প্রক্সি
তারপর ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে যাবো। আমার দেরি হবে আসতে। স্বামী অমর বলে, ঠিক আছে।…..
এরপর থেকে ওদের প্রচুর কথা হতে থাকে ম্যাসেঞ্জারে, ফোনে, নিবিড় তরুর থেকে আরও বেশি সময় পেতে উদগ্রীব। তরুর চাকরি করে এতো সময় নেই, বেসরকারি চাকরি, ছুটিও মাত্র একদিন, পুরো সপ্তাহের কাজ পড়ে থাকে; ওগুলো ও করতে হয়।
নিবিড় এরপর ওর সময় পাবার সমাধান খুঁজে নেয়। প্রতিদিন ভোরে উঠে বাইক নিয়ে তরুর গেটের সামনে হাজির। শুরু হয় নিবিড়ের বাইকে চেপে অফিসে যাওয়া। বন্ধুত্ব গভীর হয় আরো। একদিন নিবিড় ওকে বলে কাল তোমাকে আমার বাসায় নিয়ে যাবো। তোমাকে নিজ হাতে রান্না করে খাওয়ানোর অনেক শখ আমার। তরু অবাক হয়ে জানতে চায়, তুমি রান্না করতে পারো? নিবিড় মৃদু হেসে বলে, শুধু রান্না না আমি সব কাজ পারি। যখন তোমাকে বিয়ে করবো, সব কাজ আমিই করবো, তোমাকে কিচ্ছু করতে দেবো না।
এ কথা শুনে তরু চুপ হয়ে যায়। নিবিড় জানতে চায় ও লজ্জা পেলো কিনা? তরু বলে, না কিন্তু বিয়ে আমি করবো না। তোমাকে আমার অনেক ভালো লাগে, তুমি আমার অনেক ভালো বন্ধু, কিন্তু বিয়ের কথা বলে এই সম্পর্ক শেষ করে দিও না প্লিজ। আমি আর কখনও বিয়ে করবো না। নিবিড় অস্থির হয়ে জানতে চায়, কেনো? আমি বয়সে তোমার ছোট বলে? আমি তো এসব নিয়ম মানি না। তুমি এগুলো নিয়ে একদমই ভেবো না, আমি তোমাকে অনেক সুখে রাখবো, আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি তরু!
তরু এ কথা শুনে কিছুক্ষণ বিহ্বল হয়ে তাকিয়ে রইলো নিবিড়ের দিকে, তারপর শান্ত ভাবে বল্লো, এটা তোমার ভুল ধারণা নিবিড়। আমি সনাতন চিন্তাধারার নই, আমি বিয়ের ব্যাপারে কোনো ভাবেই মতামত বদলাতে পারবো না। তোমাকে অনেক পছন্দ করা সত্ত্বেও না। কিন্তু এর কারণ তুমি আমার কাছে জানতে চেয়ো না। এই একটা বিষয়ে আমি কথা বলতে চাই না।
পরদিন অফিস শেষে নিবিড়ের বাইকে চেপে তরু পৌঁছে যায় নিবিড়ের বাসায়। বেশ বড়ো একটা ফ্লাট নিয়ে থাকে ও। তবে ব্যাচেলর হিসেবে থাকে বলে গেটের দারোয়ানের কাছ থেকে লুকিয়ে কোনো এন্ট্রি ছাড়া তরুকে উপরে নিয়ে যেতে হবে নিবিড়ের। কিভাবে তা আগে থেকে ভেবে রাখেনি ও, এখন নার্ভাস হয়ে সেটাই ভাবছে। একটার পর একটা আইডিয়া ভাবছে আর বাতিল করে দিচ্ছে। এদিকে তরু সারাদিন অফিস করে ক্লান্ত। এতো সময় ধরে গেটের সামনে অপেক্ষা করতে এখন বিরক্ত লাগছে ওর।
নিবিড় অস্থির তরুকে শান্ত করতে শেষ পর্যন্ত আর দুই মিনিট অপেক্ষা করতে বলে গেটের ভিতরে বাইক নিয়ে চলে গেলো। এক মিনিট পর গার্ডের পোশাক পরা এক লোককে তড়িঘড়ি করে গেটের বাইরে চলে যেতে দেখলো তরু, তার পরপরই নিবিড় ওটে একটান দিয়ে গেটের ভিতরে ঢুকিয়ে নিয়ে লিফটের দিকে ছুটলো। লিফট থেকে নেমে ফ্লাটের লক খুলে তরুকে ভিতরে নিয়ে এসে দরজা বন্ধ করে নিবিড় যেনো হাপ ছেড়ে বাঁচলো।
তরু একটা সিগারেট ধরিয়ে এ ঘর ও ঘর ঘুরে কোনো এ্যাশট্রে খুঁজে পেলো না। তারপর নিবিড়কে জিজ্ঞেস করলো, এ্যাশ কি ঘরেই ফেলবো? নিবিড় বারান্দায় গিয়ে কোকের একটা খালি ক্যান এনে দিলো ওকে। ক্রিয়েটিভিটির মাত্রা দেখে হেসে ফেললো তরু, ঠিক তখনই কলিং বেল বেজে উঠলো। তরুকে তাড়াতাড়ি বেডরুমে পাঠিয়ে রুমের দরজা ভিড়িয়ে দিয়ে গেলো নিবিড়। একটু পরেই কয়েক প্যাকেট স্যালাইন হাতে ফিরে এলো। তরুর চোখে প্রশ্ন দেখে বল্লো, আরে এগুলো তোমার উপরে আসার টিকেট। এবার পুরো বিষ্ময় দেখে বল্লো, বুঝোনি? আরে খুব করে বল্লাম ভাই আমার চরম পেট খারাপ, মাথাও ঘুরছে, একবার তো বাইক থেকেই পড়ে যাচ্ছিলাম। আমাকে কয়েক প্যাকেট স্যালাইন এনে দেন না? ওর যদিও নড়ার অধিকার নাই তবুও টাকা বের করে দিতেই আনতে গেলো বেচারা। শুনে তরু হা হা করে হেসে উঠলো।
তারপর ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে যাবো। আমার দেরি হবে আসতে। স্বামী অমর বলে, ঠিক আছে।…..
নভেম্বর চলছে। অনির সাথে আজ দেখা হবে তা জানাই ছিল। এই তো ক’দিন আগেই দেখা…..
বুড়িমাসি বলেন,জীবনটা বালির ঘর গো।ঢেউ এলে ধুয়ে যায় জীবনের মায়া।তবু বড় ভালবাসা ওদের দাম্পত্যে।রোদের চাদরের…..
এক ড্রইং রুমে বসে রয়েছে সদ্য কিশোর উত্তীর্ণ তরুণ গোয়েন্দা সজীব। সামনের টেবিলে ছড়িয়ে…..