কামনার রোস্ট
এই পৌরুষকে আমি কতবার জাগতে দিলাম ,
কামনার লেলিহান আগুন কত লাগতে দিলাম
ইন্দ্রিয়ের শিরায় শিরায়, ঘর খুঁজে দ্যাখো,–চাদরে বালিশে
জ্বালা তার ছেপে আছে , জ’মে আছে, লেপ্টে আছে মিশে,
এইসব আমার সাজ-পোষাক তুমি যদি শুঁকো
ছল-করা লজ্জার আড়াল গুপ্ত কামুক লিপ্সার কিছু সুখও
পেতে পারো , এমনি তো হয়—
স্বেচ্ছাচারী ক’রে তোলে ক্ষুধা-ক্ষিপ্ত কামুক সময় ।
তুমি দ্যাখো : তোমার অবস্থিতির আনাচে কানাচে
দেহ-পসারিনী কতো নারী ;ওইসব নগ্নপ্রায় নারীর ইহুদি-আঁচে
ডানা ঝটাপটি ক’রে , হায় ,
প্রণয়ের কবুতর আপনিই কামনার রোস্ট হ’য়ে যায় ;
আঁধারে আপ্লুত দ্যাখো দুমড়ে-মুচড়ে ল্যাপ্টানো কাপড়ে আড়ষ্ট সেই কামনার রোস্ট ,
যদি চাও দিতে পারি , তবে কোনো সুযোগ চাইনা করি অবৈধ প্রণয় ,
যদি চাও , এইভাবে যৌবন ক্ষয় না ক’রে পরিণয়ে দাম্পত্যের বৈধ অভিনয়
করি , তারপর কিছু হাত পাঠাই চালান ক’রে আফ্রিকার ‘কোস্ট’
ইন্দোচীন প্যালেস্টিন ল্যাটিন ‘মেরিকা—
দাউ দাউ ক’রে জঙ্গলে পাহাড়ে পরিখায় যেখানে জ্বলছে আজো বাঁচবার সংগ্রামের শিখা ,
আর যেখানে আজও সব সুবিচার নিরুদ্দেশ ।
যদি চাও , এসো তবে । মনে করো : তোমাতেই আমি হবো শেষ ।
, আমাকে তোমার দেহের ভূ-ভাগ থেকে দিও প্রতিদান—
মেষকে বাঁচাতে প্রাণে যে হাত ঠেকাতে পারে নেকড়ের উজানে-যাওয়া জলের বিধান ।।
বাল্মীকি
দেখছি দেখছি শুধু দেখে দেখে বড়ো ক্লান্ত আমি ;
চারিপাশে পুরুষ নারীকে দেখি বিশেষতঃ নারী
মেদের বোহেমিয়ান মদে চুর শ্যামলা বাদামী
পুরবাসী মহিলারা সেজেগুজে বেজায় বাহারী
ডিজাইনে ফিটফাট । মানসীর মতো কেউ ; থামি ,
ভেবে নিই , হ’লে হ’তে পারে কিনা আমার আগামী
প্রিয়া কেউ ; কেউ নাই । সারাক্ষণ কী এলোপাথাড়ি
যতস্সব হতচ্ছাড়া প্রবৃত্তির বদ্ধ মাতলামি !
যতস্সব হতচ্ছাড়া নারীত্বের উলঙ্গ দ্রাঘিমা
পাছাভারী রমণীর স্লিভলেস লো-কাট ব্লাউজ
তার থেকে উপচানো ভারী দু’টি স্তনের গম্বুজ
বিনিদ্রিত মনে ঘুরে , শিস্ দ্যায় রতির প্রতিমা ;
নাভিমূলে ক্ষিপ্ত হয় পৌরুষের দশা বেগতিক ;
কামের দস্যুকে ফের সুপ্ত করে সত্তার বাল্মীকি
কল্পরূপ
আবছা আলোয় নিথর যখন ঊষার শিশির ধোয়া
রাত-পোহানো হিমেল হাওয়ার একটুখানি ছোঁয়া ,
আলতো পায়ে আলগা গায়ে ফুলের সাজি হাতে
দাঁড়াও এসে ঘুমের বেশে আমার আঙিনাতে ,
ছড়াও মুখে একটুখানি পরীর মতো হাসি ।
এমন রূপেই তোমায় আমি দেখতে ভালবাসি ।।
পাখির ডাকে ক্লান্ত বিবশ নামবে যখন সাঁঝ
আমার ফেরার সময় হবে সেরে দিনের কাজ ,
নতুন বধূর শিরিন-সাজে জ্বালবে চেরাগ ঘরে
উৎকণ্ঠায় ঘনঘন চাইবে পথের পরে
ব্যস্ত ব্যাকুল চাউনি চোখের পিয়াসী অভিলাষী ।
এমন রূপেই তোমায় আমি দেখতে ভালবাসি ।।
দিলের দরদ কোথায় কাঁদে সবাই কি তা বুঝে ?
সারা জীবন ব্যর্থ হলো মনের মানুষ খুঁজে’–
শরম দিয়ে মরম দিয়ে , দিয়ে হিয়াঞ্জলি
উজাড়-করা প্রেমের পসরা যেও-না যেন দলি ,
তোমার বুকের ফুলদানিতে যেন না হই বাসি ।
এমন রূপেই তোমায় আমি দেখতে ভালবাসি ।।
কোরাণ পুরাণ দ্যায়নি তোমায় সাম্য স্বাধীনতা ,
দিয়েছে সোনায় শৃঙ্খলিত দাসত্বের কুপ্রথা ।
ঘরে বাইরে সমান সাম্য স্বাধীনতার সাথে
নিজের পায়ে দাঁড়াও তুমি আপন প্রতিভাতে–
মেধায় মনে কর্মে যাতে হাঁটবে পাশাপাশি ।
এমন রূপেই তোমায় আমি দেখতে ভালবাসি ।।
চাই না শুধু জনম জনম পথের পাওয়া কাঁদন
ছিন্ন করি রীতি-প্রথার বিধিবদ্ধ বাঁধন
অন্তরঙ্গ তোমার পরশ খোরাক দিবে মনে
সৃষ্টি-সুখের বৃষ্টি দিবে মরুর হুতাশনে–
রইবে তবু তুমি আমার বুকের বিষের বাঁশি ।
এমন রূপেই তোমায় আমি দেখতে ভালবাসি।।
এমনি রূপেই তোমায় আমি ভাবতে ভালবাসি
এমনি রূপেই তোমায় আমি দেখতে ভালবাসি ।।