প্রেম এবং অপ্রেমের কাব্য
এ-এক প্রেমের শহর, এ-এক প্রেমের শহর, এখানকার বাতাস প্রেমের সৌরভ বয়ে আনে। হাজারো প্রেমের কলি…..
“দিগন্তের গায়ে লেগেছিল গোলাপি সুখ
নদীর আরক্ত মুখে হাসি লেগেছিল…
গোলাপি উত্তরীয়তে
কী সুন্দর মানিয়েছে তোকে আকাশ…”
“মা”- ডাক শুনে চমকে তাকায় হৈমন্তী। ঝুম এসে দাঁড়িয়েছে। “কী বল?” “তুমি চা খাবে? আমি করে আনছি।”
এই নবদিগন্ত আবাসনের পাঁচতলার ফ্ল্যাটে দুটো ব্যালকনি। হলঘরের সাথে যে ব্যালকনি সেটা পশ্চিম দিকে। বিকেলে এখানে এসে বসে হৈমন্তী রোজ। গোধূলির আকাশে রংয়ের খেলা দেখে। কোনো এক অদৃশ্য শিল্পী এই বিশাল ক্যানভাসটাকে নানা রঙের তুলির টানে ভরে তোলে। আবার মুছে দেয়। তারপর আবার নতুন রঙে ছবি আঁকে। তার ছবির পরতে পরতে কত যে রং।ঝুম চা করে নিয়ে এসেছে। ট্রেটা রাখল সাইড টেবিলে। নিজে বসল মোড়ায়। আকাশের গাঢ় কমলা বেগুনি, গোলাপী রঙের শামিয়ানার দিকে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষণ। তারপর জিজ্ঞেস করল, “মা তুমি কবিতা কেন পড়? কবিতা এত প্রিয় কেন তোমার?” “তুই ও তো স্টোরিবুক পড়িস। কেন?” “ভালো লাগে তাই “। ” আমারো ভালো লাগে তাই “। “আসলে সত্যি বলতে জানিনা কবে থেকে এই ভালো লাগার শুরু। ছোটবেলায় দেখতাম মা কাঠের জ্বালে রান্না করতে করতে আপন মনে আবৃত্তি করতেন ‘দেবতার গ্রাস’ অথবা ‘ অভিসার’ ‘পূজারিনী’। শুনে কত ছবি আঁকতাম মনে মনে। ‘সামান্য ক্ষতি’ শুনে তো কী কষ্ট হতো। রাণীমা দুঃখী প্রজাদের ঘর জ্বালিয়ে দিয়েছিল।এই সব ছবি নিয়ে আমার বেড়ে ওঠা। কবিতার ছবি। জীবনের ছবি কবিতায়।”
“মা কাল তোমার ইন্টারভিউ নিতে আসবে
অংশুমালী পত্রিকা থেকে মনে আছে তো? আমি তো বাড়ি থাকবনা, তুমি রেডি হয়ে নিও আর উমামাসী চা করে দেবে।” “চা আমি নিজেও করে নিতে পারব, তুই এতো চিন্তা করিসনা” “আসলে বাবা চলে যাওয়ার পর তুমি এত আনমনা থাক যে আমার চিন্তা হয়।” হৈমন্তী কিছু না বলে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। ধীরে ধীরে আকাশ নিজেকে সঁপে দিচ্ছে রাত্রির আঁচলে। …”নমস্কার দিদি। আমি সোপান পত্রিকা থেকে এসেছি। আমি সুরজিত।”
“নমস্কার, আসুন। বসুন”
“দিদি, এবারের ‘ বাতিঘর’ পুরস্কার পেয়েছেন আপনি। অনেক অনেক অভিনন্দন আপনাকে”
“ধন্যবাদ।”
“আমার একটা প্রশ্ন ছিল। কবে থেকে লেখা শুরু করেছেন?
“খুব ছোটবেলায়। ছড়া লিখতাম। বাবার উৎসাহে। আসলে বাবা আমাদের খুব বেড়াতে নিয়ে যেতেন এদিক ওদিক। কাছাকাছি কোনো ঝিল, পাহাড়, চা বাগান, নদীতে নৌকা চড়া। বাবা বলতেন প্রকৃতির গায়ে যে কবিতা লেখা হয় রোজ রোজ, সেগুলো পড়তে শেখো, প্রকৃতিকে ভালোবাসতে শেখো। তাই আমি আমার লেখায় প্রকৃতির নিজের রংতুলি দিয়ে আঁকা কবিতাকে অক্ষরে রূপ দিই মাত্র।”
“কেন লেখেন?”
এটার সঠিক উত্তর দিতে পারব কিনা জানিনা। মনের মধ্যে কিছু ভাবনারা স্তরে স্তরে জমে থাকে। মাঝে মাঝে তারা ডানা মেলে দিয়ে প্রজাপতি হতে চায়। তাই কবিতা হয়ে বেরিয়ে আসে। লিখব ভাবলেই লেখা যায়না। কবিতা মনের গহীনে তৈরি হয়। ধীরে ধীরে। তারপর সে রূপ পায়।অবয়ব পায়।… জানিনা বোঝাতে পারলাম কি না। নিন চা খান”
“অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।”
হৈমন্তী কিছুক্ষণ চেয়ে থাকে তরুণ সাংবাদিকদের দেখে। হঠাৎ করে খুব চেনা চেনা লাগছে চেহারাটা। কার সাথে যেন খুব সাদৃশ্য ছেলেটির মুখের, মনে করতে পারছেনা।
“আজ তাহলে চলি।” যেতে যেতে দাঁড়ায় ছেলেটি। “আমার মায়ের নাম অনুরাধা।” …চকিতে হৈমন্তীর কলেজ জীবনের তুমুল হইহল্লার দিন গুলো মনে পড়ে গেল। সাদাকালো অজস্র ছবি উড়তে লাগলো ঘরময়।
এ-এক প্রেমের শহর, এ-এক প্রেমের শহর, এখানকার বাতাস প্রেমের সৌরভ বয়ে আনে। হাজারো প্রেমের কলি…..
পতাকায় মিশে যায় ফেলানির নাম উড়তে থাকে কাঁটাতারে; মানুষের মনে জমে পুঞ্জিভূত ক্ষোভ বিকল্প মেঘের…..
প্রেমিক হয়তোবা তাকে আমি গড়তে পারতাম তার বুকের ভিতর এপাশ থেকে ওপাশে উল্টে নতুন একটা…..
চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..