প্রেম এবং অপ্রেমের কাব্য
এ-এক প্রেমের শহর, এ-এক প্রেমের শহর, এখানকার বাতাস প্রেমের সৌরভ বয়ে আনে। হাজারো প্রেমের কলি…..
দেখ, ধরণীতে কত আলোয় আলোয় ভরা-
ভরুক না দুচোখে আনন্দের অশ্রুধারা,
হৃদয় মাঝে কে যেন শুধুই ডাক দিয়ে যায়,
বলে মুক্তধরায় বিভেদ ভুলে শান্তি খুঁজি আয়।
একবার কান্না ভুলে,দুহাত তুলে সকল বাঁধন টুটি-
আয় গো সবাই সুখসাগরের মিলন মেলায় ছুটি,
আয় গো এবার সখা,সখি একতার মাঝে লুটি।
পথের ধারে গাছের ডালে শুনব পাখির ডাক,
যায় যদি কেউ শেষ বেলাতে তৃপ্তি নিয়েই যাক,
সন্ধ্যাবেলায় ঘরে ফিরে শান্তিতে সব থাক।
আকাশ শুধু জ্যোৎস্না ধারায় সোহাগ খেলায় মাতুক,
এই ভুবনের আকাশ তলে,ক্লান্তি ভুলে,প্রেমানন্দেই বাঁচুক।
দুহাত ভরে তুলে দেব ভালোবাসা, তুই যা বড় সুজন –
আয় গো সবে গড়ে তুলি আনন্দের নব আয়োজন।
আজ সারাবেলা হৃদয়ে আমার ভরিয়ে রেখ গানে,
বিষাদগুলো বিদায় দিয়ে জাগুক খুশি প্রাণে।
আজ সকালে দখিনা হওয়া লাগুক সবার গায়,
জড়িয়ে ধরুক,ছড়িয়ে পড়ুক নতুন চলা পায়।
সব পাওয়া তো পাওয়া হবে তোমায় যদি পাই,
স্বপ্ন শুধু থাকুক দুচোখ ভরে এইটুকুই তো চাই,
আয় গো এবার নতুন দিনের পিছু,পিছু ধাই।
শিশির ভেজা ভোরের হওয়া তৃপ্তি আনুক দগ্ধ সারাগায়-
আজ চলনা ছুটি, সকল বিঘ্ন টুটি খুশির সীমানায়।
নয়ন মেলে ভোরের কোলে দেখ মিষ্টি হাওয়া দোলে-
এত আনন্দ আয়োজন সফল শুধু শান্তিটুকু পেলে।
ওরে লোভ, লালসা অন্ধকারে, দুঃখ ভরায় বারে, বারে-
আয় গো এবার বুকে তুলি যারা আছে বাহির দারে,
আয় গো এবারবুকে জড়াই, হাসি ছড়াই যারা আছে অনাহারে।
এখন সময় বিনামূল্যে বিলায় নীতি ও আদর্শ,
সকাল, সাঁঝে লাইন পড়ে যায় গ্রহণে।
বাধ্যতার অনুশাসন গ্রহণ করে-
প্রতিদানে চিন্তারাশি ধরে অসি কোপায় মাথার ব্রহ্ম তলে।
ছাউনি ফাটা ছাদনা তলায় নতুন জীবন হলুদ মাখে।
ভার বহনের অযোগ্য শরীর আর মস্তিষ্কে-
নিত্য সন্ধ্যায় দাঁত ও নখের ধারালো প্রশিক্ষণ।
ডুবে যায় কোমল জীবন লোভের ফাতনায়,
কচি কচি আঙ্গুল ডুবে যায় ভবিষ্যতের নরম দুধে,
সচল পৃথিবীর অচল চলনে প্রতিটি শ্বাসই যেন দীর্ঘশ্বাস।
মা আমায় কেন আনলি মল মাসে? এ যেন পরবাসে,
কেন, কেন ঘুমহীন অভিশপ্ত অবকাশ?
অন্ধকার রান্নাঘরে ধর্মঘটের মিছিল,
আমার দুধের টানে তোর যৌনজ্বালা-
অভাবঘরে সন্ধ্যা জ্বালে।হায়রে জীবন ঝালাপালা।
আমার বয়স কালের বাসর ঘরে,দেহে যে আগুন ধরে,
পণ্যসম বিপনী করে কেন রাখিস ভাঁড়ার ঘরে?
অখ্যাতযোনী লঙ্কা পেষে চরম জ্বালায় ডিম্বাণু কাঁদে-
যন্ত্রনাতে,গুটিয়ে যায় গর্ভনেশা,কপাল পোড়ায় সর্বনাশা
ছুটে যায় মাতৃত্বের নেশা,মৃত্যু হাসে- গর্ভপাতে।
আশাহীন সকাল,সাঁঝে বাসর পাতা,সাজাই শুধু ছল, ছলনায়,
এখন আমার বসত অন্ধকারে রেড লাইট এলাকায়।
হাসি মুখের হাজার ক্রেতা,প্রেম আমার বহ্নিশিখা,
চাহিদার পাহাড় চূড়ায় উঠেছে দেহের প্রচ্ছদ।
ভুলে গেছি মধুচন্দ্রিমা,বিতৃষ্ণায় দেখছি পাড় ভাঙার দৃশ্য।
প্রনিধির দীর্ঘ অপেক্ষা, খুলে রাখে বাতায়ন,
মৃত্যুর প্রণোদন হাতছানি দেয় ,যেন শান্তির আয়োজন।
মাটিতে লুটায় ব্যর্থতা, বিদায়ের অভিবাদন,
প্রগলভ, প্রগাঢ় শুনি মৃত্যুর পদধ্বনি,
শুনি আশা হীনতার জয়গান। চিরসত্যের ধ্বনি –
“মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান…”।
জীবনের ছেঁড়া পাতা উল্টিয়ে দেখো-
আবর্জনার স্তুপে পরে আছে কত ত্যাগ, কত আত্মবলিদান।
যার রক্তাক্ত ফসল আজ –
আমরা আমোদে প্রমোদে করি আত্মসাৎ ।কেউ কথা রাখে নি –
কেউ ফেলেনি চোখের জল,
দেউলিয়া মানবিকতার বৃথা শ্রম, বৃথা কর্মফল।
জীবনের সব কিছু হারিয়ে,দুই হাত বাড়িয়ে-
যে কজন সর্বস্বান্ত, অস্তিত্বহীন, অসহায় –
যারা অবহেলিত হতে হতে আজ মৃত্যুর দিন গোনে,কে রাখে খবর তার?
অবজ্ঞার আড়ালে- শেষেরদিনের অপেক্ষায়, শূন্য থালা হাতে –
বেদনার রাজপথে হেঁটে যায় ক্লান্ত পায়।
গোপালের মা চোখে দেখে না –
আলোহীন চোখ ,রক্তাক্ত হৃদয় আকুল আর্তনাদে-
অন্ধকারে একাকী যার সুখ দুঃখ একাকার।
সবাইকে ভাবে তার প্রসব যন্ত্রণার ফসল কোলের গোপাল।
অন্ধকার জগতে, স্থবিরতার মাঝে –
যেন কার পদধবনিকে জাপটে ধরে কেটে যায় মৌনতার প্রহর,
অপেক্ষায় অধীর-
শূন্যে দুইহাত মেলে আনন্দ বিহবল,বলে-
“ও মোর গোপাল, ঘরকে এলি …”
খান খান হয় রাত্রি , গুমরে ওঠে বাতাস।
জীবহাটের বন্ধ দরজায় আছড়ে পড়ে দীর্ঘশ্বাস।
অবাক পৃথিবীর দুঃসহ যন্ত্রণায় –
চোখের নোনা জলে স্নান করে বুড়ো বাপটা,
এখন বয়স যার নব্বই,
চোখের তারায় ছানির আচ্ছাদন,
খিদেয় খেয়েছে শরীর, বুক এখন যক্ষ্মার দখলে।
সেই কেবল জানে গোপাল ফিরবে না আর কোনদিনও, কোনখানে,
যাকে অভিশপ্ত তরঙ্গে দিয়েছে বিসর্জন।
অবুঝ মাতৃত্ব, দিনরাত যার অপেক্ষায় একাকার –
অন্ধ বিশ্বাস অবলম্বনে।
বুকচাপা স্বপনরা এসে চুপি চুপি বলে –
গোপাল গেছে শহরে,
বড় চাকুরি করে বড়লোক হয়ে –
সুখের বোঝা বয়ে এনে তুলে দেবে তোমাদের দুঃখের ঝাঁপিতে।
জমি-বাড়ী বেচার টাকায়,অনেক সুখ-দুঃখ, চোখের জলের বিনিময়ে –
গোপাল অনেকগুলো পাশ দিয়েছে…।
স্বপ্নের চাদরে মুড়ি দিয়ে –
আজও মৃত্যুকে কাছে ঘেষতে দেয়নি গোপালের মা।
বারো বছর ধরে দুঃখের পৃথিবীটা যেন এক আনন্দ আশ্রম।
অপেক্ষা এখনো কথা বলে অশক্ত বুকে,
ভগ্ন ঘরের জীর্ণ দেওয়াল ধরে হেঁটে যায় গোপন আশারা।
আর গোপালের অনাহার ক্লিষ্ট বাপটা-
জীবনের চোরাস্রোতে হাবুডুবু খেতে খেতে-
কখনও ডুবতে ডুবতে,
অভুক্ত দোমড়ান শরীরে যে নিজেকেই দুইবেলা অভিশাপ দেয়, পাষানে মাথা কোটে,
সেই একমাত্র জানে –
গোপাল ভুখা মানুষের স্বপ্ন আর অধিকার আনতে –
শহরে গিয়ে চক্রব্রুহে শহীদ হয়েছে।
শহরের রাজপথের শহীদ বেদিতে আজও ফুল পড়ে,
শতকন্ঠে স্লোগান ওঠে –
জীবনে মরনে শহীদ স্মরণে –
অমর গোপাল তোমায় ভুলিনি ভুলবো না …।
গোপালের প্রগলভ হাসি আর বাজবে না কখনো কোন খানে।
নিকষ কাল মাঘের রাতে মায়ের চোখে হিম
সবার চোখে স্বপ্ন তখন জাগছে অসীম।
গোপাল এলো সূর্য মেখে কাস্তে হাতে মাঠে,
স্বপ্নদেখা পূর্ণ হল, মায়ের হাসি ঠোঁটে।
কেউ জানে না কেউ দেখে না গোপাল আজও আসে,
প্রতিবাদের জনসভায় তারই গলা ভাসে।
গোপাল বেঁচে কলে, দলে জনসভার মাঠে
প্রতিবাদের মিছিল ছোটে অমর গোপাল সাথে
গোপাল হাসে মাথার উপর ত্যাগের পতাকা হাতে।
এ-এক প্রেমের শহর, এ-এক প্রেমের শহর, এখানকার বাতাস প্রেমের সৌরভ বয়ে আনে। হাজারো প্রেমের কলি…..
পতাকায় মিশে যায় ফেলানির নাম উড়তে থাকে কাঁটাতারে; মানুষের মনে জমে পুঞ্জিভূত ক্ষোভ বিকল্প মেঘের…..
প্রেমিক হয়তোবা তাকে আমি গড়তে পারতাম তার বুকের ভিতর এপাশ থেকে ওপাশে উল্টে নতুন একটা…..
চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..