ক্যানভাসি আলো আঁধারে

শ্বেতা সরকার
ছোটগল্প
Bengali
ক্যানভাসি আলো আঁধারে

 

দুপুরে ভালোমন্দ খেয়ে ক্লান্তিতে ইন্দ্রর চোখ জুড়ে এসেছিলো। অন্যান্য বারের মতো এবারেও খাদ্য ও পানীয়ের ব্যবস্থা পর্যাপ্ত। এই নিয়ে ছয় বার তাকে এরকম গ্রুপের সাথে পাঠানো হলো। দু’তিন দিন তাকে এই ভাবেই থাকতে হবে। পালানোর কোন পথ নেই। অসহায় অব্যক্ত কান্নাটা গলার কাছে উঠে এলো। চূড়ান্ত অবসাদ গ্রাস করে তাকে।

” কি রে ,পেট ভরেছে?”

ঠোঁটের কোণে ঝোলানো বাঁকা হাসিটা নিয়ে ঘরে ঢুকলেন শোভা ম্যাম। সাথে আরও একজন। সম্ভবতঃ এর নাম কল্পনা। ঘুম ভেঙে গিয়ে চমকে উঠেছিল ইন্দ্র। শিরশিরে আতঙ্কটা শরীর জুড়ে পাক খেলো।

” কেমন জিনিস এনেছি বলো?”

কল্পনার দিকে তাকিয়ে চোখ নাচালেন শোভা। এবারের ব্যাচটা এগারো জনের। এদের কথা শুনে কারো কারো নাম ইন্দ্র বুঝতে পারে। কল্পনার দৃষ্টি ইন্দ্রর উন্মুক্ত শরীরের মাপ নিচ্ছিলো। শোভার কথা শুনে কল্পনা এগিয়ে এলেন। ইন্দ্রর শরীরে তার হাত খেলে বেড়াতে শুরু করলো। বিগত পাঁচ বারের ঘটনার কথা মনে করে ইন্দ্র শক্ত হয়ে শুয়ে ছিলো। কল্পনা তার আঠারো বছরের শরীরটা নিয়ে খেলতে খেলতে বললেন,

” বেশ ভালোই।”

খেলার চরম সীমায় ইন্দ্র যখন সমাপ্তির আকাঙ্ক্ষায় ছটফটানি শুরু করলো তখন দুজনেই দুরে দাঁড়িয়ে মজা দেখতে লাগলেন। সেই মজার টানে আরো তিন চার জন জড়ো হলো। আঠারো বছরের অসহায় অতৃপ্ত শরীরের ছটফটানি দেখার বিকৃত আমুদে খিলখিল হাসিতে ঘরটা ভরে উঠলো।

” কি রে ইন্দ্র, এখানে দাঁড়িয়ে পড়েছিস কেন? শরীর খারাপ লাগছে নাকি ?”

বন্ধু শিবুর ঝাঁকুনিতে সম্বিত ফিরে পেলেন ইন্দ্র ওরফে ইন্দ্রাশিষ পাল। বহুদিনের পুরনো বন্ধু এবং অফিস কলিগ শিবু ওরফে শিবরাজ গুহর সাথে আজ সকালেই প্রথম টাকিতে শিবুর মামাবাড়িতে এসেছেন ইন্দ্র। দুপুরে জম্পেশ পেট পুজোর পর বিকেলে একটু হাঁটাহাঁটি না করলেই নয়। সেই উদ্দেশ্যেই চা পানের পর সান্ধ্য ভ্রমনে বেরোনো। ইন্দ্র এখানে কিছুই চেনেন না, শুধুমাত্র শিবুকে অনুসরণ করে যাচ্ছেন। সেই ভাবেই একটা রাস্তার শেষে ডানদিকে বাঁক নিতে গিয়ে বাঁ দিকে বড়ো গেট ওয়ালা অন্ধকার বাড়িটায় নজর পড়লো। ইন্দ্র যেন কিছুক্ষণের জন্য পাথর হয়ে গিয়েছিলেন। ছত্রিশ বছর আগে অন্ধকার জীবনের ভয়াবহ স্মৃতি হুড়মুড়িয়ে সামনে এসে পড়লো। এই বাড়িতে তাঁকে গাড়ি করে নিয়ে আসা হয়েছিল আর তারপর তিনদিন… উফ্ অন্ধকার দেখলেন চোখে।
শিবু বাঁক ঘুরে খানিক দূরে এগিয়ে গিয়ে দেখলেন ইন্দ্র নেই! কিছুটা অবাক হয়ে উল্টো দিকে ফিরে এসে ইন্দ্রর ভয়ার্ত পাংশুটে মুখ আর স্থির চাউনি দেখে ঘাবড়ে গিয়ে দুই কাঁধ ধরে ঝাঁকুনি দিলেন। ঝাঁকুনি খেয়ে ইন্দ্র নিজেকে মুহূর্তে সামলে নিলেন। যে অন্ধকার অতীতের কথা কেউ জানে না, এমনকি ছয় বছর চুটিয়ে প্রেম করে বিয়ে করা স্ত্রীকেও জানাননি, সেই অতীত কোনভাবে প্রকাশ্যে এনে ফেলা বোকামো হবে। নিজেকে সামলে নিয়ে পকেট থেকে রুমাল বের করে কপাল গলা মুছতে মুছতে বললেন,

“কিছু না, হঠাৎ খুব ঘাম দিয়ে চোখ অন্ধকার করে এলোরে, বোধহয় খুব অ্যাসিড হয়েছে, দুপুরে একসাথে মাটন আর দই মিষ্টি খাওয়া উচিত হয়নি বুঝলি।”

“তুই একদম চুপ করে দাঁড়া, অসুবিধা হলে বসে পড়, আমি ভাইপোকে বলছি আসতে।” বলে ওঠলেন শিবু।

ইন্দ্র বুঝলেন এখন চুপ করে সব মেনে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। মিনিট পাঁচেকের মধ্যে শিবুর ভাইপো দুজনকে তুলে নিয়ে পাড়ার এক ডাক্তারের চেম্বারে এসে পৌঁছালো। সেখানে ইন্দ্রর প্রেসার ভালো করে চেক করিয়ে শিবু নিশ্চিন্ত হলেন। তারপর হজমের ওষুধ কিনে মামাবাড়ি ফিরে ইন্দ্রর জন্য সিদ্ধ ভাত করার অর্ডার দিলেন। মামাবাড়ির সদস্যদের সাথে সামান্য আড্ডা মেরে তাড়াতাড়ি সিদ্ধ ভাত খেয়ে ইন্দ্র শুয়ে পড়লেন। আচমকা অতীত সামনে এসে তাঁকে সাংঘাতিক নাড়িয়ে দিয়ে গেছে। খুব ক্লান্ত বোধ করছেন তখন থেকে, শুয়ে পড়তেই চোখ বুজে এলো।

” দাদা দাদা ওঠ, মায়ের শরীরটা কেমন অস্থির অস্থির করছে।”

মাঝরাতে ঘুম থেকে জেগে ওঠে সতেরো বছরের ইন্দ্র। ভাইয়ের ডাকে ছুটে যায় মায়ের ঘরে। সময়টা উনিশশো আশি। মাস খানেক ধরে টিবি আক্রান্ত প্রায় শয্যাশায়ী মায়ের মাথায় হাত বোলাচ্ছেন বাবা। শরীর অস্থির অস্থির করছে বলতে বলতে বমিটা হলো। মায়ের চিকিৎসার যাবতীয় বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। সুস্থ হওয়ার লক্ষণও দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু আগে যা হয়নি, সেই প্রথম রক্তবমি হলো। মায়ের মুখ মুছিয়ে সব পরিষ্কার করে সবাই শুতে গেলো। বাকি রাত চিন্তায় ঘুম এলোনা তার। বাবার অসহায় মুখটা বারবার মনে পড়লো। পরেরদিন মায়ের ভাঁড় ভেঙে সেই টাকায় ঘরে ডাক্তার আনলেন ইন্দ্রর সামান্য এল আই সি এজেন্ট বাবা। ইন্দ্র জানে দাদুর যতদিন চাকরি ছিলো ততদিন তাদের সংসারের বেশিরভাগ খরচ এমনকি দিদির বিয়ে পর্যন্ত দাদুই দিয়েছেন। কিন্তু রিটায়ার্ড হওয়ার পর শুধু তার আর তার ভাইয়ের পড়াশোনার খরচটাই দিতে পারেন। যদিও মায়ের অসুখে মামারা সাধ্যমত সাহায্য করেছেন। তবুও ডাক্তার ওষুধ ও পথ্যের তুলনায় তা সামান্যই। আজ মায়ের ভাঁড়টাও ভাঙ্গা হয়ে গেল। ডাক্তার দেখে যাওয়ার পর এইসব ভাবতে ভাবতে আনমনে রাস্তায় হাঁটছিলো ইন্দ্র। কিভাবে কিছু একটা কাজ জোগাড় করা যাবে, কিছু রোজগার করা যাবে, সেটাই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিলো। কখন যে হাঁটতে হাঁটতে আর্ট কলেজের দিদিদের মেস বাড়িটার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে তা বুঝতে পারেনি সে।

” ওই ভাই, এক কেজি মুড়ি এনে দেনা।”

শুক্লাদির ডাকে চমকে তাকালো দুতলার দিকে। গতকাল ঠিক এই সময় “আমি কিছুতেই পারবোনা, আমি পারবো না গো” বলে কাঁপতে কাঁপতে দৌড়ে পালিয়ে এসেছিলো ইন্দ্র। আসার আগে মেসের চন্দ্রানী ম্যাম তাকে ত্রিশ টাকা দিয়ে বলেছিলেন,

” দ্যাখ বাবু! তোর বাড়ির এই অবস্থা বলেই তোকে বললাম, এই ছোট বয়সে কোথায় কাজ করবি বল। তাছাড়া তোর পড়াটাও তো করতে হবে, কত ভালো স্টুডেন্ট তুই, এখানে কাজ করলে প্রতিদিন ত্রিশ টাকা পাবি, ভেবে দেখিস।”

ইন্দ্রর মাথা তখন কাজ করেনি। যাবতীয় শালীনতা বোধে কুঁকড়ে কোনরকমে দৌড়ে পালিয়ে এসেছিলো। বাড়ি এসে টাকাটা বাবার হাতে দিয়ে বলেছিলো,

“মেসের দিদিদের ঘর পরিষ্কার করার জন্য জিনিসপত্র টানাটানি করে দিয়েছি, তাই দিদিরা দিয়েছে।”

বাবার মুখে উজ্জ্বল আভা দেখেছিলো ইন্দ্র। মুড়ি নিয়ে আসতে আসতে প্রতিদিন ত্রিশ টাকার কথা ভাবতে লাগলো। বর্তমান বাজারে টাকাটা অনেক। অন্তত মায়ের চিকিৎসার খরচ হয়ে যাবে। দিদিদের রুমে এসে মুড়ি দিয়ে চোখ বন্ধ করে হাঁফাতে হাঁফাতে সমস্ত জড়তা সরিয়ে রেখে ইন্দ্র বললো,

” আমি কাজটা করবো, মায়ের শরীর আরও খারাপ হয়েছে কাল।”

বলতে বলতে কেঁদে ফেললো ইন্দ্র।
চন্দ্রানী ম্যাম এগিয়ে এলেন।

“বোস বোস, তুই আগে বোস। ওকে জল দে তো। দ্যাখ বাবু, মায়ের কথাটাতো ভাবতে হবে তাইনা। দেখবি দুদিনেই অভ্যাস হয়ে যাবে। তাছাড়া প্রথমেই তো তোকে আমি সবার সামনে যেতে বলছিনা, আগে কদিন আমার সামনে সিটিং দে, তারপর সবার সামনে যাবি, মা কে সুস্থ করতে হবে তো, নাকি?”

পেটের দায় যে বড়ো দায় তা সতেরো বছরেই বুঝে গেছে ইন্দ্র। এরপর যে না খেয়ে দিন কাটবে তার ওপর মায়ের চিকিৎসা। দাঁতে দাঁত চেপে মান সম্মান বোধের গলা টিপে আর্ট কলেজের দিদিদের ন্যুড মডেলের কাজ শুরু করলো।
মানুষ অভ্যাসের দাস, সেও অভ্যস্থ হয়ে গেলো এই কাজে। প্রতি সিটিং স্টুডেন্টের সংখ্যা অনুযায়ী ত্রিশ থেকে পঞ্চাশ টাকা। সপ্তাহে তিন দিন। সময় বয়ে যায়। বছর খানেক পরে মা ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু ইন্দ্র কাজটা ছাড়েনা। অভাবের সংসারে অতগুলো টাকা বাবার হাতে তুলে দিতে পেরে সে স্বস্তি বোধ করে।

” কি রে ঘুম হলো? শরীর ঠিক আছে তো?”

শিবুর ডাকে বর্তমানে ফিরে এলেন ইন্দ্র। সাংঘাতিক ক্লান্ত হয়ে গতরাতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। ভোর রাতে ঘুম ভাঙ্গার পর চোখ বন্ধ করে অতীতে ডুব দিয়েছিলেন।

“হ্যাঁ রে,‌ ঠিক আছি, একদম ফিট।”

“যাক ,ভালো, কাল খুব চিন্তায় পড়েছিলাম,‌‌ কিছু একটা হলে বৌদির কাছে কোন মুখে দাঁড়াতাম বলতো।”

“সেই, তুই তো শালা আমার বৌয়ের সামনে খালি দাঁড়ানোর কথাই ভাবিস।”

দুই বন্ধুর অট্টহাসিতে ঘর ভরে উঠলো। জলখাবার খেতে খেতে ইন্দ্র মনে মনে নিজেকে শক্ত করে প্ল্যান ছকে নিলেন। তারপর বললেন,

” হ্যাঁ রে, কাল সন্ধ্যায় তো ঘুরতেই পারলাম না, চ’ আজ ভালো করে ঘুরে দেখি, নদীর দিকেও তো যাবো?”

“কাল তো তুই কেলিয়েই মরলি, চ’ বেরোই।”

দুজনে হাঁটা শুরু করলেন। শীতের রোদ বড়ো আরামের। একটু এগোতেই ইন্দ্র বললেন,

“হ্যাঁ রে, ওই যে বড়ো গেট ওয়ালা বাড়িটায় কেউ থাকেনা নাকি?”

“কোন বাড়িটা?”

“আরে, যে বাড়িটার সামনে গিয়ে অসুস্থ হলাম, আসলে বেশ পুরনো প্যাটার্নের দেখে দাঁড়িয়ে পড়েছিলাম।”

“ওহ্, ওটা, না রে, প্রায় বছর দশেক ওইভাবেই পড়ে আছে, তারও আগে দুচারটে কাজের লোক ছিলো, এখন কাউকেই দেখিনা।”

“গেটের ভিতরে ঢোকা যায়?”

“যায় তো, গেটটা তো অর্ধেক ভেঙেই গেছে, ছেলে ছোকরারা সব সময় আড্ডা মারে, এই শীতে পাড়ার লোকেরা বাগানটা পরিষ্কার করে পিকনিক করে, ক্রিকেট খেলে, পিছনের দিকের পাঁচিলটাও ভাঙা, ওখান দিয়ে নদীর দিকে যাওয়া যায়, তুই যাবি?”

“যেতে খুব ইচ্ছে করছে।”

“তাহলে চ’,ওই দিকেই চ’।”

গেটের সামনে এসে ইন্দ্র মনে মনে নিজের পিঠে চাপড় দিয়ে বললেন, “কোন ভয় নেই, এখানে এখন কেউ থাকেনা।” নিজেকে চাঙ্গা করে টুক করে গেটের ভাঙা ফাঁক গলে ভিতরে ঢুকে পড়লেন। তাঁকে যখন গাড়ি করে নিয়ে আসা হয়েছিল তখন গাড়ি থেকে নামার সময় এই সামনের লনটুকু ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাননি। সোজা ঘরে ঢুকে তিন দিন বন্ধ থাকতে হয়েছিল। বেরোনোর সময় আবার এই লন থেকেই গাড়ি চড়ে বাড়ি। ইন্দ্র ধীরে ধীরে বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন। সত্যিই বাগানটা অনেক বড়ো। দুটো দল দুদিকে পিকনিকের আসর বসিয়েছে।

“আরে শিবু না? কবে এলি?” কেউ একজন ডেকে ওঠেন শিবু কে।

“এই তো, গতকাল এসেছি।”

চেঁচিয়ে বললেন শিবু। তারপর ইন্দ্রকে জানালেন,

“আমাদের পাড়ার ক্লাবের ব্যাচ রে।”

কথাটা শুনে ইন্দ্র চকিতে বললেন,

“তুই যা না, একটু কথা বলে আয়, আমি চারপাশটা একটু ঘুরে দেখি।”

“আচ্ছা ঠিক আছে, নদীর দিকে যখন যাবি আমাকে ডেকে নিবি।”

শিবু চলে যেতে ইন্দ্র একদম দরজার সামনে এসে দাঁড়ালেন। দরজা আর তালার যা অবস্থা যেকোন দিন ভেঙে পড়বে। বাড়িটার ডানদিক দিয়ে ঘুরতে ঘুরতে পিছনের কোনায় বড়ো বড়ো কাঁচের জানালা দেওয়া ঘরটার সামনে এসে দাঁড়ালেন। এই ঘরেই তাঁকে রাখা হয়েছিল। জানালার কাঁচ খানিকটা ভাঙলেও ভিতরে অন্ধকার ছাড়া কিছুই দেখা যাচ্ছে না। নিজেকে সামলানোর জন্য ইন্দ্র ঢোঁক গিলে চোখ বন্ধ করলেন।

” শোন, পুজোর ছুটি তো শুরু হয়ে গেলো। কাল সব দিদিরা বাড়ি চলে যাবে বুঝলি, সেই কালীপুজোর পরে আসবে। তুই বরং মাঝে কদিন আমার ঘরে চলে যাস, বসে থেকে কি আর করবি?”

চন্দ্রানী ম্যামের কথা শুনে ইন্দ্র ঘাড় নেড়ে সেদিনের টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরে আসে। প্রায় বছর দেড়েক হতে চললো এই কাজ করছে। ইতিমধ্যে ম্যাম তাদের বাড়িতেও এসেছেন। দুঃসময়ে মেসের দিদিদের দরকারি জিনিসপত্র আনা নেওয়ার কাজে ইন্দ্রকে বহাল করার জন্য বাবা মা দুজনেই ম্যামকে খুব ভালোবাসেন এবং কৃতজ্ঞ ও।

” দিদিরা তো নেই, ম্যাডামের বাড়িতে কিছু কাজ আছে, কাল যাবো।”

দুপুরে মা কে বললো ইন্দ্র। ম্যামের ঘরে আগে কখনো যায়নি সে। ঠিকানা মতো পৌঁছে দেখলো বারান্দা আর বসার ঘর পেরিয়ে ভিতরের একটা ঘরে আঁকার সরঞ্জাম সাজানো। ঘরটা বেশ বড়ো।একটা টেবিল তিনটে চেয়ার আর একটা সিঙ্গল খাট আছে। ঘরের কোণে একটা টিভি আর ভি সি আর। কারোর বাড়িতে ভি সি আর এই প্রথম দেখলো ইন্দ্র। ম্যামের সাথে আর একজন ম্যাম বসে আছেন।

“শোভা আমার ভালো বন্ধু, ও তোকে আরো কাজ দেবে বুঝলি, তাছাড়া শুনেছিস তো ওই মেসটা উঠে যাচ্ছে, বাড়ির মালিক খালি করতে বলেছে। তুই না হয় এখন থেকে আমাদের কাছেই কাজ করবি।”

ইন্দ্র ঘাড় নাড়লো। কিন্তু শোভা ম্যামকে কেন জানিনা তার ততটা মার্জিত মনে হচ্ছিলো না। বাঁকা হাসি আর ইঙ্গিতপূর্ণ চাউনিটাও যেন কেমন। যাক গে তার কাজ হলেই হলো।জামা কাপড় খোলায় সে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। রেডি হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো। দুটো ক্যানভাস সাজানো থাকলেও আঁকা শুরু করলেন শুধু চন্দ্রানী ম্যাম। শোভা ম্যামের দৃষ্টি যেন তার শরীর দেখছিলো। মেসের দিদিরাও তাকে এভাবে দেখেনি। ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের অস্বস্তিকর অনুভূতি শুরু হলো।

“এ তো দারুন জিনিস!”

চোখ নাচিয়ে বলে ওঠেন শোভা ম্যাম।

“একবার যে দেখবে সে বারবার চাইবে।”

হঠাৎ এই কথা বলে ব্যাগ থেকে চট করে একটা ক্যামেরা বের করে তিন চারটে ক্লিক করলেন শোভা ম্যাম।ঘটনাটা এতই অপ্রত্যাশিত যে ইন্দ্র সরে যাওয়ার সুযোগ পেলো না, যখন সরলো তখন আড়াল খুঁজে পেলনা। ছবি কেন? ভয়ে কেঁপে উঠলো সে। সে কী কাজ করে তা কেউ জানেনা।

” আরে ভয় পাসনা।”

আশ্বস্ত করলেন চন্দ্রানী ম্যাম।

“ও তোকে আরো কাজ দেবে, তাই ছবি তুললো।”

বললেন চন্দ্রানী ম্যাম।

“আজ আর কাজ করতে ইচ্ছে করছে না রে, শোভা এসেছে ওর সাথে একটু গল্প করি,‌ তুই বরং কাল আয়।”

চন্দ্রানী ম্যাম টাকা এগিয়ে দিলেন। দশ টাকা বেশি।

“ফেরার সময় কিছু খেয়ে নিস।”

বাড়িতে ফিরে এসে “‌এ তো দারুন জিনিস” কথাটা বারবার ইন্দ্রর কানে বাজছিলো। এই কাজে এরকম পরিস্থিতিতে সে কখনো পড়েনি।‌ কোন এক অদ্ভুত অস্বস্তিকর অনুভূতিতে রাতে ভালো করে ঘুমোতেও পারলোনা সে। পরেরদিন বাড়ির কিছু কাজ সেরে ম্যামের ঘরে এসে যখন পৌঁছলো তখন প্রায় এগারোটা। রাস্তায় জ্যামে আটকে কেমন যেন খিদে পেয়ে গেছে। মোড়ের দোকানে চা ডিম টোস্ট খেয়ে ম্যামের ঘরে এসে দেখলো ম্যাম সব গুছিয়ে বসে আছেন। ইন্দ্র তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো। মিনিট দশেক পরে ম্যাম বললেন,

“পরে করবো, একটু বোস গল্প করি।”

ইন্দ্র জামা পরতে গেলো।

“আরে ওদিকে যাচ্ছিস কেন?”

হাত ধরে ইন্দ্রকে থামালেন ম্যাম। তারপর গাল টিপে বললেন,

“তোকে কি এই অবস্থায় প্রথম দেখছি, এখানে খাটে বোস দরকারি কথা আছে।”

খানিক জড়োসড়ো হয়ে বসলো ইন্দ্র।

“আসলে মেসটাতো উঠে যাচ্ছে, এই সব কাজ তো স্টুডেন্টদের বেশী দরকার হয়, বড়ো বড়ো শিল্পীদের তো সব বড়ো বড়ো মডেল ধরা আছে, আমি নিজে আর কতটুকু কাজ করি বল।”

“ওই শোভা ম্যাম কাজ দেবেন বললেন যে?”

” দেবে তো।”

হাসলেন ম্যাম।

“আসলে সব কাজই তো কাজ, তোর টাকার দরকার সেটা ঠিক মতো পেলেই তো হলো। এটা করতে যেমন প্রথমে রাজি হোসনি, এখন আর অসুবিধা হয় কি? তেমন অন্য কাজেও দেখবি কোন অসুবিধা হবে না।”

অন্য কি কাজ ম্যাম বলছেন, কিছু বুঝলোনা ইন্দ্র।

“আলাদা কিছু কাজ?‌ কি সেটা?”

প্রশ্ন করে আঠারো বছরের অবুঝ ইন্দ্র।

“পুরুষ মানুষের যা কাজ তাই, বুঝলি।”

ম্যাম এগিয়ে গেলেন টিভির দিকে।

“দাঁড়া ভি সি আর টা চালাই, তুই এক কাজ কর ওখানে যেমন দেখবি তেমন করবি, বুঝলি? তাহলেই হবে।”

ইন্দ্রর মাথায় সত্যিই কিছু ঢুকছিলো না। ভি সি আর এ পাড়ার ক্লাবে দু তিন বার সিনেমা দেখেছে। কিন্তু কি এমন‌ কাজ যা সিনেমা দেখে শিখতে হবে। ভাবতে ভাবতেই ম্যাম ভি সি আর অন করে পাশে এসে বসলেন। সদ্য যৌবনে পা দেওয়া ইন্দ্র স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে চমকে উঠলো। এত উন্মুক্ত অবস্থায় কোন নারী শরীর সে আগে কখনো দেখেনি। একটি ছেলে মেয়েটির পিঠে তেল মালিশ করছে। আচ্ছন্ন ইন্দ্রকে চন্দ্রানী ম্যাম বললেন,

“ওখানে যেমন করছে তেমন কর।”

গাউন খুলে খাটের ওপর শুয়ে পড়লেন ম্যাম। নীল ছবি নীল শরীর নীল চেতনায় বেহুঁশ হলো ইন্দ্র।

ফোনের রিং টোনে বাস্তবে ফিরলেন ইন্দ্র।

“কি রে তুই কোথায়?”

ফোনে বলে ওঠেন শিবু।

“হ্যাঁ রে, আমি এই যে পিছন দিকে আছি, চ’ নদীর দিকে যাবো।”

বাগান পেরিয়ে পিছনের ভাঙা পাঁচিলের ফাঁক গলে দুজনে বাইরে এলেন। কিছুটা এগোতেই ইছামতী নদী। হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেলেন নদীর কাছে। এদিকে ভারত ওদিকে বাংলাদেশ। মাঝে কাঁটাতারের তোয়াক্কা না করেই বয়ে চলেছে ইছামতী। একটু ফাঁকা জায়গা দেখে বসলেন দুজনে। শিবু গুনগুন শুরু করলেন। এরম ফাঁকা জায়গায় বসে গুনগুন করা শিবুর অভ্যাস। আর চুপচাপ শুনে যাওয়া ইন্দ্রর অভ্যাস। এইভাবে বহু সময় তাঁরা কাটিয়েছেন। গুনগুন করতে করতে শিবু গান ধরেছেন,

” বলো কোথায় তোমার দেশ
তোমার নেই কি চলার শেষ
ও নদীরে…”

সেদিনের ঘটনার পরে কাঁচা বয়সের ইন্দ্রকে শরীরের নেশায় পেয়ে বসেছিল। ওই বয়সে একই সাথে শরীর এবং টাকা জুটে গেলে বোধ হারানোটাই স্বাভাবিক। তারপর বেশ কিছু দিন তাকে বিভিন্ন মহিলার কাছে পাঠানো হলো। চন্দ্রানী ম্যাম বাবা মায়ের খুব প্রিয় পাত্রী ছিলেন। তাই তিনি কোথাও কাজ করতে পাঠালে অবিশ্বাস করার কোন প্রশ্নই ছিলো না। মালপত্র টানাটানির নাম করে তাকে বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হতে লাগলো। দুঃস্বপ্নের দিন গুলো শুরু হলো মাস তিনেক পরে।
একদিন ম্যাম বললেন তেরো জনের একটা গ্রুপের সাথে দিন তিনেক যেতে হবে। হাজার টাকা তো দেবেই খুশি হলে এগারোশোও দিতে পারে। এছাড়া উপরি বকশিশ ও মিলবে। এরকম লোভনীয় রোজগার তার সাথে উপরি ছেড়ে দেওয়া বোকামির পর্যায় পড়ে।

“বয়স্ক মহিলাদের দল একসাথে কারোর বাড়ি দুতিন আনন্দ করবে। তাই মালপত্র নিয়ে যাওয়া আর বাজার হাট করার জন্য আমাকে নিয়ে যাবে।”

রাত খেতে বসে সবাই কে জানালো ইন্দ্র।

“তুই কি পারবি অত কিছু করতে, হিসাবপত্র ঠিক করে করিস, নইলে বদনাম হবে বাবু।”

বাবা যেন একটু চিন্তায় পড়লেন। ইন্দ্র ভরসা দিয়ে বললো,

“তুমি চিন্তা কোরোনা, আমি সব হিসাব খাতায় লিখে রাখবো।”

দলটিতে সবাই চল্লিশ পঞ্চাশ বছরের। গাড়ি করে তাকে ঠিক কোথায় নিয়ে যাওয়া হলো সে ঠিক বুঝলোনা। ইন্দ্রর বেশ ভালোই লাগছিলো। এই কাজে খুশি করে উপরি পাওয়ার অর্থ সে এখন বেশ ভালোই বোঝে। নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে বাড়িতে ঢোকার পর ইন্দ্রর ঘোর কাটতে শুরু করলো। বাড়িতে ঢোকার পর থেকে বেরোনোর আগে পর্যন্ত তাকে সম্পূর্ণ উলঙ্গ রাখা হলো। কেউ তার সাথে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হলোনা। মাঝে মাঝেই কেউ না কেউ এসে তাকে নেড়েচেড়ে মজা দেখছিলো। দুধের সাথে কড়া ডোজের ওষুধ মিশিয়ে তার অসহ্য ছটফটানি সবাই মিলে উপভোগ করছিল। তিন দিন পর শরীর ও মনে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত ইন্দ্র বাড়ি ফিরলো। কোন ফাঁদে সে পড়েছে, তা বুঝতে পেরে ভয়ে কাঁটা হয়ে রইলো। শোভা ম্যাম কেন তার ছবি তুলেছিলো তা বেশ বুঝতে পারলো সে। প্রতিবাদ করলে যে ওই ছবি গুলো বাড়িতে…দু তিন দিন ঝিম মেরে পড়ে রইলো ইন্দ্র। বাবা মা ভাবলেন খুব খাটাখাটনি গেছে একটু রেস্ট নিক। ঘটনাটা ঘটতেই থাকলো। প্রায় আড়াই বছর ধরে প্রতি মাসেই। কখনো কখনো মাসে দুবার। মুক্তির পথ জানা ছিলো না ইন্দ্রর। কখনো কখনো অন্য কাজের বাহানা দিয়ে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্থির চোখে ঠাণ্ডা গলায় উত্তর আসতো,

“অন্য কাজের কি দরকার, টাকা বেশি লাগলে বল, আর জানিস তো, ছবি গুলো আছে।”

কখনো কখনো আত্মহত্যা করবে ভেবেছে। কিন্তু বাবা মা এর অসহায় অবস্থার কথা ভেবে পারেনি। তার রোজগারের টাকায় বাবা মায়ের মুখে উজ্জ্বল আলো। এই আলোতেই নিজেকে সান্ত্বনার প্রলেপ দিতো ইন্দ্র। শেষে ওই গ্রুপ গুলোতে অন্য ভাড়া করা মেয়েদের সাথে লাইভ সেক্স শুরু হলো। কড়া ওষুধের ঘোরে যন্ত্রের মত কাজ করা ছাড়া কোন তৃপ্তি পেতোনা ইন্দ্র।শেষ যে কোথায় তা জানা ছিলো না তার।
শিবুর গান কানে এলো। শিবু চোখ বন্ধ করে গাইছেন,

“আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে…”

হ্যাঁ, অবশেষে অলীক স্বপ্নের মতো মুক্তি এসেছিলো। একদিন চন্দ্রানী ম্যামের নির্দেশ মতো আট দশ জনের একটা দলের সাথে অমনই তিনদিনের প্রোগ্রামের জন্য ম্যামের সাথে দেখা করতে আসছিল ইন্দ্র। বাড়ির কাছাকাছি এসে দেখে একটা অ্যাম্বুলেন্স, আর ম্যামের বাড়ির সামনে বেশ কয়েকজন লোক জটলা করছে। উপরের ভদ্রমহিলার নাকি স্ট্রোক হয়েছে, ডাক্তার এসেছিলেন। অবস্থা ভালো নয়, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। ইন্দ্রর কি মনে হলো একটু আড়ালে সরে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো।একটু পরেই দেখলো,স্ট্রেচারে করে চন্দ্রানী ম্যাম কে অ্যাম্বুলেন্সে ঢোকানো হলো এবং শোভা ম্যাম উদ্বিগ্ন মুখে অ্যাম্বুলেন্সের ভিতরে বসলেন। চারপাশের লোকেদের কথা শুনে ইন্দ্র বুঝলো চন্দ্রানী ম্যামের কোন জ্ঞান নেই।অ্যাম্বুলেন্স চলে যাওয়ার পরে ইন্দ্র চুপচাপ ঘরে ফিরে এলো।মা কে বললো,

“আজকের প্রোগ্রামটা বাতিল হয়েছে মা, আমাকে যেতে হবে না।”

মনে মনে ইন্দ্র খুশিতে ছটফট করছিলো। এভাবে কারোর বিপদে কি খুশি হওয়া উচিত? উচিত অনুচিত যাই হোক ইন্দ্র চাইছিলো ম্যাম যে‌নো অনেক দিন অসুস্থ থাকে। সত্যিই প্রায় দুই আড়াই মাস ম্যামের কাছ থেকে কোন খবর এলো না।বাবা মা বারবার ইন্দ্র কে বললেন,

” মেয়েটার কি হলো একটু খবর নিবি তো, বিপদে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলো।”

ইন্দ্র একবার মিথ্যা বললো,

“আমি গিয়েছিলাম,ম্যামের শরীর খুব খারাপ, এখানে নেই।চিকিৎসার জন্য অন্য কোথাও গেছেন।”

এরপর মাস ছয়েক কেটে গিয়েছে।এক কনকনে শীতের সকালে মাথা নাক মুখ ভালো করে মাফলার দিয়ে ঢেকে নিলো ইন্দ্র। তারপর চোখে একটা সস্তার সানগ্লাস লাগিয়ে চন্দ্রানী ম্যামের বাড়ির কাছে পৌঁছলো। ম্যামের খবর জানার কৌতুহল তারও হয়েছে।একটু ভেবে নিয়ে ম্যামের বাড়ির কাছের মুদি দোকানটায় ঢুকে একটা বিস্কুটের প্যাকেট কিনলো,তারপর দোকানদার কে পয়সা দিতে গিয়ে বললো,

” আচ্ছা কাকু, ওই বাড়ির ভদ্রমহিলা কেমন আছেন? ওই যে সেবার আপনার দোকানে যখন এলাম তখন ওনাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলো।”

দোকানদার খুচরো পয়সা ফেরত দিতে দিতে বললেন,

” শুনেছি একদম শয্যাশায়ী, কোন বোধ নেই।”

ইন্দ্র যেন এই খবরটা শোনার অপেক্ষায় ছিলো। কথা না বাড়িয়ে পয়সা ফেরত নিয়ে সরে পড়লো।আর কোন দিন ওই জায়গায় পা দেয়নি।তখন তো আর এখনের মতো ডিজিটাল যুগ নয়। পার্টি আর ইন্দ্রর মাঝখানে একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম ছিলো চন্দ্রানী ম্যাম। তিনি অথর্ব হয়ে পড়ায় ইন্দ্রর কোন সন্ধান কেউ পায়নি। তবে চন্দ্রানী ম্যামের ওই অবস্থা না হলে অথবা বর্তমানের ডিজিটাল দুনিয়া হলে তাঁর অবস্থা যে কি হতো,তা ভাবলেই শিউরে ওঠেন।জীবন থেমে থাকেনি। বহু ঝড় ঝাপটা পেরিয়ে ইন্দ্র সাবলম্বী হয়েছেন। বর্তমানে তিনি আর তাঁর ভাই দুজনের স্বচ্ছল সুখের সংসার। বাবা বহু বছর আগে মারা গেলেও মা তাঁদের সাথে থেকে বছর তিনেক আগে মারা গেছেন। দুঃস্বপ্নের দিন গুলো স্মৃতিচাপা পড়ে গিয়েছিলো অনেক আগেই। হঠাৎ কবর ফুঁড়ে বেরিয়ে আসা স্মৃতি গুলোকে আজ ভাসিয়ে দিলেন ইছামতীর জলে।নদীও যে বয়ে চলে নিজের ছন্দে ভালো মন্দে বেঁচে থাকার আনন্দে।

শ্বেতা সরকার। জন্ম ১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারি। স্থান, বাবার কর্মস্থল টিকিয়াপাড়া রেল কোয়াটার, হাওড়া,বাংলা, ভারত। পাড়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে হাওড়া নরসিংহ কলেজ থেকে বায়ো-সায়েন্সে স্নাতক। ছোট বেলা থেকেই নাচ,গান, আবৃত্তি, ছবি আঁকা, ফটোগ্রাফিতে ছিল শখ। বিবাহসূত্রে খড়্গপুরের বাসিন্দা। আঞ্চলিক...

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ