে আসো, দুর্লভ উপহার, আমার জন্য।
আমি এই ভালোবাসা বুঝি।
সন্তান মুখে করে নিয়ে আসে খড়,
আমি ভাবি বাইরে বন্যা হলো কি না.
আত্মার হাতের মুঠোয় দেখি পোড়া মাংসের ছাঁট,
আমি ভাবি বাইরে দাঙ্গা হলো কি না.
আমার বিশেষ কিছুই করার থাকে না,
কাগজ কলম নিয়ে বসে থাকা ছাড়া.
দুর্যোগের রাতে একদিন
হাতে করে নিয়ে এসেছিলাম বজ্র – বিদ্যৎ – তুফান,
তুমি ভেবে ছিলে বাইরে কবিতা হলো কি না.
নাগরিকত্ব আমার ধসে যাওয়া কাদামাটি দিয়ে তুমি গড়ে নিলে তোমার নতুন ঘরের স্তম্ভ আমার স্বপ্নের…..
ভালো নেই ভালো নেই ধূসর সন্ধ্যা বিষণ্ন বিকেল, চারিপাশ ভালো নেই কফির কাপ পথের ধুলো…..
প্রেমের কবিতা যা কিছু পাষাণ, মনে হয় আঁশ বটিতে কুচি-কুচি করে কাটি পালানো ঘাতক সময়…..
তর্জমা স্নানে শুচি হবার পর বেকসুর সন্ধ্যাগুলো শুধুমাত্র নিজস্ব অন্ধকারের নিচে দোলনাচেয়ারে ছড়িয়ে বসা কিছুটা…..