বাংলা
( কোরাস ) বাংলা আমার গর্ব আমার বাংলা আমার ভাবের দেশ বাংলা আমার মাতৃভাষা, বাংলা…..
আজ থেকে ফুলেইচ, আজ বিকেলে এখানকার পাহাড় কেটে সমতল করা স্টেডিয়ামে নেমে আসবে সাংলা ভ্যালির তরুণ প্রজন্ম। পনেরো হাজার ফুট থেকে নিয়ে আসা ব্রহ্মকমল থাকবে তাদের সঙ্গে। দেবতাকে উৎসর্গ করে শুরু হবে ফুলেইচ, ফুলের উৎসব! সেপ্টেম্বরের প্রথম কি দ্বিতীয় সপ্তাহে কিন্নৌর জুড়ে এই উৎসব চলতে থাকে, আমরা ফুলেইছ দেখবো বলেই এসেছি এখানে। কাল রাতে জমিয়ে আড্ডা হল! বিদ্যাকরণ নেগী,আমাদের হোস্ট ওর প্রথমা স্ত্রী সরোজ ভাবী আর আমরা। কিন্নৌরে বেশ কিছু জায়গায় দ্রৌপদী প্রথা রয়েছে! চাষযোগ্য জমি এখানে কম, ভাগ বাটোয়ারা বন্ধ করার জন্য এই প্রথা চালু হয়েছিল। বিদ্যাকরণের কেস আবার উল্টো। ও ওর ভাইয়ের বিধবা স্ত্রীকে সামাজিক প্রথানুযায়ি বিয়ে করে, ওর দ্বিতীয়া স্ত্রী শিমলা মেডিক্যাল কলেজের মেট্রন আর এই স্ত্রী এখানকার পঞ্চায়েত প্রধান। ওঁর কাছেই আমরা শুনলাম এখানকার শিক্ষার হার আশি শতাংশের ওপরে, মহিলাদের সম্মান সবার ওপরে, রেপ হয়না, প্রতিটি পুরুষ এবং নারীর নিজের জীবনসঙ্গী বা সঙ্গিনী বেছে নেওয়ার অধিকার আছে।
সৌমিত্র বিদ্যাকরণ’কে বললো, রঞ্জন কা ভি তব ঠিকানা লগা দেও!
– রঞ্জন দা শাদি নহি কিয়া অবতক?
আমাদের হাসতে দেখে বিদ্যাকরণ বললো, আজ সে তিনদিন তক রঞ্জনদা কা অ্যাডমিশন ওপেন হ্যায়.. রঞ্জনদা হাত মে ব্রহ্মকমল লেকে নিকল যাইয়ে….
জমিয়ে ঠান্ডা পড়েছে! আমি রাস্তায় নামতেই দেখি প্রদীপকুমার!
– মেরে আকা, কাম ফতে…ব্রহ্মকমল নিয়ে এসেছি আর পিকলু’কে ফিট করে দিয়েছি হীনা আর লাতির গল্পে…
– সেতো জটিল গল্প!
– আরে আমি আছি কি করতে? গল্প কিন্তু জমে গেছে কবিদা, রিয়া পিকলু’কে ছাড়বে না কিছুতেই, খুনের বদলা নেবেই…
– কিন্তু পিকলু তো পুরো ভেতো বাঙালি… খুন ফুন.. দূর এটা চলবে না!
– আরে কবিদা দেখে যাও, আমি সব চালিয়ে দেবো!
– আচ্ছা দেখা যাক….এদিকে ব্রহ্মকমল তো আনলে, দেবে কাকে?
– ভিনীতা আসছে!
– কোন ভিনীতা?
– সারাহানের…মনে নেই…ওই যে “আজ ফির জিনে কি তমান্না”টুকু রেখে শিমলা চ’লে গেল?
মিঠে রোদ উঠেছে সাংলায়, বেশ একটা পুজো পুজো ব্যাপার চারদিকে। মাইকে গান, সজধজ’কে বেরিয়েছে কিন্নরীরা। এদের সাংস্কৃতিক শিকড় খুব মজবুত। মাইকে কোন বলিউডি গান বাজছে না, স্থানীয় লোকগীতিই বাজছে।পুরুষ, মহিলা নির্বিশেষে কিন্নৌরের জাতীয় পোষাক পরে আছে, মাথায় ছাই রঙের সবুজ ফেট্টি দেয়া টুপি। আর আমি দেখছি অফুরন্ত কবিতা! কবিতা এই চূর্ণ অফুরন্তেই হাসে, হাওয়া দেয়, সিটি মারে, ইরোটিক ঈশারা দেয়! কোন শিকলআঁটা প্রতিমা নয় কবিতা, এই চূর্ণ বিকিরণগুলো কাউকে জ্ঞানী করে, বৈচারিক প্রাখর্যের চূড়ায় নিয়ে যায়, সিদ্ধি লাভ করে সে, উপলদ্ধ জ্ঞানের ভান্ডার উজাড় করে দেয় সে, আবার কাউকে এসবই কবি করে তোলে! যে কবি সে অত বৈচারিক উপলদ্ধির চূড়ান্তে স্বভাবতই যেতে চায় না…. সেই তো অকারণে চঞ্চল হয়, প্রেমে পড়ে, বোকার মত চাঁদ তারার দিকে তাকিয়ে পুরনো দেখায় নতুন আস্কারা খোঁজে, অবাক হয় সে বারে বারে…. আমি কবি কিনা জানিনা, কিন্তু অবাক হওয়ার দোষ আমার বরাবরের। তাই যখন দেখি একজন কবি কবিতার সব কিছু জানে, টেকনিকগুলো মুখস্থ বলতে পারে, ছন্দ/ অলঙ্কার/ তুলনা/ রূপক নিয়ে অনর্গল ব’লে বা লিখে যেতে পারে, আমি অবাক হই!আর নিজেকে সন্দেহ করি, আমি তো কিছুই জানিনা, না জেনে আর কি লিখবো? কিন্তু এই বাক্হারা মতিপ্রসন্ন রোদ আর ‘নীলে নীলে অম্বরে’ আসক্ত হতে আমায় কে আটকাবে?
কয়েকটা মানুষ হোক এই নিঃসঙ্গতা
বুনো হাঁস থেকে বাতাস
একটা স্কুলবাড়ি নিদেন সাঁওতালি হাট
জন্মানোর আগে চাঁদ পাথর
আর যা কিছু একাকি।
***
স্পোকের নিবিড় থেকে চাকার স্থবিরে
সুলেখায় আঁকা হোক গ্লাসের চোখ
সচল রূপোলি
পিপাসার শব্দমূল থেকে
ফিরতি জটলায় নিরিবিলি
সোডিয়াম ভেপারের নিওন মুখ
***
আয়নার কাচে আজ অচেনা মহড়া
গল্পে মেশা দখিনা
তেমন নিবিড়
কয়েক পশলা জিয়ান
কোন পোষাকের কথা বলে
গভীর নেশার যাবতীয় অগভীর
বিদ্যাকরণের বাড়ির ছাদে এখানকার বিখ্যাত গোল্ডেন আপেল সডাল ঝুলে আছে। বেশ আদুরে, উত্তেজক আর সদুরপ্রসারী প্রতিক্রিয়া সমৃদ্ধ! এর খাওয়া থেকেই তো আমাদের ডেলিভারি, তাই এত নিষিদ্ধ আর প্রসিদ্ধ আপেল! বারীনদা হাত বাড়িয়ে আপেল ছুঁয়ে বললো মুন্না একটা কবিতা পড়! তো মুন্না মানে সৌমিত্র পড়লো যখন আমরা এদিক ওদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে আছি আর প্রণব দা ননস্টপ ছবি তুলে যাচ্ছে! কয়েকটা মানুষ হোক নিঃসঙ্গতা…. সৌমিত্র’র লেখায় কি ভাবে যেন আমরাই চলে এসেছি, আমাদের এই সম্মেলকে প্রতিটি কবির স্বভাবজাত নিঃসঙ্গতা মিশে রয়েছে, এ এমন যে চোখে দেখা যায়না, হাওয়াপ্রতিম কিন্তু অপরিহার্য! কবির নিজের দেখায় ওই হাওয়াই হয়ে ওঠে কখনো বাতাসিয়া লুপ, কখনো বা শান্ত জলোতি/ বাসপা নদিটি… এই যে আমরা ‘নতুন কবিতা’র কথা ভাবলাম এর ভেতরে কিন্তু একটা অজানা অচেনা ক্রমবর্ধমান রহস্য আজো রয়ে গেছে। কবিতা’র প্রতিমা ঠিক ক’রে কবিতা লেখাই বাংলা কবিতার মূল চালিকা শক্তি ছিল। আমরা এটা অস্বীকার করলাম। কিন্তু অস্বীকার করা কোথাও নিয়ে যায়না, তা অস্বীকারের নেতি’তেই আটকে থাকে। আবার অপ্রতিমা বা না-প্রতিমা যাই বলি হোক না কেন, লেখার শুরুতে কি ভাবে তার জায়মানতা সংঘটিত হয়? ঝলকানুভুতি, ঝলকানুভূতিই এ ক্ষেত্রে চেতনাকে নির্দেশ দেয় কবিতার খোঁজ শুরু করার জন্য। আর ঝলকানুভূতি শুরু হতে পারে যে কোন কিছু থেকেই! পুরনো কবিতা্য একটা ফ্রেম থাকে, সেখানে প্রচলিত প্রকরণ’কেই এদিক ওদিক ক’রে ব্যবহার করা হয়। কবি তার আগে ভেবে নেওয়া কাব্যপ্রতিমাটিকে লিখতে শুরু করেন। এই চলনেই কবিতা লিখেছেন পঞ্চাশের অনেক বিখ্যাত কবিরা। পারাবস্তবের ধাক্কায় অবশ্যই এমন প্রাকনির্দিষ্ট চলন ডিরেলড হয়ে গেল! ষাট দশকের কবিতা যার প্রমাণ। সত্তর দশকে এই দু ধরণের চলনের একটা মিশ্রণ বা আরো ব্যাপক অর্থে ফিউসন ঘটিয়ে দিলেন কবিরা। আমি বা আমরা এই চলনকেই সাম্নে দেখেছি, বিশেষত গীতিকবিতার আঙ্গিকে। বোর হচ্ছিলাম, নিজের লেখা ওই সীমাটানা আঙ্গিক আর প্রকাশে প্রাণিত হচ্ছিল না….. এই না হওয়টা কিন্তু একটা জায়গায় গোল হয়ে বসে মিটিং করতে করতে হয়নি, সবাই আলাদা পথ খুঁজছিল, এক চৌরাস্তায় দেখাও হয়ে গেল…আজো আমরা হমসফর, জিগরি দোস্ত আর কাব্যিহারা কবিতা খুঁজিয়ে মাত্র।
আজ ছিটকুলের দিকে যাওয়া, হিন্দুস্তান-টিবেট রোডে ভারত সীমানার শেষ গ্রাম, যেখানে পারমিট ছাড়া যাওয়া যায়। বারীনদা যাবেনা, উচ্চতাজনিত অসুবিধের জন্য। তো, আমি, ধীমান, রঞ্জন, সৌমিত্র আর প্রণবদা, আমরা রওয়ানা দিলাম সাংলা বাজার থেকে, সঙ্গে কোয়ালিসের সারথী অরুণ….
আমার আকা স্বপন রায় চললো ছিটকুল। আমি বরং পিকলুকে খুঁজে দেখি, ওকে নিয়ে লেখার এই এক ঝামেলা, কোথায় যে কার সঙ্গে কোন যুগে ইন্টুবিন্টু করছে বোঝা ভার। ওই যে বড়ু চন্ডিদাস লিখেছিলেন,
পিরীতি নগরে
বসতি করিব
পিরীতে বাঁধিব ঘর
পিরীতি দেখিয়া পড়শী করিবো
তা বিনে সকলই পর…
এ একেবারে পিকলুর মনের কথা! আমি ওকে ফলো করে যাচ্ছি এক সমান্তরাল দূরগামী সময়ে, যাকে বলে লিটেরালি বাট ল্যাটেরালি। এই লেখায় তাই সময় হল আরেক চরিত্র, যাকে উন্নত বা হীন বলা যাবেনা। এক্ষেত্রে আমিই তাকে এনেছি আর আমিই তাকে শেষ করবো…
লাতি আর নরিন্দর এখন প্রতিধ্বনিত বাসপা উপত্যকায় বসে আছে। লাতি ওকে বলছে, কি ভাবে রাজার জল্লাদরা ওদের হত্যা করতে এক মৃত্যুপাহাড়ে নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু প্রথমবার ওদের এক মামা আর দ্বিতীয়বার স্বয়ং রানী কারো কাছে খবর পেয়ে ওদের বাঁচিয়ে দেয়! জল্লাদরাও একে কোন দৈব নির্দেশ ভেবে ওদের মুক্ত করে জঙ্গলে আশ্রয় নিতে বলে! হীনা আর লাতি’র বদলে দুটো কুকুর’কে হত্যা করে তাদের কলিজা নিয়ে যায় জল্লাদেরা, রানী এমন বীভৎস চিকিৎসার ফলে অচিরেই মারা যায়…. রাজার রানী হয়ে রাজপ্রাসাদে চলে আসে সেই দানবী…. তবে হীনা আর লাতি এসব জানতো না! তারা জঙ্গলের গভীরে যেতে থাকে। অনেক দিন যায়, রাত যায়, সূর্য যায়, চাঁদ যায়…. জঙ্গল গ্রাস করে নেয় ওদের, ভয় আর ভয়ঙ্করতা ওদের সঙ্গী হয়… হীনা শিকার করে, লাতি বুনো ফল তুলে আনে… আর চলতেই থাকে ওরা… এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে, এক জঙ্গল থেকে আরেক জঙ্গলে, অবসরে লাতি গান গায়, খুব মিষ্টি গান, লাতি হয়তো অজানতেই তখন ভবিষ্যতের ‘রাগ পাহাড়ি’র ভিত গড়ে দিচ্ছিল… বিলাবল ঠাটের মধ্যম আর নিষাদ বর্জিত সেই রাগ, যা সব সময়ে গাওয়া যায়, লাতিও গায় আর ওর গলায় সমবাদী স্বর পঞ্চমে থিতু হতে থাকে। হীনা শিকার করে আনা পাখির মাংস আগুনে ঝলসাতে ঝলসাতে গলা মেলায়…. আর এই শিকার করতে গিয়েই পাহাড়ের গোলকধাঁধায় পথ হারিয়ে ফেলে হীনা… ভাইবোন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় পরস্পরের থেকে…
– ম্যায় বহত রোই.. চিখি… মেরা ভাই মুঝে নহি মিলা… হম বিছড় গয়ে…
– অব কাহাঁ রহতী হো?
– ইহাঁ উহাঁ ভটকতি হুঁ… রাত কো গুম্ফা মে শো যাতি হুঁ!
আমি লাতির দিকে তাকিয়ে ভয় পেলাম, যাকে বলে ভাললাগার ভয়!এই বাসপা উপত্যকা জুড়ে ছোট ছোট রাজাদের দৈনন্দিন ঝামেলা, লড়াই চলতেই থাকে। লাতি’র মত এমন রূপসী’কে লুঠ করে রাজাকে ভেট দেওয়ার লোকের অভাব হবে না।
মুখে বললাম, তুম মেরে ঘর চলো। ম্যায় আউর বাপুজি, দোনো রহতা হুঁ, মা গুজর গই….তুমহে আচ্ছা লাগেগা, তুম গাতি হো আউর হমারে ঘর মে সংগীত কো পুজা যাতা হ্যায়.. চলোগি?
এরপরে যে আকাশ শুধু নীল ছিল, আরো আসক্ত হল নীলে বা বর্ষায় হল দুরিপার তিরিপার মসীয়! যেমন হয়েছিল একবার মসীবর্ণা মুখশ্রী শ্রীরাধার, প্রবল শ্রাবণে যেদিন শ্যামের বাঁশিতে জল ঢুকে বাঁশিটির সামান্য জ্বর হয়ে গেল, শ্যাম যত বাজায় ততই গহন মোহে জলীয় জ্বরালো ঈশ আর ফুঁ তৈরি হয়, তার প্রভাব পড়ে আকাশে, সেই আকাশ শতাব্দী পেরিয়ে চলে আসে বাসপা নদির ধারে আমাদের কুঠরিতে… আমি আর লাতি ঘরে বসে আকাশ দেখি.. আমার বাপুজী করুণ একটা গান গায়…. কে যেন হারিয়ে গেছে… সে আর ফিরবে না… বসন্ত আসে আবার, কিন্তুহীন বসন্তে লাতি আর বাপুজী চলে যায় গ্রামে গঞ্জে….. গান শোনায় জনপদবাসীদের… তাদের নাম ছড়াতে থাকে মুখে মুখে…
সাংলা থেকে ছিটকুল যাওয়ার রাস্তায় ডানদিক জুড়ে হৃদয়লুঠের কিসিমসমগ্র থরে থরে সাজানো। কোন বিনিময় এখানে চলেনা, শুধু নিতে নিতে ফতুর হতে থাকা এই পাহাড়, ঝর্ণা, রঙিন শস্যের খেত, আঁকা বাঁকা অভিপ্রায়ি বাসপা নদি….. এরকম কথাকাড়া নিসর্গে বোল্ড হয়েই হয়তো গ্যারি স্নাইডার লিখেছিলেনঃ
“what “is “within not know
but fill it
sinking with a breath
pusht ruthless,surely,down.
Beneath this long caress of hand and eye
“we “learn the flowering burning,
Outward, from “below”
একই অবস্থা আমাদেরও, ভেতরে কি আছে জানিনা, হিমালয় কি রাখে তার প্রকোষ্ঠে কেউ জানেনা, শুধু আবিষ্ট করে রাখে চারদিকের এমন নীরবতাযুক্ত উত্তেজক ভয় আর আনন্দ, শরীর রীর হতে থাকে! ছিটকুলে বাসপা অনেক কাছে চলে এলো। কাঠের কারুকাজ করা বাড়ি, একটি স্থানীয় দেবতার মন্দির, তোরণ, কাগুপ্যা মন্দিরে শাক্যমুনির একটি বহু মূল্যবান প্রাচীন মূর্তি আর ‘আই.টি.বি.পি’র ক্যাম্প, এই হল ছোট্ট গ্রাম ছিটকুল। এখানে গাছে আপেল, গালেও আপেল! আই.টি.বি.পি’র জওয়ানরা আমাদের চা না খাইয়ে ছাড়লো না। এই সীমান্তে ওরাই আমাদের শেষ প্রহরী, তবে কোন কাঠিন্য দেখিনি, হাসিমুখে আমাদের চা খাওয়ালো, বাইরে খাসি কাটা হচ্ছে,বললো, লাঞ্চ খাকে যাইয়ে দাদা… ”দাদা” সৌরভের সৌজন্যে সারা ভারতেই বাঙালির ডাক নাম হয়ে গেছে! হাতের কাছে চলে এসেছে কিন্নৌর কৈলাস। কিন্নৌর কৈলাস পরিক্রমার পরে ছারাং পাস(৫২৪২ মিটার) থেকে ভক্তরা এই ৩৪৫০ মিটারের ছিটকুলে নেমে আসে। প্রণবদা পাস’টিকে দেখায়, দূরে পড়ে আছে তুষারসিক্ত হয়ে, পায়ের অপেক্ষায়!
কবিতাও অপেক্ষা ছাড়া কিছু নয়। সেই অপেক্ষাই লুকিয়ে মায়ের প্রতীক্ষায়, ফুলের শ্বাসাঘাতি জনপ্রিয়তায়,নদির স্রোতোন্ময়ে ,দালির কুঞ্চিত ঘড়িতে, মহিলার ম-এ, পুরুষের র-এ, রেল স্টেশনের হুইলারে, গাছের ঘাই আর মাছের পাতায়, প’ড়ে পাওয়া অযাচিত স্মিত শমিতে, খিদেয়, শরীরে, না-পাওয়া গানের বাঁকগুলোয়, শিশু, তিসি, শ্রম, কাশ… শ.. শ.. ধ্বনি.. সব কিছুতেই কবিতা রয়েছে অপেক্ষা নিয়ে! কবি এই অপেক্ষার আবহে থাকে, কখনো খুঁজতে বেরোয়, কখনো কবিতা’কে ভুলে এদোর সেদোরে ঘুরে বেড়ায়, কোথাও না কোথাও এই মনে থাকাটুকু রেখেঃ “এক মুদ্দত সে তেরি ইয়াদ ভি নহি আয়ি হমে/ আউর হম ভুল গয়ে তুঝে এয়সা ভি নহি..” (ফিরাক গোরখপুরী) আর এখন তো কবিতার ভেতরেই আছি আমরা, কবিতার ভেতরে থেকে কবিতা লেখা যায়না, কবিতা জন্ম নেয় জন্ম নেয়ার ক্রিয়াতেই, বাইরে!
চলবে…
( কোরাস ) বাংলা আমার গর্ব আমার বাংলা আমার ভাবের দেশ বাংলা আমার মাতৃভাষা, বাংলা…..
এমন বৃষ্টির দিনে যে ছবি আঁকে নদীজল এমন বৃষ্টির দিনে স্মৃতিকে জড়িয়ে ধরি, পোশাকে তুমি।…..
ঝরাপাতা তোমার চলে যাওয়া আমাকে ব্যথিত করে না, ঝরাপাতাদের নিঃশব্দ আর্তনাদে রয়ে গেছে তোমার উপস্থিতি।…..
১. বেকার জীবন মেয়েটা আজ আট-আটটি বচ্ছর বেকার! গতকালের ইউরিন টেস্ট রিপোর্ট পজিটিভ… ২. স্বপ্ন…..