কীরূপে কাপালিকা তোমার খপ্পরে

চিরঞ্জীব হালদার
কবিতা
Bengali
কীরূপে কাপালিকা তোমার খপ্পরে

একদা এখানে এক প্রেমিকা ছিলেন
জগৎ বিছিয়ে ছিল তাহার ভিলেন।
হয়তো আমিও তার রূপমগ্ন কাম
কোথাও প্রেমিকা নেই ইহা দেখিলাম।
দেখিলাম দেখিলাম কিছু কি দেখেছি
এক চোখে কানা দুই চোখে কানা মাছি।
এক চোখে রূপ অন্য হৃদি পদ্মাসন
একে চন্দ্র দুয়ে পক্ষ নয়ে জুড়ে মন।
মনের প্রেমিক মন দুয়ে নদ নদী
বীজমন্ত্র পড়া হলে জলে মহাবোধী।
ভেসে যায় ভেসে যায় বেহুলার লখা
করিলে প্রেমের চর্চা বঊ দেবে বকা।
এখানে একদা এক প্রেমিকা সংহত
ক্ষতের প্রকৃত চিহ্ন বহে অন্য ক্ষত।
সেই সব ক্ষত আর জল সমাচার
প্রেমিকা ফুরিয়ে গেলে প্রেমিকা তোমার।

 

দুই.

যেমত জুটিবে। রাঁধিও। কাপালিকা।
নরমুণ্ডু হাড়।

অন্ন গ্রহণের পর সুযত্ন তাম্বুল
প্রস্তুত রাখিও।

যেকোন দিন আসিতে পারি। দারুণ।
পিপাসার্ত দুই কর্ণ দুল।

স মিধ নক্ষত্র বসাবো কপালে
তিলক পয়োধী
আমার যে বামে নেত্রে বিধি।

আমার যে মুলাধারে আসেনা ঈশ্বর।
ছায়া ও আয়নাহীন আমাদের ঘর।

সে ঘরে কাপালিকা রচিত ভুবন।
হে অন্ন হা অন্ন আমাদের মন।

উড়ু উড়ু সংসার চক্ষু উড়ু পাখি
উপড়ালেও কোটরে আছে মূয়রাক্ষী।

ডেকে যায়। ডেকে যায়। নাম নামাবলী।
এমত তত্ত্বে হয় জাহানারা বলি।

কীরূপে কাপালিকা তোমার খপ্পরে
তোমাদের মধ্যে ময়ূরাসন ঘোরে।

মৌল জাদুটোনা দিয়ে ঘেরা এ সংসার
আমি খড়্গ কাপালিক। কপাল ও বোধি।
মাড়ি ও মড়ক আসে দু‘স্তনে সন্তান
প্রজাপতিও থাকে।ঝুলে। ঝরে মধু দধি।

দেখ পার্লামেন্ট দেখ বিরত ভোট দান।
ডিজেল শেষ হইলে আছে কাপালিকা যান।

সে যানের চাবি কার। কার হস্তগত।
পড়িতে আসিলে পাঠক মহোদয়া ক্ষত।

সেই ক্ষত চিহ্ন দিয়ে সাজিয়েছো ঘর।
কে আছো অনন্ত পড়শী। চান্দ্র অন্তর।

তিন.

স্থির হল শনিবারে মাতালদের বিষয়ে ইয়ার্কি করা হবে।
প্রকৃতার্থে হ্যান্ডসেট তোমাকে দিশা দেখাবে বলে
কাজলের গল্প জুড়লে
আমাদের সন্মোহিত উথলানো বাস্তবের দায় কে নেবে।
এক সরলরেখা যখন স্পর্শকের ভূমিকা পালন
করে সেখান আয়নাই আম্পায়ার।

সে জানে না কখন সে পরে নিয়েছে কালো
পরিধান আর নীল স্বরযোজনা।
আর যাই হোক মাতাল রা কান্নার আগে
স্পর্শকের মত ছুঁয়ে থাকে অগ্নীতে আত্মাহুতির মত।
দ্বন্দ্ব মূলক বাস্তুবাদ পড়তে গিয়ে দেখি সব
পাগলই কাজলের নিগূঢ় ভালবাসায় চালাক ক্ষেতমজুর থেকে মহানুভব শিরোপা নিয়ে
ঢেঊ নামক আত্মচরিতে ভিজে আছে।
অগত্যা রাজুদার চায়ের দোকান ঈশ্বর প্রতিভাত হলে চুইংগাম চিবোতে চিবোতে
রাইচাঁদ স্ট্রীটের কাজলদির মশলার কৌটোয় সেধিয়ে গেলে দোষ নিয়েন না মা জননী।

চুরি বিদ্যা শিখতে শিখতে কখন যে
স্পর্শকের মত সরল অপ্রেমিকের খাতায়
নথিবদ্ধের আনন্দে বুঁদ হয়ে আছি।

চার.

ভ্যানতাড়া আর প্রথাগত শুদ্ধতার ভিতর আর যাইহোক কোন প্রেম নেই।
নীল মাছিও বার্তাবাহকের ভুমিকা থেকে সরে এসে
প্রবল ধর্ষক।

শুড়ে ও ডানায় সেই সব কারুচিহ্নের ভার
কাউকে তো বহন করতে হয়।

অথএব আর একবার প্রমান করুন
আপনার ভেজা বিছানায় অন্য কারো হাসি
লেগে আছে কিনা।
এমত পংক্তি ভোজে আপনার ময়ূরসিংহাসন
ভেসে যাচ্ছে বন্দরে বন্দরে।

পাঁচ.

সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে স্ত্রীলিঙ্গের কথা বলি।
বলি সিঁড়িদের অবমাননা বিষয়ক পরিচিতাকুলের
আবহভাবনা।
মেরুদন্ড প্রদাহকারী হাস্যরস গড়াতে গড়াতে মাটিতে পড়লে বকুলগন্ধ টের পাও।

তুমি বাঁশী বাজাতে ভালবাসতে।
তার ঘ্রাণ নদী ভাসাতে ভাসাতে মোহনা ছাড়ালে
আমাদের অপরিচিত রূপগুলো
ক্রমাগত বিবর্তনের পক্ষে স্তব গান শুরু করেছে।

তখন মহানুভবতা অপরিচিত ভাঙা কাচের মতো
এক একটি দ্বীপ জন্মের ভাষ্যকার।
সিঁড়ি শুধু জানে।

দেখো জাম্প কাটে নেমে যাচ্ছে মৃত্তিকাগন্ধী ঝাঁকড়া যুবা।
তাকে স্বর্নেন্দু ভাবলে
তুমি কী রাতের কারাগারে কয়েদীর মুক্ত ঘরানা।

যাও ঘর, ঘরে ফেরো সিঁড়ি ভেঙে রাতে আহারে।

 

ছয়.

তিনটি সরলরেখা কীভাবে চোর জন্মের আখ্যান শোনায়।

চিত্ত ভরদ্বাজকে ডাকা হয়েছে।
শোনা গেছে তিনি বিষন্ন আগুনকে সঙ্গীত শোনাতে শোনাতে এক একটি পিলসুজের উদগাতা।
তাহলে চিত্ত একটি সরলরেখা।
অন্য দুইজন বিষন্নতা এবং আগুন।

এই তিনে মিলে কীভাবে চোর জন্মের ত্রিভুজ
হতে পারে ভাবলেই
সালভাদোর দালির কথা মনে পড়ে।
তিনি নোলেন গুড়কে রং হিসাবে ব্যাবহার এর ক্রিয়া কর্মে প্রভুত নারীর অর্ন্তদেশে রুপালী মাছের
বিরহ যাতনার সিলুয়েট হাতুড়ি সহযোগে এক
বডিস্পাতে হরিনের মত বিছিয়ে দিতেন।

আমি জানি না চৌর্যবৃত্তি কতটা শরীরের
দরকার আর কতটা মেধার
এই সব অসম যৌনতা হোমো ঝরে
সরল রেখার মত নিরুদ্দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

 

সাত.

-৪+১৯
ক্ষেত্রপালিকার কাছে যেসব কড়ি গচ্ছিত আছে তাকে তুমি দেশ ভাবো।
উলঙ্গ বর্ণ তাহলে কি দেশের কথা বলে?

তেষট্টি রঙ দিয়ে হিমোগ্লোবিন আর উভলিঙ্গের
অর্গাজম সম্পন্ন হলে বধুবৃত্তির ফোঁকগুলো ঢেকে যায় মোহ আর মাদকতায়।

আমি কার্পাস ক্ষেতের কাছে যাচনা করি পরিধেয়,
রূপশালী যুবতীর কাছে স্বপ্নের ব্যাকরণ চুরি
করতে গিয়ে বামাল ধরা পড়েছি।

এখন আমার আর কোন নাম নেই।
অখণ্ড নভোমণ্ডলে আমার শব থেকে জন্ম
নিচ্ছে ব্যঞ্জনবর্নের শেষ যতিচিহ্ন।
===================

চিরঞ্জীব হালদার। কবি। মূলত ক্ষুদ্র পত্র -পত্রিকার লেখক। জন্ম- ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৬১, গাববেড়িয়া; দক্ষিণ ২৪ পরগণা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত। পড়ালেখা করেছেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ডিপ্লোমা। লেখালেখির শুরু গত শতাব্দীর আশির দশক। শুধু কবিতা আর ভালো কবিতাই তাঁর আরাধ্য। এপর্যন্ত নির্মিত কাব্যগ্রন্থ ষোলটি। প্রকাশিত সাতটি। যৌথ সংকলন একটি। সম্পাদিত কবিতা...

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..