ঝরা শিউলি
এক মেয়েটা মুঠো মুঠো জ্যোৎস্না কুড়িয়ে অপরের মুখমন্ডলে চাঁদ দেখত। মানুষের উপকার করার ক্ষেত্রে,…..
-দাদা আর টেনো না।কাল রাত থেকে সমানে মাল টানছো।
-তোর কি শুয়ারের বাচ্চা,তোর বাপে পয়সায় মাল খাচ্ছি।
-না তা নয়।তবে এমন করছো যেন প্রথম বার লাশ নামালে।যদিও…
ছোটনের কথা গুলো শেষ করতে দিলো না প্রতীক।রক্ত চক্ষু বার করে সে বললো।
-চুপ কর শালা,একদম চুপ নইলে তোকেও সটকে দেবো।তুই ফোট এখান থেকে।
ছোটন অনেকদিন ধরেই প্রতীকের ছায়া সঙ্গী,কিন্তু তার এই রুপ সে কোনোদিন দ্যাখেনি।চুপচাপ সে ঘর থেকেবেরিয়ে গেল।প্রতীক একটা সিগারেট ধরালো,তার সামনের টেবিলে ফাঁকা মদের বোতল গুলো পড়ে আছে।গতকালরাতের ঘটনার পর থেকে সে একদম স্থির থাকতে পারছে না।মদ,গাঁজা,সিগারেট কিছুই কাজে আসছে না,নেশাইচড়ছে না।রাতের ঘুমটাও ঠিক হয়নি তার।সকাল বেলায় ছোটন পাউরুটী,ঘুঘনি নিয়ে এসেছিলো,সেটাও টেবিলেপড়ে আছে।মুখটা ভীষণ তেতো লাগছে প্রতীকের,খাওয়ার ইচ্ছেটাও এক্কবারে নেই।
দরজায় আবার টোকা পড়লো।
ড্রয়ার থেকে সিঙ্ল সটার বার করে হাতে নিলো প্রতীক।
-কে বে?
-দাদা ঘন্টাদা এসেছে।ছোটনের গলা দরজার ওপারে।
-শালা খোচর,দাড়া আসছি।প্রতীক কোনমতে টলমল করতে করতে দরজা খুললো।
-তোর কাজে গৌতমদা হেববি খুশী হয়েছে।শালাটা অনেক দিন ধরে জ্বালাচ্ছিলো।বানচোতটা জীনা হারামকরছিলো।হাসি হাসি মুখে কথা গুলো বললো।
-হয়েছে তোর?আর কিছু বলার না থাকলে ফেটে যা।
-না দাদা কিছু টাকা পাঠালো।আজ রাতের ট্রেনের পুরী যাবার দুটো টিকটি আছে।
-ওসব ছোটনকে দিয়ে যা।আমাকে এবার ঘুমোতে দে।
ওরা বেরিয়ে যেতে দরজাটা বন্ধ করে খাটের উপরে প্রতীক বসলো।শেষ সিগারেট টানার পর মাথাটা বেশ ঝিম ঝিমকরছে,একটা ঘুমের ভাব।ওদিকে বাইরে ঘন্টা সব কিছু দিয়ে দিলো ছোটনকে।
-এটা কি গো ঘন্টাদা?
-ন্যাকা বুঝিস না।কতদিন লাইনে আছিস আর ক বছর শুয়ারটার পা চাটবি।
-কি বলছো তুমি?পতিক দা কে..
-দাদাই বললো তোকে দিতে।দাদা ঠিক ধরেছে মালটা পুরো লুটে গেছে।বেচাল দেখলে চালিয়ে দিবি।দাদা সবসামলে নেবে।
-শালা হারামি..।
-কিছু বললি ছোটন?
শহরতলির এক স্কুল,টিফিনের ঘন্টা পড়েছে সবে মাত্র।সাদা জামা আর নেভি-ব্লু প্যান্টের ছেলেগুলো যেন ঝাপিয়েপড়ছে চালতার আচার,নারকেল বরফ,আলু কাবলি,ইলেকট্রিক নুনের দোকান গুলোর উপর।প্রতীক বড় রাস্তারওধার থেকে সব কিছু দেখে চলেছে আর মনে মনে হেসে চলেছে।
-কিছুই পালটায় নি বল প্রতীক?আমরাও একই ভাবে ঝাপিয়ে পড়তাম।
পিছনে ফিরে তাকালো প্রতীক,একটু চমকে গেল সে-রণো তুই?
-এই চলে এলাম।তোর সাথে অনেক দিন তো ভালো করে কথাই হয়নি।চল স্কুল মাঠ গিয়ে বসি।হেসে বললো রণো।
-কোথায় বসবি?
-স্কুলের সময়ে যেখানে বসতাম।
প্রতীক যেন এক অদৃশ্য সন্মোহনে রণো পিছনে গেল।স্কুল মাঠে তখন হাজার ডেসিবেলের শব্দ।মনের অনন্দে নবীনদল ছুটে চলেছে।দুই বন্ধু মিলে একটা ফাঁকা জায়গা নিয়ে বসলো।
-কিছুই বদলায়নি দেখেছিস রণো।
-শুধু আমরা বদলে গেছি।কতদিন বাদে বলতো এক সাথে বসলাম।গলায় বেশ হতাশার সুর রণোর।
-হবে তাও পনেরো বিশ বছর।মাধ্যমিকের পর সব পাল্টে গেল..।প্রতীক চুপ করে গেল।
-সেই কাকু আমাদের পার্টির হাতে খুন হোলো।তারপর সব পাল্টে গেল।এখনও মনে আছে তখন আমারা পার্টিরকিছুর বুঝতাম না,তোদের উঠোনে কাকুর মৃতদেহে প্রনাম করছিলাম তখন কে যেন বাধা দিতে গিয়েছিলো।কাকিমাতাকে হেব্বি ঝেড়েছিলো।শুধু তুই কোনো কথা বলিসনি।খুব কষ্ট পেয়েছিলাম।শান্ত ভাবে কথাগুলো বললো রণো।
-জানিস তো তোর সাথে কথা বলিনি বলে মা খুব বকেছিলো।তোকে সরি বলতে বলেছিলো,কিন্তু সময় পেলাম কই।বাবার শ্রাদ্ধের দিন আমায় পুলিশ বিনা কারনে অ্যারেস্ট করলো।জানিস তো জেল খাটলে মানুষের চরিত্রেরপরিবর্তন হয়,সে যেন ভিন গ্রহের জীব।তারপর মা চলে গেলেন।আমি আরো একা হয়ে গেলাম।অপরাধেরচোরাবালিতে আমি ঢুকে যেতে লাগলাম।সবার থেকে দুরে চলে যেতে লাগলাম।একটানা কথাগুলো বলে প্রতীকনিশ্বাস ছাড়লো।
-আমিও তোকে এড়িয়ে চলতাম জানিস তো, ক্রিমিনাল বন্ধুকে মানবো কি কর? আমরা যেদিন তোর কাছে তুই থেকেতুমি হয়েছি সেদিনই আমরা দুরে চলে গেছি।হেসে বললো রণো।
-চল আরও একবার শুরু করি।পারবি না সব কিছু ভুলে।রণোর পিঠে হাতটা রাখলো প্রতীক।
-একিরে রণো তোর পিঠে রক্ত কেন?
-গরু তুই, সব ভুলে যাস।মনে নেই কাল রাতে যে দুটো গুলি মেরেছিলি তার একটা পিঠে লেগেছে।
প্রতীকের হুশ ফিরলো,গত কাল রাতের ঘটনা তার চোখের সামনে আসলো।দীনুদার চায়ের দোকানের সামনে সেআর ছোটন রণোকে গুলি করে মেরেছে।গৌতমদার নির্দেশে নিঁখুত অপারেশন ।
-কি ভাবছিস এতো।তুই তোর বন্ধুকে মারিসনি বোকা তুই মেরেছিস রাইভাল পার্টিকে।তুই না মারলে অন্য কেউ..।হেসে বললো রণো।
-রণোর এর থেকে মুক্তি নেই আমাদের,এমন ভাবেই চলবে..?
-জানি না সত্যি জানি না রে?হয়তো এমন দিন আসবে যেদিন বিরোধী মতের লোকেরা নিজেদের মধ্য আলোচোনাকরবে, খুনোখুনি করবে না। তত দিন চলবে… চলি রে আজ..।
-দাড়া আমিও যাবো।যেমন স্কুল থেকে এক সাথে বাড়ি ফিরতাম।
না রণোকে আর সে দেখতে পাচ্ছে না।
-রণো,রণো…
ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো প্রতীকের।খুব ক্ষিদে পেয়েছে তার।সামনে রাখা খাবারগুলো গোগ্রাসে খেলো সে।নিজের ঘরথেকে বেরালো সে।
-গুরু কোথায় চললে?
-লোকাল থানায় যাচ্ছি।
-কেন গুরু?
-সেই কইফিয়ত কি তোকে দেবো নাকি বে?
দুটো গুলির শব্দে জেগে উঠলো সারা পাড়া।কিছুক্ষনের মধ্যে পুলিশ এলো,ডেড বডি নিয়ে চলে গেল।
থানার সামনে ছোট জটোলা।প্রতীক দাড়িয়ে দেখছে,পিছন থেকে যেন কে ডাকলো..
-কি রে যাবি বলছিলি।
-রণো তুই?হ্যা চল…।
পরে শোনা যায় পুলিশ যুবনেতা রণোর হত্যাকারী প্রতীক কে এনকাউন্টারে মেরে ফেলেছে।
(অসম্পাদিত)
এক মেয়েটা মুঠো মুঠো জ্যোৎস্না কুড়িয়ে অপরের মুখমন্ডলে চাঁদ দেখত। মানুষের উপকার করার ক্ষেত্রে,…..
শেষ থেকে শুরু। আমি রজকিনী রামী,ধোপার বংশে জন্ম আমার।ঘাটে সখিদের সঙ্গে কাপড় কাচি। একাজটা আমি…..
মালঞ্চার পথে ভোরবেলা। সূর্য সবে উঠছিল। বৈশালী দূর থেকে দেখতে পেল,বুনিয়াদপুর বাসস্ট্যান্ডে বালুরঘাটের দিকে মুখ…..
আমার বাবা ছিলেন অত্যন্ত সাহসী একজন লড়াকু মনের মানুষ।শত অভাব অভিযোগেও তাকে কোনোদিন ভেঙ্গে…..