ক্ষণিকের রামধনু

সৌম্যকান্তি চক্রবর্তী
কবিতা
Bengali
ক্ষণিকের রামধনু

আমার সোনার বাংলা

শহীদের রক্তে ভেজা ঢাকার রাজপথ ..
মাতৃভাষার দাবিতে প্রাণের আহুতি ,
ছলছল করে ওঠে বাংলা মায়ের চোখ ,
গর্বে ভরে ওঠে আপামর বাঙালীর বুক ,
পদ্মা মেঘনা আর ভাগীরথীর মানুষ ,
একসুরে গেয়ে ওঠে বাংলার মাটি বাংলার জল ..
একুশে ফেব্রুয়ারী অমর হয়ে হৃদিকাননে ঠাঁই পায় ,
দুই বাংলায় লাল গোলাপের পাপড়িতে ভাষা দিবস
উদযাপন হয় , রফিক সালাম বরকত জব্বার আকাশের ওপার থেকে অবিরত দেখতে থাকেন
তাঁদের সোনার বাংলাকে আর গাইতে থাকেন
” আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি
চিরদিন তোমার আকাশ তোমার বাতাস আমার প্রাণে , ও মা আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি …”

মানুষ একই

কালী সবার দুর্গা সবার
আল্লাহ বা যীশুখ্রীষ্ট ..
মানুষ জাত তো একটাই
তবু সবার পৃথক ইষ্ট …
ভিন্ননামে পুকুরপাড়ে
একটাই সে তরল …
কেউ তারে বলে পানি
আবার কেউ বলে সেটা জল !
অবাক আজব নিয়মকানুন ..
হরেকরকম দেশে ..
নজরুল ও পূজেছিল
মা কালীকে ভালোবেসে ..
রামকৃষ্ণও নিয়েছিলেন
আল্লাতালার নাম …
শিখিয়ে গেছেন তাঁরা
অভিন্ন ভগবান …
গড , আল্লাহ্, ঈশ্বর
সেই একই পুন্য আলো
যেইটা সবারে শেখায় ,
সবারে বাসতে শেখো ভালো !
মহালয়া আর আজান ,
সেই একই পুন্য নাম …
ভিন্ন রীতিতে উপরওয়ালার
ভজন আর গুনগান …
আমরা মানুষ প্রথমে
তার পরে তো আসে ধর্ম …
তোমার আমার রক্ত একই..
পরিচয় হল তব কর্ম !

আস্থা ও সংস্কৃতি

এই মাঠ ঘাট জঙ্গল কতটা পুরনো
যতটা পুরনো জনতার কোলাহল
আজও ঘুরে বেড়ায় শাপিত অশ্বত্থামা..
বেরিয়ে পড়ে দ্বাপরের হলাহল..

এই সভ্যতা অনেক পুরনো
যতটা পুরনো মহেঞ্জোদারো
তার থেকেও বোধহয় আরো যেহেতু
শতসহস্র বর্ষ জেগে আছে রামসেতু ..

পৌরাণিক সব চরিত্র কাল্পনিক বলা ভুল
আস্থা কিংবা বিশ্বাসে কিছু প্রামাণ্য লুকিয়ে থাকে।
ধর্ম নয় সংস্কৃতির সাথে দেশ জড়িয়ে থাকে..
ধর্ম মানুষকে ধারণ করে থাকে কিন্তু
মানুষ সংস্কৃতিকে বহন করে চলুক…

 

ক্ষণিকের রামধনু

আমাদের মাঝে খেলা করে বেড়ায়
ছোটো ছোটো ঈর্ষার মেঘ
আমি আকাশ হতে পারি না কেন
কেন আলোকময় করে তুলি না
জ্ঞানের সূর্যকে স্বাগত জানিয়ে
আমার অন্ধকার বুকে আলো জ্বালিয়ে
রাখি না কেন ‚ কেনই বা রামধনুর স্তাবকতাকে
প্রশ্রয় দিয়ে ক্ষনিকের শুভবন্ধুকে বুকে টানি ‚
ওরে রাত হলে তো ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র তারা আর
কলঙ্কিত চাঁদই তোর হৃদয়াকাশ আলো করে থাকবে।
তখন রামধনু চলে যাবে সম্ভাবনার বিলাসময় জগতে…

সৌম্যকান্তি চক্রবর্তী। কবি। জন্ম পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরে ১৯৭৮ সালের ২৯ শে নভেম্বর। সৌম্যকান্তি পেশায় একজন প্রাথমিক শিক্ষক এবং কবিতা লেখা তাঁর শখ। দীর্ঘ পাঁচবছর যাবৎ তিনি কবিতা চর্চা করছেন। প্রকাশিত বই, 'ভিন্নার্থে সাম্প্রদায়িক' (কাব্যগ্রন্থ)।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..