কাজেই, সে মেয়েটা রীবন বেচতো

আর্যনীল মুখোপাধ্যায়
কবিতা
Bengali
কাজেই, সে মেয়েটা রীবন বেচতো

কাজেই, সে মেয়েটা রীবন বেচতো

সে মনে করতো নৈকট্য তার অরক্ষা, দুর্বলতা
অভিলাষ হয়তো স্ফিতি, অতিবৃদ্ধি।
ক্ষতর উল্টোটা –
অ্যান্টি-ডিপ্রেশন, আক্ষরিক অর্থে
কাজেই, সে মেয়েটা রীবন বেচতো
রীবন, যা ক্ষতপট্টির চেয়ে সামান্য মোলায়েম শব্দ

এখন এই সুর আর নাই বা বাড়ালাম, জানো
বিপ্রগতি, অবনতি আমি দুচক্ষে দেখতে পারিনা,
সেই ন্যারেটিভের কাছে ঘেঁষে আসা
তা সে শান্ত মনোরম হোক কি চটচটে কিছু আসে যায় না
এক উল্কিওলার গল্প বলতে যাওয়া যেমন, ভেবে নাও
মানে ট্যাটুইস্ট
যে ডুমুর গাছ থেকে ঝুলে পড়েছিলো, ক্ষুধার্ত, ব্যর্থ, নিরাশ
সে কত আশা নিয়ে এয়েছিলো বেলি-ড্যান্সারদের এ শহরাঞ্চলে
শীতপ্রধানের দেশে এ কী বিরল খোলা ত্বকের উৎসব;
কিন্তু ফর্সা কম্প্র পেটে কে দেখতে চায় কালিমা
সে নকশা হোক, শিল্প? উল্কিওলার? তাও এ গেরামে? –
যাক গে, এসব আখ্যানে গিয়ে সাংস্কৃতিক অনাগ্রহের নমুনা দিতে
আমি একদিনও চাইনি

আর বি-টি-ডব্ল্যু, ‘অমৌলিক সাহিত্যের তত্ত্ব’? সে নাকি নতুন বিপ্লব?
মিলেনিওদের প্রজন্মে? সে গান্ডু পচে মরুক।
আমার চিরকালের কবিতার প্রত্যেকটা পংক্তি, আসলে পুনরুচ্চারণ
মূলগুলো সব ভুলে গেছি, সেইটেই সমস্যা
এতগুলো আসলে!

সমঝ জিনিসটা ছানাঠাসা দলছে, বন্দর না শান্তি

গাড়ি চলছে অথচ ঘোড়াদুটো নেই
দেখা যায়না,
দুটো না একটা, তাই বা কে বোঝে
শুধু চলচ্ছক্তি দেখা যায়, পরিচালনার ক্ষমতা, সপ্রাণতা
যাতে বল ক’রে দুই ঘর্মাক্ত মোদক পা দিয়ে
ছানাঠাসা দলছে আর দলছে
গড়তে গড়তে ভাঙতে ভাঙতে কখন যে সে সন্দেশ
কার কাছে কী যে বয়ে নিয়ে গেল, কোন মিষ্টত্ব, কোন জাটিল্য
কবিতায় তত্ত্বের ব্যাপারটা ওইই… ওইরকম

ওনার সারকথন কী ছিলো? মনে পড়ে?
না, ‘সমঝ জিনিসটা, আমি কোনোদিনই ঠিক সমঝে উঠতে পারলাম না’

মন কি ঢেউ না ঢিমে, বন্দর না শান্তি না বোট?
মন বাদে, ছবিটার সমস্ত সদস্যই আছে আগের পংক্তিতে
ছবিটা নাই বা আঁকলো, কী আছে!
সে বোট নড়ছে, শান্তির সাথে
কোনোটা স্থানু, কোনোটা যতি, কিছু অপেক্ষা

তারপর কিন্তু ঝড় আসে চুরমারে
হাওয়া ভাঙে মনের কাচে ডালায় জানলায় –
এবার তো দিলাম শতরূপ, তবু ছবিটা পেলে?
নাই বা পেলে। শুঁয়োপোকা দেখো
দেখো, শরীরটা – যেখানে নড়ে সেই দীর্ঘ পাতার
সে যে নেই বিকেলে, তার নিচেরটাও উধাও
কোরা কোরা শরীর, কার্টিলেজ, হর রক্ত, গুঁড়ো হাড়
তন্তুতে বিচ্ছিন্ন মাস।
মানে শুঁয়োপোকার বাসস্থান

গেয়ে উঠছে যে বৃন্ত
তার গোটা স্তনটাই অদৃশ্য

আর্যনীল মুখোপাধ্যায়। দ্বিভাষিক কবি, প্রাবন্ধিক, অনুবাদক, সম্পাদক, তত্ত্বাবধয়ক, ও চিত্রনাট্যকার। মহাকাশ প্রযুক্তিতে পিএইচডি, পেশা – কারিগরি গণিত। সম্পাদনা করেন The MUD Proposal ও কৌরব অনলাইন। প্রকাশিত বই: বাংলা ও ইংরেজী মিলিয়ে ৮টি কাব্যগ্রন্থ। অনাম আন্দ্রেসের একক ইস্তাহার (২০২০), স্মৃতিলেখা (২০১৩),...

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..