কেউ একজন ভালবাসুক

রুদ্র অয়ন
কবিতা
Bengali
কেউ একজন ভালবাসুক

সুখে থেকো প্রেয়সীতমা

মনে কি পড়ে তোমার?
একদিন আমার
সরল নিষ্কলুষ অধর
তুমি তোমার বিষে
নীল করে নিয়েছিলে?

আমরা দু’জন
কপোত কপোতীর মত
উড়ে বেড়িয়েছি ইট কাঠ
পাথরে মোড়া শহরটাতে।
কত শত জায়গা জুড়ে
রেখে এসেছি আমাদের
পদযুগলের স্মৃতিচিহ্ন।

আমি ছন্নছাড়ার মত
অনেকটা দিন তোমার সাথে
ভবঘুরে ছন্নছাড়া হয়েই
বেঁচে রইলাম।

এই বেঁচে থাকাটাতো
আমাদের যুগলের
বেঁচে থাকার কথা ছিল বলো!
অথচ,আজ তুমি কোথায়
আর আমি বা কোথায়!

তুমি হয়ত আজ
পরম সুখে নিদ্রা যাও ;
আর আমার নিদ্রা সে তো
কবেই ফেরারি পাখির মত
গেছে হারিয়ে কোন অজানায়।

একাকী আমি
মাঝে মাঝে ভুল করে
কারও হাত ধরার কথা ভাবি।

যারই হাত ধরতে চাই
সেই আমার হয়ে যায় শিক্ষক! ভালোবাসার মানুষ হতে চায়না,
সে আমায়
শিক্ষা দিয়ে বুঝিয়ে দেয়
ভালোবাসা আমার জন্যে নয়।

আমার মত ঘরপোড়া গরুকে
সিঁদুরে মেঘ যে তার আবিরে কখনওই রাঙাতে চায়না
একথা আমি বারবার ভুলে যাই।

তুমি অনেক সময়ই বলতে-
তোমার কিছু মনে থাকেনা!
তাই মনে না থাকার খাতায়
আমার নামটাও জুড়ে দিলে!

কতবার বলেছো-
তুমি আমার ছাড়া
আর কারও হবেনা।

অথচ দেখো তুমি ঠিকই
আমার জায়গাটায় অবলীলায়
বসিয়ে নিলে অন্য কাউকে।

ভুলে যাওয়া
কত সহজ তাইনা?
তবে আমি পারিনা কেন?

তুমি আমায়
ভুলে যাবার মন্ত্রটা
শিখিয়ে দিয়ে গেলেনা
কেন বলতো?

কেউ আমার
মন বোঝেনা।

সবাই তোমার মতই ;
হয় অভিনয় করে নয়তো অবজ্ঞা।

আমি তবু ভালই থাকি
তোমার ভাল থাকার কথা শুনে।
তুমি ভাল থেকো
ভীষন সুখে থেকো প্রেয়সীতমা।

 

হৃদয় জুড়ে তুমি

আমার অনুভব জুড়ে,
হৃদয় জুড়ে শুধু তুমি ;
তোমার নামেই আঁকিবুঁকি।

কোন আদলে তোমাকে
আঁকতে পারিনি আমি,
দিতে পারিনি কোন অবয়ব; বাঁধতে পারিনি সম্পর্কীয়তায়।

লিখতে পারিনি তোমাকে
গদ্যে ছন্দে গল্প কবিতার
সাদৃশ্যের ভাবনায়!

দূর্বোধ্য কিছু
প্রতীক হয়ে আছো
চিত্তের ক্যানভাসে
অনুভুতির দেয়াল জুড়ে।

এলোমেলো কিছু ভাবনায় তোমাকে দেখি অদৃশ্য মমতায়। ফনিমনসার মতো
বেড়ে উঠছো ভাবনার মরুদ্যানে। ভালোলাগা হয়ে চষে বেড়াও মস্তিষ্কের রন্ধ্রে রন্ধ্রে হৃদয়ের অলিতে গলিতে।
ছুঁতে পারিনি তবু
তোমার দেহতত্ত্বের কায়া!
বাঁধা পড়ে আছো
কেবলই চিত্তের বেষ্টনীতে!
তুমি আমার একান্তের অনুভব, অনুভবেই শুধু
নিজের করে পাওয়া।

 

তুমি এসো নতুন দিনের ভোরে

প্রেয়সীতমা,
জুড়োয় না চোখ
কতদিন তোমার প্রান্তরে ;
কতদিন তোমার বুকে
মাথা রেখে
হয়না শান্তির সন্ধ্যান।

নিঃশ্বাস নিঃশ্বাসে
বিলীন হয়না কত শতদিন
তোমার আমার আবেগী শরীর।

ভীষণ মনে পড়ে
তোমায় প্রেয়সীতমা,
নিঃসঙ্গ জানালায়
একাকীত্ব দীর্ঘশ্বাসে!

মনে পড়ে তোমায়-
গোধুলি আলোর
শেষ মিছিলের আলিঙ্গনে।

কত কিছুই না বলা রয়ে গেলো সময়ের তাগিদে
হলোনা বলা কিছুই।

তুমি হারিয়ে গেলে
ভালোবাসার অস্ত নিমিষে।
তারপর থেকেই
খুঁজি বেড়াই তোমার অস্তিত্ব, গোধূলি লগ্নের আবছায়াতে ;
নতুন প্রভাতে
স্নিগ্ধ আলোর আধিপত্যে।

আজ বড়ই অসহায় আমি,
তোমাকে স্পর্শের আকাঙ্ক্ষায় ; ভালবাসার ছোঁয়ায়
ব্যাকুল হয়ে ওঠছি!

যে ভালোবাসার অঙ্গিকারে
আমরা ছিলাম প্রতিজ্ঞাবদ্ধ,
সেই ভালোবাসার মাঝে
আজ অতিমাত্রায় দূরত্ব!

তবুও তোমায়
স্পর্শ করে যাই
অনুভবে
একান্তে
মনের কল্পনায়।

শুধু ভালোবাসার দিব্যিতে
আজও অপেক্ষায় প্রহরগুনি,
তোমার বুকে
মাথা রাখার প্রত্যয়ে।

তুমি এসো প্রেয়সীতমা,
নতুন কোনও ভোরে
সূর্যোদয়ের নির্মল আলোতে।

 

কেউ একজন ভালবাসুক

একচিলতে
ভালবাসার প্রত্যয়ে
কত শত দূর্গমপথ
গিয়েছি মাড়িয়ে,
রাত্রির বুকে এঁকেছি
নিশাচর আলোর আল্পনা ;
তবু কেউ ভালবাসেনি আমায়।

যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে
ভালবাসার কথা বলেছিলো
আজ সেও উবে যাওয়া
কর্পূরের মত,
আমার জীবন থেকে
গিয়েছে হারিয়ে!

কখনও কেউ
ভালোবাসেনি আমায়।
দেখেনি কেউ
অবহেলায় অযত্নে
কত শত দিবস রজনী
পড়ে আছে জমা।

কেউ একটা
লালগোলাপ দিয়ে
ভালবাসার কথা বলিনি কখনও।
কেউ বলেনি
ভালবাসলে
লাল গোলাপ দিতে হয়,
রাতের চোখে এঁকে দিতে হয় প্রেমময় ভালবাসার কাজল।
ক’টা সমুদ্দুর রাখতে হয়
বুকের গহীনে।

কেউ কখনও
ভালোবাসেনি আমায়।
কাউকে আমিও
পারিনি বোঝাতে।

আমারও বড্ড ইচ্ছে হয়
চোখে চোখ রেখে
ঘনিষ্ঠ হয়ে কারও সাথে বসি হাতের মুঠোয় রাখি হাত
ভাললাগা ভালবাসার আবেশে
কাটিয়ে দেই অনেকটা সময়।
হাতে হাত বেঁধে হাঁটি,
আড্ডা -গল্প করি;
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজি দু’জনে।
আমারও খুব ইচ্ছে করে
অপেক্ষা করতে করতে
কারও জন্যে
অভিমান নিয়ে বসে থাকি।
সে আসুক
মেঘের আড়ালে লুকিয়ে থাকা একফালি রোদ্দুর হয়ে ;
আমাকে ছুঁয়ে
অভিমান গুলো ভেঙে দিক।

আমারও ইচ্ছে করে
কেউ একজন আমাকে
নিজের করে ভাবুক
আমার আমিকে
তার নিজের করে নিক
ভালবাসার চাদরে
কেউ একজন
আমাকে জড়িয়ে রাখুক।
ভালবাসুক ভীষণ ভালবাসুক।

রুদ্র অয়ন। কবি।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..