চেয়ারম্যান সাহেব খুব অনেস্ট
মাকেন্দো গ্রামে ভীষণ বিপর্যয় নেমে আসে। এ গ্রামের কৃষক ও কারিগরেরা শ্রমে-রক্ত-ঘামে যে টাকা-পয়সা…..
রাত নেমেছে; ভাওয়ালপিন্ডির রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে এসেছে। নিয়ন বাতিগুলো আলস্যে হাঁই তুলছে। ঘর মুখো মানুষেরা রাতের শেষ বাস ধরার জন্য অপেক্ষা করছে। এক মধ্যবয়েসি লোক রাস্তা পার হচ্ছিলো। কোত্থেকে যেন এক বিশাল গাড়ি হাজির হয় আজরাইলের মতো। ধাক্কা খেয়ে লোকটা পড়ে যায়; তখনো বেঁচে ছিলো সে; কিন্তু গাড়ির চাকা না থেমে মাথা থেঁতলে দেয়। গাড়ির স্টিয়ারিং-এ বসা তরুণের নেশা ঘন হয়ে এসেছে। একটু আগে সে “চার বোতল ভোদকা; কাম মেরা রোজকা” সেরেছে মিহিন পারাটা আর ব্রেণ মাসালার সঙ্গে।
রাস্তায় পড়ে থাকা লোকটার মাথা থেঁতলে বেরিয়ে যাওয়া মগজ দেখে স্টিয়ারিং-এ বসা তরুণ লোভ সংবরণ করতে পারেনা; ইচ্ছে হয় নেমে গিয়ে চেটেপুটে খাওয়ার। কিন্তু ছোটখাট মানুষেরা তেড়ে আসে। তাই বিপদ না বাড়িয়ে গাড়িটা হাওয়া হয়ে যায় অতর্কিতে। তরুণ খানিকটা নিশ্চিন্ত বোধ করে। কিন্তু রিয়ারভিউ মিররে তাকিয়ে দেখে একটা মোটর বাইক তাকে অনুসরণ করছে। দ্রুত বেগে গাড়িটা ঢুকে পড়ে মেম্বর হোস্টেলের গেট দিয়ে। মেম্বর সাহেব এখানে থাকে না। এখানে তার চাকর-বাকরেরা থাকে।
তরুণ গাড়ি থেকে নামতেই মোটরবাইক আরোহী এসে তাকে চ্যালেঞ্জ করে, আপনি একটা মানুষ হত্যা করে চলে এলেন; এ অন্যায় আল্লা সইবে না।
তরুণ ক্ষেপে যায়, তুমি চেনো আমাকে; আমি কে! আমরা কত হাই লেভেলে চলাফেরা করি। কত কোটি টাকা লাগবে বলো। তুমি চুপ থাকবা।
মোটর বাইক আরোহী তার মোবাইল ফোনে তরুণটির বক্তব্য রেকর্ড করতে থাকে। আজকাল ভিডিও না থাকলে জনগণের ন্যায় বিচারের ইচ্ছা উত্থিত হয় না।
তরুণটি মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে বলে, এই গণতন্ত্রের সেবকেরা কে কে আছিস ওকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দে গেটের বাইরে। এরপর সে মোটর বাইক আরোহীকে ধমক দেয়, আমার ড্যাডি সাহেবে মেম্বর আর মাম্মি প্লাটিনামমান্ডির চেয়ারম্যান;দুজনেই দেশপ্রেমিক। তাই আমার নাম “গণতন্ত্র”। এই গণতন্ত্রকে কোলেপিঠে করে বড় করেছে রাজনীতির খালা-ফুফুরা। আর তুমি এসেছো তাকে ভয় দেখাতে।
মোটরবাইক আরোহীকে মারধোর করে গণতন্ত্রের চাকর-বাকরেরা। তারাও ধমক দেয়, গণতন্ত্র চাইলে তরে কালাপাহাড় মামুগো ডাইকা ক্রসফায়ারে দিতে পারে। যা দৌড় দে।
মোটরবাইক আরোহী খুনীর গাড়িটিকে অনুসরণ করার সময় অন্যদের সাহায্য চেয়ে আর্তনাদ করেছিলো, ঐ গাড়িতে একটা খুনী; আসেন ভাই তারে ধরি।
এ ডাকে সাড়া দিয়ে আরেকটি প্রাইভেট কার মেম্বর হোস্টেলে প্রবেশ করে। তারাও দেখে প্রতিবাদী মোটরবাইক আরোহীকে গণতন্ত্র কীভাবে শায়েস্তা করছে।
শেষ পর্যন্ত খবরটা মিডিয়ায় এসে পড়ে। ফেসবুকে খুনির শাস্তির দাবি ওঠে। গণতন্ত্রের সেবকেরা এসে জাস্টিফাই করে, একটা একসিডেন্ট হইতেই পারে। গণতন্ত্র দুইজন দেশপ্রেমিকের সন্তান। তাদের চেয়ে আপনেরা কী দেশপ্রেম বেশি বোঝেন!
# স্ট্যান্ড ফর গণতন্ত্র ক্যাম্পেইন চালু হয়ে যায় ফেসবুকে। গণতন্ত্রের আব্বার হেলিকপ্টার থেকে নেমে হেঁটে আসার ছবি, গণতন্ত্রের শ্রীকৃষ্ণ আংকেল আর গণতন্ত্রের আব্বার পালঙ্কে আধশোয়া ছবি প্রচার করে গণতন্ত্রের সেবকেরা বোঝাতে চায়, গণতন্ত্র কতো ওপরের লেভেলের ব্যাপার।
গণতন্ত্রের মাম্মি মিডিয়াকে জানান, গাড়ি গণতন্ত্র চালাচ্ছিল না। গাড়ি চালাচ্ছিলো গণতন্ত্রের চালক। সে পলাতক।
পুলিশ মিডিয়ার সামনে গা মোচড়াতে থাকে। এই ব্যাপারটা ভুইলা গ্যালে হয়না এমন একটি আকুতি তাদের চোখে-মুখে। মাতাল গণতন্ত্রের গাড়ির চাকার নীচে নাগরিকের প্রাণহানির সত্যটা গোপন না করা গেলে মাত্র দুই মাসে সিক্স মিলিয়ন ডলারওম্যান হওয়া প্লাটিনামমান্ডির চেয়ারম্যান ম্যাডামের কাছ থেকে “গণতন্ত্রের সুফল” পাওয়ার আর কোন সুযোগ থাকবে না।
গণতন্ত্রের হেফাজত চাচাজান নিমীলিত চক্ষে গণতন্ত্রের আব্বাকে বোঝায়, এইরকম ক্ষেত্রে হালাক হওয়া লোকটির রক্তমূল্য পরিশোধ করিয়া তাহার পরিবারকে কিছু টাকা-পয়সা দিয়া সংকটের সুরাহা বিলকুল জায়েজ।
নিহতের আত্মীয়কে দিয়ে, “অজ্ঞাতনামা খুনী”র বিরুদ্ধে একটি দায়সারা গোছের অভিযোগ পত্র লিখিয়ে নেয় পুলিশ।
অজ্ঞাতনামা খুনীর নাম গণতন্ত্র; এটা লুকাতে ছক্কা-পাঞ্জা খেলে গণতন্ত্রের মামা-চাচা-খালা-ফুফু।
বরং প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াতে থাকে গণতন্ত্রের গাড়ির চাকার নীচে নিহত নাগরিকের হত্যার প্রথম প্রতিবাদকারী সেই মোটরবাইক আরোহী।
গণতন্ত্রের মাতাল হাওয়ায় প্রতিবাদকারীকে ফেরারি হতে হয়।
মাকেন্দো গ্রামে ভীষণ বিপর্যয় নেমে আসে। এ গ্রামের কৃষক ও কারিগরেরা শ্রমে-রক্ত-ঘামে যে টাকা-পয়সা…..
এক রাজার রাজ্যে কিছু চাল ব্যবসায়ী একজোট হয়ে ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতার কাছে গিয়ে বললো,…..
স্ত্রী তার নির্বাচন বিশেষজ্ঞ। ঐ একবার মঈন মামাকে দুটি ঘোড়ামন্ত্রে বশ করে ওপাড়ার প্রণব সাধু…..
জোছনা করেছে আড়ি আসে না আমার বাড়ি গলি দিয়ে চলে যায়, গলি দিয়ে চলে যায়…..