আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে
আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে, আমি জানতাম না, অগাস্টকেও রাহুর মত গ্রাস…..
ইচ্ছামতীর বুকে
প্রদোষ ঘনায় স্বচ্ছতোয়া ইচ্ছামতীর বুকে,
ধীরে ধীরে জাগে পূর্ণ চন্দ্র আঁধারের জাল ছিঁড়ে
মাঝিমাল্লারা দিবসের শেষে গৃহে চলে গেছে ফিরে-
দারাসুত নিয়ে সারা দিন পরে রজনী কাটায় সুখে।
স্রোতবতী চলে মন্দ গতিতে আলস্য মন্থরে,
মদালসা যেন চলে অভিসারে গজগামিনীর মত,
তটিনী বক্ষে শুভ্র জ্যোতিতে মোতিমালা ঝলকিত,
আকাশের তারা বুকেতে নদীর পড়েছে অঝোরে ঝরে।
কুলে বাঁধা আছে তরী দুটি শুধু তপ্ত দিনের শেষে,
সারাদিন ধরে কত যাত্রীর পারাপারে দেহ ক্লান্ত,
মৃদু তরঙ্গে দোল খায় তারা দিনশেষে সব শান্ত-
আলো ছায়া সব তটিনী বক্ষে গলাগলি করে মেশে।
ধীরে বায়ু বয় নিশীথ সময় শীকরলিপ্ত তনু-
অজাগর নভে অজবীথি জাগে রাকার অমল আলোয়,
আলপনা আঁকে সরসী বক্ষে নিয়ত সাদা কালোয়,
দুই তীরে শুধু দুই দেশ তবু এক মন এক তনু।
এপারে কম্বু নিনাদ মেশে যে ওপারে আজান সাথে-
বিজয়ার শেষে দুই দেশ মিলে ভাসান খেলায় মাতে।
তবু মাঝে উঁচু কাঁটাতার আর সঙ্গীন তৈয়ার-
হৃদয়ের সাথে হৃদয় মিশেছে সব বাধা করে পার।
হারানো
সূর্যে পোড়া ধূ ধূ বালির চরে
একলা কাঁদে ক্লান্ত নদীর হাওয়া,
তপ্ত চিল ঘুরেই মরে শুধু
কোথায় মেলে শীতল তরু ছায়া।
আলোর পথে অন্তহীন চলা,
হারিয়ে গেছে ঘরে ফেরার চাবি-
সার হয়েছে অনির্দেশ চলা,
কোথায় আর শূন্য পথের দাবী।
হারায় যারা হারিয়ে গিয়েই থাকে,
হারানোকে কে আর মনে রাখে,
সত্যি শুধু সামনে যেটা আছে-
সামলে রাখা হারিয়ে যায় পাছে।
চতুরঙ্গ
আমার হারে তোমার জিত নয়-
তোমার কাছে হারব বলেই আসি,
তোমায় আমায় চতুরঙ্গ খেলা-
হেরেও আমি আনন্দেতে ভাসি।
সাজিয়ে নিয়ে বস তোমার ঘুঁটি-
চেনা তোমার খেলার ছকের দান
তবুও আমি খেলার সেরা জুটি,
হারলে আমার নেই তো অপমান।
দীঘির মত গভীর তোমার চোখ-
গহীন জলে ডুবতে আমি আসি,
তোমার বুকে ভুলতে পারি শোক,
ডুবেও আমি সুখ সায়রে ভাসি।
অরুণ আলোয়
অরুণ আলোয় রাঙবে বলে চোখ মেলেছে কুসুম কলি,
পূব আকাশে আড়মোড়া দেয় রঙীন কাঁচা নবীন ভানু ,
প্রথম চুমা আঁকবে বলে জুটল এসে ভৃঙ্গ অলি –
শ্যামল তৃণ করবে বরণ তাই পেতেছে পেলব জানু ।
মলয় মারুত চামর ঢুলায় শীতল করে মঞ্জরীকে ,
অরুণ পথের মলিন ধুলায় মার্জনী দেয় হিমানী সব –
সন্দেশ তাই ছড়িয়ে পড়ে নিকট দূরে চতুর-দিকে ,
নহবতের ভৈরবীতে সুর তুলেছে কাকলী রব ।
আসছে অরুণ স্বর্ণ রথের ঐ দেখা যায় শীর্ষ রেখা –
উড়িয়ে ধ্বজা অভ্রভেদী প্রাচীর পথে দীপ্র আভা ।
নক্ত শেষে স্যন্দিত যান আবীর ছড়ায় চক্ররেখায় –
নিদ্রা সবার হরণ করে সঞ্চারিছে প্রাণ, সবিতা ।
প্রথম পূজা অঞ্জলিতে সাজিয়ে ডালা কুসুমবালা –
তৈরী আছে অর্ঘ দিতে নম্র মুখে নিদ্রা শেষে ,
আসছে প্রাণের প্রাণস্বরূপে অভ্রললাট আবীর ঢালা
রাজার রাজা ,দীপ্তকিরণ উচ্চশিরে বীরের বেশে ।
আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে, আমি জানতাম না, অগাস্টকেও রাহুর মত গ্রাস…..
অভিশাপ মেঘের ভেলায় নিঃশ্বাসে ক্লান্তির ছাপ সবুজের নীড়ে আপন ঠিকানার খোঁজ এক ফালি সুখের নেশায়…..
পাখি দম্পতি পাখি গিয়েছিল কতদূর বনে তা কারো নেই জানা। ঠোঁটে ধরা লাল টুকটুকে ফল…..
তারা যেমন বলে, চোখে ধুলো দিলে থেমে যাবে আমার কাব্যময়তা অথচ আমি প্রামান্য দলিলের নই…..