চেয়ারম্যান সাহেব খুব অনেস্ট
মাকেন্দো গ্রামে ভীষণ বিপর্যয় নেমে আসে। এ গ্রামের কৃষক ও কারিগরেরা শ্রমে-রক্ত-ঘামে যে টাকা-পয়সা…..
কলেজজীবনে কড়েনা নামটা আমি শুনিনি। যদিও বিষ্ণুপুরেই পড়তাম যেখানে এই অদ্ভুত মিষ্টান্নের জন্ম,প্রচলন ও বিবর্তন। ইদানিং কাছাকাছি কিছু গ্রামের বাজারে মিষ্টির দোকানেও এটি পাওয়া যায়। কড়েনা দু’রকম,একটি বেসন জলে গুলে তেলে ভাজার পর গুড়ের অতিঘন রস মাখানো হয়। আর অন্যটি বিউলি ডাল বাঁটা বা তার বেসন জলে গুলে তেলে ভেজে চিনির রসে ডুবানো হয়। ভেজাল হিসাবে চালের গুঁড়ো না মেশালে দুটোর স্বাদই খুব ভালো। কড়েনা খুব ছোটো জিলিপি জাতীয় মিষ্টি। গুড়ের পাকেরগুলোকে কড়েনা ও চিনির রসেরগুলোকে গুপচুপ বলা হয়। অনেকে বলেন, কান-জিলিপি, কারণ এগুলির আকৃতি কানের পাতার মতো।
কড়েনার কথা প্রথম শুনি অলকদা অর্থাৎ অলক বিশ্বাসের কাছে। বিএড পড়ার সময় তিনি আমার সহপাঠী ছিলেন এবং আমার প্রধানশিক্ষক জীবনে তিনি আমার অগ্রজ সহকর্মী ছিলেন। রসিক মানুষ অলকদা আমার ভাষায় নেশা ধরাবার জন্য একটি দুটি করে কড়েনা খাইয়ে ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দেন। তিনি জানতেন খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে আমি লাগামহীন। তাই আমার নেশা ধরে গেলে তিনিও ভাগ পাবেন। সত্যি কথা বলতে কী, ভাজাভুজির প্রতি আমি আজীবন দুর্বল। তেলঘি খেয়ে লিপিড লেভেলকে বিপজ্জনক জায়গায় নিয়ে যেতে সফল হয়েছি। তাই এখন লুকিয়ে খাই, ভয়েভয়েও খাই। এবছর কড়েনা-গুপচুপ ইচ্ছেমতো খাবো বলে স্থির করেছিলাম। বেশ চলছিলো আড়ালে ও লুকিয়ে। বাড়িতেও মাঝেমাঝে আনছিলাম। আমার বন্ধু ও দাদারা এবিষয়ে যথেষ্ট উদার। তাঁরা খান এবং খাওয়ান। কিন্তু ভাইয়েরা বা বাড়ির লোকেরা এব্যাপারে খুব নির্দয়। আমার লিপিড প্রোফাইল তাদের নখদর্পণে। ব্ল্যাকমেলিং করার ভয়ে চোরের মতো সন্তর্পণেও সেঁটে এসেছি কতদিন। বাড়িতে আনার আগে টেস্ট করার পদ্ধতি দীর্ঘায়িত হয়েছে কতদিন। বেশ চলছিলো। এভাবেই চলতো বেশ কিছুদিন। কিন্তু করোনা ওই করোনা – নভেল করোনা বা কোভিড -১৯ যে নামেই ডাকা হোক, ওই হতচ্ছাড়া ভাইরাস আমার কড়েনা- গুপচুপ খাওয়ার বারোটা বাজিয়ে দিলো!
মিষ্টির দোকান বন্ধ, মাল নেই, যা আছে তাও বিক্রি করা যাবে না। অন্ধ আতঙ্ক, প্রশাসনের সতর্কীকরণ, বাড়ির লোকেদের প্রবল ব্যারিকেড। আমি পুরো গৃহবন্দীই হয়ে গেলাম! মনে কড়েনা-বিরহের আগুন আর করোনা-কোভিড-১৯-র প্রতি নিষ্ফল অভিশাপ ফাগুন-চত্তিরের দিনগুলো পুড়িয়ে দিলো।
আজ এই বিষণ্ণবিকেলে কড়েনা-গুপচুপের বিরহে কাতর হয়ে এই তিক্তগদ্য পদগুলি রচনা করছি। করোনাজব্দ হয়ে দেশ ও পৃথিবীর মুক্তিস্নানের পর, না ঠিক পরই নয়, তার কয়েকমাস পরে কচি দূর্বাঘাসের মতো আমার আশা আমার লোভ জেগে উঠবে কড়েনা গ্রাস করার জন্য।
সম্পাদনা: জোবায়েন সন্ধি
মাকেন্দো গ্রামে ভীষণ বিপর্যয় নেমে আসে। এ গ্রামের কৃষক ও কারিগরেরা শ্রমে-রক্ত-ঘামে যে টাকা-পয়সা…..
এক রাজার রাজ্যে কিছু চাল ব্যবসায়ী একজোট হয়ে ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতার কাছে গিয়ে বললো,…..
স্ত্রী তার নির্বাচন বিশেষজ্ঞ। ঐ একবার মঈন মামাকে দুটি ঘোড়ামন্ত্রে বশ করে ওপাড়ার প্রণব সাধু…..
জোছনা করেছে আড়ি আসে না আমার বাড়ি গলি দিয়ে চলে যায়, গলি দিয়ে চলে যায়…..