চলো শূন্যতায় বাঁচি

মনিরা মনি
কবিতা
Bengali
চলো শূন্যতায় বাঁচি

চলো শূন্যতায় বাঁচি

এখানে জমাট মেঘ রুদ্ধ করা শ্বাস
বাইরে যাবার ভীষণ রকম তাড়া
শান্তি কপোত যেখানে ছড়ায় প্রেম
আমায় করেছে মেঘেরা ঘরছাড়া।

ঝাপসা দৃষ্টি উঠোন জুড়ে অবসাদ
মনকোনে বৈশাখী মাতাল হাওয়া
ঘর ছেড়ে যাই হাওয়ায় মিলে সুখ
অনেকটা পথ এখনও বাকি যাওয়া।

চলো, আগুনে পুড়ি বিশ্বাস মিলবে
দুঃখগুলো বিছিয়ে দেওয়ার পর
তারপর জানবে আমাকে পোড়াতে
তোমার রয়েছে কি-না অবসর।

 

প্রবোধ

সব সময় কি কাঁদতে হবে চোখে
গোপন দুঃখ না হয় কিছু থাকুক,
ভাঙতে হবে কেন তাতেই রোজ
হাঁসির ছটা ঠোঁটেও কিছু রাখুক।

দুঃখ যেমন পুষতে পারো বুকে
তেমন করে তুমিও না হয় বাঁচো,
তোমার চেয়েও খুব ভালো নেই যারা
তাদের চেয়েও অনেক ভালো আছো।

সুখ -দুঃখ কেউ আসে কেউ যায়
সবই কিছু নিয়ম মেনে চলে,
তোমার কেন একরকমই চাওয়া
বাঁচতে শেখো বাঁচার কৌশলে।

পথটা যদি একলা তোমার হয়
সঙ্গীহীন চলতে তুমি শেখো,
বন্ধু তোমার না হয় মিলুক পথে
আকাশটাকে বন্ধু ভেবে দেখো।

নিজের জন্য বাঁচতে তুমি শেখো
হরহামেশা হতেই পারো একা
অন্ধকারও হতেই পারে সাথী
দেখাবে পথ দূরের আলোকরেখা।

 

নারী নই

ষোলোয় নদী ছুঁয়েছিলো চোখ
বলেছিলো আগে নারী হয়ে উঠো
আমি প্রথমে খুলে নিলাম কপালের টিপ
তারপর হাতের চুড়ি, পায়ের ঘুঙুর।
একে একে গলার মালা, নাকের ফুল
তারপর সরিয়ে দিলাম সমর্পিত ঘোমটা।

তিরিশের বসন্ত ছুঁয়েছিলো ঠোঁট
বলেছিলো আগে নারী হয়ে উঠো
আমি প্রথমে হেসেছিলাম, তারপর কেঁদেছি অঝোরে
অতঃপর কোমরে আঁচল বেঁধে নেমেছিলাম পথে, প্রান্তরে, মাঠে, ময়দানে।
হাতে হাত রেখে নয় বরং এক হাতে জয় করেছি হিমালয়।

চল্লিশে প্রেমিক ছুঁয়েছিলো শরীর
বলেছিলো আগে নারী হয়ে উঠো
আমি প্রথমে ছেড়ে দিলাম ঘর, তারপর সামাজিক ব্যাধি, নিয়মের বলয়।
তারপর আমাদের ; আমাদের দেখা হলো যুদ্ধের ময়দানে
ঘাতে – প্রতিঘাতে – সংঘাতে।
অতঃপর যুদ্ধ শেষে দেখি আমি নারী নই
আমিও তোমার মতোই একজন রক্তেমাংসে মানুষ।

 

মূলত কবিতা লিখেন। পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন শিক্ষকতাকে। প্রকাশিত কবিতার বই দুটি। থাকেন ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর জেলায়।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ