আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে
আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে, আমি জানতাম না, অগাস্টকেও রাহুর মত গ্রাস…..
তোমার উন্মত্ত ক্রোধ আর ছন্দিত বেদনা সঞ্চারিত করে আাকাশ ফাঁটাও।
ক্রাচে ভর করে,দেড় যুগ পরে ভীরু খরগোশের ন্যায় হেঁটে যাওয়া,
এক মুঠো রোদমাখা পথে যেন……
অস্থির উন্মাদনায় চেনা পথের ঘাসফুল,জারুল,
হিজল, কলাপাতা জানায় অভিনন্দন!!
স্মৃতির ভিতর স্মৃতি সেতো মরকতের লাবন্য!
ধরো এসেই গেলে!
আত্মআবর্তিত শিল্পে তোমার মূর্তি গড়লাম;
তখন বাকি তাবৎ মূর্তি, ভাস্কর্য ভেঙ্গে খানখান!
হায়! কত অসমাপ্ত আলিঙ্গন,
বৃহৎ মিলন ছিলো কি পবিত্র প্রতিম!
সেদিনও সেই পুরনো গন্ধ বারংবার-
উপকরণ কিছুই ছিলোনা যার।
অনেক কিছুই আগের মতোই ;
শুধু আমার কাপে চুমুক দিয়ে দেখেনি কেউ
চিনির পরিমাণ।
পর্দার আড়ালে তোমার ঠোঁট
হয়ে যেতো যে চা-চামচ।
লবনের বস্তা মাথায় টেনে টেনে
দিন পার করে বাজারের লতিফ কুলি।
রাত অন্ধকারে বাড়ি ফেরার পথে বড় গলায়
গান গায়, ” আমায় এত রাতে কেন ডাক দিলি
প্রাণ কোকিলারে।” দূর থেকে কেউ একজন
বলে ওঠে; ” তুইতো গান গাওনা, ডর ছাড়াও !”
লতিফ কুলি আরো জোর গলায় বলে, নারে দুদু না।”
আমার না বলা কিছু বস্তা বন্দী কথা প্রতিদিনই
ফেলে রাখি বাড়ির কোণে।
টোকাই এসে কাঁধে নিয়ে গেলে মনে হয়,বাদামের
ঠোঙ্গা হয়ে চলে যাবে তোমার অভিসারী হাতে।
তাতে লেখা ; “যদি জানতেম আমার কিসের ব্যথা, তোমায় জানাতাম।” কাগজটা ফেলে দিয়ে
অন্যের হাতে তোমার আঙুলের নাচন।
এসবের কোনো মানে বুঝবেনা তুমি;
যেমন বোঝেনি লতিফ কুলি,কত অনু লবন
কত অনু পানি ধরে রাখে?
টোকাইও যেমন জানেনা কত অসীম ব্যথা ভর্তি
দলিলের বস্তা তার কাঁধে,
কত মন সুখের ধান হতে পারে এমন দুঃখ ভিটায়।
ইট ভাঙা শব্দগুলো রক এন্ড রোল কিংবা গজলের মোলায়েম সুর হয়ে আসে রাতের পানশালায়।
এক-একটা ইটের খোয়ায় মিশে থাকে
অসংখ্য বেদনার কাব্য।
অসামান্য সুনির্মাণের সুউচ্চ ভবনের রিভোলবিং চেয়ারের সাথে ঘোরে অগণন ক্ষুধার্তের রাঙা চোখ।
পেয়ালা-পেয়ালা আঙুরের রসে..
ঝিম মেরে থাকে ঘামের বোতল।
দামী এ্যাম্বারগ্রিস পারফিউম মেখে উত্তেজিত
রাতের বিছানা,তোমার উন্মুক্ত শরীর;
অপলক দেখে কাঁদছে তিমির বমন বুকে নিয়ে
দুর্ভাগা শ্রমিক।
মজুরের অধিক সময় কেড়ে নিয়ে লীলায়িত;
আজ তোমাদের লম্বা ভাষণ।
আমরা তবুও তোমাকে এ দিবসে প্রধাণ অতিথি করি।
তখন…
বেপরোয়া স্রোত ভেঙ্গে ফেলে নদীর কূল,
পাড়ার সাঁকো ভেঙ্গে চুরমার,তাবৎ সমুদ্রের ফেনা লেপ্টে থাকে সমস্ত বালু প্রান্তর,সূর্য ধুপ করে পড়ে থাকে গ্যাসহীন সোনালী বেলুন,হুড়মুড় করে গাছ ভেঙ্গে পরে।পৃথিবীর সব সরল রেখা মু্হুর্তে হয় অধিবৃত্ত, ক্রোধে;
তখন…
বাইজির নূপুরে তোলে কামানের গর্জন,ট্রেনের হুইসেলে যুদ্ধের বার্তা আর বোয়িং বিমানে ভর করে আকাশ নেমে আসে।
আঠের পাউন্ডার গোলার শব্দে মাটি থরথর,মস্ত পাথর ভেঙ্গে অনুখন্ড বালি। কৃষকের কাঁচি হয়ে যায় শানিত তরবারি
যখন তুমি টুকরো অনুরাগে, যখন তোমার টুকরো অভিমান!!
একটু মমতায় তুমি মাখন,কখনও আবার মোম।
আয়নাটা ঢেকে গেলে শ্বাসের ধোঁয়ায়
আঙুল ঘসে লেখা যায় প্রেম অথবা ঘৃণা।
দুটি শব্দের ভেতর থেকে দেখি মুখ ও মুখোশ!
ভাপা পিঠার ধোঁয়ায় মিশে
নাগরিক কোনো শীত সন্ধ্যায়…
তার চলে যাওয়া!
কোনো যান ধোঁয়া ছেড়ে চলে গেলে
পেট্রল পোড়া সুগন্ধিটুকুই মূলধন থাকে।
ইট ভাটার মালিক-কারবারি হই,
বুকের খোয়ারে জমে কয়লার গুদাম।
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ ঠোঁট উঠে বলে;
সাবধাণ!
পৃথিবীর আয়না থেকে পারদ খসে খসে পরছে;
দৃষ্টির দ্রাঘিমায় আর কোনো প্রতিচ্ছবি কেন?
এটা তিল নয় যে ঠোঁটের কোনে
লেগেই থাকবে কিংবা কপালের কোনো কাটা দাগ!
ওটাতো একটা বড় ফেরী এপারওপার পারাপার ;
সময় একটু লাগতেই পারে তাই বলে হুটহাট করে
নৌকায় উঠেনা যেন কেউ।
আবহাওয়ার সতর্কবাণী;ডুবে যেতে পারে!
দেখনি, কত ভূখন্ড নিমিষে তলিয়ে যায়!
অসীম ধৈর্যে বাঁচে শান্তির সংকলন।
সুবিনয়! ওদেরকে বলে দে,
এপারে সোনালী জন্মোৎসব চলছে,
সূর্যের সাথে মিশে খিলখিল করে হাসছে ধান।
ফেরীর স্বতন্ত্র শব্দে লিখে পাঠিয়ে দিলাম
এসব যাবতীয় সুখবার্তা ওপারের ঘাটে।
আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে, আমি জানতাম না, অগাস্টকেও রাহুর মত গ্রাস…..
অভিশাপ মেঘের ভেলায় নিঃশ্বাসে ক্লান্তির ছাপ সবুজের নীড়ে আপন ঠিকানার খোঁজ এক ফালি সুখের নেশায়…..
পাখি দম্পতি পাখি গিয়েছিল কতদূর বনে তা কারো নেই জানা। ঠোঁটে ধরা লাল টুকটুকে ফল…..
তারা যেমন বলে, চোখে ধুলো দিলে থেমে যাবে আমার কাব্যময়তা অথচ আমি প্রামান্য দলিলের নই…..