প্রক্সি
তারপর ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে যাবো। আমার দেরি হবে আসতে। স্বামী অমর বলে, ঠিক আছে।…..
পকেট থেকে দরজার চাবি বের করতে গিয়ে দেখি, এরিকা হাসি হাসি মুখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। পেছনের দরজার সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছে। এই তীব্র শীতের মধ্যে।
“সিগারেট শেষ করে ভেতরে আসো, এরিকা! এই ঠাণ্ডার মধ্যে বাইরে দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছো!”
উত্তর না দিয়ে, ফোলা ফোলা মুখে ধোঁয়া ছাড়ে মেয়েটা। কুয়াশার সাথে ধোঁয়া মিশে যায়।
“আজকে আমাকে তোমার রুমে লুকিয়ে রাখবে, ফারজানা? আমি আপাতত হোমলেস! এই মাসের ভাড়া দিতে পারিনি। চাকরি চলে গিয়েছে। নতুন কাজ খুঁজতে ইচ্ছা হচ্ছে না। বাবা-মার কাছেও যেতে চাচ্ছি না। তুমি তো জানো, তারা ক্যাথলিক ক্রিশ্চিয়ান। আমার লাইফ স্টাইল তাদের পছন্দ না!” এরিকার কথা বলার মধ্যে একটা শিশু শিশু ভঙ্গী আছে।
আমেরিকাতে হোমলেস হওয়াটা অভিনব কিছু না! মিনিমাম ওয়েজের চাকরি যারা করে, তাদের জীবন পে চেক টু পে চেক করে করে চলে! কোন সেভিংস থাকে না! চাকরি চলে যাওয়ার সাথে সাথে রাস্তায় নেমে আসার মতো অবস্থা হয় অনেকের! কারো কারো জন্য এখানে হোমলেসনেস একটা চয়েজ হলেও, বেশিরভাগ মানুষ দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে হোমলেস হয়।
আমি যে বাড়িটাতে থাকি, সেটা ঠিক ক্যাম্পাসের পাশে। থাকার বন্দোবস্ত অনেকটা ইউনিভার্সিটির ডর্মের মতো! দুই তলা বাড়ির একেক রুমে একেকজন থাকে। রুমের সাথে বাথরুম এটাচড! তিনজন ভাড়াটিয়া এক রান্নাঘর শেয়ার করে।
মাথা ঝাঁকিয়ে আশস্ত করি এরিকাকে। “থাকো, সমস্যা নেই। তোমার কাছে খাবার কেনার টাকা আছে?”
“এখন আছে। দেখো না, সিগারেট কিনেছি! টাকা শেষ হয়ে গেলে, তোমার রেমন নুডলসের বক্স থেকে এক প্যাকেট নুডলস দিও আমাকে!”
এরিকা আগে ওয়ালমার্টে চাকরি করত। কিন্তু নিজেকে একজন লেখক হিসেবে পরিচয় দিতে পছন্দ করে। লেখার পাশাপাশি সে ডাইনি হওয়ার সাধনা চালিয়ে যাচ্ছে! প্যাগানিজম নিয়ে তার একটা ব্লগ আছে! এই প্যাগানিজমের মাধ্যমেই পঞ্চাশ বছর বয়সী এক অস্ট্রেলিয়ান লোকের সাথে অনলাইনে পরিচয় হয়েছিল তার। সেই থেকে প্রেম! বাইশ বছর বয়সী মেয়ের সাথে পঞ্চাশ বছরের প্রায় বৃদ্ধ এক লোকের প্রেমে এরিকার বাবা-মা হতাশ। এরিকার প্রেমিককে ‘পেডোফাইল’ বলে গালি দিতে দিতে তারাও ক্লান্ত এখন!
“তোমার লেখালেখির খবর কী?”
“লেখালেখি আর ভালো লাগছে না, ফারজানা। ওয়েব ক্যাম মডেল হিসেবে কাজ করবো, ঠিক করেছি!”
চোখ ছোট করে এরিকার দিকে তাকাই!
“তুমি কি আমাকে জাজ করছো?” এরিকার স্বর কি নিষ্পাপ! কিশোরী-কণ্ঠের এই রহস্যময় মেয়েটাকে আমি খুব পছন্দ করি।
“আমি তোমাকে জাজ করছি না, এরিকা! তবে লেখালেখির মতো ইনটেলেকচুয়াল একটা ব্যাপার থেকে হঠাৎ ওয়েব ক্যাম মডেল ধরনের পুরোপুরি শরীর কেন্দ্রিক একটা ব্যাপারে তোমার প্যাশন কীভাবে তৈরি হল, এটা চিন্তা করে অবাক হচ্ছি!”
“ওয়েব ক্যাম মডেলিং একটা শিল্প, ফারজানা। ক্যামেরা অন হবে। সাথে সাথে তোমার বোরিং বেডরুমটা একটা স্টেজ হয়ে যাবে। ক্যামেরার ওপাশে অডিয়েন্স অপেক্ষা করবে তোমার জন্য। অনুরোধ করবে একটা চরিত্রে অভিনয় করতে! তুমি কস্টিউম পরে একজন অন্য মানুষ হয়ে যাবে।”
“এডাল্ট ফিল্ম স্টারদের মতো?”
এরিকার কপাল কুঁচকে যায়। “উহু! এটা একটা আর্ট ফর্ম!”
আমি মাথা ঘামাই না! বাংলাদেশের রক্ষণশীল সমাজে বড় হলেও জানি, মানুষ বিচিত্র। এবং এই বৈচিত্র্যের জন্য পৃথিবী সুন্দর!
নিজের রুমে ঢুকে আলো জ্বালাই। আমার ম্যাট্রেস একটাই। এরিকা হাই তুলে।
“আমাকে একটা ব্ল্যাঙ্কেট দাও, ফারজানা। আমি বালিশ ছাড়া যেখানে-সেখানে ঘুমিয়ে পড়তে পারি!”
হাত-মুখ ধুয়ে ঘুমাতে আসি। সকালে প্রফেসরের সাথে মিটিং আছে একটা। ঘুমাতে হবে। এরিকার মতো পাগলামি করার বিলাসিতা আমার নেই। আমি এক দরিদ্র রাষ্ট্রের দরিদ্র নাগরিক। আমেরিকায় পড়তে এসেছি। টিচিং এসিস্টেন্টের কাজ করি। পলিটিক্যাল সায়েন্স বিভাগে। বিনিময়ে পি এইচ ডি-র টিউশন ফি দিতে হয় না। বাসা ভাড়া দেয়ার মতো একটা স্টাইপেন্ড পাই মাসে মাসে। কিছুক্ষণের মধ্যে এরিকা ঘুমিয়ে পড়ে। আমি ছাদের দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে গান গাই,
“দিজ ইজ মাই ফাইট সং,
টেক ব্যাক মাই লাইফ সং!
প্রুভ আই এম অলরাইট সং!”
পাশের রুম থেকে এই মাঝরাতে কার কান্না ভেসে আসে! কিছুক্ষণ পরে বুঝতে পারি, সিনথিয়া কাঁদছে। ফোঁপাচ্ছে। হঠাৎ হঠাৎ কান্না থামিয়ে সিনথিয়া টানা টানা অষ্পষ্ট উচ্চারণে অভিযোগের সুরে কি যেন বলছে! অথচ আজ সকালে ব্রেকফাস্টের সময়ে রান্নাঘরে ওর সাথে দেখা হয়েছিল। হাসছিলো তখন, যেমন সবসময় হাসে। আমার কাছে মনে হয়, সিনথিয়া একটা হাসির মুখোশ পরে থাকে। সারাদিন পরে রুমে ঢুকে যখন দরজা বন্ধ করে, তখন অভিনয়ের প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়। মুখোশটা খুলে তখন ও কাঁদে। ঘুম পাড়ানি সুরের মতো কান্না শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ি একসময়।
ঘুম থেকে উঠে দেখি, এরিকা চলে গিয়েছে। দরজা ভেজানো, কিন্তু আনলকড্! এরিকা দরজা লক করে যায়নি দেখে, আমার কিছুটা মেজাজ খারাপ হয়।
ভার্সিটিতে যাওয়ার জন্য বের হই। রাস্তায় বাংলাদেশী এক ছাত্রীর সাথে দেখা হয়। চোখ ঘুরিয়ে আমার স্কার্ট আর উইন্টার জ্যাকেট দেখতে দেখতে সে আমাকে জিজ্ঞাসা করে, “তুমি নাকি ছেলেদের সাথে রান্নাঘর শেয়ার করো?”
আমি “হ্যাঁ” উত্তর দিলে, সে আমাকে বলে, “ভালোই! আমেরিকা এসে দেখি পুরা আমেরিকান হয়ে গিয়েছো ! শুধু আমরাই মনে-প্রাণে মুসলমান থেকে গেলাম! বাংলাদেশী কালচারকে আমরা ভুলি নাই!”
এরপর গলার স্বর নিচু করে সে গোপন খবর ফাঁস করে।
“তান্নি আপুর ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে হাসবেন্ডের সাথে, জানো তো? উনার হাজবেন্ডের আর কী দোষ, বলো? আপুর রান্না করা সেমাই খেয়েছো না গত ঈদে? একে রান্না খারাপ করে। তার উপরে আবার যেই চেহারার অবস্থা! আপুর ভুড়িটা দেখেছো, এত্ত বড়! কি যে বাজে ফিগার! এই রকম মেয়ে কি আর সংসার টেকাতে পারে?”
আমার বিরক্ত লাগে। বিদেশে থাকা বাংলাদেশী কমিউনিটির এই এক সমস্যা! এরা একটা ভালো বই পড়ে না। একটা ভালো মুভি দেখে না। এদের অবসরের বিনোদন কোন্ বাংলাদেশী মেয়ে কী করছে, এইসব নিয়ে চানাচুর আর চা খেতে খেতে মুখ বাঁকিয়ে রসালো গল্প করা!
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আরো বিরক্ত লাগে আমার! দেরি হয়ে যাচ্ছে।এমনিতেই আমেরিকাতে বাদামী চামড়ার মানুষজনের ব্যাপারে একটা কমন স্টেরিওটাইপিং হচ্ছে, এরা সব জায়গাতে দেরি করে! আজকে প্রফেসরের সাথে মিটিং আছে। ঠিক দশটাতে! মিটিং-এ দেরি করে গিয়ে, বাংলাদেশের নাম ডুবানোর মানে হয় না! তার উপরে কফি খাওয়ার সময় পাই নি আজ সকালে। কফি না খেলে মেজাজ খিঁচড়ে থাকে। এই খিঁচড়ানো মেজাজ নিয়ে প্রফেসরের সাথে দেখা করতে যাওয়া যায় না। পি এইচ ডি-র ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য প্রফেসররা ঈশ্বরের সমতুল্য! গড এন্ড গডেস অফ একাডেমিয়া! ডিপার্টমেন্ট আমাকে পড়াশোনার জন্য ফান্ডিং দিচ্ছে। এই ফান্ডিং টিকিয়ে রাখতে হলে ঈশ্বরদের সাথে মুখ গোমড়া করে কথা বলা উচিত না!
“আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে, আপু!” বলে আমি হাঁটা দেই।
হাঁটতে হাঁটতে ভাবি, “ইঁদুরদের বাড়িতে বেড়াতে গেলে, তারা পনির দিয়ে অতিথি আপ্যায়ন করবে। এটা হচ্ছে, বাংলাদেশী সমাজে পরস্পরের প্রতি প্রত্যাশা। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। প্রকৃতপক্ষে, ইঁদুরের দল প্লেটে পনির সাজিয়ে শুধু মাত্র লৌকিকতা রক্ষা করবে। আর আড়ালে গিয়ে গর্তে বসে পরিকল্পনা করবে, কীভাবে আপনার শস্যের ক্ষেত ধ্বংস করা যায়! আপনি তাদের বাড়ির পনির খেয়ে ঢেঁকুর তুলবেন। তারপর পড়ে যাওয়া দাঁত তাদের গর্তে ছুঁড়ে দিবেন গোপনে। জিঘাংসাময় স্বপ্নে দেখবেন, গলায় দাঁত বেঁধে কৌতুহলী ইঁদুররা মরে যাচ্ছে! কালেকটিভ কালচারের এই ভণ্ডামি বেশ উপভোগ্য!”
প্রফেসরের সাথে মিটিং শেষ করে অফিসে আসি। কিনবো না কিনবো না করেও, স্টার বাকস থেকে কফি কিনে ফেলি। শুধু শুধু চার ডলার খরচ করতে ভালো লাগে না! কিন্তু কী আর করা যাবে! কফি আমার কাছে ড্রাগস! আসক্ত হয়ে গিয়েছি পুরা! অফিসে ঢুকে দেখি, জেসি ল্যাপটপে পেপার লিখছে। জেসি আর আমার বন্ধুত্ব প্রায় দুই বছরের!
উইন্টার জ্যাকেট খুলতে খুলতে প্রশ্ন করি,
“পেপার ডিউ কবে, জেসি?”
“কালকে।”
“এই ক্রিসমাসে বাড়ি যাবে?”
“নাহ! একজন প্যাস্টরের বাড়িতে দাওয়াত আছে। ক্রিসমাসে সেখানে যাবো, চিন্তা করছি!”
জেসি পেপার লেখা থামিয়ে হঠাৎ চুপ হয়ে যায়।
“আমার তো কোন বাড়ি নেই, ফারজানা! বারো বছর বয়সে সেক্স ট্র্যাফিকারদের কাছে বাবা আমাকে বিক্রি করে দিয়েছিল। ষোল বছর বয়সে লোকাল পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে। এরপর ফস্টার হোমে ছিলাম দুই বছর।”
তখন বুঝতে পারি, জেসি কেন জেন্ডার পলিসি নিয়ে গবেষণা করতে চায়! আমার মন খারাপ হয়। কিন্তু আবার একই সাথে আনন্দ হয়! এই মেয়েটাকে বাধ্য করা হয়েছিল ‘সেক্স স্লেভ’ হতে। অথচ ওকে কেউ “নষ্টা” বলে গালি দিচ্ছে না। মাথা উঁচু করে বেঁচে আছে জেসি। এখন পি এইচ ডি করছে! আমার ওকে জড়িয়ে ধরে বলতে ইচ্ছা করে, “প্রাউড অফ ইউ, জেসি!”
সন্ধ্যা পর্যন্ত একটানা পেপার লিখি আমি। সেমিস্টারের এই সময়টা যে কি ভীষণ ব্যস্ততা যায়! ভাল্লাগে না কিছু তখন! বাসায় ফেরার সময়ে হাঁটতে হাঁটতে শীতে কাঁপতে কাঁপতে কান্না পায়। ইলিনয়ের বাতাসে কান অসাড় হয়ে যায়। লেকের উপরে পাতলা কাঁচের স্তর। হ্রদের মধ্যে সাঁতার কাটে হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান এন্ডারসনের ‘কুচ্ছিত প্যাকারু’। হাত-পা ছুঁড়ে ছুঁড়ে সামান্য স্থানকে, সে ক্রমাগত উষ্ণ করার চেষ্টা করে। কুচ্ছিত প্যাকারুকে আমার সুপার হিরো মনে হয়। হাঁসের ছানাদের যুদ্ধ দেখে হিম কুয়াশাতে ফাঁটা ঠোঁটে হাসি আমি। আমার মনে হয়, আমিও পারবো!
তবু দেশের কথা মনে পড়ে। বিড়বিড় করে গান গাই,
“পরের জায়গা পরের জমি,
ঘর বানায়া আমি রই।
আমি তো সেই ঘরের মানুষ নই!”
নিরাপত্তাবোধ ছাড়তে পারি না! অভিজিৎ রায়ের থেতলানো মগজের কথা মনে পড়ে। গত তিন বছরে পাবলিক বাসে কোন পুরুষ আমার গায়ে হাত দেয় নি। ভীড়ের সুযোগে কেউ পুরুষাংগ ঠেসে দেয়নি শরীরে। আমি পাখির মতো ডানা মেলে উড়ে বেড়াতে পারছি এই দূরের দেশে। রাত দশটার সময় চাঁদ দেখতে দেখতে তখন আর দেশে ফিরে যেতে ইচ্ছা করে না!
বাসায় এসে কফি মেকারে আরেক দফা কফি বসাই। রাত জাগতে হবে! কাল একটা প্রেজেন্টেশন ডিউ! একা একা রাতের খাবার খাই। স্বাধীনতার দাম খুব চড়া!
কিচেনে ঢুকলে এরিকার সাথে দেখা হয় আবার।
হাসি মুখে এরিকা বলে, “চলে যাচ্ছি ফারজানা। এবারের গন্তব্য আলাবামা।”
“আলাবামাতে কে আছে তোমার?”
“কেউ নেই। একটা এডভেঞ্চারের মতো সব কিছু নতুন করে শুরু করব। বেশ একটা এডভেঞ্চার হবে, কি বলো?” বিয়ারের ক্যানে চুমুক দেয়!
এরিকার মাথায় হাত বুলিয়ে বলতে ইচ্ছা করে, “আমিও তোমার মতো আরেক পাগলা!” কিছু বলি না।
সে রাতে ঘুমের মধ্যে একটা স্বপ্ন দেখি আমি।
একটা অনেক উঁচু পর্বত। আমি সেই পর্বত অতিক্রম করছি। পিঠে মণখানেক বোঝা। কিন্তু আমি পর্বতটা বেয়ে উঠেই যাচ্ছি। একা। একদম একা। জন্মেই পোলিও হয়েছিল আমার। তাই আমার পা হাঁটু থেকে দুমড়ানো। আমার চোখ প্রায় অন্ধ। কিন্তু আমি পর্বতটা বেয়ে উঠেই যাচ্ছি। একা। একদম একা। অক্সিজেনের বোতল শেষ হয়ে আসছে। পেছনে লাশের স্তুপ। কিন্তু আমি পর্বতটা বেয়ে উঠেই যাচ্ছি। একা। একদম একা।
জানি, আমি একদিন পর্বতের চূড়ায় দাঁড়িয়ে আকাশ স্পর্শ করব। এই ভাঙ্গা পা, প্রায় অন্ধ চোখ, আর ফুরিয়ে যাওয়া অক্সিজেনের বোতল নিয়ে। একা। একদম একা। কিংবা হয়তো এই পর্বত বেয়ে উঠতে উঠতে পা হড়কে পড়ে যাব। আমার লাশ চাপা পড়ে থাকবে সাদা বরফের নিচে। তবু মৃত্যুর সময় জানবো যে, আমি একটা পর্বত জয়ের জন্য লড়েছিলাম। সমতলের বাক্সবন্দী মানুষগুলোর মতোন, পর্বতারোহীদের টিটকারি দেয়াটাকে আমার জীবনের লক্ষ্য মেনে নেই নি।
বাস্তবতা আর স্বপ্নের মধ্যে সীমারেখাটা খুব সূক্ষ্ম। এই সীমারেখাটা সরে গেলে দেখা যায়, বাস্তব-ই আসলে স্বপ্ন। আর স্বপ্ন-ই বাস্তব। রূপকথা বাস্তব হবে, এই প্রত্যাশায় কুঁজো কিশোরী বেঁচে থাকে।
তারপর ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে যাবো। আমার দেরি হবে আসতে। স্বামী অমর বলে, ঠিক আছে।…..
নভেম্বর চলছে। অনির সাথে আজ দেখা হবে তা জানাই ছিল। এই তো ক’দিন আগেই দেখা…..
বুড়িমাসি বলেন,জীবনটা বালির ঘর গো।ঢেউ এলে ধুয়ে যায় জীবনের মায়া।তবু বড় ভালবাসা ওদের দাম্পত্যে।রোদের চাদরের…..
এক ড্রইং রুমে বসে রয়েছে সদ্য কিশোর উত্তীর্ণ তরুণ গোয়েন্দা সজীব। সামনের টেবিলে ছড়িয়ে…..