আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে
আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে, আমি জানতাম না, অগাস্টকেও রাহুর মত গ্রাস…..
ষাট পয়সার নিউজপ্রিন্ট কাগজে লেখা কবি’র প্রতিবাদে
গণিকাবহুলতার গণতন্ত্রে রাষ্ট্র দাঁড়িয়ে যায় উচ্চতায়,
অথচ কবি, কবি’র দাঁড়ানো হয়না সমাজে!
মাথা হেট ঘরময়তার আলনায় কবি ভুলে যায় কবে খেয়েছে ভাত পরিবারে,
কবে হেসেছে প্রাণখুলে?
বাবা মাথা হেঁট, বাজারে যায়
মা করে সেলাই; কবিপুত্র জন্মের কষ্ট।
প্রতিটি কুকুরের চারপেয়ে হাঁটাহাটিতে
কবি ভুলে যায় বোন কবে দিয়েছিল শেষ পরিচয়?
সন্ধ্যার সিনেমাহলে প্রেমিকা বলে গেছে যাবার সময়-
উঠতে পারলে ষাটপয়সার কাগজ থেকে
দেখা করে অন্তত বিয়ে খেয়ে যেও পরবর্তী সয়ম্বর সভায়।
লাস্যময়ীতা আর কটাক্ষবিলাস বালিশে চেপে
কবি বসে থাকে রোদ জর্জর চোখে,
মশাল জ্বলা বুকে।
চায়ের দোকানের খিস্তি খেউরে অথবা তীব্র আর্তনাদে
শহর গড়ায় সভ্যতায়।
রাষ্ট্র দাঁড়ায় বিনির্মাণের উন্নয়নে,
কবি দাঁড়াতে পারেনা,
কবি হাঁটতে পারেনা বুকে ব্যাথা খুব।
কবি’র আঙ্গুলে দাঁড়ানো পতাকা উপহাস করে,
কবি বাড়ি ফেরেনা; ঘর হারানো লোকমুখে শোনা কালো কৌতুকে।
রাস্তায় মাঝে দ্যাখা হয় কিছু ফেরীওয়ালা,
কায়কাওসের ছেলে অথবা বিব্রত ময়ুরের সাথে।
দ্যাখা হয় বেনিয়া বেশ্যাদের উর্বর স্তনবাহী অনুর্বর
যোণীনির্ভর মেদের সাথে।
দ্যাখা হয় ধর্ষক কবিতার
পুরষ্কার নেয়া একুশের স্মরণসভা।
দ্যাখা হয় কুকুরের পা তুলে পেচ্ছাপ করা নষ্ট আয়োজিত কবিতা উৎসবের।
সামরিক কোলাহলের বেসামরিক পদযাত্রায়
এত কিছু দেখতে দেখতে দ্যাখা হয়না,
কবিপিতার মলিন মুখ,
কবিমাতার বিষন্ন চোখ,
বোনের ভেজা আঁচল,
প্রেমিকার ন্যায্য অবহেলা।
কবি বাড়ি ফেরেনা, কবি মিছিলে যায়, মিছিলে ঘুমায়।
বাবা জেগে থাকে।
জেগে জেগে আওড়ান-
কবিপিতারা মারা যান সন্তানের প্রথম কবিতায়।
কবি’মাতাদের আত্মহত্যার কারণ প্রথম শ্লেটে লেখা –স্বরে’ অ।
তবুও দেখুন – দেখুন’তো একবার এত এতবার সামাজিক ধর্ষণ
আর বেওয়ারিশ মৃত্যুর পর
তবুও কি থামে কবি, থেমেছে কি কখনও?
জনতার আগুন কলমে নিয়ে অধিকারের দাবীতে লেখা ফেষ্টুন,
প্রেমিকার ওড়নায় আদায়কৃত নামাযের কারণে ব্রাত্য সে
সামাজিক সাপ্তাহিক বাজারের ছোট ফর্দে
তবুও থেমেছে কি কখনও মহানায়ক!
শোকেতাপে কবিপুত্র জন্মদেয়ার অথর্বতায়
কবি পিতারা কবি জন্মের অভিশাপে বন্ধ করেছেন যৌনক্রিয়া
কবি মাতারা রুদ্ধ করেছে পথ জরায়ুর।
তবুও কিছু কি এসে গ্যাছে কবিতার?
আর তাই
জনশ্রুতি আছে একজন কবি’র ,
একজন মহানায়কের লাশ ঈশ্বর অগ্রাহ্য করেছে সহস্রবছর আগে।
জনশ্রুতি আছে পচে গলে যাওয়া, কবি মৃতদেহ হয় দূর্দান্ত জৈব সার।
আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে, আমি জানতাম না, অগাস্টকেও রাহুর মত গ্রাস…..
অভিশাপ মেঘের ভেলায় নিঃশ্বাসে ক্লান্তির ছাপ সবুজের নীড়ে আপন ঠিকানার খোঁজ এক ফালি সুখের নেশায়…..
পাখি দম্পতি পাখি গিয়েছিল কতদূর বনে তা কারো নেই জানা। ঠোঁটে ধরা লাল টুকটুকে ফল…..
তারা যেমন বলে, চোখে ধুলো দিলে থেমে যাবে আমার কাব্যময়তা অথচ আমি প্রামান্য দলিলের নই…..