প্রেমিক
প্রেমিক হয়তোবা তাকে আমি গড়তে পারতাম তার বুকের ভিতর এপাশ থেকে ওপাশে উল্টে নতুন একটা…..
মৃত্যু যেখানে শেষ নয়
১
ভিটেজুড়ে এখনও অশৌচ, ছড়িয়ে আছে ম ম হবিষ্যির ঘ্রাণ। মনে করুন সাতটা দোষ পেয়ে আপনিই মারা গেছেন, তাই এখনও আছেন ছমছম শ্যাওড়া গাছে কিংবা অলক্ষুণে বাতাসে। আর ভাবছেন, পেছনে যে সুদীর্ঘ পথ ফেলে এসেছেন- বাঁকে বাঁকে সাপলুডুর কোড; আছাড়-পাছাড়, তারই মাসুল মৃত্যুর সমান।
২
অথচ পূর্বপুরুষদের মুখে ছুঁড়ে দিয়ে অভিসম্পাত, আপনি মাখছেন সুগন্ধি সাবান; আরও কিছুদিন অদৃশ্য বাঁচার বাসনা। আর আপনার ভৌতিক পা পঁয়ষট্টি বছর লম্বা করে এক পা পেছনে গিয়ে দেখছেন, মেঘমেদুর বিকেলপিঠে বিস্তীর্ণ মাঠ- কুঁজোবুড়ি কুড়িয়ে নিচ্ছে অবশিষ্ট ধান; নাড়ার ছাট নিয়ে উড়ে যাচ্ছে ঘূর্ণি হাওয়া।
৩
অদূর আঁতুরে ঘেঁটুফুল প্রসব করেছে একটি সদ্যজাত, তার আঁঠালো গা চাটছে কুকুর; বহুগামী ভ্রমর ডুবে আছে রসের হাঁড়িতে। এইসব পেছনে ফেলে, কাটা ঘুড়ির দিকে ছুটে যাচ্ছে একটি কিশোর, যেদিকে ভেঙে পড়েছে আকাশ- সুরক্ষা বলয়। যেখানে সুউচ্চ শিরীষ গাছের মাথায় ঘুড়িটা আটকে গেলে রূপান্তরিত হয় সাদা থান পরিহিতা প্রেতাত্মায়; নেমে আসে কুহক আঁধার।
৪
এবার আপনার ওপর একটু একটু করে ভর করছে ভয়, লোমগুলো খাঁড়া হয়ে উঠেছে- কিন্তু আপনি এখন এর মানে বোঝেন বলেই ভয় পরিণত হচ্ছে ক্রোধে। আর তৎকালীন ধারণায় লুকোতে চাইছেন বংশপরিচয়, অথচ আপনি ভালো করেই জানেন এই সত্য থেকে নিস্তার নেই। শেকড়ের ভেতরেই লুকিয়ে আছে সুখ- অসুখ।
৫
ধৈঞ্চা ক্ষেতের পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে খাল, পাড়ের হিজল গাছে ফুল ধরেছে, বিলাতি গাবের গায়ে ছাতকুড়ার জন্য বোঝা যাচ্ছে না কোনটা পেকেছে- তিরতিরে বাতাস বয়ে যাচ্ছে কলা বাগান দিয়ে; গোপনাঙ্গে হাত রেখে স্বমেহন শিখছে সেই কিশোর, ঝরা পাতার ভেতর খোলস ফেলে গেছে সাপ।
৬
দিনগুলোতে ফিরতে চাইলেও আপনার ঘেন্না হয় রূপকথায়, হুরহুর করে ঢুকে পরে দুপুরের নির্জন শূন্যতা- আলপিনদাহ। উলুখাগড়া দিয়ে কী হয় ঘরের ছাদ! অন্তঃসারশূন্য কীভাবে বুঝবে বিবর্তনবাদ! কিন্তু আপনি জানেন জিনতত্ত্ব, নচ্ছার শৈশব জানে সোনার কাঠি রুপার কাঠি খক্কোসপ্রবাদ।
৭
তথাপি আপনি ক্লান্ত নন। অস্থির। ভর সন্ধ্যায় যে রমণী খোলাচুলে চালভাজা খায়- তার পায়ের গোছায় পিষ্ট হয় যে পঙ্গুপুরুষ তার প্রতি ঈর্ষাকাতর। যদিও আপনার শামুক সংকোচ, কুতকুতে চোখ মাত্রারিক্ত সংযত- কেননা ওরা সব ফাঁস করে দেয়।
৮
এই মনবৈকল্যকে আপনার মনে হয় জিনগত, সেকারণেই ঈশ্বরে অবিশ্বাস- কারণ ব্যক্তিভেদে ঈশ্বরও ভিন্ন; থাকতে পারে বউ পেটানো স্বভাব, সন্তানে অবহেলা, পরস্ত্রী কাতরতা।
৯
মৃত্যুবধি যাঁর সাথে আপনার অচ্ছেদ্য সহবাস, লেপ্টে ছিলো চাবানো চুইনগামের দলা, রোমকূপ দিয়ে ঢুকে রক্তে মিশে যেতে পারতো গলিত ধাতুর মতো। যাঁর প্রতি আপনার অবিমিশ্র ঘৃণা সত্ত্বেও সত্তাজুড়ে অনঙ্গ তাঁকে ছাড়াতে পারেননি কখনও, করতে পারেননি অস্বীকারও। নাক ঝেড়ে ফেলে দিলে পায়ুপথ কিংবা অন্য ছিদ্র দিয়ে ঠিকই ঢুকে যেত। তাই আজ আপনার অতৃপ্ত প্রেতাত্মা, বিকৃত বাসনায় একই সাথে আছর ও ওঝা ছলনা হতে চায়।
প্রেমিক হয়তোবা তাকে আমি গড়তে পারতাম তার বুকের ভিতর এপাশ থেকে ওপাশে উল্টে নতুন একটা…..
চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..
স্মৃতি চাঁদের আজ দুঃখ পাবার কিছু নেই ! সবুজ পৃথিবীতে আজকের এই বিকেলে আকাশে উড়ে…..
দেবী না পরিণীতা রাতটা একা থাকে এবং নিঃসঙ্গ অন্ধকার মানে রাত; তাহলে অন্ধকার নিজেও একা…..