করাচিতে নজরুল
করাচি বন্দরে এককালে গ্রিক-পারসিক-আরবীয় সওদাগরেরা নোঙ্গর করেছে; অনেক স্থাপত্য চিহ্ন আজো রয়ে গেছে; যা…..
আবু আলী ইবনে সীনা সংক্ষেপে ইবনে সীনা ছিলেন পারস্যের একজন বিজ্ঞানী। ইবনে সীনা পাশ্চাত্যে আভিসেনা নামে পরিচিত, তাঁকে ইসলামি জ্ঞানচর্চার ইতিহাসের অন্যতম বড় চিন্তাবিদ বলে মনে করা হয়। খ্রিস্টিয় অষ্টম শতক থেকে ত্রয়োদশ শতক পর্যন্ত ইসলামিক বিশ্বের স্বর্ণযুগ ছিল, এসময় তারা জ্ঞান-বিজ্ঞানে অনেক অবদান রাখেন। ইবনে সীনা ৯৮০ সালে জন্ম নিয়ে ১০৩৭ সাল পর্যন্ত বেঁচে থাকেন। সেসময় তো বটেই এখনও তাঁর মত চিন্তাশীল মানুষের সংখ্যা খুবই নগণ্য।
অডিওপাঠ শুনুন এখানে:
প্রত্যেক বিজ্ঞানীকে খুব সাবধানতার সাথে ধর্ম আর বিজ্ঞানের সীমারেখা মেনে চলতে হয়, যেটা এখনো হচ্ছে। ইবনে সীনাকেও সেসব বাধা অতিক্রম করতে হয়েছে।
ইবনে সীনা ছিলেন একজন পলিম্যাথ মানে অনেক বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি। তাঁকে প্রাক আধুনিক মেডিসিনের জনক বলে মনে করা হয়।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে কোন অসুস্থ মানুষকে অন্যান্য মানুষ থেকে আলাদা করে রাখাটা আমাদের কাছে খুবই যুক্তিযুক্ত মনে হয়। কিন্তু ইবনে সীনা ছিলেন প্রথম বিজ্ঞানী যিনি প্রস্তাব করেন বিরল রোগ-ব্যাধি প্রাকৃতিক কারণে সৃষ্ট। কিছু রোগ অণুজীবের দ্বারা ছড়াতে পারে, তিনি এমন সন্দেহ করেন। তাই মানুষ থেকে মানুষে এদের বিস্তার সম্ভব। সেজন্য তিনি রোগীদের কোয়ারেন্টিন এর ব্যবস্থার কথা বলেন। চল্লিশ দিন তারা মানুষের সংস্পর্শে আসতে পারবে না। তাঁর পদ্ধতির নাম ছিল al-Arba’iniya (“the forty”)। যেটা মানবজাতির জন্য আশীর্বাদ স্বরুপ, কারণ কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা না করলে কয়েক শতাব্দী আগেই বড় মহামারীতে মানব জাতি উধাও হয়ে যেত।
ইবনে সীনা মোট ৪৫০ টি কাজ প্রকাশ করেন, এরমধ্যে ৪০ টি হলো চিকিৎসা শাস্ত্র নিয়ে।
তাঁর বইগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পঠিত বই ‘দ্য বুক অফ হিলিং’, এবং কানুন ( দ্য ক্যানন অফ মেডিসিন’, al-Qanun fi al-Tibb) । মধ্যযুগের ডাক্তারি বিদ্যায় এ দুটি বই মেডিসিনের মূল বই ছিল। তার কাজ এক সময় স্ট্যান্ডার্ড মেডিকেল প্রাকটিস হিসেবে অনুসরণ করা হত। যে কারণে নিউ ইয়র্কে তাঁর অনেক ডাক্তারীবিদ্যার এনসাইক্লোপিডিয়া রিপ্রিন্ট হয়েছে। আধুনিক সময়ে ১৬৫০ সাল পর্যন্ত তাঁর লেখা অনুসারে চিকিৎসা চলত।
এটা খুবই আশ্চর্যজনক যে ইবনে সীনা ছোঁয়াছে রোগের যে সংজ্ঞা দেন সেটা আজও কার্যকর, আরো অবাক করার ব্যাপার মেডিসিনের ইতিহাসে ইবনে সীনাই সর্বপ্রথম অণুজীব বা মাইক্রো অরগানিজমের কথা বলেন।
কানুনে ইবনে সীনা বর্ণনা করেন, “কোন হোস্ট প্রাণির (মানুষ) দেহ থেকে নির্গত রস বহিরাগত জীবানু দ্বারা দুষিত থাকে যেটা ঐ রোগে আক্রান্ত হবার আগে খালি চোখে দেখা যায় না।” অর্থাৎ জীবানুঘতিত রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের ঘাম, রক্ত, পুঁজ, হাঁচি, কাশির মাধ্যমে এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তিতে রোগ ছড়াতে পারে।
“Body secretions of a host organism (e.g., human being) are contaminated by tainted foreign organisms that are not visible by naked eye before the infection.” – Richard Colgan’s book ‘Advice to the Young Physician’।
“Infections are caused by the contamination of body secretions of host organisms by foreign tainted microorganisms.”
বিখ্যাত অনুজীব বিজ্ঞানী রবার্ট কক তাঁর বই ‘A Life in Medicine and Bacteriology’ তে লিখেন, “ সতেরশ শতকে, ইবনে সীনার প্রায় সাত শতক পরে ওলন্দাজ বিজ্ঞানী লিউয়েন হুক অনুবীক্ষণ যন্ত্রের নীচে অনুজীবের সন্ধান পান। তার এ আবিষ্কারের মাধ্যমে তিনি দুনিয়াকে জানান, কিছু প্রাণি আছে যারা এত ছোট যে তাদের খালি চোখে দেখা যায় না। লিউয়েন হুক যেটা জানতেন না সেটা হলো এসব অনুজীব ছোঁয়াছে রোগের কারণ হতে পারে। ইবনে সীনার কাছে কোন প্রযুক্তি না থাকলেও তিনি যেটা ভবিষ্যদবাণী করে গেছেন সেটা লিউয়েন হুক অনুজীবদের দেখেও বলতে পারেননি। লিউয়েন হুকের অণুজীব আবিষ্কারের দুইশত বছর পরে, ১৮৭৬ সালে রবার্ট কক নামের এক জার্মান চিকিৎসক প্রস্তাব করেন যে অণুজীব বা মাইক্রো অরগানিজম রোগ ছড়ানো এবং রোগের কারণ। তার মৌলিক পর্যবেক্ষণ ছিল, একটা রোগাক্রান্ত প্রাণির রক্ত যাতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া আছে সেটা সুস্থ কোন প্রাণিকে দেয়া হলে রক্তগ্রহীতা সুস্থ প্রাণিটিও রোগাক্রান্ত হয়।”
ইরানে এখনো ইবনে সীনাকে তাদের জাতীয় প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। অনেকে মনে করেন এ যাবত জীবিত ইরানীদের মধ্যে ইবনে সীনা হচ্ছেন সবার সেরা। তাঁর নামে ইরানে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়, যাদুঘর ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আছে। আজকে যদিও ইবনে সীনার নাম তেমন পরিচিত নয়, অথচ তাঁর চিন্তা ও তত্ত্ব দুনিয়াকে স্থায়ীভাবে পরিবর্তিত করেছে এখনও করে যাচ্ছে। বর্তমানে সারাবিশ্বে সবাই কোয়ারেন্টাইন নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছে। কোয়ারেন্টিন এখন আমদের জীবন বাস্তবতা, তাই আবারও ইবনে সীনার নাম আলোচনায় উঠে এসেছে।
করাচি বন্দরে এককালে গ্রিক-পারসিক-আরবীয় সওদাগরেরা নোঙ্গর করেছে; অনেক স্থাপত্য চিহ্ন আজো রয়ে গেছে; যা…..
তিনি বললেন, ভাষা হল ওষ্ঠের উপর সুধার মতো। আর বললেন, কবিতা যথেষ্ট স্বাদু, কিন্তু…..
রূপকথা পড়েছেন ছোট বেলায় অনেকে একথা আর বলা সন্দেহমুলক, প্রযুক্তির ব্যবহার জন্মের পর থেকে এখন …..
একটি পরাধীন দেশ আর তার বাসিন্দাদের মনে স্বাধীনতার আকুতি আমরা দেখেছিলাম ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতে। এর…..