গোলাপ, জারবেরা, অভয় মুদ্রা ও অণুকাব্য

মল্লিকা বিশ্বাস
কবিতা
Bengali
গোলাপ, জারবেরা, অভয় মুদ্রা ও অণুকাব্য

গোলাপ

বাগানে রয়েছে ফুটে অজস্র গোলাপ
ঝাঁকে ঝাঁকে আসে অলি,ওড়ে পাখি
প্রজাপতির পাখায় পাঠাই প্রেমের আলাপ
তুমি কাছে নেই তাই
গোলাপ পাপড়িতে শুনি প্রেমের বিলাপ।

 

জারবেরা

বাগানের এক কোণে টবে ফুটেছে
উজ্জল লাল আর কমলা রঙে মেশানো
একগুচ্ছ জারবেরা ফুল।
ফুলগুলো তুলে এনে
কাঁচের সবুজ ফুলদানিতে
সাজিয়ে রাখলাম আমার লেখার টেবিলে।
প্রস্ফুটিত যৌবন ফুলের শরীরে।
চেয়ে দেখি কী বিশদ নির্জনতা
‘জারবেরা’ তোমাকে ঘিরে।
আমি জানি তোমার অবস্থান
এই লেখার টেবিলে বেশিক্ষণ নয়।
ধীরে ধীরে ম্লান হবে তোমার রূপ,
একসময় তোমার পাপড়ি শুকিয়ে যাবে
পরে তুমি চলে যাবে আবর্জনা-স্তুপে।
এভাবে সুন্দর চলে যায়
মন বিষন্নতায় ছেয়ে যায়-
হৃদয়ে জড়িয়ে থাকে তার কিছু নিভৃত সুবাস।
তোমার কোমল মধুর স্পর্শ
আর মৃদ সুবাস যেনো
চকিতে প্রেমের পদাবলি হয়ে
জ্যোৎস্না রাতে অলৌকিক
কথোপকথনে মেতে ওঠে।

 

অভয় মুদ্রা

ইদানিং আমার যে কী হয়েছে,
দরজা বন্ধ করে ঘরে নিশ্চুপ একা
বসে থাকতে ইচ্ছে করে।
স্মার্টফোনে, ফেসবুকে বুঁদ হয়ে থাকি
জনারণ্যে যেনো হই পরবাসী!
স্বপ্নের সাথে রোজ খেলি কানামাছি।
ভীষণ আলস্যে আক্রান্ত আমি
ক্লান্তি আমায় যেনো গ্রাস করছে আজকাল।
যৌবন পলায়নপর,
কেবলই মনে হয় বয়স অস্তগামী।
তবে কী বিষন্নতায় আক্রান্ত আমি?
দেয়ালে টাঙ্গানো পুরোনো ছবি দেখে
মনে পড়ে যায়
মদির বসন্তের উচ্ছসিত দিনগুলি।
যৌবনের হাহাকার ধ্বনি প্রতিধ্বনি হয়ে বাজে,
শ্লথ হয়ে আসে গতি
তবুও অনেকটা পথ দিতে হবে পাড়ি।
নিবিড় ঘন অন্ধকার রাতের শেষে
সুমধুর গানের তানের মতো প্রত্যুষ আসে
তোমার কন্ঠস্বরে, তোমার স্পর্শে
তোমার অভয় মুদ্রায় আর ভালোবাসায়।
আমি অনন্ত নক্ষত্রবিথী তলে
দিগন্ত বিস্তৃত খোলা পথে এসে দাঁড়াই প্রসন্ন মনে।

 

অণুকাব্য


গাছের ডালে কালো কোকিল কহু কহু ডাকে
তোমার তরে মনটা আমার উদাস হয়ে থাকে।


তুমি আর আমি
আমি আর তুমি
ভালোবাসি তাই
ভালোবেসে যাই
দিবস যামী।


তোমারি সঙ্গে বেধেঁছি প্রাণ
তোমার সাথেই গেয়ে যাই
তাই জীবনের জয়গান।


আঁখির মাঝে তুমি ওগো আঁখিতারা
এতো কাছে আমার মাঝেই লুকিয়ে থাকো,
তবু তোমায় খুঁজে ফিরি
সারা জগত পাগলপারা।


কোজাগরী পূর্ণিমাতে
জ্যোৎস্নাধারায় জগত ভাসে,
রূপালী চাঁদের স্নিগ্ধ আলোর ধারায়
মনটি আমার আকাশ গাঙ্গে হারায়।

মল্লিকা বিশ্বাস। কবি ও চিকিৎসক। উচ্চশিক্ষা সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের তাসখন্দে, বর্তমানে বাংলাদেশের কুমিল্লায় সনোলজিস্ট ও শিক্ষকতায় নিয়োজিত। কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন সেবামূলক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবি সংগঠনের সাথে জড়িত। নারীদের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক সংগঠন ইনার-হুইলের সাথেও যুক্ত। প্রবন্ধ ও গদ্য লেখার পাশাপাশি...

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..

ফ্রেম

ফ্রেম

দেবী না পরিণীতা রাতটা একা থাকে এবং নিঃসঙ্গ অন্ধকার মানে রাত; তাহলে অন্ধকার নিজেও একা…..