প্রক্সি
তারপর ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে যাবো। আমার দেরি হবে আসতে। স্বামী অমর বলে, ঠিক আছে।…..
ছেলেটি প্রায় দিনই তরুকে ইনবক্সে নক করে। খোঁজ খবর জানতে চায়। হয়তো বা আরো একটুও বেশি কিছু বলতে চায় কিন্তু তরুর কাটা কাটা উত্তরে আর বেশি বলার সাহস করে উঠতে পারে না। ছেলেটির নাম নিবিড় আহমেদ, থাকে বগুড়া। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট সে, সবার আদরের ও। সদ্য এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে সে, বয়স একদমই কম।
এদিকে তরু অল্প কিছুদিন হলো ডিভোর্স দিয়েছে অহম‘কে। একা থাকায় অভ্যস্ত হতে ব্যস্ত সে। একটা মেয়েদের হোস্টেলে থেকে চাকরি খুঁজছে, অবসরে ফেইসবুক হচ্ছে সময় কাটানোর মাধ্যম। বেশ কিছু ব্যস্ততায় তরু ফেইসবুকে আসলো না প্রায় মাসখানেক। এর পর প্রথম যেদিন ফেইসবুকে লগইন করে, দেখতে পায় তার ইনবক্সে একশরও বেশি ম্যাসেজ জমা হয়ে আছে। কৌতুহলী তরু আগ্রহ নিয়ে দেখতে গিয়ে দেখে বেশিরভাগ ম্যাসেজ ই নিবিড়রের থেকে এসেছে। খুলে দেখে এই এক মাস নিবিড় প্রতিদিন নিয়ম করে ওকে নক করে গেছে। করে গেছে উদ্যেগে ভরা প্রশ্ন।
তরু একটু অবাক হয়, তারপর লিখে যে সে ঠিক আছে, ভালো আছে, ব্যস্ততায় ফেইসবুকে আসা সম্ভব হয়নি, দুঃশ্চিন্তার কিছু নেই। প্রায় দশ মিনিট পর উত্তর আসে, ‘ooooo’ এই একটা বিষয় খুব মজার লাগে নিবিড়ের, যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দিলে তার রিপ্লাই হচ্ছে, ‘ooooo’। ছেলেটা ইংরেজি অক্ষরে বাংলা লিখে, এটা তরুর কাছে খুব বিরক্তিকর। শুধু এই একটা ব্যাপার অন্নেক কিউট লাগে ওর। আর যতোই তরু ওকে বাংলায় লিখতে বলে, নিবিড় ততোই জোর দিয়ে বলে যে তার ফোনে বাংলা লেখা যায় না!
একটা চাকরি পায় তরু, শুরু হয় ব্যস্ততা। ফেইসবুকে আর সেভাবে যাবার সুযোগ নেই তরুর। শুধু মাত্র ছুটির দিন গুলো, তাও তো পুরো সপ্তাহের জমে থাকা কাজ সারতে হয় ওর। তারপর বিশ্রাম নিতে নিতে ফেইসবুকিং। এর মধ্যে নিবিড় ওকে নক দেয়নি আর। তরু মাত্রই নীল সাদার ক্যানভাসে যত্রতত্র ঘুরাঘুরি শুরু করেছিলো। এমন সময় ইনবক্সে নক, এবং সেটা নিবিড়। ও তরুকে বলে সে এখন ঢাকায় অবস্থান করছে, তরুর সাথে একবার দেখা করতে চায়। কি মনে করে তরু রাজি হয়ে যায়। ঠিক হয় পরদিন অফিস থেকে ফেরার পর দেখা হবে ওদের।
নির্ধারিত যায়গায় এসে দাঁড়িয়ে আছে তরু। নিবিড় এখনও এসে পৌঁছায় নি। অস্থিরতায় সিগারেট জ্বালিয়ে টানতে থাকে ও। গত রাতেই ফোন নাম্বার বিনিময় করেছে ওরা। কিছুক্ষণ পর নিবিড় ফোন দেয় তরুকে, ঠিক কোন যায়গা বুঝে উঠতে পারছে না সে, সাথে কাজিনকে নিয়ে এসেছে রাস্তা চিনতে তবুও কনফিউজড। তরু আবার বুঝিয়ে বলে দেয়।
ঠিক সাত মিনিটের মাথায় তরুর থেকে একটু দূরে একটা মোটা সোটা বাইক এসে থামে। তরু প্রশ্ন বোধক চোখে তাকিয়ে দেখে দুজন সওয়ারি সেখানে, তার থেকে একজন স্বাস্থ্যবান ছেলে হেলমেট খুলে পাশের জনের হাতে দিয়ে এগিয়ে আসতে থাকে তার দিকে। কাছে এসে বলে চিনতে পারছেন আমাকে? তরু সম্মতি সূচক মাথা দোলায়। তারপর জিজ্ঞেস করে আহমেদ না? বেচারা বিব্রত হয়ে বলে ওটা তো আমার বাবার নাম, আমি নিবিড়। তরু বলে ওহ্ সরি সরি! এরপর দুজনেই হেসে ওঠে।
অস্বস্তিকর নিরবতা অবস্থান করে তারপর কিছুটা সময়, তারপর নিবিড় পকেট থেকে বেনসন সুইচ বের করে বলে, সিগারেট খাবেন। তরু আবার সম্মতি সূচক মাথা ঝাঁকায়। দূজনে দুটো সিগারেট জ্বালিয়ে টানতে থাকে। এটুকু দু‘জন কে কিছুটা স্বাভাবিক হতে সাহায্য করে। সিগারেট শেষ হতেই নিবিড় তরুকে বাইকে ঘোরার প্রস্তাব দেয়। তরুর ছোট বেলা থেকেই বাইকের প্রতি দুর্বলতা। সে সাথে সাথে রাজি হয়ে যায়। নিবিড় তার বাইকের কাছে তরুকে নিয়ে যায়। বাইকে বসা ছেলেটার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় ওর কাজিন বলে। তারপর বেচারাকে রাস্তায় অপেক্ষা করতে বলে তরুকে পিছে বসিয়ে বাইক স্টার্ট দেয়।
তরুর ইনস্ট্রাকশন অনুযায়ী কয়েকটা গলি পার হয়ে একটা ফাঁকা রাস্তায় এসে বাইক থামায় নিবিড়। আরো একটা করে সিগারেট ধরায় ওরা নিবিড়ের আমন্ত্রণে। টুকিটাকি কথার ফাঁকে নিবিড় জানতে চায় ওরা আবার দেখা করতে পারবে কি না? তরু সম্মতি দেয়। ওরা ফোনে কথা বলে পরবর্তী সাক্ষাতের সময় নির্ধারণ করে নেবে জানিয়ে সেদিনের মতো বিদায় নেয়।
বাসায় ফিরে তরু ভাবতে থাকে, নিবিড় ছেলেটা বয়সের তুলনায় দেখতে অনেক ম্যাচিউর, অনেক কিউট! কথাবার্তা যদিও ইম্যাচিউর তার! তবে তরুর মজাই লাগে ওর কথাতে। আবার দেখা করাই যায় ওর সাথে, ওর সাথে বাইকে চড়ে ঘুরতে ভালো লাগে তরুর, গল্প করতেও ভালো লাগে, ভালো সময় পার করা যায়, একাকিত্বের এই সময়ে নিবিড় যেনো এক টুকরো স্বস্তি!
চলবে….
তারপর ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে যাবো। আমার দেরি হবে আসতে। স্বামী অমর বলে, ঠিক আছে।…..
নভেম্বর চলছে। অনির সাথে আজ দেখা হবে তা জানাই ছিল। এই তো ক’দিন আগেই দেখা…..
বুড়িমাসি বলেন,জীবনটা বালির ঘর গো।ঢেউ এলে ধুয়ে যায় জীবনের মায়া।তবু বড় ভালবাসা ওদের দাম্পত্যে।রোদের চাদরের…..
এক ড্রইং রুমে বসে রয়েছে সদ্য কিশোর উত্তীর্ণ তরুণ গোয়েন্দা সজীব। সামনের টেবিলে ছড়িয়ে…..