করাচিতে নজরুল
করাচি বন্দরে এককালে গ্রিক-পারসিক-আরবীয় সওদাগরেরা নোঙ্গর করেছে; অনেক স্থাপত্য চিহ্ন আজো রয়ে গেছে; যা…..
প্রাণীজগতের এই বিপুল বৈচিত্র্যের মধ্যেও মানুষকে আলাদা করে চেনা যায়। মনে হয়, বিবর্তনের যাত্রায় সবাই একসাথে নেমেছিল, হঠাৎ মানুষ কোথা থেকে তেড়েফুঁড়ে বাকিদের থেকে অনেকদূর এগিয়ে গেছে। বিজ্ঞানীদের মনে স্বাভাবিকভাবেই জাগে প্রশ্ন: আমাদের বুদ্ধির ক্রমবিকাশ ঠিক কিভাবে হলো? কিভাবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম আরও উন্নত হলো মানবসভ্যতা? সাথে সাথে আরো একটা প্রশ্ন উঁকি দেয়: এই বিবর্তনটা মানুষের সাথেই হলো কেন? মানুষ ছাড়া আর কোনো প্রাণী কি বিবর্তনের এই ধাপগুলো দিয়ে যায়নি? বা যেতে পারেনা? এর উত্তরে সম্প্রতি কিছু চাঞ্চল্যকর সম্ভাবনা দেখা গেছে এক বিশেষ প্রজাতির কাকের মধ্যে।
প্রশ্নগুলো শুনতে সহজ মনে হলেও আসলে এর সূত্র লুকিয়ে আছে “সংস্কৃতি” (Culture) এবং “সাংস্কৃতিক বিবর্তন” (Cultural evolution) এই দুই শব্দবন্ধের মাঝে। প্রায় সমস্ত প্রাণী তাদের চারিপাশের সমাজ থেকে অনেক কিছু শেখে যা তাদের আচরণে প্রকাশ পায়। যেমন কুকুর, পেঙ্গুইন, শিম্পাঞ্জি, ইঁদুর, খরগোশ, অক্টোপাস এদের সবার আচরণের কিছু অংশ পার্শ্ববর্তী পরিবেশ থেকে শেখা। এই “সামাজিক শিক্ষা”-র ফলে আচরণের যে তারতম্য দেখা যায়, তাকেই সমাজবিজ্ঞানীরা “সংস্কৃতি” বলে থাকেন। এটা মোটামুটি এখন মেনে নেওয়া হয় যে প্রকৃতিতে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য (cultural diversity) একটা সাধারণ ব্যাপার।
কিন্তু এক প্রজন্মের মধ্যে যে শিক্ষা অর্জিত হয়, সেটা দিয়ে মানুষের অগ্রগতিকে বোঝানো যায়না। এর জন্য সামাজিক শিক্ষা গ্রহণ করা এবং তা মনে রেখে পরবর্তী প্রজন্মের হাতে তুলে দিতে পারা অত্যন্ত জরুরি। আমরা আমাদের চারপাশে অনেক কিছু দেখি, হয়ত কিছুটা শিখি বা মনেও রাখি কিন্তু আবার ভুলে যাই। এক্ষেত্রে তিনটি ব্যাপার হতে পারে। এক, দেখলাম কিন্তু কিছু শিখলাম না। দুই, দেখলাম, শিখলাম কিন্তু সে শিক্ষা ধরে রেখে অন্য কাউকে শেখাতে পারলাম না। এবং তিন, দেখলাম, শিখলাম এবং অন্য প্রজন্মকে একজন অভিজ্ঞের মত শিখিয়ে গেলাম কিম্বা নতুন প্রজন্ম দেখে দেখে শিখে নিল। এই শেষের অবস্থাটা যখন হয় তখন অনেক সামাজিক শিক্ষা এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে বংশ পরম্পরায় পৌঁছতে পারে। জিনগত বিবর্তন এবং পরিবেশের প্রভাবে বিবর্তন, এর বাইরেও স্রেফ সামাজিক শিক্ষা সঞ্চয়ের মাধ্যমে মানুষ এতদূর এগোতে পেরেছে। এমন সব ক্ষমতা প্রদর্শন করতে পেরেছে যা কোনো ব্যক্তিবিশেষের একার পক্ষে অর্জন করা কখনোই সম্ভব নয়। এই কৃতিত্ব মানুষ ছাড়া আর কোনো প্রাণীকে দেওয়া যায়না। “সংস্কৃতি” স্বাভাবিক হলেও এই “ক্রমসঞ্চিত সাংস্কৃতিক বিবর্তন” (cumulative cultural evolution) প্রাণীজগতে খুবই দুর্লভ। প্রসঙ্গত, জিনগত বিবর্তনের সাথে সাংস্কৃতিক বিবর্তনের একটা মূল তফাৎ হলো যে দ্বিতীয় বিবর্তনটা জিনগত কোড-এর মধ্যে গেঁথে যায়না। অর্থাৎ, দ্বিতীয় বিবর্তনটার জন্য পরবর্তী প্রজন্মকে অগ্রজদের কাছ থেকে নিজের তাগিদে শিক্ষা গ্রহণ করতে হয়। জন্মসূত্রে আপনা থেকেই সেই শিক্ষা আসে না।
এক প্রজন্মের মধ্যে যে শিক্ষা অর্জিত হয়, সেটা দিয়ে মানুষের অগ্রগতিকে বোঝানো যায়না।
মানুষ কিন্তু আজকের অর্থে সভ্য হওয়ার অনেক আগেই গোটা প্রাণিজগৎকে পিছনে ফেলে দিয়েছিলো। যেমন, আফ্রিকার কালাহারি মরুভূমিতে যে বুশ ম্যান-রা বসবাস করে তারা জানে কোন গাছের ফল বা পাতা তাদের খাদ্য, বিভিন্ন আবহাওয়ায় কি ভাবে তাদের সংগ্রহ করতে হয়, কি ভাবে তীর বা ধনুক বানাতে হয়, কিভাবে জলের অনুসন্ধান করতে হয় এবং আরও অনেক কিছু। আবার যে মানুষ সুমেরু-কুমেরুতে বাস করে বা গভীর জঙ্গলে বাস করে সেও নিজেদের প্রয়োজনের অনেক কিছু জানে। কালাহারি, সুমেরু-কুমেরু কিম্বা গভীর জঙ্গলে থাকার জন্য এদের কিন্তু আলাদা আলাদা জ্ঞান, শিক্ষা বা যন্ত্র/যন্ত্রাংশ ব্যবহার করতে হয়। অথচ এই হরেকরকম জ্ঞান বা শিক্ষার মালিক কিন্তু একই প্রজাতি, মানুষ। একই ধরণের মস্তিষ্ক নিয়ে বিভিন্ন ধরণের জ্ঞানের অধিকারী হয়েছে সে। অন্য কোন প্রাণীর মধ্যে এই বিপুল বৈচিত্র্য দেখা যায় না। এটা অনুমান করা যায় যে “ক্রমসঞ্চিত সাংস্কৃতিক বিবর্তন” না থাকলে এটা কখনই সম্ভব নয় বা হত না [২]। প্রত্নতাত্ত্বিক চেষ্টায় আবিষ্কৃত প্রায় দশ হাজার বছর আগের নানা রকম হাতিয়ার বা পাত্র ইত্যাদি প্রমাণ করে মানুষ ক্রমশ প্রকৃতি, পরিবেশ এবং পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে নিজেদের “সাংস্কৃতিক বিবর্তন” করেছে। প্রস্তর যুগের বিভিন্ন প্রকার সামগ্রী দেখে অনুমান করা হয় আমাদের পূর্বপুরুষদের এই “সাংস্কৃতিক বিবর্তন” প্রায় ১.৬ মিলিয়ান বছর (১৬ লক্ষ বছর) আগে শুরু হয়েছিল।
কেন এই ক্রমসঞ্চিত সাংস্কৃতিক বিবর্তন এত বিরল, সেই নিয়ে অনেক মত রয়েছে। বিজ্ঞানীদের একাংশ বলেন যে সামাজিক শিক্ষার মধ্যে অনুকরণ করতে পারার একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। বাপ-মা কিংবা অন্যান্য শিক্ষকদের সফলভাবে অনুকরণ করতে পারলে তবেই পরবর্তী প্রজন্ম নতুন কোনো ক্ষমতা আয়ত্ব করতে পারে। তাই এই দলের বিজ্ঞানীরা অন্য প্রজাতির মধ্যে সাংস্কৃতিক বিবর্তনের অভাবের একটা কারণ হিসেবে অনুকরণের অক্ষমতার কথা বলেন। তবে আরেকদলের মতে সামাজিক শিক্ষার এই ধারণাটা একটু সংকীর্ণ: সবসময় সরাসরি অনুকরণের হয়তো প্রয়োজন নেই। পূর্ব প্রজন্মের সৃষ্ট বস্তুর সাথে ঘনিষ্ঠ পরিচিতি থাকলেই চলবে। বয়োজ্যেষ্ঠরা কিভাবে সেই বস্তু সৃষ্টি করছে, সেটা লক্ষ্য করে সেই ধাপগুলো হুবহু নকল করতে পারার প্রয়োজন নেই। কিছু ক্ষেত্রে শেষমেশ যে বস্তুটা তৈরী হলো, তাকে নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতেই নতুন প্রজন্ম তাকে তৈরী করার পদ্ধতিগুলো আয়ত্ব করে ফেলতে পারে। এর জন্য শেষের বস্তুটা চোখের সামনে থাকারও প্রয়োজন নেই। আগে কখনো সেটাকে দেখে থাকলেই চলবে।
একদল বিজ্ঞানীর মতে, শিক্ষার জন্য সরাসরি অনুকরণের হয়তো প্রয়োজন নেই, পূর্ব প্রজন্মের সৃষ্ট বস্তুর সাথে ঘনিষ্ঠ পরিচিতি থাকলেই চলবে।
স্বভাবতই এই ধারণাটা বিতর্কের বিষয়। এবং প্রমাণসাপেক্ষেও। সেই প্রমাণের খোঁজে ইংল্যান্ড আর নিউ জিল্যান্ড-এর একদল বিজ্ঞানী কাকেদের নিয়ে এক অদ্ভূত পরীক্ষা করলেন। ২০১৮ সালে নেচার পত্রিকায় বেরিয়েছিল সেই গবেষণার কথা [১]। কাক দেখেনি এমন মানুষ বাংলায় বিরল। অনেক সময় তাদের ঝাড়ুদার পাখি বলা হলেও গল্পের বই-এ কাকেদের বুদ্ধির পরিচয় কিন্তু আমরা সবাই দেখেছি। নুড়ি ফেলে ফেলে কুঁজোর জল উপরে তুলে এনে সেই জল পান করে তৃষ্ণা মেটানোর গল্প কে না জানি! পাখিদের মধ্যে কাক যে একাই সংস্কৃতি-র পরিচয় দেয়, এরকম নয়। অনেক পাখি তাদের নিজেদের বাসা তৈরি করে, যা নিঃসন্দেহে স্থাপত্যের নিদর্শন। পরিযায়ী পাখিদের নির্ভুল ভাবে এক দেশ থেকে অন্য দেশে পরিভ্রমণ ও পুনরায় আগমন তাদের সমবেত বুদ্ধিমত্তার (collective intelligence) পরিচয় বহন করে।
যাইহোক, নিউ ক্যালাডনিয়ার কাকেদের বেছে নেওয়া হলো পরীক্ষার জন্য। অস্ট্রেলিয়া-নিউ জিল্যান্ড-এর কাছাকাছি দ্বীপে এদের দেখা যায়। এদের একটি বৈশিষ্ট্য হলো, এরা প্যানড্যানাস প্রজাতির গাছের পাতা ছিঁড়ে নিজেদের প্রয়োজনমত কোন কাজের জন্য যন্ত্র বা যন্ত্রাংশ (tool) বানিয়ে নিতে পারে। যেমন, তারা পাতাগুলোকে ঠোঁট দিয়ে কেটে একটা নির্দিষ্ট মাপে আনে যাতে ওদের প্রয়োজনের কাজটা আরও সহজে করতে পারে [১]। এই পাতা থেকে তৈরী যন্ত্রাংশের অন্তত তিন রকম সম্পূর্ণ ভিন্ন নকশা চিহ্নিত করা গেছে, যার থেকে অনুমান করা যায় বিভিন্ন প্রয়োজনে এই ভিন্ন নকশার উৎপত্তি হয়েছে। এর মধ্যে একটা নকশা বাকিগুলোর থেকে বেশ প্যাঁচালো। অতএব বলা যায়, শুরু হয়েছিল সহজ যন্ত্র দিয়ে, আস্তে আস্তে তাতে জটিলতার প্রলেপ পড়েছে। তাই, এই কাকেদের মধ্যে হালকা হলেও একটা সাংস্কৃতিক বিবর্তনের আভাস পাওয়া যায়। অথচ এদের মধ্যে শিক্ষাদানের জন্য প্রয়োজনীয় ভাষার জটিলতা কিংবা অনুকরণের প্রবৃত্তি কোনোটাই দেখা যায়নি। তাই, এদের যন্ত্রাংশ তৈরির ক্ষমতাকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম টিকিয়ে রাখা এবং সেই ক্ষমতাকে আরো শান দেওয়ার পিছনে একটাই ব্যাখ্যা মাথা চারা দিচ্ছিলো। এরা হয়তো পাতার যন্ত্র দেখেই একদম মেড-টু-অর্ডার বানিয়ে ফেলতে পারে। এই ব্যাখ্যাটা ঠিক কিনা সেটা বিজ্ঞানীরা আশ্চর্য্য এক পরীক্ষার মাধ্যমে পরখ করে দেখলেন।
ভেন্ডিং মেশিনের নাম তোমরা হয়ত শুনে থাকবে যেখানে নির্দিষ্ট টাকা বা পয়সা দিলেই পছন্দের জিনিসটি মেশিন থেকে বেরিয়ে আসে। অনেকটা ষ্টেশনে ওজন মাপার যন্ত্রের মত। সেই রকম কিছু বিশেষ ভেন্ডিং মেশিন বানানো হয়েছিল এই পরীক্ষার জন্য, যেখানে একটি নির্দিষ্ট মাপের কাগজের টুকরো ফেললে কাকেদের খাবার বেরিয়ে আসে। এবার কাকগুলোকে এক একটি ভেন্ডিং মেশিনের সামনে কিছু বিশেষ মাপের কাগজের টুকরো দেওয়া হয়েছিল। প্রথমে কাকেদের দুই ধরণের কাগজের টুকরো দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হলো। ৮টি কাগজের টুকরো খুব ছোট (১৫ x ২৫ মিমি), এগুলো ভেন্ডিং মেশিনে দিলে কোন খাবার পাওয়া যাবে না। দ্বিতীয় ৮টি বড় টুকরো (৪০ x ৬০ মিমি), এই বড় টুকরো দিলে ভেন্ডিং মেশিন থেকে খাবার বেরিয়ে আসবে। কাকগুলোকে ২-৪ দিন ধরে ট্রেনিং দেওয়া সমাপ্ত হলো। যখন ট্রেনিং সমাপ্ত হলো, ওরা ৮টি সঠিক মাপের (৪০ x ৬০ মিমি) কাগজ দিয়ে খাবার বের করতে শিখলো এবং কোন ছোট মাপের কাগজ ব্যবহার করলো না।
এবার ওই খাঁচায় কোন টুকরো কাগজ না দিয়ে দুটি বড় আকারের কাগজ (১০ x ১০ সেমি) দেওয়া হলো যেগুলো ওই নির্দিষ্ট খোপে কোনভাবেই ঢুকবে না। এখন ভেন্ডিং মেশিন থেকে খাবার বের করার একমাত্র উপায় হলো কাগজগুলোকে কেটে ছোট করা যাতে ওই খাপের সঙ্গে এক মাপের হয়। এই কাজটি করার জন্য যা প্রয়োজন তা হল পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে কাগজের মাপ (বা টেম্পলেট) স্মরণে রাখা এবং সেই জ্ঞান থেকে নতুন টুল/যন্ত্রাংশ (এক্ষেত্রে ছোট মাপের কাগজের টুকরো) তৈরি করা যা বর্তমান কাজকে সহজ ও সফল করবে। এক্ষেত্রে নিউ ক্যালাডোনিয়ার কাকগুলো কি করল? তারা কি ওই বড় কাগজটি ছোট করে কেটে নিয়ে ওই ভেন্ডিং মেশিন থেকে খাবার বের করতে সক্ষম হয়েছিল? অবাক ব্যাপার হল, হ্যাঁ। ঠোঁট ও পায়ের সাহায্যে তারা ওই বড় কাগজ কেটে ছোট টুকরো বানিয়ে খাবার বের করতে সক্ষম হয়েছিল।
শুধু তাই নয় দ্বিতীয় বার ঠিক উল্টো ভাবে কাকেদের ট্রেনিং দেওয়া হয় যেখানে ছোট কাগজের টুকরো (১৫ x ২৫ মিমি) ভেন্ডিং মেশিনে দিলে খাবার বের হবে। এবং তাজ্জব ব্যাপার হলো এই নিউ ক্যালাডনিয়ার কাকগুলো সেই টেম্পলেটটির কথা মনে রেখে ছোট কাগজ কেটে ভেন্ডিং মেশিন থেকে খাবার বের করতে সক্ষম হয়। (চিত্র ১)
অর্থাৎ, এই কাকগুলো মনে রেখেছে কাগজের টুকরোর কি সাইজ হলে কাজে লাগবে। যেহেতু কাগজের টুকরো আর প্যানড্যানাস পাতা এক জিনিস নয়, তাই পূর্বলব্ধ শিক্ষার কোনো প্রভাব এই পরীক্ষাতে পড়েনি বলেই ধরা যায়। একটা সম্পূর্ণ নতুন জিনিস দেখে সেটা মনে রেখে তারপর নিজের চেষ্টায় সেটা সৃষ্টি করেছে এই কাকগুলো।
বিজ্ঞানীদের মতে, এইভাবেই প্রকৃতিতেও এই প্রজাতির কাকের সাংস্কৃতিক বিবর্তন হয়েছে। শিশুরা দেখেছে তাদের গুরুজনদের ছেঁড়া পাতার যন্ত্র ব্যবহার করতে, তারপর সেই যন্ত্রকে মনে রেখে পরবর্তীকালে সেগুলি নিজেরাই তৈরী করেছে। একে বিজ্ঞানীরা বলেন মানসিক টেম্পলেট ম্যাচিং হাইপোথিসিস (mental template matching hypothesis)। এটা পাখীদের গান শেখার ক্ষেত্রেও দেখা যায়। একজন কিশোর পাখী প্রথমে তাদের সমগোত্রীয়দের থেকে গানটা শোনে এবং মনের মধ্যে একটা টেম্পলেট তৈরি করে, পরে সেটা তাদের নিজের গলায় প্রকাশ করে এবং মনে রাখা সুরের সাথে তার নিজের গলাকে সম্পূর্ণ ভাবে মেলানোর চেষ্টা করে। মনের মধ্যে টেম্পলেট তৈরি থাকার ফলে যখন তারা নতুন ভাবে কিছু তৈরি করে সেসময় ওই বস্তু বা বিষয়টি চোখের/কানের পাশে থাকার কোন প্রয়োজন হয় না। সুতরাং ওই যন্ত্র বানানোর সময় যদি কোন নতুন জিনিসের সংযোজন হয় তাহলে সেটাও পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে সঞ্চারিত হয় এবং আরও উন্নত বা জটিল যন্ত্রে রূপায়িত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে। এই প্রক্রিয়া “সাংস্কৃতিক বিবর্তন” (cultural evolution)-এর প্রাথমিক ধাপ। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, এই প্রথম মানসিক টেম্পলেট ম্যাচিং হাইপোথিসিস-এর পরীক্ষামূলক প্রমাণ গবেষণাগারে পাওয়া গেল। তবে গবেষকরা এটাও বলেছেন যে এইভাবে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের পরিচয় দেওয়া গেলেও ভীষণ জটিল কিছু হয়তো করা যায়না। তার জন্য ভাষার জটিলতা ও অনুকরণের ক্ষমতা হয়তো জরুরি।
এক কথায়, এই পরীক্ষা প্রমাণ করলো যে মানুষ অনেক, অনেকটা এগিয়ে থাকলেও একেবারে একা নয়। অন্য প্রজাতিতেও সাংস্কৃতিক বিবর্তনের প্রাথমিক ধাপগুলোর প্রমাণ পাওয়া গেছে।
করাচি বন্দরে এককালে গ্রিক-পারসিক-আরবীয় সওদাগরেরা নোঙ্গর করেছে; অনেক স্থাপত্য চিহ্ন আজো রয়ে গেছে; যা…..
তিনি বললেন, ভাষা হল ওষ্ঠের উপর সুধার মতো। আর বললেন, কবিতা যথেষ্ট স্বাদু, কিন্তু…..
রূপকথা পড়েছেন ছোট বেলায় অনেকে একথা আর বলা সন্দেহমুলক, প্রযুক্তির ব্যবহার জন্মের পর থেকে এখন …..
একটি পরাধীন দেশ আর তার বাসিন্দাদের মনে স্বাধীনতার আকুতি আমরা দেখেছিলাম ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতে। এর…..